Recent Post
Loading...
ব্লিচিং পাউডার এর জীবন রহস্য :
ব্লিচিং পাউডার বা বিরঞ্জক চূর্ণ [Bleaching Powder,  Ca(OCl)Cl]:-

ব্লিচিং পাউডারের রাসায়নিক নাম ক্যালসিয়াম ক্লোরো-হাইপোক্লোরাইট এবং এর রাসায়নিক সংকেত Ca(OCl)Cl   । 

• প্রকৃতি:-

[i] ব্লিচিং পাউডার সাদা, অনিয়তাকার এবং একটি অজৈব পদার্থ ।

[ii] ব্লিচিং পাউডার থেকে ক্লোরিনের ঝাঁঝালো গন্ধ পাওয়া যায় ।


[iii] ব্লিচিং পাউডার জলীয় বাষ্প শোষণ করে, জলের সঙ্গে আংশিক বিক্রিয়া করে ক্যালশিয়াম ক্লোরাইড ও ক্যালশিয়াম হাইপো-ক্লোরাইট উত্পন্ন করে ।

[iv] ব্লিচিং পাউডার অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়ায় ক্লোরিন উত্পন্ন করে । এক গ্রাম-আণবিক ভরের শুষ্ক ব্লিচিং পাউডারের সঙ্গে পাতলা অ্যাসিডের ক্রিয়ায় যে পরিমাণ Cl2 পাওয়া যায় তাকে প্রাপ্য ক্লোরিন বলে ।  Ca(OCl)Cl + 2HCl = CaCl2 + Cl2 + H2O ।  ব্লিচিং পাউডারের জারণ ও বিরঞ্জন ধর্ম এই প্রাপ্য ক্লোরিনের ওপর নির্ভর করে । খোলা বায়ুতে ব্লিচিং পাউডার রাখলে, Cl2 এর গন্ধ নির্গত হয়, কারণ বায়ুর জলীয় বাষ্প এবং CO2 দ্বারা ব্লিচিং পাউডার বিয়োজিত হয়ে Cl2 মুক্ত করে ।

     Ca(OCl)Cl + CO2 = CaCO3 + Cl2 ↑ ।

• ব্যবহার:-

[i] জীবাণুনাশক হিসাবে, জলকে বিশুদ্ধ করতে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা হয় ,

[ii] ক্লোরোফর্ম প্রস্তুতিতে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা হয়, 

[iii] কাগজশিল্পে এবং বস্ত্র বিরঞ্জন করতে ব্যবহৃত হয় ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা হয় । কাপড়কে বিরঞ্জন করতে হলে প্রথমে NaOH দ্রবণে ফুটিয়ে পরে ব্লিচিং পাউডারের পাতলা দ্রবণে ডুবিয়ে রাখার পর শুকানো হয় । উত্পন্ন Cl2 কাপড়কে বিরঞ্জন করে । Cl2 মুক্ত করার জন্য কাপড়কে সোডিয়াম কার্বনেট দ্রবণে ও সোডিয়াম সালফাইট দ্রবণে ডুবিয়ে জল দিয়ে ধুয়ে রাখা হয় ।
 একটি পরিমাণু সবসময়ই চার্জ নিরপেক্ষ থাকে।কারণ একটি পরমাণুতে যতসংখ্যক প্রোটন থাকে ততগুলোই ইলেকট্রন থাকে।তাই ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আধান একই পরিমাণে থাকায় পরমাণু চার্জ নিরপেক্ষ।তবে যখন কোন পরমাণু ইলেকট্রন আধান প্রদান করে তখন ইলেকট্রন এর সংখ্যা হ্রাস বৃদ্ধির জন্য পরমাণু ধনাত্মক বা ঋণাত্মক চার্জযুক্ত হয়।
নাইট্রিক অ্যাসিডের শনাক্তকরণ বলয় পরীক্ষা:- একটি টেস্ট-টিউবে নাইট্রিক অ্যাসিড কিংবা নাইট্রেট লবণের জলীয় দ্রবণ নিয়ে ওর সঙ্গে সদ্যপ্রস্তুত FeSO4 দ্রবণ যোগ করা হল । এইবার টেস্ট-টিউবের গা-বেয়ে গাঢ়   সালফিউরিক অ্যাসিড [H2SO4] ধীরে ধীরে দ্রবণের সঙ্গে যোগ করা হল । গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিড [H2SO4] ভারী বলে তলায় চলে যায় এবং নীচের স্তর গঠন করে । এর ওপরে দ্রবণের স্তর থাকে । এই দুই তরলের সংযোগস্থলে একটা বাদামী বলয় গঠিত হয় । এই পরীক্ষাকে বলয় পরীক্ষা [Ring Test] বলা হয় । নাইট্রিক অ্যাসিড [HNO3] এবং নাইট্রেট লবণের শনাক্তকরণে এই পরীক্ষা করা হয় ।
1803 খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ বিজ্ঞানী স্যার জন ডালটন পদার্থের গঠন সম্পর্কে একটি সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব প্রকাশ করেন । এই তত্ত্বটি ডালটনের পরমাণুবাদ [Dalton's Atomic Theory] নামে খ্যাত । পরমাণুবাদের মূল কথাগুলি হল :

(১) সব পদার্থই অসংখ্য অতি ক্ষুদ্র অবিভাজ্য নিরেট কণা দ্বারা গঠিত । পদার্থের এই ক্ষুদ্রতম কণার নাম পরমাণু [atom] ।

(২) পরমাণুগুলিকে রাসায়নিক প্রক্রিয়া দ্বারা ভাঙ্গা যায় না, সৃষ্টি করা যায় না বা ধ্বংস করা যায় না । পরমাণু অবিনশ্বর ও অবিভাজ্য ।

(৩) একই মৌলিক পদার্থের পরমাণুগুলি ওজনে ও ধর্মে অভিন্ন ।

(৪) বিভিন্ন মৌলিক পদার্থের পরমাণুগুলি ওজনে ও ধর্মে ভিন্ন ।

(৫) বিভিন্ন মৌলিক পদার্থের পরমাণুগুলি পূর্ণসংখ্যার সরল অনুপাতে পরস্পর যুক্ত হয়ে যৌগিক পদার্থ উত্পন্ন করে । যেমন — 1 : 1,  1 : 2,  2 :  3 ইত্যাদি ।

(৬) একই মৌলিক পদার্থের পরমাণুগুলি এক বা একের অধিক অনুপাতে যুক্ত হয়ে একাধিক যৌগিক পদার্থ উত্পন্ন করে । যেমন — NO,  NO2,  H2O,  H2O2 ..... ইত্যাদি ।




► পরমাণুর গঠন [Structure of Atom] :- পদার্থের পরমাণু সাধারণত ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন এই তিনটি মূল কণা নিয়ে গঠিত । কেবলমাত্র সাধারণ হাইড্রোজেনের পরমাণুতে নিউট্রন নেই । প্রত্যেক পরমাণু দুটি অংশে বিভক্ত । যথা —

(i) ধনাত্মক তড়িৎযুক্ত পরমাণু-কেন্দ্রক বা পরমাণুর নিউক্লিয়াস [nucleus]

(ii) নিউক্লিয়াসের বাইরে ইলেকট্রন-মহল [extra nuclear electrons] ।



[i] ধনাত্মক তড়িৎযুক্ত পরমাণু-কেন্দ্রক বা পরমাণুর নিউক্লিয়াস:- বিজ্ঞানী রাদারফোর্ড সোনার পাতে আলফা কণার [α -কণা] বিক্ষেপ পরীক্ষা করে প্রথম নিউক্লিয়াসের ধারণা করেন । পরীক্ষা লব্ধ ফল বিশ্লেষণ করে রাদারফোর্ড সিদ্ধান্ত করেন যে —পরমাণুর কেন্দ্রে একটি ক্ষুদ্র স্থানে পরমাণুর প্রায় সমগ্র ভর এবং ধনাত্মক আধান সঞ্চিত থাকে । পরমাণুর কেন্দ্রে ধনাত্মক আধানযুক্ত, ভারী ও অতি ক্ষুদ্র অংশটির নাম পরমাণু-কেন্দ্রক বা নিউক্লিয়াস ।



[ii] নিউক্লিয়াসের বাইরে ইলেকট্রন মহল:- তড়িৎ নিরপেক্ষ পরমাণুতে প্রোটন ও ইলেকট্রন সমান সংখ্যায় থাকে । ইলেকট্রনগুলি নিউক্লিয়াসের বাইরে পরমাণুর বাকি অংশে বিভিন্ন কক্ষে বিন্যস্ত থাকে । ইলেকট্রনের এই বিন্যাসকে ইলেকট্রন-মহল বলে ।
অণুতে কার্বনের সর্ববহিস্থ স্তরের সবগুলো অর্থাৎ ৪টি ইলেকট্রন কার্বন-কার্বন বন্ধন তৈরীতে ব্যবহৃত হয়, ফলে প্রবাহিত হবার মত কোন ইলেক্ট্রন থাকে না। অপর দিকে, গ্রাফাইটে কার্বনের সর্ববহিস্থ স্তরের ৩টি ইলেক্ট্রন কার্বন-কার্বন বন্ধন তৈরীতে ব্যবহৃত হয়, ফলে প্রতিটি পরমাণুতে একটি ইলেক্ট্রন থেকে যায়, যা গ্রাফাইটের পুরো কাঠামো জুড়ে প্রবাহিত হতে পারে। আর ইলেক্ট্রনের প্রবাহই যেহেতু বিদ্যুৎ প্রবাহ তাই গ্রাফাইট বিদ্যুৎ পরিবাহী।