Recent Post
Loading...

 


কলিচুন [Slaked Lime, Ca(OH)2]:-


কলিচুনের রাসায়নিক নাম ক্যালসিয়াম হাইড্রক্সাইড এবং রাসায়নিক সংকেত Ca(OH)2  ।  পাথুরে চুনের (CaO) সঙ্গে জল মিশিয়ে কলিচুন প্রস্তুত করা হয়  ।

CaO + H2O = Ca(OH)2 + উত্পন্ন তাপ ।

• প্রকৃতি:-

[i] কলিচুন সাদা, গন্ধহীন, অনিয়তাকার একটি অজৈব কঠিন পদার্থ ।

[ii] কলিচুন অনুদ্বায়ী পদার্থ এবং জলে সামান্য দ্রাব্য ।  উষ্ণতা বৃধিতে এর দ্রাব্যতা কমে যায় । তাই গরম জলের চেয়ে ঠান্ডা জলে কলিচুনের দ্রাব্যতা বেশি হয় ।


[iii] জলে কলিচুন মেশালে ওপরের অংশে যে স্বচ্ছ দ্রবণ পাওয়া যায়, তাকেই চুনজল বলে । চুনের পরিমাণ বেশি হলে মিশ্রণটি দুধের মতো সাদা দেখায় । একে চুনগোলা [milk of lime] বলে ।

[iv] কলিচুন তীব্র ক্ষারীয় পদার্থ । অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে লবণ এবং জল উত্পন্ন করে ।

[v] অ্যামোনিয়াম লবণের সঙ্গে উত্তপ্ত করলে অ্যামোনিয়া গ্যাস নির্গত হয় ।

[vi] কলিচুনের সঙ্গে ক্লোরিন মিশিয়ে ব্লিচিং পাউডার উত্পন্ন করা হয় ।

[vii] কলিচুন CO2 শোষণ করে । স্বচ্ছ চুনজলের মধ্যে CO2 চালনা করলে অদ্রাব্য CaCO3 উত্পন্ন হয় । তাই চুনজল ঘোলা হয়ে থাকে ।

     Ca(OH)2 + CO2 = CaCO3 + H2O

• ব্যবহার:-

[i] ব্লিচিং পাউডার এবং কষ্টিক সোডা প্রস্তুতিতে কলিচুন ব্যবহার করা হয় ।

[ii] সলভে পদ্ধতিতে প্রাপ্ত অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড এবং কয়লার অন্তর্ধুম পাতনের ফলে প্রাপ্ত অ্যামোনিয়া-দ্রব্য থেকে অ্যামোনিয়া গ্যাস পুনরুদ্ধারে কলিচুন ব্যবহৃত হয় ।

[iii] খরজলকে মৃদু করতে কলিচুন ব্যবহৃত হয় ।

[iv] সিমেন্ট কংক্রীট প্রস্তুতিতে এবং অট্টালিকা নির্মাণে কলিচুন ব্যবহার করা হয় ।

[v] মাটির অ্যাসিড ধর্ম হ্রাস করতে কলিচুন ব্যবহার করা হয় ।


[vi] বাড়ির দেওয়াল চুনকাম করতে কলিচুনের ঘন জলীয় দ্রবণ ব্যবহৃত হয় ।


 ক্ষার ধাতুঃ  যে সকল ধাতু পানির সাথে বিক্রিয়া করে তীব্র ক্ষার গঠন করে তাদেরকে ক্ষার ধাতু বলে।

পর্যায় সারণির এক নম্বর গ্রুপে এদের অবস্থান। 
ক্ষার ধাতু ৬টি। লিথিয়াম (Li), সোডিয়াম (Na), পটাশিয়াম (K), রুবিডিয়াম (Rb), সিজিয়াম (Cs), এবং ফ্রান্সিয়াম(Fr). 
ইলেকট্রন বিন্যাস করলে এদের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরের s - অরবিটালে একটি ইলেকট্রন থাকে। ক্ষার ধাতু সমূহ অধাতুর সাথে বিক্রিয়া করে আয়নিক লবণ গঠন করে। ক্ষার ধাতু গুলির আয়নিকরণ শক্তি, ইলেকট্রন আসক্তি, তড়িৎ ঋণাত্মকতা যেকোনো পর্যায়ের অন্য মৌল গুলির চেয়ে কম হয়। ক্ষার ধাতু সমূহ সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তর থেকে একটি ইলেকট্রন ত্যাগ করে একক ধনাত্মক আয়ন গঠন করে এবং এদের নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করে স্থিতিশীলতা লাভ করে। ক্ষার ধাতু সমূহ অধিক সক্রিয় হয়।

মৃৎক্ষার ধাতুঃ  পর্যায় সারণির গ্রুপ -২ এর মৌল সমূহ কে মৃৎক্ষারীয় ধাতু বলে। গ্রুপ- 2 এর মৌল ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামকে মাটির উপাদান হিসেবে পাওয়া যায়। ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম এর সাথে গ্রুপ -২ এর অন্য মৌল গুলির ধর্মের সাদৃশ্য থাকার কারণে এদেরকে মৃৎক্ষার ধাতু বলে। এ গ্রুপের মৌল সমূহ বেরিলিয়াম (Be), ম্যাগনেসিয়াম (Mg), ক্যালসিয়াম (Ca), স্ট্রোনসিয়াম (Sr), বেরিয়াম (Ba), রেডিয়াম (Ra). মৃৎক্ষারীয় ধাতুসমূহ পানির সাথে বিক্রিয়া করে হাইড্রোক্সাইড গঠন করে। মৃৎ ক্ষারীয় ধাতুর হাইড্রোক্সাইড গুলো এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি গঠন করে। মৃৎক্ষার ধাতুর সক্রিয়তা ক্ষার ধাতুর থেকে কিছুটা বেশি। এদের আয়নিকরণ শক্তি, ইলেকট্রন আসক্তি, তড়িৎ ঋণাত্মকতা ক্ষার ধাতুর থেকে বেশি। মৃৎক্ষার ধাতুর বহিঃস্হ শক্তিস্তরে নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাস অপেক্ষা দুটি ইলেকট্রন বেশি থাকে এইজন্য এরা স্থিতিশীলতা লাভের জন্য সর্ববহিঃস্থ শক্তি স্তর থেকে দুইটি ইলেকট্রন ত্যাগ করে দ্বি- ধনাত্মক আয়ন গঠন করে এবং স্থিতিশীলতা প্রাপ্ত হয়। এরা কার্বনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ধাতুর কার্বাইড গঠন করে। আবার এরা নাইট্রোজেন এর সঙ্গে বিক্রিয়া করে ধাতুর নাইট্রাইড গঠন করে।



Na হতে একটি ইলেকট্রন অপসারিত হয়েছে।

Na~e---->Na+

অর্থাত্ Na+ এ ইলেকট্রন সংখ্যা (11-1)=10 টি কিন্তু এতে প্রটন রয়েছে 11 টি।তাই এতে একটি (+) চার্জ বিদ্যমান।অপরদিকে Na পরমাণুতে রয়েছে 11 টি প্রোটন।অর্থাত্ধনাত্মক ও ঋনাত্মক চার্জের সংখ্যা সমান তাই Na চার্জ নিরপেক্ষ।


 

সূত্র: কেন্দ্রীয় পরমাণুর সবশেষ স্তরের ইলেকট্রন সংখ্যা+হাইড্রোজেন বা হ্যালোজেন সংখ্যা(+ অথবা - চার্জ) যেমন: অ্যামোনিয়ার ক্ষেত্রে N এর সবশেষ স্তরের e সংখ্যা ৫ এবং এর সাথে ৩ টা H যুক্ত। সুতরাং ৫+৩=৮। অর্থাৎ অষ্টক সূত্র মানে।



ডিটারজেন্ট [Detergent]:-

ডিটারজেন্ট হল লবণ জাতীয় জৈব ও অজৈব পদার্থের মিশ্রণ । ডিটারজেন্টের গঠন অনেকটা সাবানের মত । এর অণুর একটি অংশ জলঅনুরাগী এবং অপরটি জলবিরাগী । এগুলি কয়লা ও পেট্রোলিয়ামের হাইড্রোকার্বন থেকে তৈরি হয় । হাইড্রোকার্বনের অংশটি জলবিরাগী এবং জলঅনুরাগী অংশটি সালফেট বা সালফোনেট দিয়ে গঠিত । ওয়াশিং পাউডারে প্রায় 10-30% ডিটারজেন্ট থাকে । ডিটারজেন্টে সোডিয়াম সালফেট ও সোডিয়াম সিলিকেট মেশানো হয়, কারণ এরা ডিটারজেন্টকে শুষ্ক রাখে । ডিটারজেন্টের সঙ্গে সোডিয়াম ট্রাইপলি ফসফেট বা সোডিয়াম কার্বনেট মিশিয়ে একে ক্ষারীয় করলে এর ময়লা পরিষ্কারের ক্ষমতা অনেকগুণ বেড়ে যায় । ডিটারজেন্টের কার্বক্সি মিথাইল সেলুলোজ উপাদানটি জলের মধ্যে ময়লার অণুগুলিকে প্রলম্বিত রাখে । ব্লিচিং পদার্থ হিসাবে সোডিয়াম পারবোরেট মেশালে শুভ্রতা বাড়ে ।
সাবানের পরিবর্তে জামা-কাপড় কাচা বা ধোয়ার জন্য বহুল পরিমাণে ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে । সমস্ত ডিটারজেন্ট কিন্তু একই সংযুক্তি থাকে না । প্রচলিত দুটি সিন্থেটিক ডিটারজেন্ট হল— (1) দীর্ঘ শৃঙ্খল সোডিয়াম অ্যালকিল সালফেট [CH3 - (CH2)10 - CH2 - SO-4Na+] এবং (2) দীর্ঘ শৃঙ্খল সোডিয়াম অ্যালকিল বেঞ্জিন সালফানেট [CH3 - (CH2)11 - C6H4 - SO-3Na+] । বর্তমানে দ্বিতীয় ডিটারজেন্টটি বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত হচ্ছে ।
• প্রকৃতি:-
[i] ডিটারজেন্ট বস্তুটি গন্ধহীন, বর্ণহীন অনুদ্বায়ী কঠিন পদার্থ ।
[ii] এটি কঠিন ও তরল উভয় প্রকারের হয় এবং এটি একটি জৈব লবণ যা জলে সম্পূর্ণ দ্রবণীয় ।
[iii] সাধারণ অবস্থায় ডিটারজেন্ট প্রশম পদার্থ কিন্তু জলে দ্রবীভূত করলে ক্ষারীয় হয় ।
• ব্যবহার:- বর্তমান যুগে ডিটারজেন্টের ব্যবহার ব্যাপক । শুধুমাত্র কাপড় কাচার কাজ নয়, শ্যাম্পুতে, মুখ পরিষ্কার [Mouth wash] করতে ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা হয় । তাছাড়া জীবাণুনাশক হিসাবে ও খর জলে ফেনা উত্পন্ন করতে সাবানের অসুবিধা হলেও ডিটারজেন্টের হয় না । অ্যাসিড মিশ্রিত জল হলেও ডিটারজেন্ট ব্যবহারে অসুবিধা হয় না ।
• পরিবেশ দুষণ:- ডিটারজেন্টগুলি বায়োডিগ্রেডেবল নয়, সহজে এরা জল বা মাটির সঙ্গে মিশে অন্য পদার্থে বিয়োজিত হতে পারে না । এদের দীর্ঘ শৃঙ্খলগুলি প্রায় অবিকৃতভাবে জলের মধ্যে থাকে, তাতে জল দুষিত হয় । পরিণামে জলজ জীবনের ক্ষতি হয় এবং পরিবেশ দূষণ ঘটে ।



কোন নির্দিষ্ট উষ্ণতায় ১০০ গ্রাম দ্রাবকে গ্রামে প্রকাশিত যে পরিমাণ দ্রব দ্রবীভূত হয়ে সম্পৃক্ত দ্রবণ উৎপন্ন করে     তাকে ঐ উষ্ণতায় ঐ দ্রবের দ্রাব্যতা বলে। 

দ্রাব্যতা পদার্থের একটি ভৌত ধর্ম। কোন নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট পরিমাণ দ্রাবককে সম্পৃক্ত দ্রবণে পরিণত করতে যে পরিমাণ দ্রব দ্রবীভূত করতে হয় তাকেই ঐ তাপমাত্রায় ঐ দ্রবের দ্রাব্যতা বলে। কোন পদার্থের দ্রাব্যতা প্রকৃতপক্ষে ব্যবহৃত দ্রাবক, তাপমাত্রা ও চাপের উপর নির্ভর করে। তাপমাত্রার মত চাপও দ্রবণকে প্রভাবিত করে, সেটা তরল হোক বা বায়বীয়ই হোক। তাই দ্রাব্যতার সংজ্ঞা দেওয়ার সময় একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও চাপ উল্লেখ করা হয়। দ্রাব্যতা প্রকাশ করা হয় ঘনমাত্রা প্রকাশের বিভিন্ন একক (মোলারিটি, মোলালিটি, নরমালিটি ইত্যাদি) দ্বারা। কারণ দ্রাব্যতা মূলত কোন দ্রবণে দ্রবের সর্বোচ্চ ঘনমাত্রাকেই প্রকাশ করে । দ্রাব্যতা একটি আনুপাতিক রাশি। এর কোন একক নেই। যেমনঃ ৩৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় KNO3 এর দ্রাব্যতা হল 60 তাহলে বোঝা যাবে যে ঐ তাপমাত্রায় 100g পানিতে সর্বাধিক 60g KNO3 দ্রবীভূত হয়ে দ্রবণ উৎপন্ন করবে ।






বিক্রিয়া তাপের উপর ভিত্তি করে রাসায়নিক বিক্রিয়াকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

যথাঃ তাপোৎপাদী ও তাপহারী।

তাপোৎপাদী ও তাপহারী বিক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপঃ

১. যে রাসায়নিক পরিবর্তনের ফলে তাপশক্তির শোষণ এবং বিক্রিয়া অঞ্চলের তাপমাত্রা হ্রাস পায় তাকে তাপহারী বিক্রিয়া বলে।

অপরদিকে যে রাসায়নিক পরিবর্তনের ফলে তাপশক্তি উৎপন্ন হয় এবং বিক্রিয়া অঞ্চলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় তাকে তাপোৎপাদী বিক্রিয়া বলে।

২. তাপহারী বিক্রিয়ায় উৎপাদের মোট এনথালপি বিক্রিয়কের মোট এনথালপি অপেক্ষা বেশি হয়।

কিন্তু তাপোৎপাদী বিক্রিয়ায় উৎপাদের মোট এনথালপি বিক্রিয়কের মোট এনথালপি অপেক্ষা কম হয়।

 ৩. তাপহারী বিক্রিয়ায় তাপের শোষণ এবং ΔH এর মান ধনাত্মক হয়।

কিন্তু তাপোৎপাদী বিক্রিয়ায় তাপ উৎপন্ন হয় এবং ΔH এর মান ঋণাত্মক হয়।



জৈব রসায়নেঅ্যালকিন বা অলিফিন হলো অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন যাতে অবশ্যই একটি বা একাধিক কার্বন-কার্বন দ্বিবন্ধন (>C=C<) থাকবে।
সরলতম অ্যালকিনের উদাহরণ হল ইথিন(C2H4)।
অ্যালকোহল এর সাথে দ্বিগুণ পরিমাণ গাঢ় সালফিউরিক এসিড যোগ করে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় অ্যালকাইল হাইড্রোজেন সালফেট উৎপন্ন করা হয়। একে ১৬৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে অ্যালকিন। উৎপন্ন হয়।


CH3COOH + H2SO4(100 °C)→ CH3CHSO4 (165 °C) --> C2H4


C12H26 (500 °C)→ C10H22 + C2H4



i) অ্যালকাইন থেকে অ্যালকেন:

Ni চূর্ণ প্রভাবকের উপস্থিতিতে২০০' C তাপমাত্রায় প্রোপাইন এক অনু হাইড্রোজেন এর সাথে যুক্ত হয়ে প্রোপিন উৎপন্ন করে।উৎপন্ন প্রোপিন আবার এক অনু হাইড্রোজেনের সাথে যুক্ত হয়ে প্রোপেন উৎপন্ন করে।

ii) ফ্যাটি এসিডের সোডিয়াম লবনকে সোডালাইমের সাথে উওপ্ত করলে অ্যালকেন উৎপন্ন হয়।

iii) ধাতব প্রভাবক(Ni) উপস্থিতিতে ১৮০-২০০' C তাপমাত্রায় অ্যালকিন হাইড্রোজেনের বিক্রিয়া করে অ্যালকেন উৎপন্ন হয়।

iv) কার্বন মনোক্সাইড ও হাইড্রোজেন অথবা কার্বন ডাইঅক্সাইড ও হাইড্রোজেনের মিশ্রণকে ২৫০ তাপমাত্রায় উওপ্ত প্রভাবকের উপর দিয়ে প্রবাহিত করলে প্রচুর পরিমানে মিথেন উৎপন্ন হয়।


অ্যালকাইল হ্যালাইডের শুষ্ক ইথারীয় দ্রবণে ধাতব সোডিয়াম যোগ করে রিফ্লাক্স করলে উচ্চতর অ্যালকেন উৎপন্ন করার বিক্রিয়াকে উর্টজ বিক্রিয়া বলে।

   2RX + 2Na = R-R + 2NaX 

এখানে, R = অ্যালকাইল মূলক

         X= হ্যালাইড

উল্লেখ্য অনেকেই মনে করে উর্টজ বিক্রিয়া দ্বারা কেবল মাত্র জোড় সংখ্যক অ্যালকাইল মূলক বিশিষ্ট অ্যালকেন উৎপন্ন সম্ভব ! কিন্তু এ ধারণা ভুল !


একই ধরণের দুটি অ্যালকাইল হ্যালাইড ব্যবহার না করে যদি একটি জোড় ও একটি বিজোড় অ্যালকাইল হ্যালাইড ব্যবহার করা হয় তবে বিজোড় অ্যালকাইল মূলক বিশিষ্ট অ্যালকেন উৎপন্ন সম্ভব !

উদাহরণ-

CH3Cl + C2H5Cl + 2Na = 2NaCl + CH3-C2H5 (C3H8)



ডিকার্বক্সিলেশনঃ  জৈব এসিডের 

(R - COONa) সোডিয়াম লবণকে সোডালাইম {NaOH(CaO)} দ্বারা উত্তপ্ত করলে অ্যালকেন (R-H) প্রস্তুত হয়। 
জৈব এসিড থেকে অ্যালকেন প্রস্তুতির এ বিক্রিয়াকে ডিকার্বক্সিলেশন বিক্রিয়া বলে। 

এ বিক্রিয়ায় উৎপন্ন অ্যালকেনে, বিক্রিয়ক এসিডের লবণ থেকে একটি কার্বন পরমাণু কম থাকে বলে এরূপ নামকরণ করা হয়।

R-COONa+NaOH(CaO) ---->R-H +  Na₂CO₃(CaO)
 
যেমনঃ সোডিয়াম ইথানয়েট কে সোডালাইম সহ উত্তপ্ত করলে মিথেন উৎপন্ন হয়।

CH₃COONa + NaOH(CaO) ----->  CH₄ +  
                                                 Na₂CO₃(CaO)

 
এ বিক্রিয়ায় উৎপন্ন মিথেনে বিক্রিয়ক সোডিয়াম ইথানয়েট থেকে একটি কার্বন কম থাকে। 
এ বিক্রিয়ার মাধ্যমে জৈব যৌগে কার্বন পরমাণু হ্রাস করা যায়।



যেসব যৌগের অণুতে এক বা একাধিক বেনজিন চক্র বিদ্যমান থাকে তাদেরকে অ্যারোমেটিক যৌগ বলে। 

উদাহরণ : বেনজিন (C 66), পিরিডিন (C 55N) এবং ফেনল (C 65OH) ইত্যাদি। এসব যৌগ সমতলীয় চক্রিয় হয় এবং এতে একান্তর দ্বি-বন্ধনের উপস্থিতি থাকে। অ্যারোমেটিক যৌগসমূহ ৫, ৬ বা ৭ সদস্যের সমতলীয় চাক্রিয় যৌগ



দুটি ভিন্ন ধাতুর মৌল দ্বারা গঠিত তড়িৎদ্বারকে দুটি ভিন্ন তড়িৎ বিশ্লেষ্য দ্রবণে আংশিক নিমজ্জিত করে দ্বি-প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট যে কোষ গঠন করা হয় তাকে গ্যালভানিক কোষ বলে।

গ্যালভানিক কোষে রাসায়নিক শক্তি বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। 

যে ধাতুর তড়িৎদ্বার অধিক সক্রিয় তাকে অ্যানোড হিসাবে এবং যে ধাতুর তড়িৎদ্বার কম সক্রিয় তাকে ক্যাথোড হিসেবে ব্যবহার করা হয়। গ্যালভানিক কোষে অ্যানোডে জারণ ও ক্যাথোড বিজারণ সংঘটিত হয়। অ্যানোডে ধাতব পরমাণু ইলেকট্রন ত্যাগ করে ধনাত্মক আয়ন হিসেবে দ্রবণে যায়। এজন্য অ্যানোডে ইলেকট্রন ঘনত্ব বেশি থাকে। 

যার কারণে অ্যানোড ঋণাত্মক হয়। অপরদিকে ক্যাথোডে ইলেকট্রন ঘনত্ব কম থাকায় গ্যালভানিক কোষে ক্যাথোড ধনাত্মক হয়।




হাইড্রোজেন সালফাইডের জলীয় দ্রবণ অম্লীয়। 

কারণ এর জলীয় দ্রবণে প্রোটন আয়ন (H+) ত্যাগ করে। এই প্রোটন আয়ন নীল লিটমাসকে লাল লিটমাসকে পরিণত করে। 

H₂S(aq) <-----> H+(aq)+HS-(aq)

নীল লিটমাস + H+(aq) ------> লাল লিটমাস

আবার, সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড এর সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি গঠন করে। 

H₂S(g) + 2NaOH(aq) -----> Na₂S(aq) + 2H₂O(l)

সেজন্য বলা যায়, হাইড্রোজেন সালফাইড এর জলীয় দ্রবণ অম্লধর্মী।



 উদ্ভিদ জগতের প্রধান দুটি পলিস্যাকারাইড হলো স্টার্চ ও সেলুলোজ। 

সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ এ দুটি পলিস্যাকারাইড প্রস্তুত করে। এসকল পলিস্যাকারাইডের মনোমার বা ক্ষুদ্র একক অণু গ্লুকোজ। উদ্ভিদের সবুজ পাতায় ক্লোরোফিল ও সূর্যালোকের প্রভাবে বায়ু থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও মাটি থেকে মূলের মাধ্যমে সংগৃহীত পানি রাসায়নিক ভাবে পরিবর্তিত হয়ে গ্লুকোজ (C₆H₁₂O₆) নামক মনোস্যাকারাইড তৈরি করে। এ পদ্ধতিকে সালোকসংশ্লেষণ বলে। 

6CO₂ +6H₂O -----> C₆H₁₂O₆ +6O₂


অন্যদিকে, একই উদ্ভিদে হাজার হাজার গ্লুকোজ অণু পলিমারকরনের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে উদ্ভিদ দেহের গঠন উপাদান সেলুলোজ উৎপন্ন করে।

আবার, ভিন্নভাবে অসংখ্য গ্লুকোজ অণু উদ্ভিদ দেহে যুক্ত হয়ে স্টার্চ অণু সৃষ্টি করে এবং উদ্ভিদের বীজ, রূপান্তরিত মূল ও কান্ডে ভবিষ্যতের খাদ্যরূপে সঞ্চিত হয়। 
এইরূপে প্রাকৃতিক পলিস্যাকারাইড স্টার্চ ও সেলুলোজ [(C₆H₁₀O₅)n] গঠিত হয়। 

nC₆H₁₂O₆  -----> (C₆H₁₀O₅)n + nH₂O

মানুষের পরিপাকতন্ত্রে স্টার্চ ও জীবজন্তুর পরিপাকতন্ত্রে স্টার্চ এবং সেলুলোজ ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়ায় গ্লুকোজে পরিণত ও শোষিত হয়ে রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে লিভারে পৌঁছালে গ্লাইকোজেন বা প্রাণীজ স্টার্চ রূপে অব্যবহৃত গ্লুকোজ জমা থাকে।

 

কার্বোহাইড্রেট হলো পলিহাইড্রক্সি অ্যালডিহাইড বা কিটোন অথবা এমন সব জৈব যৌগ যাদেরকে আর্দ্র বিশ্লেষণ করলে পলিহাইড্রোক্সি অ্যালডিহাইড বা পলিহাইড্রোক্সি কিটোন উৎপন্ন হয়। 

কার্বোহাইড্রেট দুই প্রকারঃ 
১. শর্করা বা চিনি 
২. অশর্করা বা ননসুগার।

 

যে সকল পলিমার প্রাকৃতিক উপায়ে সৃষ্টি হয় তাদেরকে প্রাকৃতিক পলিমার বলে। 
প্রকৃতিতে প্রাণী ও উদ্ভিদ বিভিন্ন প্রকার পলিমার গঠন করে। এসকল পলিমার তাদের দেহের গঠন, খাদ্য, বংশগত ধারা সংরক্ষন, দেহের জৈবিক বিক্রিয়ায় প্রভাবক হিসেবে ক্রিয়া সম্পাদন এবং দেহের প্রতিরক্ষামূলক পরিবেশ সৃষ্টি প্রভৃতি ভূমিকা পালন করে। 

এসব প্রাকৃতিক পলিমারকে মোটামুটি তিনটি বৃহৎ শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়। 
১. পলিস্যাকারাইড সমূহ 
২. প্রোটিন সমূহ 
৩. নিউক্লিক অ্যাসিড সমূহ।

 

মনোস্যাকারাইড ও ডাইস্যাকারাইড কে শর্করা বা সুগার বলে। এরা দানাদার পদার্থ। পানিতে দ্রবণীয় ও স্বাদে মিষ্টি। এদের আণবিক সংকেত জানা থাকে। 
যেমনঃ গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ ইত্যাদি।

 

অদানাদার, অদ্রবণীয় এবং স্বাদহীন পলিস্যাকারাইডকে অশর্করা বা নন সুগার বলে। এদের আণবিক সংকেত জানা থাকে না। 
যেমনঃ স্টার্চ, সেলুলোজ ইত্যাদি।


যেসকল কার্বোহাইড্রেটকে পানি বিশ্লেষণের দ্বারা ক্ষুদ্রতর অণুতে পরিণত করা যায় না তাদেরকে মনোস্যাকারাইড বলে।

এদের সাধারণ সংকেত 
(Cn H₂n On) এবং তাদের অণুতে তিন হতে আটটি কার্বন পরমাণু থাকতে পারে। 

যেমনঃ পেন্টোজ (C₅H₁₀O₅), গ্লুকোজ (C₆H₁₂O₆) ইত্যাদি। 

 

যেসকল কার্বোহাইড্রেটকে আর্দ্র বিশ্লেষণ করে দুটি মনোস্যাকারাইড অণু পাওয়া যায় তাদেরকে ডাইস্যাকারাইড বলে। 
যেমনঃ ইক্ষু চিনি (C₁₂H₂₂O₁₁)। একে পানি দ্বারা আর্দ্রবিশ্লেষিত করলে সমপরিমাণ গ্লুকোজ (C₆H₁₂O₆) ও ফ্রুক্টোজ (C₆H₁₂O₆) পাওয়া যায়।

 

যেসকল কার্বোহাইড্রেটকে আর্দ্র বিশ্লেষণ করে অনেকগুলি মনোস্যাকারাইড অণু পাওয়া যায় তাদেরকে পলিস্যাকারাইড বলে। 
এরা পানিতে অদ্রবণীয় ও স্বাদহীন।

যেমনঃ স্টার্চ, সেলুলোজ ইত্যাদি।

যে সমস্ত পলিস্যাকারাইডকে আর্দ্র বিশ্লেষণ করলে নির্দিষ্ট সংখ্যক 
(২ থেকে ৯ টি মনোস্যাকারাইড) মনোস্যাকারাইড পাওয়া যায় সেই সকল পলিস্যাকারাইডকে অলিগোস্যাকারাইড বলে। 

যেমনঃ ডাইস্যাকারাইড, ট্রাইস্যাকারাইড ইত্যাদি।

 


 সেলুলোজ হলো  β-D- গ্লুকোজের পলিমার। β-D- গ্লুকোজের একটি অনুর এক নম্বর কার্বন (C₁) এর সাথে অপর একটি β-D- গ্লুকোজ অনুর  4নম্বর কার্বন (C₄) β-গ্লাইকোসাইড বন্ধনের মাধ্যমে সেলুলোজ গঠিত হয়। 

রাসায়নিকভাবে সেলুলোজ হলো গ্লাইকোসাইড বন্ধন দ্বারা গঠিত গ্লুকোজের সরল রৈখিক পলিমার। এতে 3000 থেকে 25000 একক 
β-D-গ্লুকোজ অনু বিদ্যমান থাকে।

 

স্টার্চ হচ্ছে α-D- গ্লুকোজের পলিমার। অনেকগুলি α-D-গ্লুকোজ অণু α-গ্লাইকোসাইড বন্ধনের মাধ্যমে স্টার্চ গঠন করে। 
তবে স্টার্চ অ্যামাইলোজ ও অ্যামাইলোপেকটিন নামক দুটি পলিস্যাকারাইড এর সমন্বয়ে গঠিত শাখা শিকল। 
এতে অ্যামাইলোজ 10 - 20% ও অ্যামাইলোপেকটিন 80 - 90% বিদ্যমান থাকে। 

 

প্রতীক ও সংকেতের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপঃ

১. কোন মৌলের পূর্ণনামের সংক্ষিপ্ত প্রকাশকে প্রতীক বলে।
অন্যদিকে, সংকেত হচ্ছে কোন পদার্থের সংক্ষিপ্ত প্রকাশ।

২. প্রতীক শুধু মৌলিক পদার্থের জন্য লেখা হয়। 
কিন্তু, সংকেত মৌলিক ও যৌগিক উভয় পদার্থের জন্য লেখা হয়।

৩. প্রতীক মৌলের একটি পরমাণুকে নির্দেশ করে।
অপরদিকে, সংকেত পদার্থের একটি অনুকে নির্দেশ করে।


 

যৌগমূলকঃ  একাধিক মৌলের একাধিক পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত একটি পরমাণু গুচ্ছ যা একটি আয়নের ন্যায় আচরণ করে এবং বিক্রিয়া শেষে অপরিবর্তিত থাকে, সেসব পরমাণু গুচ্ছকে যৌগমূলক বলে।


যেমনঃ সালফেট (SO₄² - ) যৌগমূলক। কারণ এখানে সালফার ও অক্সিজেন এই দুটি মৌলের পাঁচটি পরমাণু যুক্ত হয়ে একটি পরমাণু গুচ্ছ গঠন করে যার নির্দিষ্ট আধান -2 আছে।

যৌগমূলকের যে চার্জ বা আধান থাকে সেই চার্জ বা আধান থেকে ধনাত্মক  বা ঋণাত্মক চিহ্ন বাদ দিলে যে সংখ্যাটি থাকে তাই ঐ যৌগমূলকের যোজনী নির্দেশ করে।
 যেমনঃ কার্বনেট (CO₃² -) যৌগমূলকের আধান বা চার্জ -2. এখান থেকে ঋণাত্মক (-) চিহ্ন টি বাদ দিলে দুই (2) থাকে। এই দুই হচ্ছে কার্বনেট যৌগমূলকের যোজনী।

নিচে কিছু যৌগমূলকের নাম, সংকেত, যোজনী, জারণ সংখ্যা যথাক্রমে দেওয়া হল ঃ
 হাইড্রোক্সিল,   OH-,      1,      -1.
 নাইট্রেট.         NO₃ -     1,     -1.
 নাইট্রাইট        NO₂ -      1,     -1.
 বাই সালফেট  HSO₄ -     1,     -1.
 বাই কার্বনেট   HCO₃ -     1,     -1.
 সালফেট      SO₄² -         2,       -2
 সালফাইট     SO₃ ² -       2,      -2.
 কার্বনেট       CO₃ ² -       2,       -2.
 বাই ফসফেট   HPO₄² -   2,      -2
 ফসফেট         PO₄ ³ -    3,       -3.    অ্যামোনিয়াম    NH₄+    1,      +1  ফসফোনিয়াম.  PH₄+     1,      +1.



কোন মৌলের সর্বোচ্চ যোজনী ও সক্রিয় যোজনীর মধ্যে পার্থক্যকে ঐ মৌলের সুপ্ত যোজনী বলে।

সক্রিয় যোজনী বলতে মৌলটি কোন যৌগ গঠন অবস্হায় যে যোজনী ব্যবহার করে তা ঐ মৌলের সক্রিয় যোজনী।
যেমন-H₂SO₄ এ S - এর সক্রিয় যোজনী 6, আবার H₂S এ S এর সক্রিয় যোজনী ২,আবার SO₂ এ S এর সক্রিয় যোজনী 4.

S এর সর্বোচ্চ যোজনী 6.

সুপ্ত যোজনী নির্ণয়ঃ 

H₂SO₄ এ S এর সুপ্ত যোজনী=(S এর সর্বোচ্চ যোজনী)-(S এর সক্রিয় যোজনী)=6-6=0.

আবার, H₂Sএ S এর সুপ্ত যোজনী=(S এর সর্বোচ্চ যোজনী)-(S এর সক্রিয় যোজনী)=6-2=4.

আবার, SO₂ এ S এর সুপ্ত যোজনী=(S এর সর্বোচ্চ যোজনী)-(S এর সক্রিয় যোজনী)=6-4=2.

PCl₃এ P এর সুপ্ত যোজনী=(P এর সর্বোচ্চ যোজনী)-(P এর সক্রিয় যোজনী)=5-3=2. 

FeCl₃এ Fe এর সুপ্ত যোজনী =(Fe এর সর্বোচ্চ যোজনী)-(Fe এর সক্রিয় যোজনী)=3-3=0.FeCl₂ এ Fe এর সুপ্ত যোজনী=(Fe এর সর্বোচ্চ যোজনী)-(Fe এর সক্রিয় যোজনী) = 3-2=1.

সাধারনত যে সব মৌলের একাধিক যোজনী বিদ্যামান সেই মৌল গুলির সুপ্ত যোজনী নির্ণয় করা হয়।

 

যেসব মৌলের একাধিক যোজনী বিদ্যামান তাদেরকে পরিবর্তনশীল যোজনী বলা হয়। 
আধুনিক সংজ্ঞা মতে অধাতব মৌলের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে বিজোড় ইলেকট্রনের সংখ্যা ঐ মৌলের যোজনী নির্দেশ করে।

সালফারের স্বাভাবিক ও উত্তেজিত অবস্থায় ইলেকট্রন বিন্যাস নিম্নরূপঃ

S(16)----> 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3Px² 3Py¹ 3Pz¹

S*(16)---> 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3Px¹ 3Py¹ 3Pz¹3dxy¹

S²*(16)--->1s² 2s² 2p⁶ 3s¹ 3Px¹ 3Py¹ 3Pz¹ 3dxy¹ 3dyz¹

S এর ইলেকট্রন বিন্যাস থেকে দেখা যায় স্বাভাবিক অবস্থায় বহিঃস্থ শক্তিস্তরে বেজোড় ইলেকট্রন দুইটি আছে। এ কারণে সালফারের স্বাভাবিক অবস্থায় যোজনী 2. 

আবার প্রথমবার উত্তেজিত করলে 3Px অরবিটাল থেকে 3dxy অরবিটালে একটি ইলেকট্রন স্থানান্তরিত হয়। 
এ অবস্থায় সালফারের চারটি বিজোড় ইলেকট্রন পাওয়া যায়। এজন্য সালফারের যোজনী 4 হয়।

আবার সালফারকে দ্বিতীয় বার উত্তেজিত করলে 3s অরবিটাল থেকে 3dyz অরবিটালে আরেকটি ইলেকট্রন স্থানান্তরিত হয়। এই অবস্থায় বিজোড় ইলেকট্রন পাওয়া যায় 6 টি। এজন্য সালফার এর যোজনী 6 হয়। 
যেহেতু সালফারের যোজনী 2,4,6 হয় সেহেতু সালফার পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে।


 নিষ্ক্রিয় গ্যাসঃ  পর্যায় সারণির যেসব মৌলের পরমাণু সমূহ ইলেকট্রন আদান, প্রদান বা শেয়ারের মাধ্যমে বন্ধন গঠন করে না তাদেরকে নিষ্ক্রিয় গ্যাস বলা হয়। 

পর্যায় সারণির 18 নম্বর গ্রুপে এদের অবস্থান। নিষ্ক্রিয় গ্যাস গুলি হচ্ছে হিলিয়াম (He), নিয়ন (Ne), আর্গন (Ar),  ক্রিপ্টন(Kr), জেনন (Xe), রেডন (Rn).

নিষ্ক্রিয় গ্যাস গুলি নিষ্ক্রিয় কেনঃ  নিষ্ক্রিয় গ্যাস গুলির ইলেকট্রন বিন্যাস করলে দেখা যায় হিলিয়াম ব্যতীত অন্য নিষ্ক্রিয় গ্যাস গুলোর সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে অষ্টক পূর্ণ থাকে। নিষ্ক্রিয় মৌল সমূহের সর্বশেষ শক্তিস্তরে অষ্টক পুর্ণ থাকায় নিষ্ক্রিয় মৌল সমূহ যথেষ্ট স্থিতিশীল থাকে। ফলে এসব মৌল সমূহ সহজে কোন বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না। সর্ববহিঃস্থ স্তরে ইলেকট্রন দ্বারা অষ্টক পূর্ণ থাকে যা অত্যন্ত সুস্থিত। এ সুস্থিত ইলেকট্রন বিন্যাস ভাঙ্গতে অনেক শক্তির প্রয়োজন হয়। তাই স্বাভাবিক অবস্থায় নিষ্ক্রিয় মৌল সমূহ অন্য কোন মৌলের সাথে যুক্ত হয় না। 
অর্থাৎ বহিঃস্থ স্তরে সুবিন্যাস্ত ইলেকট্রন বিন্যাসের কারণে নিষ্ক্রিয় মৌল সমূহ নিষ্ক্রিয় হয়।

এদের ইলেকট্রন বিন্যাসঃ
He (2) --> 1s²
Ne (10) --> 1s² 2s² 2p⁶
Ar (18) --> 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶
Kr (36) --> 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 3d¹º 4s² 4p⁶
Xe (54)--> [Kr ] 4d¹º 5s² 5p⁶
Rn (86)--> [Xe ] 4f¹⁴ 5d¹º 6s² 6p⁶

হিলিয়াম এর নিষ্ক্রিয়তার কারণঃ হিলিয়াম একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস। কারণ, হিলিয়ামের ইলেকট্রন বিন্যাসে  1s অরবিটাল ইলেকট্রন দ্বারা পূর্ণ থাকে। প্রথম পর্যায়ের ক্ষেত্রে অন্য কোন অরবিটাল না থাকায় এবং s - অরবিটাল ইলেকট্রন দ্বারা পূর্ণ থাকায় হিলিয়াম মৌলটি অন্য কোন মৌল এমনকি আরেকটি হিলিয়াম এর সাথে যুক্ত হতে পারে না। ইলেকট্রন দান বা গ্রহণ এবং শেয়ারের মাধ্যমে যৌগ গঠন করতে পারে না বলে হিলিয়াম একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস।
118  নম্বর নিষ্ক্রিয় গ্যাস ওগানেসন (Oganesson).   এর প্রতীক Og.



জারণ সংখ্যাঃ  যৌগ গঠনের সময় একটি মৌল অপর মৌলের সাথে যুক্ত হতে যে কয়টি ইলেকট্রন আদান প্রদান করে সেই আদান প্রদানকৃত ইলেকট্রনের সংখ্যাকে জারণ সংখ্যা বলে।


জারণ সংখ্যা ধনাত্মক, ঋণাত্মক, ভগ্নাংশ এবং শূন্য হতে পারে। একটি মৌলের একাধিক জারণ সংখ্যা হতে পারে। একে পরিবর্তনশীল জারণ সংখ্যা বলে। কোন যৌগে নির্দিষ্ট মৌলের অজানা জারণ সংখ্যা নির্ণয়ের জন্য কিছু নির্দিষ্ট মৌলের জারণ সংখ্যা মনে রাখা প্রয়োজন।
জানা মৌলের জারণ সংখ্যার সাহায্যে কোন মৌলের অজানা জারণ সংখ্যা সহজেই নির্ণয় করা যায়।

যেসব মৌলের জারণ সংখ্যা মনে রাখা প্রয়োজন তা নিম্নরূপঃ

১. চার্জ নিরপেক্ষ পরমাণুর জারণ সংখ্যা শূন্য হয়।
যেমনঃ Na ; K ; Mg ; Ca ; Fe ইত্যাদি।

২. দ্বি-মৌলিক গ্যাসের জারণ সংখ্যা শূন্য।
যেমনঃCl₂ ; Br₂ ; I₂ ; N₂ ; O₂ ; F₂ ; H₂ ইত্যাদি।

৩. নিষ্ক্রিয় গ্যাসের জারণ সংখ্যা শূন্য।
যেমনঃ He ; Ne ; Ar ; Kr ; Xe ; Rn.
 
৪. গ্রুপ- 1 এর মৌল সমূহের জারণ সংখ্যা  +1.
যেমনঃ H ; Li ; Na ; K ; ইত্যাদি।
 
৫. গ্রুপ -2 এর মৌলসমূহের জারণ সংখ্যা  +2.
যেমনঃ Be ; Mg ; Ca ইত্যাদি।
 
৬. গ্রুপ -17 মৌলসমূহের জারণ সংখ্যা -1.
যেমনঃ Cl₂ ; Br₂ ; I₂ ; F₂.
 
৭. গ্রুপ -16 মৌলসমূহের জারণ সংখ্যা -2.
যেমনঃ O₂ ; S ইত্যাদি।

৮. সাধারণ অক্সাইডের ক্ষেত্রে অক্সিজেনের জারণ সংখ্যা -2. যেমনঃ Na₂O,MgO ; CaO ; ইত্যাদি।

পার অক্সাইডে অক্সিজেনের জারণ সংখ্যা -1. যেমনঃ  H₂O₂ ; Na₂O₂ ইত্যাদি। 
আবার সুপার অক্সাইডে অক্সিজেনের জারণ সংখ্যা - 1/2.   যেমনঃ NaO₂ ; KO₂ ইত্যাদি।

৯. হাইড্রোজেন যদি অধাতুর সঙ্গে যুক্ত থাকে তবে জারণ সংখ্যা +1 হয়। যেমনঃ HCl ; HBr ; HI ; H₂O ইত্যাদি। 
আবার হাইড্রোজেন ধাতুর সঙ্গে যুক্ত থাকলে জারণ সংখ্যা -1 হয়। 
যেমনঃ NaH ; CaH₂ ; LiH ইত্যাদি।


একটি যৌগের মোট জারণ সংখ্যার পরিবর্তন শূন্য হয়।
KMnO₄ যৌগটিতে  Mn এর জারণ সংখ্যা
   Mn => +1 + Mn + (- 2) x 4 =0
          => +1 + Mn - 8 = 0
          => Mn - 7 = 0
          => Mn = +7

যৌগটি আধান নিরপেক্ষ হওয়ায় সমান চিহ্নের পরে শূন্য হয়েছে। পটাশিয়াম গ্রুপ-1 এর মৌল হাওয়ায় এর জারণ সংখ্যা +1 এবং অক্সিজেনের জারণ সংখ্যা -2.অতএব KMnO₄ যৌগটিতে  Mn এর জারণ সংখ্যা +7.

MnO₄- যৌগটিতে  Mn এর জারণ সংখ্যা

          =>  Mn + (- 2) x 4 =  -1
          =>  Mn - 8 = -1
          => Mn  = -1 +8
          => Mn = +7

যৌগটি আধান -1 হওয়ায় সমান চিহ্নের পরে -1 হয়েছে।
FeCl₃ যৌগটিতে Fe এর জারণ সংখ্যা
     => Fe + (-1)x 3 = 0
     => Fe - 3 = 0
     => Fe = + 3

যৌগটি আধান নিরপেক্ষ হওয়ায় সমান চিহ্নের পরে শূন্য হয়েছে। Cl গ্রুপ -17 এর মৌল হাওয়ায় এর জারণ সংখ্যা -1.

K₂Cr₂O₇ যৌগটিতে Cr এর জারণ সংখ্যা
    => (+1)x 2 +2Cr + (-2)x 7 = 0
    => +2 +2Cr - 14 = 0
    => 2Cr - 12 = 0
    => Cr = +6

K₂Cr₂O₇ যৌগটিতে Cr এর জারণ সংখ্যা +6.

N₂O যৌগটিতে N এর জারণ সংখ্যা
  => 2N + (-2) = 0
  => 2N -2   = 0
  => 2N = +2
  => N  = +1.

N₂O যৌগটিতে N এর জারণ সংখ্যা +1.




কপার ও ক্রোমিয়াম এর ইলেকট্রন বিন্যাস নিম্নরূপঃ


Cu (29)----> 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s¹ 3d¹º

Cr (24) -----> 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s¹ 3d⁵


ইলেকট্রন বিন্যাস থেকে দেখা যায়, কপারের ক্ষেত্রে 4s² 3d⁹ থেকে 4s¹ 3d¹º হয়েছে এবং ক্রোমিয়াম এর ক্ষেত্রে 4s² 3d⁴ থেকে 4s¹ 3d⁵ হয়েছে। কোন মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসে যদি সর্ববহিঃস্থ শক্তির অরবিটাল অর্ধপূর্ণ বা পূর্ণ অবস্থায় থাকে তবে ঐ মৌলের স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। 
এজন্য কপারের ইলেকট্রন বিন্যাসে বহিঃস্থ  শক্তিস্তরে 4s² 3d⁹ এর পরিবর্তে 4s¹ 3d¹º হয় এবং ক্রোমিয়াম এর ক্ষেত্রে  4s² 3d⁴ এর পরিবর্তে 4s¹ 3d⁵ হয়। 
স্থিতিশীলতার জন্য কপার ও ক্রোমিয়ামের ইলেকট্রন বিন্যাসের ব্যতিক্রম দেখা যায়।



মুক্তজোড় ইলেকট্রনঃ  কোন পরমাণুর যোজ্যতা স্তরে বা সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে যে ইলেকট্রন গুলো বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করে না তাদেরকে মুক্তজোড় ইলেকট্রন বলে।

যেমন ঃ ক্লোরিনের ইলেকট্রন বিন্যাস করলে দেখা যায়

Cl (17) ---> 1s² 2s²2p⁶ 3s² 3Px² 3Py² 3Pz¹

এখানে, ক্লোরিনের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তর অর্থাৎ তৃতীয় শক্তিস্তরে 3s² 3Px² 3Py² অরবিটাল গুলোতে দুটি করে ইলেকট্রন বিদ্যমান থাকে। এই ইলেকট্রনগুলি বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করে না। এজন্য এই ইলেকট্রনগুলি কে মুক্তজোড় ইলেকট্রন বলে। এখানে ক্লোরিনের তিন জোড়া মুক্তজোড় ইলেকট্রন আছে।

 বন্ধন জোড় ইলেকট্রনঃ  পরমাণু যোজ্যতা স্তরে বা সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে যে ইলেকট্রনগুলি বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করে তাদেরকে বন্ধন জোড় ইলেকট্রন বলে।
 কোন পরমাণু ইলেকট্রন বিন্যাস করলে তার সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে যে বেজোড় ইলেকট্রন গুলি থাকে সেই ইলেকট্রনগুলি বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করে। কাজেই বলা যায়, কোন পরমাণুর সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে যতটি বেজোড় ইলেকট্রন থাকে ঐ পরমাণু ততটি বন্ধন গঠন করতে পারে।

 
যেমনঃ ক্লোরিনের ইলেকট্রন বিন্যাস করলে দেখা যায়

Cl (17) ---> 1s² 2s²2p⁶ 3s² 3Px² 3Py² 3Pz¹

এখানে, ক্লোরিনের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তর অর্থাৎ তৃতীয় শক্তিস্তরে 3Pz¹ অরবিটালে একটি বেজোড় ইলেকট্রন বিদ্যমান থাকে। এই ইলেকট্রন বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করে। এজন্য এই ইলেকট্রনকে বন্ধন জোড় ইলেকট্রন বলে। 

এখানে ক্লোরিনের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে একটি বেজোড় ইলেকট্রন আছে। এজন্য ক্লোরিন একটি মাত্র বন্ধন গঠন করতে পারে। 
এইজন্য ক্লোরিনের বন্ধন জোড় ইলেকট্রন একটি। হাইড্রোজেন ক্লোরাইড (H-Cl) অণুতে একটি হাইড্রোজেনের সঙ্গে একটি ক্লোরিন পরমাণু একটি বন্ধন গঠন করে। হাইড্রোজেন ক্লোরাইড (H-Cl) অণুতে বন্ধন জোড় ইলেকট্রন একজোড়া বা দুইটি।


মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস আউফবাউ নীতি অনুসারে করা হয়। 

আউফবাউ নীতি অনুসারে ইলেকট্রন প্রথমে নিম্ন শক্তির অরবিটালে এবং পরে উচ্চ শক্তির অরবিটালে গমন করে।  


দুটি অরবিটালের মধ্যে কোনটি নিম্ন শক্তির আর কোনটি উচ্চ শক্তির তা প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা ও সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা (n + l) এর মানের যোগফলের উপর নির্ভর করে। যার (n + l) এর মান কম সেটি নিম্নশক্তির অরবিটাল এবং (n + l) এর মান বেশি হলে সেটি উচ্চশক্তির অরবিটাল। 


3d এবং 4s অরবিটালের জন্য       (n + l) এর মান নিম্নরূপঃ

3d  অরবিটালে ঃ n=3, l = 2 হলে,
(n + l)= 3+2= 5.

4s অরবিটালে ঃ n=4, l = 0 হলে,
(n + l)= 4+0= 4 .

সুতরাং 3d এর চেয়ে 4s অরবিটালের শক্তি কম হওয়ায় পটাশিয়ামের 19 তম ইলেকট্রন 3d অরবিটালে না গিয়ে 4s অরবিটালের যায়। 

পটাশিয়াম এর ইলেকট্রন বিন্যাস-
K (19) --> 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s¹



প্যারাফিন অর্থ আসক্তিহীন। অ্যালকেন কে প্যারাফিন বলা হয়। কারণ অ্যালকেনে বিদ্যমান প্রতিটি কার্বন - হাইড্রোজেন গুলি 
কার্বন - কার্বন (C - C) একক বন্ধন ও
কার্বন - হাইড্রোজেন (C - H) একক বন্ধন অর্থাৎ সিগমা বন্ধন বিদ্যমান। সিগমা বন্ধন ভাঙতে অনেক বেশি শক্তির প্রয়োজন বলে অ্যালকেন সমূহ কোন বিক্রিয়া দেয় না। 
অর্থাৎ এসিড, ক্ষার এদের সাথে কোন বিক্রিয়া করে না। এ কারণে অ্যালকেনকে প্যারাফিন বলা হয়।

কিছু অ্যালকেনের নাম ও আনবিক সংকেত দেওয়া হলঃ

 মিথেন(CH₄),  ইথেন (C₂H₆), প্রোপেন (C₃H₈),  বিউটেন (C₄H₁₀), পেন্টেন (C₅H₁₂), হেক্সেন (C₆H₁₄), হেপ্টেন (C₇H₁₆), অকটেন (C₈H₁₈), ননেন (C₉H₂₀),  ডেকেন(C₁₀H₂₂) উনডেকেন (C₁₁H₂₄), ডোডেকেন(C₁₂H₂₆), ট্রাইডেকেন (C₁₃H₂₈), টেট্রাডেকেন (C₁₄H₃₀), পেন্টাডেকেন (C₁₅H₃₂), হেক্সাডেকেন (C₁₆H₃₄), হেপ্টাডেকেন (C₁₇H₃₆), অক্টাডেকেন (C₁₈H₃₈),    ননাডেকেন (C₁₉H₄₀), ইকোসেন (C₂₀H₄₂), উনকোসেন (C₂₁H₄₄), ডোকোসেন (C₂₂H₄₆), ট্রাইকোসেন (C₂₃H₄₈), ইত্যাদি।