Recent Post
Loading...

 ১৯২৩ সালে বিজ্ঞানী ফাজান পোলারায়ন সম্পর্কিত একটি নীতি প্রদান করেন। এ নীতি ফাজানের নীতি নামে পরিচিত।

এবার জেনে নিই, পোলারায়ন কী? পোলারায়ন হলো ক্যাটায়ন কর্তৃক অ্যানায়নের ইলেকট্রন মেঘের বিকৃতির ঘটনা। অর্থাৎ আয়নিক যৌগে দুটি বিপরীত চার্জযুক্ত আয়ন পরস্পরের কাছাকাছি এলে ক্যাটায়নের ধনাত্মক চার্জ অ্যানায়নের ঋণাত্মক ইলেকট্রন মেঘকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে। ফলে অ্যানায়নের ইলেকট্রন মেঘের বিকৃতি দেখা দেয়। ইলেকট্রন মেঘের এ ধরনের বিকৃতির ঘটনাকে পোলারায়ন বলে।

সুতরাং পোলারায়ন যত বেশি হবে ওই আয়নিক যৌগের সমযোজী বৈশিষ্ট্যও তত বেশি হবে। পোলারায়ন সম্পর্কিত ফাজানের নীতিগুলো হলো :

১। ক্যাটায়নের আকার যত ছোট হবে

২। অ্যানায়নের আকার যত বড় হবে

৩। ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নের চার্জ যত বেশি হবে

৪। ক্যাটায়নে d ও f অরবিটালে ইলেকট্রন থাকলে ওই যৌগের পোলারায়ন বেশি হবে। অর্থাৎ ওই যৌগটির সমযোজী বৈশিষ্ট্যও তত বেশি হবে।

এবার কিছু উদাহরণের মাধ্যমে ফাজানের নীতির প্রয়োগ দেখে নিই।

উদাহরণ-১

CaCl2 ও AlCl3 যৌগ দুটির মধ্যে কোনটি বেশি আয়নিক এবং কেন?


=>CaCl2 ও AlCl3 যৌগ দুটির ক্যাটায়ন যথাক্রমে Ca2+ I Al3+ এবং অ্যানায়ন হলো Cl-। ফাজানের নীতি অনুসারে ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নের চার্জ যত বেশি হবে, পোলারায়ন তত বেশি হবে। আর পোলারায়ন বেশি হলে যৌগটি বেশি সমযোজী হবে। এখন তোমাদের মনের মধ্যে প্রশ্ন জাগতে পারে যে আমরা যৌগ দুটির মধ্যকার ক্যাটায়নের চার্জসংখ্যা নিয়ে কার পোলারায়ন বেশি হবে তা নির্ণয় করব, নাকি অ্যানায়নের চার্জসংখ্যা নিয়ে পোলারায়ন কার বেশি হবে তা নির্ণয় করব। যেহেতু যৌগ দুটির মধ্যে অ্যানায়ন একই অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে আমাদের ক্যাটায়নের চার্জসংখ্যা নিয়ে কাজ করতে হবে। Ca2+ ও Al3+ ক্যাটায়ন দুটি মধ্যকার চার্জসংখ্যা যথাক্রমে +2 এবং +3, যেহেতু Ca2+ ও Al3+ -এর মধ্যে Al3+ -এর চার্জ বেশি, ফলে AlCl3 যৌগের পোলারায়ন বেশি হবে। অর্থাৎ AlCl3 যৌগটি বেশি সমযোজী হবে। অন্যদিকে Ca2+-এর চার্জসংখ্যা Al3+ -এর তুলনায় কম হওয়ায় CaCl2 যৌগটির পোলারায়ন কম হবে অর্থাৎ যৌগটি বেশি আয়নিক হবে।

সুতরাং  CaCl2 ও AlCl3 যৌগ দুটির মধ্যে CaCl2 যৌগটি বেশি আয়নিক হবে।