ইউরেনিয়াম কী?
সহজ ভাষায় ইউরেনিয়াম হচ্ছে একটি ভারী ধাতু। এর রঙ অনেকটা রুপার মতো। এটি একটি তেজষ্ক্রিয় মৌল। তেজষ্ক্রিয় মানে হলো, যা হতে নিজে নিজেই ক্ষতিকর রশ্মি নির্গত হতে থাকে। সর্বপ্রথম ১৭৮৯ সালে এই মৌলটি আবিষ্কৃত হয়। ইউরেনিয়াম নামটি রাখা হয়েছে ইউরেনাস গ্রহের নামানুসারে। আর এটা থেকে যে তেজষ্ক্রিয় রশ্মি নির্গত হয় সেটা জানা যায় ১৮৯৬ সালে। জানান বিজ্ঞানী হেনরি বেকেরেল। ইউরেনিয়াম পর্যায় সারণির ৯২ নম্বর মৌল। এর ভর ২৩৮।
.
বলতে গেলে ইউরেনিয়াম সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন বিজ্ঞানী ওপেনহেইমার। পারমাণবিক বোমা বানাতে।জাপানে হিরোশিমায় ফেলা "লিটল বয়" ছিল ইউরেনিয়াম নির্মিত। এখন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নিউক্লিয়ার অস্ত্র বানাতে ইউরেনিয়াম ব্যবহৃত হয়। শান্তিপূর্ণ ব্যবহার বলতে, যেহেতু খুব অল্প পরিমাণ ইউরেনিয়াম হতেই অনেক বেশি এনার্জি পাওয়া যায়, তাই এ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে অনেক বেশি। তবে ইউরেনিয়াম প্লান্ট খুবই ব্যায়বহুল।
.
ইউরেনিয়াম কিভাবে ক্ষতি করতে পারে?
ইউরেনিয়াম অত্যন্ত ক্ষতিকর। নিজে নিজেই এটা থেকে রশ্মি নির্গত হয়। খুব অল্প পরিমাণে থাকলেও বহুদিন এর কাছাকাছিথাকলে ক্ষতি হতে পারে। কিংবা বেশি পরিমানে থাকলে অল্প সময়েই এর প্রভাব পড়বে। যারা অপেক্ষাকৃত সবল মানুষ তাদের উপর দেরিতে প্রভাব পড়বে। যারা দুর্বল তাদের উপর তাৎক্ষিণিক প্রভাব পড়ে। ইউরেনিয়াম মানুষের শরীরের জীবন্ত কোষ ধ্বংস করে ফেলে। প্রাথমিক লক্ষণ হিশাবে শরীরে ঘা হয়, পুঁজ হয়, খোঁচ পাচড়া সহ বিভিন্ন চর্মরোগ দেখা দিতে পারে। বমি বমি ভাব দেখা যায়, ক্ষুধামন্দা হয়, ডায়রিয়া হয়। ভবিষ্যতে ক্যান্সার, লিউকোমিয়া হবে। ধীরে ধীরেমানুষকে পঙ্গু করে দিতে পারে। নবজাতক কিংবা শিশুদের উপর এর প্রভাব মারাত্মক। এরা বিকলাঙ্গ হয়ে পড়ে।
.
মানুষের উপর তাৎক্ষণিক যদি কোনো প্রভাব নাও পড়ে খুশি হবার কারণ নেই। ইউরেনিয়ামের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব আছে। আজ তেজষ্ক্রিয়তায় আক্রান্ত হলে অনেক বছর পরও কেউ ক্যান্সার আক্রান্ত হতে পারেন, এই তেজষ্ক্রিয়তার প্রভাবে। লিউকোমিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন। শুধু শারিরীক নয় মানসিক রোগও দেখা যায় তেজষ্কৃয়তার প্রভাবে।