দুটি ভিন্ন ধাতুর মৌল দ্বারা গঠিত তড়িৎদ্বারকে দুটি ভিন্ন তড়িৎ বিশ্লেষ্য দ্রবণে আংশিক নিমজ্জিত করে দ্বি-প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট যে কোষ গঠন করা হয় তাকে গ্যালভানিক কোষ বলে।
গ্যালভানিক কোষে রাসায়নিক শক্তি বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
যে ধাতুর তড়িৎদ্বার অধিক সক্রিয় তাকে অ্যানোড হিসাবে এবং যে ধাতুর তড়িৎদ্বার কম সক্রিয় তাকে ক্যাথোড হিসেবে ব্যবহার করা হয়। গ্যালভানিক কোষে অ্যানোডে জারণ ও ক্যাথোড বিজারণ সংঘটিত হয়। অ্যানোডে ধাতব পরমাণু ইলেকট্রন ত্যাগ করে ধনাত্মক আয়ন হিসেবে দ্রবণে যায়। এজন্য অ্যানোডে ইলেকট্রন ঘনত্ব বেশি থাকে।
যার কারণে অ্যানোড ঋণাত্মক হয়। অপরদিকে ক্যাথোডে ইলেকট্রন ঘনত্ব কম থাকায় গ্যালভানিক কোষে ক্যাথোড ধনাত্মক হয়।
হাইড্রোজেন সালফাইডের জলীয় দ্রবণ অম্লীয়।
কারণ এর জলীয় দ্রবণে প্রোটন আয়ন (H+) ত্যাগ করে। এই প্রোটন আয়ন নীল লিটমাসকে লাল লিটমাসকে পরিণত করে।
H₂S(aq) <-----> H+(aq)+HS-(aq)
নীল লিটমাস + H+(aq) ------> লাল লিটমাস
আবার, সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড এর সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি গঠন করে।
H₂S(g) + 2NaOH(aq) -----> Na₂S(aq) + 2H₂O(l)
সেজন্য বলা যায়, হাইড্রোজেন সালফাইড এর জলীয় দ্রবণ অম্লধর্মী।
উদ্ভিদ জগতের প্রধান দুটি পলিস্যাকারাইড হলো স্টার্চ ও সেলুলোজ।
সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ এ দুটি পলিস্যাকারাইড প্রস্তুত করে। এসকল পলিস্যাকারাইডের মনোমার বা ক্ষুদ্র একক অণু গ্লুকোজ। উদ্ভিদের সবুজ পাতায় ক্লোরোফিল ও সূর্যালোকের প্রভাবে বায়ু থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও মাটি থেকে মূলের মাধ্যমে সংগৃহীত পানি রাসায়নিক ভাবে পরিবর্তিত হয়ে গ্লুকোজ (C₆H₁₂O₆) নামক মনোস্যাকারাইড তৈরি করে। এ পদ্ধতিকে সালোকসংশ্লেষণ বলে।
6CO₂ +6H₂O -----> C₆H₁₂O₆ +6O₂
অন্যদিকে, একই উদ্ভিদে হাজার হাজার গ্লুকোজ অণু পলিমারকরনের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে উদ্ভিদ দেহের গঠন উপাদান সেলুলোজ উৎপন্ন করে।
আবার, ভিন্নভাবে অসংখ্য গ্লুকোজ অণু উদ্ভিদ দেহে যুক্ত হয়ে স্টার্চ অণু সৃষ্টি করে এবং উদ্ভিদের বীজ, রূপান্তরিত মূল ও কান্ডে ভবিষ্যতের খাদ্যরূপে সঞ্চিত হয়।
এইরূপে প্রাকৃতিক পলিস্যাকারাইড স্টার্চ ও সেলুলোজ [(C₆H₁₀O₅)n] গঠিত হয়।
nC₆H₁₂O₆ -----> (C₆H₁₀O₅)n + nH₂O
মানুষের পরিপাকতন্ত্রে স্টার্চ ও জীবজন্তুর পরিপাকতন্ত্রে স্টার্চ এবং সেলুলোজ ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়ায় গ্লুকোজে পরিণত ও শোষিত হয়ে রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে লিভারে পৌঁছালে গ্লাইকোজেন বা প্রাণীজ স্টার্চ রূপে অব্যবহৃত গ্লুকোজ জমা থাকে।
যে সকল পলিমার প্রাকৃতিক উপায়ে সৃষ্টি হয় তাদেরকে প্রাকৃতিক পলিমার বলে।
প্রকৃতিতে প্রাণী ও উদ্ভিদ বিভিন্ন প্রকার পলিমার গঠন করে। এসকল পলিমার তাদের দেহের গঠন, খাদ্য, বংশগত ধারা সংরক্ষন, দেহের জৈবিক বিক্রিয়ায় প্রভাবক হিসেবে ক্রিয়া সম্পাদন এবং দেহের প্রতিরক্ষামূলক পরিবেশ সৃষ্টি প্রভৃতি ভূমিকা পালন করে।
এসব প্রাকৃতিক পলিমারকে মোটামুটি তিনটি বৃহৎ শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়।
১. পলিস্যাকারাইড সমূহ
২. প্রোটিন সমূহ
৩. নিউক্লিক অ্যাসিড সমূহ।
