Recent Post
Loading...
রসায়ন বিজ্ঞানঃ
১/ এসিড নীল লিটমাসকে – লাল করে ।

২/ ক্ষার লাল লিটমাসকে – নীল করে ।

৩/ স্টেইনলেস স্টিলে থাকে – ক্রোমিয়াম,নিকেল ও লোহা ।

৪/ ইস্পাতে কার্বনের পরিমান – ০.১৫ – ১.৫ % ।

৫/ রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে পরমাণু ।

৬/ ইস্পাতে সুনিয়ন্ত্রিত – কার্বন থাকে 

৭/ রাজঅম্ল হলো – নাইট্রিক এসিড (HNO3) 
হাইড্রোক্লোরিক এসিডের
(HCl) এর ১ : ৩ অনুপাতের মিশ্রণ

৮/ ক্লোরোপিকরিন (CCl3NO2)বলে – কাঁদুন গ্যাস ।

৯/ পানি হলো – অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন এর মিশ্রণ ।

১০/ পানিতে অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন এর অনুপাত – ১ :
২ ।

১১/ কার্বন একটি – বহুরুপী মৌল ।
১২/ সাবান তৈরীর প্রধান উপাদান – চর্বি ।

১৩/ সর্বোত্তম তড়িৎ বাহক – তামা (Cu) 

১৪/ ইউরিয়া সারের প্রধান কাঁচামাল – মিথেন গ্যাসপ্রাকৃতিক গ্যাসনাইট্রোজেন ।
১৫/ বাতাসে মিথেনের পরিমান – ০.০০০০২% ।

১৬/ ওজোন (O3)এর রং – গাঢ় নীল

১৭/ সাবানের রাসায়নিক নাম – সোডিয়াম স্টিয়ারেট ।

১৮/ স্বর্ণ গলাতে সাহায্য করে – রাজঅম্ল ।

১৯/ ওজোন স্তরের সর্বাপেক্ষা ক্ষতিকর গ্যাসক্লোরিন (Cl)

২০/ ধাতু হিসাবে কিসের ব্যবহার সবচেয়ে বেশী – লোহার ।
২১/ বায়ু একটি – মিশ্র পদার্থ ।


২২/ কঠিনতরল ও বায়বীয় এ তিন অবস্থায় থাকতে পারে – পানি ।

২৩/ পেট্রোলবাহি ট্রাকের নিচে ধাতব পাত ঝুলিয়ে রাখা হয় – দূর্ঘটনা রোধের জন্য । 

২৪/ কার্বোরটরে মিশানো হয়
জ- বায়ু ও গ্যাসোলোনের বাস্প ।

২৫/ রেফ্রিজারেটরে ব্যবহৃত হয় – আ্যমোনিয়া ও ফ্রেয়ন । ২৬/ উপধাতু যে সব মৌল কখনো কখনো ধাতুর মতো আবার কখনো কখনো অধাতুর মতো আচরন করে
– 
সিলিকন ।

২৭/ পানির স্ফুটনাংক – ১০০০ সেন্টিগ্রেড ।

২৮/ পানিকে তড়িৎ বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় – অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন ।

২৯/ সাধারন লবনকে তড়িৎ বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় – ক্লোরিন ও সোডিয়াম ।


৩০/ এসিডের Ph – ৭ এর কম ।


৩১/ ক্ষারে Ph – ৭ এর বেশী ।

৩২/ এসিডের স্বাদ – টক ।

৩৩/ ক্ষারের স্বাদ – তিক্ত ।

 ৩৪/ ড্রাইসেলের তড়িৎচালক বল – ১.৫ ভোল্ট ।

৩৫/ ধাতুর ক্ষয়রোধ করার জন্য ইলেক্ট্রোপ্লেটিং করা হয় ।

৩৬/ নিউট্রন অনুপস্থিত – হাইড্রোজেনে ।

৩৭/ এ্যকোয়াম ১৫০ একটি – অত্যাধুনিক পানি বিশোধক যন্ত্র ।

৩৮/ ভিনেগার হলো – এ্যসিটিক এসিডের (৪-৮)% জলীয় দ্রবণ ।

৩৯/ প্রসাধনী ও সাবান তৈরীতে ব্যবহৃত হয় গ্লিসারিণ । 

৪০/ বাজারে প্রাপ্ত মদের নাম – ইথাইল এ্যালকোহল ।

৪১/ স্যাকারিন প্রস্তুত হয় – টলুইন থেকে ।

৪২/ চিটাগুড় তৈরী হয় – ইথানল থেকে ।

৪৩/ রাবার হলো – হাইড্রোকার্বনের পলিমার । 

৪৪/ ফরমিক এসিডের অম্লিয়গুণের পাশাপাশি – ক্ষারীয় গুণ বিদ্যমান ।

৪৫/ কৃত্রিম উপায়ে ফল পাকাতে ব্যবহৃত হয় নাইট্রোজেন গ্যাস ।

৪৬/ গ্রিক শব্দ গ্রাফাইট অর্থ – আমি লিখি ।

৪৭/ ডিম পঁচা গন্ধযুক্ত গ্যাস – হাইড্রোজেন সালফাইড ।

৪৮/ রসুনের মতো গন্ধ – শ্বেত ফসফরাসের ।

৪৯/ সিলিকনের পারমানবিক সংখ্যা – ১৪ ।

৫০/ নাইট্রোজেনের পারমানবিক সংখ্যা – ৭ ।

৫১/ অ্যাসবেষ্টস হলো – এক ধরনের অগ্নি নিরোধক খনিজ ।

 ৫২/ পৃথিবীর সবচেয়ে ভারী ধাতু – ওসমিয়াম (প্লাটিনাম জাতীয়) ।

৫৩/ সাধারণ তাপমাত্রায় একমাত্র তরল ধাতু পারদ । 

৫৪/ সাধারণ তাপমাত্রায় তরল অধাতু ব্রোমিন ।

৫৫/ সবচেয়ে হালকা ধাতু – লিথিয়াম ।

৫৬/ ভূ-ত্বকে সবচেয়ে বেশী পাওয়া যায় অ্যালুমিনিয়াম (৭%) ।

৫৭/ পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান ধাতু ক্যালিফোর্নিয়াম ।

 ৫৮/ মানুষ যে খনিজ পদার্থ বেশী খায় ক্যালসিয়াম ।

৫৯/ স্বর্ণের বিশুদ্ধতা প্রকাশ করা হয় – ক্যারেট দিয়ে ।

৬০/ প্রকৃতিতে মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় অ্যালুমিনিয়াম । 

৬১/ একমাত্র ধাতু যা বিদ্যুৎ পরিবাহী গ্রাফাইট ।

৬২/ ছুরি দ্বারা সহজে কাটা যায় – সোডিয়াম ।

৬৩/ সাধারণ অবস্থায় অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়ায় জ্বলে ওঠে – সোডিয়াম ।

৬৪/ আতশবাজি ও ফটোগ্রাফির ফ্লাশ পাওডার তৈরীতে ব্যবহৃত হয়- ম্যাগনেসিয়াম ।

 ৬৫/ সাংকেতিক আলো তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ম্যাগনেসিয়াম । 

৬৬/ নীলাচুনিপান্না প্রভৃতি মূল্যবান পাথরগুলো – অ্যালুমিনিয়ামের যৌগ ।

৬৭/ পানি পরিশোধনে ব্যবহৃত হয় – ফিটকিরি ।


৬৮/ ল্যাবরেটরিতে শুস্ককারক ও নিরুপক হিসাবে ব্যবহৃত হয়- কুইক লাইম ।


৬৯/ উড়োজাহাজ বা মোটরগাড়ির খোলস তৈরী হয় – ডুরালুমিন (অ্যালুমিনিয়াম) দিয়ে।

৭০/ চাঁদের নাম অনুসারে মৌলের নাম সেলিনিয়াম ।

৭১/ হ্যালোজেন অর্থ – সামুদ্রিক লবন উৎপাদক ।

৭২/ ডিনামাইটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান– নাইট্রোক্লিয়াফিল ।

৭৩/ কাগজে ঘষলে দাগ কাটে – লেড ।



পলির বর্জন নীতি 
একই পরমাণুতে যে কোন দুটি ইলেকট্রনেরচারটি কোয়ান্টাম সংখ্যার মান কখনোওএকই হতে পারেনা। দুটি ইলেকট্রনের ৩টিকোয়ান্টাম সংখ্যার মান একই হলে চতুর্থকোয়ান্টাম সংখ্যা অবশ্যই ভিন্ন হবে।
যেমনঃদুটি ইলেকট্রন বিশিষ্ট একটিপরমাণুতে -
১ম ইলেকট্রনের জন্য, n = 1,  l = 0, m = 0, s = + ,
২য় ইলেকট্রনের জন্য, n = 1,  l = 0, m = 0, s = - ,

অর্থাৎ একই পরমাণুর ২টি ইলেকট্রনের কক্ষপথের আকার  (n), আকৃতি ( l ), কৌণিক অবস্থান (m) একই হতে পারে যদি তাদের নিজ অক্ষের উপর ঘুর্ননের দিক পরস্পর বিপরীতমুখী হয়। সুতরাং পলির বর্জন নীতির মূলকথা হলো- " একটি পারমাণবিক অরবিটালে সর্বাধিক দুটি ইলেকট্রন থাকতে পারে যদি তাদের ঘুর্নন বা স্পিন বিপরীত মুখী হয়। 



কোয়ান্টাম সংখ্যা
সংজ্ঞা - পরমাণুতে অবস্থিত ইলেকট্রনের শক্তিস্তরের আকার, আকৃতি, ত্রিমাতৃক বিন্যাস প্রকরণ এবং আবর্তনের দিক প্রকাশক সংখ্যা সমূহকে কোয়ান্টাম সংখ্যা বলে। 

প্রকারভেদঃ- কোয়ান্টাম সংখ্যাকে ৪ ভাগে ভাগ করা হয়েছে 
১) প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা,
২) সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা,
৩) ম্যাগনেটিক কোয়ান্টাম সংখ্যা,
৪) স্পিন কোয়ান্টাম সংখ্যা,


১) প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যাঃ- যে কোয়ান্টাম সংখ্যার সাহায্যে পরমাণুতে অবস্থিত ইলেকট্রনের শক্তিস্তরের আকার নির্নয় করা যায় তাকে প্রধাণ কোয়ান্টাম সংখ্যা বলে। 
প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যাকে n দ্বারা প্রকাশ করা হয়। যেমনঃ- n=1,2,3,4,5 ইত্যাদি ।

২) সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যাঃ- যে কোয়ান্টাম সংখ্যার সাহায্যে শক্তিস্তরের আকৃতি নির্নয় করা যায় তাকে সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা বলে।
একে দ্বারা প্রকাশ করা হয়। l = ~ (n-1).সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যার উপর নির্ভরশীল।

৩) ম্যাগনেটিক কোয়ান্টাম সংখ্যাঃযে সকল সংখ্যার সাহায্যে ইলেকট্রনের কক্ষপথের ত্রিমাতৃক দিক বিন্যাস প্রকরন সমূহ প্রকাশ করা হয় তাকে ম্যাগনেটিক কোয়ান্টাম সংখ্যা বলে।
একে দ্বারা প্রকাশ করা হয় । m = 0 ~  l

৪) স্পিন কোয়ান্টাম সংখ্যাঃনিজস্ব অক্ষের চারদিকে ইলেকট্রনের ঘুর্ননের দিক প্রকাশক সংখ্যা সমূহকে স্পিন কোয়ান্টাম সংখ্যা বলে।
একে দ্বারা প্রকাশ করা হয়। s = + ,  - ,

1. বিজ্ঞান কী? উত্তরঃ- বস্তুজগত ও জীবজগত সম্পর্কে পরীক্ষা-নীরিক্ষা ও প্রমাণ নির্ভর জ্ঞান যা মানুষকে তৎসংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা প্রধান করে তাকে বিজ্ঞান বলে । 2. মধ্যযুগের রসায়ন চর্চাকে কী বলা হতো ? উত্তরঃ- মধ্যযুগের রসায়ন চর্চাকে আল-কেমি বলা হতো । 3. দহন কাকে বলে ? উত্তরঃ- অক্সিজেন দ্বারা কোন পদার্থকে জারিত করাকে দহন বলে । 4. কাঠের প্রধান উপাদান কী ? উত্তরঃ- কাঠের প্রধান উপাদান হলো সেলুলোজ । 5. জীবাশ্ম জালানি কাকে বলে ? উত্তরঃ- বায়ুর অনুপস্থিতিতে উদ্ভিদ ও প্রানীদেহে প্রচণ্ড চাপ ও তাপে হাজার হাজার বছরে এক ধরনের জ্বালানিতে পরিণত হয় । একে জীবাশ্ম জ্বালানি বলে । 6. জীবাশ্ম জ্বালানির নাম লেখ । উত্তরঃ- কয়লা, প্রেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস ইত্যাদি জীবাশ্ম জ্বালানি । 7. ট্রিফয়েল কাকে বলে ? উত্তরঃ- তেজস্ক্রিয় রশ্মি চিহ্নকে ট্রিফয়েল বলা হয়, এটি দ্বারা অতিরিক্ত ক্ষতিকর আলোক রশ্মিকে বুঝানো হয় ।
ডিস্টিলেশন হচ্ছে দুটি দ্রবনকে তাদের ভিন্ন স্ফুটনাংকের মাধ্যমে আলাদা করা। জাবির ইবনুল হাইয়ানের এই আবিষ্কার আলকেমী থেকে কেমিস্ট্রির পথে ছিল মাইলস্টোন উত্তরন। বিজ্ঞানী জাবির এক্সপেরিমেন্টেশনের উপর গুরুত্ব দেন এবং আল কেমীকে সাইন্স রূপ দিয়ে কেমিস্ট্রি হিসেবে দাড় করান। তিনি সালফিউরিক এসিড, হাইড্রোক্লোরিক এসিড, নাইট্রিক এসিড, ডিস্টিলেশন, ক্রিস্টালাইজেশন, লিকুইফ্যাকশন, অক্সিডাইজেশন, ইভাপোরেশন, ফিলট্রেশন সহ বেশ কিছু কেমিক্যাল এবং তার প্রসেস ব্যখা করে যান, যা আজকের কেমিস্ট্রির ভিত্তিমূল।



বিজ্ঞানী জাবের হাইড্রোক্লোরিক এসিড এবং নাইট্রিক এসিড আবিষ্কার করে তার মিশ্রন থেকে আবার "একুয়া রেজিয়া" আবিষ্কার করেন যা সোনাকে দ্রবীভূত করে। যার ফলে সোনার বিশুদ্ধিকরন এবং আহরন সহজ হয়ে যায়। এছাড়া তিনি সাইট্রিক এসিড, এসিটিক এসিড এবং টারটারিক এসিড আবিষ্কার করেন। জাবেরের এই রসায়নের জ্ঞান বিভিন্ন শিল্প কারখানায় সফলভাবে প্রয়োগ করা হয় এবং তার ফলে অনেক ধরনের ম্যানুফ্যাকচারিং প্রসেস উন্নত হয়। যাদের মধ্যে রয়েছে, স্টীল প্রস্তুতকরন, মরিচা প্রতিরোধকরন, স্বর্ন খোদাইকরন, পোশাকের ডাই তৈরী এবং চামড়ার ট্যানিং। তিনি গ্লাস তৈরীতে ম্যাংগানিজ ডাই অক্সাইড ব্যবহার বিধি দেখান, যা আজকের দিনেও ব্যবহৃত হয়। তার এসব আবিষ্কার আজকের কেমিস্ট্রি এবং কেমিক্যাল ইন্জিনিয়ারিং এর ভিত্তিমূল। 
গুপ্তবিদ্যার প্রতি আগ্রহ মানুষের চিরন্তন। "আল কেমি" হচ্ছে সেই রকম গুপ্তবিদ্যা, যার দ্বারা মানুষ "এলিক্সির" নামে এমন একটি যাদুকরী বস্তু তৈরী করতে পারবে। সে এলিক্সিরের ছোয়ায় লোহা হয়ে যাবে সোনা, তামা হয়ে যাবে রূপা, আর মানুষের আয়ু যাবে বহুগুন বেড়ে!! লোহা থেকে সোনা বানানো কিংবা জীবনকে দীর্ঘায়িত করার বাসনাই ছিল আল কেমী বিদ্যার মূল উদ্দেশ্য।



"আল কেমি" শব্দটি এসেছে আরবী আল কিমিয়া থেকে। "আল" হচ্ছে "the" এর আরবী এবং "কিমিয়া" এসেছে "কেম" থেকে, যার অর্থ "কালো মাটি"। মিশরের নীল নদের তীরের মাটি কালো হওয়ায় এ নাম, কেননা "আল কেমী"র ব্যপক চর্চা মূলত হয়েছে মিশরে। তবে এ নিয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, গ্রীক "কায়মা" থেকেও "কেমী" শব্দটি আসতে পারে। "কেমী" শব্দের এটিমোলোজি যাই হোক না কেন, "আল কেমি"র ব্যপক চর্চা তৎকালীন মুসলিম সমাজে হবার ফলে, "আল কেমী" শব্দটির আরবীতে আত্তীকরন হয়ে যায়।



আল কেমী বহু আগে থেকে চলে আসা একটি সাবজেক্ট, পৃথিবীর মানুষ লোহা থেকে সোনা বানানোর অসম্ভব চেষ্টা প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই করছে। এরিস্টটলের দর্শন অনুযায়ী, সমস্ত বস্তুই আসলে একই জাতীয় সাবস্ট্যান্স দিয়ে তৈরী - শুধু অনুপাত ভিন্ন। অনুপাতের ভিন্নতার ফলেই একটি পদার্থ হয় লোহা, আর অন্যটি হয় সোনা। আরব বিজ্ঞানী জাবেরও ছিলেন একজন আলকেমিস্ট যিনি এরিস্টটলের এই দর্শনের দ্বারা প্রভাবান্বিত ছিলেন। আর আল কেমী বিদ্যাটি কিছুটা সুপ্ত হওয়ায় জাবেরের বইগুলোও অনেকটা রূপক ভংগিতে লেখা। আল কেমির উপরে লেখা তার বই "কিতাব আল জোহরা"তে তিনি লিখেছেন,

"আল্লাহ যাদের ভালবাসেন তারা ব্যাতীত বাকীদের হতভম্ব করা এবং ভুল পথে নেয়াই এর উদ্দেশ্য। " অন্য জায়গায় জাবের লিখেছেন, "আমার "মাস্টার" আমাকে শাসাচ্ছেন, যাতে এসব বিদ্যা কোন অবিবেচকের হাতে না পড়ে। " আলকেমীর বিদ্যা গুপ্ত রাখার মানসিকতায় বইগুলো লিখেন কঠিন ভাষায় এবং সাধারনের বোধগম্যের বাইরে।



আল কেমীর চর্চা থেকেই জাবের একসময় আবিষ্কার করে ফেললেন অনেক কিছু। আবিষ্কার করেন কি করে তরলের মিশ্রন থেকে একটি তরলকে আলাদা করা যায়, যা ডিস্টিলেশন নামে পরিচিত, আবিষ্কার করেন একুয়া রেজিয়া নামে একটি মিশ্রন যা সোনাকে গলিয়ে দিতে পারে এবং উদ্ভাবন করেন অগুনতি কেমিক্যাল সাবসট্যান্স - যা মরিচা প্রতিরোধ, স্বর্নের কারুকাজ, পোশাকের ওয়াটারপ্রুফ সহ বিভিন্ন শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত হয়। আল কেমী থেকে তিনি সিস্টেমেটিক এক্সপেরিমেন্টেশনের দ্বারা শুরু করেন আরেকটি সাবজেক্ট, যা পরিচিতি পায় কেমেস্ট্রি হিসেবে। এ প্রসংগে তিনি বলেন, "কেমিস্ট্রির প্রাথমিক কর্তব্য হল, তুমি প্রাকটিক্যাল কাজ করবে এবং এক্সপেরিমেন্ট চালাবে। যারা প্রাকটিক্যাল কাজ করে না এবং এক্সপেরিমেন্ট চালায় না, তারা এ বিষয়ে কোন রকমের দক্ষতা অর্জন করতে পারে না।" 
৬৩৮ খ্রীষ্টাব্দে খলিফা উমর ইউফ্রেটিসের পশ্চীম তীরে কুফা শহর প্রতিষ্ঠা করেন। চারিদিক থেকে ইমিগ্রান্ট এসে কুফায় বসতি শুরু করে, একসময় কুফার জনসংখ্যা ২০০০০০ ছাড়িয়ে যায়। পরবর্তীতে কুফা উমাইয়াদের প্রধান শহরে পরিনত হয়। এই কুফা শহরেই আজদী নামের এক গোত্রের একজন ছিলেন হাইয়ান, যার নেশাগ্রস্ততা শহরে বেশ পরিচিত ছিল। তিনি গোপনে উমাইয়া খলিফাদের বিরুদ্ধে যে চক্রান্ত চলছিলো, তাতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। ৭১২ শতকে উমাইয়া রাজবংশের জনপ্রিয়তায় এক বিশাল ধ্বস নামে। এছাড়া ব্যপক হারে অমুসলিমদের মুসলিম হওয়ার ফলে উমাইয়া রাজ্য অর্থনৈতিক মন্দার সম্মূখীন হয়। অমুসলিমদের কাছ থেকে আদায়কৃত জিজিয়া ট্যাক্সের পরিমান কমে যায়, যা রিভিনিউতে মারাত্মক ধ্বস নামায়। মুসলিমরা যাকাত দিলেও সে যাকাতের খাত নির্দিষ্ট, সর্বমোট আটটি। ফলে উমাইয়াদের পক্ষে অর্থনৈতিক ধ্বস সামলানো কঠিন হয়ে যায়।



ইমাম মুহাম্মদ ইবনে আলীর নেতৃত্বে আব্বাসীয় নেতৃত্ব আসে ক্ষমতায়, যাদেরকে সক্রিয় সহযোগিতা করে শিয়া সম্প্রদায়। জাবেরের পিতা হাইয়ান, যিনি ছিলেন একজন শিয়া, এই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। হাইয়ান এক পর্যায়ে উমাইয়াদের হাতে ধরা পড়ে যান এবং নিহত হন। ফলশ্রুতিতে ৭২১ খ্রীষ্টাব্দে জন্ম শিশু জাবের বড় হন পিতাকে ছাড়াই। কৈশোরে তিনি কোরান, গনিত সহ বেশ কিছু বিষয়ে পারংগমতা অর্জন করেন। আব্বাসীয় রাজবংশ অবশেষে প্রতিষ্ঠা পায়। কথিত আছে আব্বাসীয় জেনারেল আবদুল্লাহ একবার ৮০ জন উমাইয়া নেতাকে দাওয়াত করেন। উমাইয়া নেতারা যখন খেতে ব্যস্ত, তখন আবদুল্লাহ আদেশ দেন এদের হত্যা করার জন্যে। শুধু একজন জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়ে বেচে যান, যিনি পরে ইউফ্রেটিস পার হয়ে স্পেনে পৌছান। মোট কথা, ৭৫০ শতকের এর মধ্যেই উমাইয়াদের হঠিয়ে আব্বাসীয়রা ক্ষমতা সুদৃঢ় করে নেয়।





আব্বাসীয়রা ক্ষমতায় আসার পরে জাবির এক সময় আব্বাসীয় উজির বার্মিকীর নেক নজর লাভ করেন, যার মাধ্যমে খলিফার সাথে দেখা করতে সমর্থ হন। ইয়াহিয়া বার্মিকীর একজন অতীব সুন্দরী দাসী অসুস্থ হয়ে গেলে জাবের তাকে এলিক্সির খাইয়ে পুরো সুস্থ করে দেন (যা ছিল এক ধরনের দ্রবন)। আব্বাসীয়দের কাছে হাইয়ানের সন্তান হিসেবে তিনি স্বীকৃতি পান দুভাবে: খলিফা হারুন অর রশিদের দরবারে তিনি আল কেমিস্ট হিসেবে নিয়োগ পান এবং অন্যদিকে বিখ্যাত শিয়া আলেম জাফর ইবনে আবি তালিব তাকে শিষ্য হিসেবে গ্রহন করেন। শিয়াদের কাছে আল কেমী সবসময়েই আদৃত একটি বিদ্যা ছিল। আলী (রা) বলেন, "আল কেমী হচ্ছে প্রফেসীর বোন।" খলিফার দরবারে তিনি অনেকদিন কাজ করেন। খলিফা হারুন অর রশিদ পরবর্তীতে বার্মিকীদের আচরনে মহা বিরক্ত হয়ে একজনের প্রানদন্ড ও বাকীদের বরখাস্ত করেন। তখন জাবের কুফাতে ফিরে আসেন। বার্মিকীদের সাথে সুসম্পর্ক থাকার মাশুল গুনতে হয় হাউজ এরেস্ট হয়ে। অবশেষে ৮১৫ সালে এ অবস্থাতেই তিনি মৃত্যু বরন করেন। 
Noakhali Govt. College Department of Chemistry logo

Noakhali Govt. College Department of Chemistry logo
Noakhali Govt. College Department of Chemistry logo