পটাশিয়াম পার-অক্সাইড এর সংকেত কি? পটাশিয়াম পার-অক্সাইড এর সংকেত ঃ K₂O₂ . গাঠনিক সংকেতঃ (K-O-O-K).
pH হচ্ছে হাইড্রোজেন আয়নের সক্রিয়তার পরিমাপ। পি.এইচ দ্বারা মূলত হাইড্রোজেন আয়নের ঘনত্ব বোঝায়। অম্ল ও ক্ষারের জলীয় দ্রবণে হাইড্রোজেন আয়নের ঘনমাত্রা প্রকাশের জন্য pH স্কেল নামক একটি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। দ্রবণে হাইড্রোজেন আয়নের ঘনমাত্রা বুঝাবার জন্য ব্যবহৃত সংকেত পিএইচ (pH)। পিএইচ-এর স্কেল ০ থেকে ১৪ পর্যন্ত বিস্তৃত।
রসায়নে কোনো দ্রবণে হাইড্রোজেন আয়নের [H+] মোলার ঘনমাত্রার ঋণাত্মক লগারিদমকে ঐ দ্রবণের pH বুঝায়।
রাসায়নিক বিক্রিয়া হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে এক বা একাধিক পদার্থ
ভিন্ন পদার্থে রূপান্তরিত হয়। রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী পদার্থগুলোকে বিকারক বা বিক্রিয়ক পদার্থ বলা হয়। অপরদিকে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে নতুন ধর্মবিশিষ্ট যেসব পদার্থ উৎপন্ন হয়, তাদের বিক্রিয়াজাত পদার্থ বা উৎপাদ বলা হয়। রাসায়নিক বিক্রিয়া বিকারক পদার্থগুলোর মধ্যে ইলেকট্রনের আদান-প্রদানের ফলে হয়ে থাকে। পদার্থের নিউক্লিয়াসের পরিবর্তন হলে তাকে সাধারণত রাসায়নিক বিক্রিয়া হিসেবে গণ্য করা হয় না।
রাসায়নিক বিক্রিয়া মূলত চার ধরনের; এগুলি হল:
- সংযোজন বিক্রিয়া
- বিয়োজন বিক্রিয়া
- প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া
- দহন বিক্রিয়া
এ ছাড়াও কিছু শ্রেণিভেদ আছে। যেমন, ইলেক্ট্রন স্থানান্তরের ভিত্তিতে রাসায়নিক বিক্রিয়া দুই প্রকার। যথা: (ক) রেডক্স,(Redox) এবং (খ) নন-রেডক্স,(Non-redox)।
তাপ বিনিময়ের বিবেচনায়ও রাসায়নিক বিক্রিয়া দুই প্রকার যথা: (ক) তাপ উৎপাদী (তাপমোচী) বিক্রিয়া (Exothermic Reaction) এবং (খ) তাপহারী (তাপগ্রাহী) বিক্রিয়া (Endothermic Reaction)।
আরও কিছু বিক্রিয়া আছে যা বর্ণিত শ্রেণিবিভাগের অন্তর্ভুক্ত নয়। যেমন: (ক) আর্দ্রবিশ্লেষণ (Hydrolysis), (খ) জলযোজন (Hydration), (গ) সমাণুকরণ বিক্রিয়া (Isomerisatio) ইত্যাদি।
সংযোজন বিক্রিয়া
যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় একের অধিক পদার্থ একত্রিত হয়ে সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী নতুন রাসায়নিক পদার্থ তৈরি করে তখন তাকে সংযোজন বিক্রিয়া বলে। যেমনঃ
C+2O
=2CO
এছাড়াও রয়েছে সংশ্লেষণ বিক্রিয়া। সংশ্লেষণ বিক্রিয়াও এক ধরনের সংযোজন বিক্রিয়া। সংযোজন বিক্রিয়ায় যদি দুটি মৌল (যৌগ নয়) যুক্ত হয়ে ভিন্ন ধর্মীয় যৌগ উৎপন্ন হয়। কার্বন + হাইড্রোজেন = মিথেন
বিয়োজন বিক্রিয়া
কোন যৌগকে ভেঙে একাধিক যৌগ বা মৌলে পরিনত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বিয়োজন বিক্রিয়া বলে।
- PCl5 (l) +(তাপ) = PCl3 (l) + Cl2 (g)
প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া :
কোনো অধিক সক্রিয় মৌল বা যৌগমুলক অপর কোনো কম সক্রিয় মৌলে বা যৌগমুলক কে প্রতিস্থাপন করে নতুন যৌগ উৎপন্ন করার প্রক্রিয়াকে প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া বলে যেমন ; জিংক বেশি সক্রিয় ধাতু H থেকে, তা Zn, H কে সরিয়ে তার জায়গা দখল করে নিতে পারে , নিচে বিক্রিয়াটি দেওয়া হল।
- Zn(s) + H2SO4 (aq) = ZnSO4 (aq) + H2 (g)
এখানে জারণ ও বিজারণ যুগপৎ ঘটেছে।
দহন বিক্রিয়া
কোনো মৌল বা যৌগ বিক্রিয়া করে যদি তাপ উৎপন্ন করে তাহলে সেই বিক্রিয়া কে দহন বিক্রিয়া বলে । এতে তাপ ও শক্তি উৎপন্ন হয় ।
- CH4 (g) + 2O2 (g) = CO2 (g) +2H2O (g)
- Mg + O2 = 2MgO
তাপহারী বিক্রিয়া
যে বিক্রিয়ায় তাপের শোষণ হয় তাকে তাপহারী বিক্রিয়া বলে।এই বিক্রিয়ার সক্রিয়ন শক্তির মান বেশি তাই এই বিক্রিয়ার বাহির থেকে তাপ সরবরাহ করতে হয়।
2KClO3 = 2KCl + 3O2 - তাপ
এই বিক্রিয়াটি তাপহারী বিক্রিয়া।
বিক্রিয়ক অনুতে বন্ধন ভাঙ্গনে শোষিত শক্তি > উৎপাদের অনুতে বন্ধন গঠনে বিমুক্ত শক্তি
তাপোৎপাদি বিক্রিয়া
যে বিক্রিয়ায় তাপ উৎপন্ন হয় তাকে তাপোৎপাদি বিক্রিয়া বলে। যেমন,
CaCO3= CaO +CO2
প্রশমন বিক্রিয়া
যে রাসায়নিক বিক্রিয়ার অম্ল ও ক্ষার যুক্ত হয়ে লবণ ও জল উৎপন্ন করে তাকে প্রশমন বিক্রিয়া বলে। এই বিক্রিয়াকে অম্ল-ক্ষার বিক্রিয়াও বলে। প্রশমন বিক্রিয়া সর্বদাই তাপ উৎপন্ন করে অর্থাৎ প্রশমন বিক্রিয়া তাপ উৎপাদী বিক্রিয়া। অম্ল ও ক্ষার উভয়ই তীব্র হলে এই তাপের মান ΔH = -57.34 Kj।
- NaOH + HCl = NaCl + H2O
হীরে এবং গ্রাফাইট উভয়ই কার্বনের বহুরূপ। কিন্তু হীরের কার্বন sp3 hybridization বিশিষ্ট অর্থাৎ কার্বনের চারটি sp3 hybridised orbital দিয়ে পার্শ্ববর্তী চারটি কার্বনের সাথে একটি সিগমা সমযোজী বন্ধনের দ্বারা যুক্ত হয় ।
অপরদিকে গ্রাফাইট sp2 hybridisation বিশিষ্ট অর্থাৎ কার্বনের তিনটি sp2 hybridised orbital দিয়ে পার্শ্ববর্তী তিনটি কার্বনের সাথে একটি সিগমা সমযোজী বন্ধনের দ্বারা যুক্ত হয় এবং একটি p-orbital দিয়ে এটি পাই- বন্ধনের মাধ্যমে উপরের স্তরের কার্বনের সাথে যুক্ত হয় ।
হীরে ও গ্রাফাইটের ছবি দেখলে তত্ত্বটি সুস্পষ্ট হবে ।
এবার সিগমা বন্ধনের বন্ধনশক্তি কম হওয়ায় এটি অধিক সুস্থিত হয় এবং অপরদিকে পাই বন্ধনের স্থায়িত্ব সিগমা বন্ধন অপেক্ষা কম হয় । অধিক সুস্থিত হওয়ায় সিগমা বন্ধন ভেঙ্গে কোন রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটানো ভীষণ কষ্টকর । কিন্তু সেই রকম কোন সমস্যা গ্রাফাইটের ক্ষেত্রে হয় না । কারণ এর পাই বন্ধনটি সহজে ভেঙ্গে যেকোনো রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটানো যায় ।
এই কারণের জন্য গ্রাফাইট হীরে অপেক্ষা অধিক সক্রিয় ।
হীরের কাঠিন্যও কিন্তু এই সুস্থিত সমযোজী বন্ধনের জন্যই দেখা যায় । অপর দিকে গ্রাফাইটের ক্ষেত্রে unhybridised p orbital - এর ইলেকট্রন কোন সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ না হওয়ায় এটি মুক্ত হয় এবং এটিই মূলত তড়িৎ পরিভ্রমণে সহায়তা করে । তাই হীরে তড়িতের কুপরিবাহী হলেও গ্রাফাইট তড়িতের সুপরিবাহী ।