Recent Post
Loading...

আয়নিক যৌগে প্রতিটি আয়ন তার চতুর্দিকে বিপরীত আধানযুক্ত আয়ন দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে। আয়নিক যৌগকে তরল করতে হলে অনেক বেশি তাপের প্রয়োজন। অধিক তাপে আয়নগুলো কম্পন দ্বারা বিপরীত আধানযুক্ত আয়নের আকর্ষণকে অতিক্রম করে মোটামুটি মুক্তভাবে বিচরণ করতে পারে। এদের বাষ্পীভূত করতে বিপরীত আধানযুক্ত আয়নের আকর্ষণ সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন করতে হয়। এ কারণে আয়নিক যৌগসমূহের গলনাংক ও স্ফূটনাংক খুব বেশি।

আয়নিক যৌগে ক্যাটায়ন ও অ্যানায়ন electrostatic force দ্বারা আবদ্ধ যেটাকে আয়নিক বন্ধন বলে। এই আয়নিক বন্ধন সমযোজী বন্ধন র থেকে অনেক শক্তিশালী। এই বন্ধন ভাঙতে যে শক্তির প্রয়োজন তাকে lattice energy বলে। তরল বা গ্যাস হওয়ার অর্থ অণু বা পরমাণুর নিজেদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হওয়া। এই crystal lattice energy র থেকে বেশি শক্তি বা তাপ প্রয়োগ করতে আয়নিক যৌগের তরল বা গ্যাস এ রূপান্তর করতে। [ সমযোজী বন্ধন ধরে রাখতে যে শক্তির প্রয়োজন তাকে bond energy বলে। বন্ধন দূরত্ব যত বেশি হবে বন্ধন শক্তি তত দূর্বল হবে। সমযোজী যৌগে সমযোজী বন্ধন double/triple bond থাকে তবে একটা σ bond বাকীগুলো π bond. π bond σ bond র থেকে দূর্বল। তাই সহজেই প্রথমে π bond ভেঙে যায়।] 

 

এই সহজ প্রশ্নটার উত্তর আমরা খুব সহজ করে দিয়ে ফেলি। বলি— পাতায় ক্লোরোফিল থাকে বলেই সবুজ দেখায়। যদি জিজ্ঞেস করা হয় ক্লোরোফিল থাকলেই বা সবুজ দেখাবে কেন? নীল বা হলুদ কেন নয়? তখন আমরা অনেকেই চুপ করে যাই। প্রথম কথা, আমরা গাছের পাতা কেন দেখি? গাছের পাতায় সূর্যের সাদা আলো পড়ে। সেই আলো পাতায় প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখের রেটিনায় এসে প্রতিবিম্ব তৈরি করে। তখন আমরা পাতাটা দেখতে পাই। তবে এখানেও একটা প্রশ্ন আছে। সূর্যের আলো সাদা রঙের। গাছের পাতায় সাদা আলোই যদি প্রতিফলিত হয়, তাহলে পাতা সাদা রঙের হওয়ার কথা। সবুজ হয় কেন? সাদা আলো হলো সাত রঙের আলোর মিশ্রণ। সেই সাতটি রং হলো—বেগুনি, নীল, আসমানি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল। প্রতিটা বস্তু কমবেশি আলো শোষণ করে। তবে বিভিন্ন বস্তুর ভেতর বিভিন্ন ধরনের রঞ্জক পদার্থ থাকে। রঞ্জক পদার্থগুলোই আসলে বিভিন্ন রঙের আলো শোষণ করে, দেখা যায় যে যেকোনো একটি রঙের আলো সেটা শোষণ করতে পারে না। শোষণ করতে না পারা আলোটা প্রতিফলিত হয়। প্রতফলিত আলোটাই আসলে বস্তুর রং ঠিক করে। ধরা যাক, লাল গোলাপের কথা। এতে এমন একটা রাসায়নিক রঞ্জক পদার্থ আছে, যেটা সাদা আলো থেকে সব রং শোষণ করে নেয়, শুধু লাল রং ছাড়া। লাল রং গোলাপ থেকে প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখের আসে। তাই গোলাপকে লাল দেখি। তেমনি গাছের পাতায় ক্লোরোফিল নামের এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ আছে। এটা শক্তিশালী রঞ্জক পদার্থ। ক্লোরোফিল সাদা আলো থেকে সবুজ বাদে বাকি ছয়টা রং শোষণ করে নিতে পারে। শুধু সবুজ আলো গাছের পাতায় প্রতিফলিত হয়ে এসে আমাদের চোখে ধরা পড়ে। তাই গাছের পাতা সবুজ দেখায়।

 বয়েলের সূত্রঃ স্হির তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট ভরের যেকোনো গ্যাসের আয়তন ঐ গ্যাসের উপর প্রযুক্ত চাপের ব্যস্তানুপাতিক। 

অর্থাৎ স্হির তাপমাত্রায় গ্যাসের চাপ বৃদ্ধি করলে আয়তন হ্রাস পায়। 

বয়েলের গাণিতিক সমীকরণ নিম্নরূপ-

 P₁V₁ = P₂V₂ = K  -------(i)


আমরা জানি, 

গ্যাসের ঘনত্ব = (ভর / আয়তন)  

 d = (W / V )

বা, আয়তন = (ভর / ঘনত্ব). 

 V = (W / d ).

এক্ষেত্রে গ্যাসের ভর (W) নির্দিষ্ট। তাই স্হির তাপমাত্রায় গ্যাসের আয়তন (V) পরিবর্তন করলে গ্যাসের ঘনত্ব (d) পরিবর্তিত হয়। 

অতএব, V₁ = W / d₁ , 

এবং V₂ = W / d₂

(i) নং সমীকরণে V₁ ও V₂ এর মান বসাই,

=> (WP₁ / d₁) = (WP₂ / d₂ )

=> ( P₁ / d₁ ) = (P₂ / d₂ )

=> P / d = K

=> P = K d

=>  P α d.

অর্থাৎ স্থির তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট ভরের কোন গ্যাসের ঘনত্ব ঐ গ্যাসের উপর প্রযুক্ত চাপের সমানুপাতিক। এটি বয়েলের অনুসিদ্ধান্ত। 

 (১) গ্যাসের আয়তন (V) বনাম চাপের (P) লেখচিত্রঃ 

বয়েলের সূত্র অনুসারে স্হির তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট ভরের কোন গ্যাসের উপর বিভিন্ন চাপ প্রয়োগ করলে, বিভিন্ন আয়তন পাওয়া যায়। যা রেকর্ড করা হয়। 

Y-অক্ষ বরাবর আয়তন এবং X- অক্ষ বরাবর চাপ লেখচিত্র অংকন করলে  নিম্নের চিত্রের ন্যায় অধিবৃত্তীয় রেখা পাওয়া যায়। 

স্থির তাপমাত্রায় প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করে আয়তন বনাম চাপের লেখচিত্র অঙ্কন করলে প্রাপ্ত অধিবৃত্তীয় রেখা সমূহকে আইসোথার্ম বা সমতাপীয় রেখা বলা হয়। 


     চিত্রঃ আয়তন বনাম চাপ লেখচিত্র । 


(২) গ্যাসের আয়তন (V) বনাম 1/P লেখচিত্রঃ 

স্থির তাপমাত্রায় কোন নির্দিষ্ট ভরের গ্যাসের আয়তন বনাম প্রযুক্ত চাপের ব্যস্তানুপাতে লেখচিত্র অঙ্কন করলে মূল বিন্দুগামী সরলরেখা পাওয়া যায়। 

আমরা জানি, বয়েলের সূত্র 

 V α 1/P

বা, V = K 1/P  

[এখানে  V = y এবং 1/P = x] হলে-

 y = mx 

যা মূল বিন্দুগামী সরলরেখার সমীকরণ। এজন্য গ্যাসের আয়তন (V) কে Y- অক্ষ এবং  1/P কে X- অক্ষ বরাবর লেখচিত্র অংকন করলে মূলবিন্দুগামী সরল রেখা পাওয়া যায়।


চিত্রঃ আয়তন (V) বনাম 1/P লেখচিত্র । 

(৩) গ্যাসের চাপ(P) ও আয়তনের(V) গুণফল বনাম চাপ(P) লেখচিত্রঃ 

বয়েলের সূত্র অনুসারে, স্থির তাপমাত্রায় গ্যাসের আয়তন ও চাপের গুণফল ধ্রুবক। 
 
    PV  = K

স্থির তাপমাত্রায় বয়েলের সূত্র অনুসারে গ্যাসের বিভিন্ন চাপের জন্য বিভিন্ন আয়তন পাওয়া যায়। চাপ(P) কে X-অক্ষ বরাবর এবং চাপ(P) ও আয়তন(V) গুণফলকে Y- অক্ষ বরাবর লেখচিত্র অঙ্কন করলে X-অক্ষের সমান্তরাল রেখা পাওয়া যায়। 


চিত্রঃ PV বনাম P লেখচিত্র।