Recent Post
Loading...

 

যেসকল কার্বোহাইড্রেটকে আর্দ্র বিশ্লেষণ করে অনেকগুলি মনোস্যাকারাইড অণু পাওয়া যায় তাদেরকে পলিস্যাকারাইড বলে। 
এরা পানিতে অদ্রবণীয় ও স্বাদহীন।

যেমনঃ স্টার্চ, সেলুলোজ ইত্যাদি।

যে সমস্ত পলিস্যাকারাইডকে আর্দ্র বিশ্লেষণ করলে নির্দিষ্ট সংখ্যক 
(২ থেকে ৯ টি মনোস্যাকারাইড) মনোস্যাকারাইড পাওয়া যায় সেই সকল পলিস্যাকারাইডকে অলিগোস্যাকারাইড বলে। 

যেমনঃ ডাইস্যাকারাইড, ট্রাইস্যাকারাইড ইত্যাদি।

 


 সেলুলোজ হলো  β-D- গ্লুকোজের পলিমার। β-D- গ্লুকোজের একটি অনুর এক নম্বর কার্বন (C₁) এর সাথে অপর একটি β-D- গ্লুকোজ অনুর  4নম্বর কার্বন (C₄) β-গ্লাইকোসাইড বন্ধনের মাধ্যমে সেলুলোজ গঠিত হয়। 

রাসায়নিকভাবে সেলুলোজ হলো গ্লাইকোসাইড বন্ধন দ্বারা গঠিত গ্লুকোজের সরল রৈখিক পলিমার। এতে 3000 থেকে 25000 একক 
β-D-গ্লুকোজ অনু বিদ্যমান থাকে।

 

স্টার্চ হচ্ছে α-D- গ্লুকোজের পলিমার। অনেকগুলি α-D-গ্লুকোজ অণু α-গ্লাইকোসাইড বন্ধনের মাধ্যমে স্টার্চ গঠন করে। 
তবে স্টার্চ অ্যামাইলোজ ও অ্যামাইলোপেকটিন নামক দুটি পলিস্যাকারাইড এর সমন্বয়ে গঠিত শাখা শিকল। 
এতে অ্যামাইলোজ 10 - 20% ও অ্যামাইলোপেকটিন 80 - 90% বিদ্যমান থাকে। 

 

প্রতীক ও সংকেতের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপঃ

১. কোন মৌলের পূর্ণনামের সংক্ষিপ্ত প্রকাশকে প্রতীক বলে।
অন্যদিকে, সংকেত হচ্ছে কোন পদার্থের সংক্ষিপ্ত প্রকাশ।

২. প্রতীক শুধু মৌলিক পদার্থের জন্য লেখা হয়। 
কিন্তু, সংকেত মৌলিক ও যৌগিক উভয় পদার্থের জন্য লেখা হয়।

৩. প্রতীক মৌলের একটি পরমাণুকে নির্দেশ করে।
অপরদিকে, সংকেত পদার্থের একটি অনুকে নির্দেশ করে।


 

যৌগমূলকঃ  একাধিক মৌলের একাধিক পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত একটি পরমাণু গুচ্ছ যা একটি আয়নের ন্যায় আচরণ করে এবং বিক্রিয়া শেষে অপরিবর্তিত থাকে, সেসব পরমাণু গুচ্ছকে যৌগমূলক বলে।


যেমনঃ সালফেট (SO₄² - ) যৌগমূলক। কারণ এখানে সালফার ও অক্সিজেন এই দুটি মৌলের পাঁচটি পরমাণু যুক্ত হয়ে একটি পরমাণু গুচ্ছ গঠন করে যার নির্দিষ্ট আধান -2 আছে।

যৌগমূলকের যে চার্জ বা আধান থাকে সেই চার্জ বা আধান থেকে ধনাত্মক  বা ঋণাত্মক চিহ্ন বাদ দিলে যে সংখ্যাটি থাকে তাই ঐ যৌগমূলকের যোজনী নির্দেশ করে।
 যেমনঃ কার্বনেট (CO₃² -) যৌগমূলকের আধান বা চার্জ -2. এখান থেকে ঋণাত্মক (-) চিহ্ন টি বাদ দিলে দুই (2) থাকে। এই দুই হচ্ছে কার্বনেট যৌগমূলকের যোজনী।

নিচে কিছু যৌগমূলকের নাম, সংকেত, যোজনী, জারণ সংখ্যা যথাক্রমে দেওয়া হল ঃ
 হাইড্রোক্সিল,   OH-,      1,      -1.
 নাইট্রেট.         NO₃ -     1,     -1.
 নাইট্রাইট        NO₂ -      1,     -1.
 বাই সালফেট  HSO₄ -     1,     -1.
 বাই কার্বনেট   HCO₃ -     1,     -1.
 সালফেট      SO₄² -         2,       -2
 সালফাইট     SO₃ ² -       2,      -2.
 কার্বনেট       CO₃ ² -       2,       -2.
 বাই ফসফেট   HPO₄² -   2,      -2
 ফসফেট         PO₄ ³ -    3,       -3.    অ্যামোনিয়াম    NH₄+    1,      +1  ফসফোনিয়াম.  PH₄+     1,      +1.



কোন মৌলের সর্বোচ্চ যোজনী ও সক্রিয় যোজনীর মধ্যে পার্থক্যকে ঐ মৌলের সুপ্ত যোজনী বলে।

সক্রিয় যোজনী বলতে মৌলটি কোন যৌগ গঠন অবস্হায় যে যোজনী ব্যবহার করে তা ঐ মৌলের সক্রিয় যোজনী।
যেমন-H₂SO₄ এ S - এর সক্রিয় যোজনী 6, আবার H₂S এ S এর সক্রিয় যোজনী ২,আবার SO₂ এ S এর সক্রিয় যোজনী 4.

S এর সর্বোচ্চ যোজনী 6.

সুপ্ত যোজনী নির্ণয়ঃ 

H₂SO₄ এ S এর সুপ্ত যোজনী=(S এর সর্বোচ্চ যোজনী)-(S এর সক্রিয় যোজনী)=6-6=0.

আবার, H₂Sএ S এর সুপ্ত যোজনী=(S এর সর্বোচ্চ যোজনী)-(S এর সক্রিয় যোজনী)=6-2=4.

আবার, SO₂ এ S এর সুপ্ত যোজনী=(S এর সর্বোচ্চ যোজনী)-(S এর সক্রিয় যোজনী)=6-4=2.

PCl₃এ P এর সুপ্ত যোজনী=(P এর সর্বোচ্চ যোজনী)-(P এর সক্রিয় যোজনী)=5-3=2. 

FeCl₃এ Fe এর সুপ্ত যোজনী =(Fe এর সর্বোচ্চ যোজনী)-(Fe এর সক্রিয় যোজনী)=3-3=0.FeCl₂ এ Fe এর সুপ্ত যোজনী=(Fe এর সর্বোচ্চ যোজনী)-(Fe এর সক্রিয় যোজনী) = 3-2=1.

সাধারনত যে সব মৌলের একাধিক যোজনী বিদ্যামান সেই মৌল গুলির সুপ্ত যোজনী নির্ণয় করা হয়।

 

যেসব মৌলের একাধিক যোজনী বিদ্যামান তাদেরকে পরিবর্তনশীল যোজনী বলা হয়। 
আধুনিক সংজ্ঞা মতে অধাতব মৌলের সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে বিজোড় ইলেকট্রনের সংখ্যা ঐ মৌলের যোজনী নির্দেশ করে।

সালফারের স্বাভাবিক ও উত্তেজিত অবস্থায় ইলেকট্রন বিন্যাস নিম্নরূপঃ

S(16)----> 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3Px² 3Py¹ 3Pz¹

S*(16)---> 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3Px¹ 3Py¹ 3Pz¹3dxy¹

S²*(16)--->1s² 2s² 2p⁶ 3s¹ 3Px¹ 3Py¹ 3Pz¹ 3dxy¹ 3dyz¹

S এর ইলেকট্রন বিন্যাস থেকে দেখা যায় স্বাভাবিক অবস্থায় বহিঃস্থ শক্তিস্তরে বেজোড় ইলেকট্রন দুইটি আছে। এ কারণে সালফারের স্বাভাবিক অবস্থায় যোজনী 2. 

আবার প্রথমবার উত্তেজিত করলে 3Px অরবিটাল থেকে 3dxy অরবিটালে একটি ইলেকট্রন স্থানান্তরিত হয়। 
এ অবস্থায় সালফারের চারটি বিজোড় ইলেকট্রন পাওয়া যায়। এজন্য সালফারের যোজনী 4 হয়।

আবার সালফারকে দ্বিতীয় বার উত্তেজিত করলে 3s অরবিটাল থেকে 3dyz অরবিটালে আরেকটি ইলেকট্রন স্থানান্তরিত হয়। এই অবস্থায় বিজোড় ইলেকট্রন পাওয়া যায় 6 টি। এজন্য সালফার এর যোজনী 6 হয়। 
যেহেতু সালফারের যোজনী 2,4,6 হয় সেহেতু সালফার পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে।


 নিষ্ক্রিয় গ্যাসঃ  পর্যায় সারণির যেসব মৌলের পরমাণু সমূহ ইলেকট্রন আদান, প্রদান বা শেয়ারের মাধ্যমে বন্ধন গঠন করে না তাদেরকে নিষ্ক্রিয় গ্যাস বলা হয়। 

পর্যায় সারণির 18 নম্বর গ্রুপে এদের অবস্থান। নিষ্ক্রিয় গ্যাস গুলি হচ্ছে হিলিয়াম (He), নিয়ন (Ne), আর্গন (Ar),  ক্রিপ্টন(Kr), জেনন (Xe), রেডন (Rn).

নিষ্ক্রিয় গ্যাস গুলি নিষ্ক্রিয় কেনঃ  নিষ্ক্রিয় গ্যাস গুলির ইলেকট্রন বিন্যাস করলে দেখা যায় হিলিয়াম ব্যতীত অন্য নিষ্ক্রিয় গ্যাস গুলোর সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে অষ্টক পূর্ণ থাকে। নিষ্ক্রিয় মৌল সমূহের সর্বশেষ শক্তিস্তরে অষ্টক পুর্ণ থাকায় নিষ্ক্রিয় মৌল সমূহ যথেষ্ট স্থিতিশীল থাকে। ফলে এসব মৌল সমূহ সহজে কোন বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না। সর্ববহিঃস্থ স্তরে ইলেকট্রন দ্বারা অষ্টক পূর্ণ থাকে যা অত্যন্ত সুস্থিত। এ সুস্থিত ইলেকট্রন বিন্যাস ভাঙ্গতে অনেক শক্তির প্রয়োজন হয়। তাই স্বাভাবিক অবস্থায় নিষ্ক্রিয় মৌল সমূহ অন্য কোন মৌলের সাথে যুক্ত হয় না। 
অর্থাৎ বহিঃস্থ স্তরে সুবিন্যাস্ত ইলেকট্রন বিন্যাসের কারণে নিষ্ক্রিয় মৌল সমূহ নিষ্ক্রিয় হয়।

এদের ইলেকট্রন বিন্যাসঃ
He (2) --> 1s²
Ne (10) --> 1s² 2s² 2p⁶
Ar (18) --> 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶
Kr (36) --> 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 3d¹º 4s² 4p⁶
Xe (54)--> [Kr ] 4d¹º 5s² 5p⁶
Rn (86)--> [Xe ] 4f¹⁴ 5d¹º 6s² 6p⁶

হিলিয়াম এর নিষ্ক্রিয়তার কারণঃ হিলিয়াম একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস। কারণ, হিলিয়ামের ইলেকট্রন বিন্যাসে  1s অরবিটাল ইলেকট্রন দ্বারা পূর্ণ থাকে। প্রথম পর্যায়ের ক্ষেত্রে অন্য কোন অরবিটাল না থাকায় এবং s - অরবিটাল ইলেকট্রন দ্বারা পূর্ণ থাকায় হিলিয়াম মৌলটি অন্য কোন মৌল এমনকি আরেকটি হিলিয়াম এর সাথে যুক্ত হতে পারে না। ইলেকট্রন দান বা গ্রহণ এবং শেয়ারের মাধ্যমে যৌগ গঠন করতে পারে না বলে হিলিয়াম একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস।
118  নম্বর নিষ্ক্রিয় গ্যাস ওগানেসন (Oganesson).   এর প্রতীক Og.



জারণ সংখ্যাঃ  যৌগ গঠনের সময় একটি মৌল অপর মৌলের সাথে যুক্ত হতে যে কয়টি ইলেকট্রন আদান প্রদান করে সেই আদান প্রদানকৃত ইলেকট্রনের সংখ্যাকে জারণ সংখ্যা বলে।


জারণ সংখ্যা ধনাত্মক, ঋণাত্মক, ভগ্নাংশ এবং শূন্য হতে পারে। একটি মৌলের একাধিক জারণ সংখ্যা হতে পারে। একে পরিবর্তনশীল জারণ সংখ্যা বলে। কোন যৌগে নির্দিষ্ট মৌলের অজানা জারণ সংখ্যা নির্ণয়ের জন্য কিছু নির্দিষ্ট মৌলের জারণ সংখ্যা মনে রাখা প্রয়োজন।
জানা মৌলের জারণ সংখ্যার সাহায্যে কোন মৌলের অজানা জারণ সংখ্যা সহজেই নির্ণয় করা যায়।

যেসব মৌলের জারণ সংখ্যা মনে রাখা প্রয়োজন তা নিম্নরূপঃ

১. চার্জ নিরপেক্ষ পরমাণুর জারণ সংখ্যা শূন্য হয়।
যেমনঃ Na ; K ; Mg ; Ca ; Fe ইত্যাদি।

২. দ্বি-মৌলিক গ্যাসের জারণ সংখ্যা শূন্য।
যেমনঃCl₂ ; Br₂ ; I₂ ; N₂ ; O₂ ; F₂ ; H₂ ইত্যাদি।

৩. নিষ্ক্রিয় গ্যাসের জারণ সংখ্যা শূন্য।
যেমনঃ He ; Ne ; Ar ; Kr ; Xe ; Rn.
 
৪. গ্রুপ- 1 এর মৌল সমূহের জারণ সংখ্যা  +1.
যেমনঃ H ; Li ; Na ; K ; ইত্যাদি।
 
৫. গ্রুপ -2 এর মৌলসমূহের জারণ সংখ্যা  +2.
যেমনঃ Be ; Mg ; Ca ইত্যাদি।
 
৬. গ্রুপ -17 মৌলসমূহের জারণ সংখ্যা -1.
যেমনঃ Cl₂ ; Br₂ ; I₂ ; F₂.
 
৭. গ্রুপ -16 মৌলসমূহের জারণ সংখ্যা -2.
যেমনঃ O₂ ; S ইত্যাদি।

৮. সাধারণ অক্সাইডের ক্ষেত্রে অক্সিজেনের জারণ সংখ্যা -2. যেমনঃ Na₂O,MgO ; CaO ; ইত্যাদি।

পার অক্সাইডে অক্সিজেনের জারণ সংখ্যা -1. যেমনঃ  H₂O₂ ; Na₂O₂ ইত্যাদি। 
আবার সুপার অক্সাইডে অক্সিজেনের জারণ সংখ্যা - 1/2.   যেমনঃ NaO₂ ; KO₂ ইত্যাদি।

৯. হাইড্রোজেন যদি অধাতুর সঙ্গে যুক্ত থাকে তবে জারণ সংখ্যা +1 হয়। যেমনঃ HCl ; HBr ; HI ; H₂O ইত্যাদি। 
আবার হাইড্রোজেন ধাতুর সঙ্গে যুক্ত থাকলে জারণ সংখ্যা -1 হয়। 
যেমনঃ NaH ; CaH₂ ; LiH ইত্যাদি।


একটি যৌগের মোট জারণ সংখ্যার পরিবর্তন শূন্য হয়।
KMnO₄ যৌগটিতে  Mn এর জারণ সংখ্যা
   Mn => +1 + Mn + (- 2) x 4 =0
          => +1 + Mn - 8 = 0
          => Mn - 7 = 0
          => Mn = +7

যৌগটি আধান নিরপেক্ষ হওয়ায় সমান চিহ্নের পরে শূন্য হয়েছে। পটাশিয়াম গ্রুপ-1 এর মৌল হাওয়ায় এর জারণ সংখ্যা +1 এবং অক্সিজেনের জারণ সংখ্যা -2.অতএব KMnO₄ যৌগটিতে  Mn এর জারণ সংখ্যা +7.

MnO₄- যৌগটিতে  Mn এর জারণ সংখ্যা

          =>  Mn + (- 2) x 4 =  -1
          =>  Mn - 8 = -1
          => Mn  = -1 +8
          => Mn = +7

যৌগটি আধান -1 হওয়ায় সমান চিহ্নের পরে -1 হয়েছে।
FeCl₃ যৌগটিতে Fe এর জারণ সংখ্যা
     => Fe + (-1)x 3 = 0
     => Fe - 3 = 0
     => Fe = + 3

যৌগটি আধান নিরপেক্ষ হওয়ায় সমান চিহ্নের পরে শূন্য হয়েছে। Cl গ্রুপ -17 এর মৌল হাওয়ায় এর জারণ সংখ্যা -1.

K₂Cr₂O₇ যৌগটিতে Cr এর জারণ সংখ্যা
    => (+1)x 2 +2Cr + (-2)x 7 = 0
    => +2 +2Cr - 14 = 0
    => 2Cr - 12 = 0
    => Cr = +6

K₂Cr₂O₇ যৌগটিতে Cr এর জারণ সংখ্যা +6.

N₂O যৌগটিতে N এর জারণ সংখ্যা
  => 2N + (-2) = 0
  => 2N -2   = 0
  => 2N = +2
  => N  = +1.

N₂O যৌগটিতে N এর জারণ সংখ্যা +1.