Recent Post
Loading...

জৈব যৌগের সমাণুতা:

যেসব যৌগের আনবিক সংকেত এক হওয়া সত্ত্বেও এদের গাঠনিক সংকেতের ভিন্নতার কারণে এবং অণুস্থিত পরমাণুসমূহের ত্রিমাত্রিক বিন্যাসের ভিন্নতার কারণে এদের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মের পার্থক্য দেখা যায় সেসব যৌগকে পরস্পরের সমাণু এবং যৌগের এরূপ ধর্মকে সমাণুতা বলে।
সমাণুতার প্রকারভেদ:
সমাণুতাকে প্রধানত দু শ্রেণীতে ভাগ করা যায়-
ক. গাঠনিক সমাণুতা।
এবং খ. ত্রিমাত্রিক বা স্টেরিও সমাণুতা।
ক. গাঠনিক সমাণুতা:
যৌগের অণুস্থিত বিভিন্ন পরমাণুর সম্ভাব্য একাধিক অবস্থান তথা ভিন্ন ভিন্ন গাঠনিক সংকেতের পার্থক্যের জন্য যে সমাণুতার উদ্ভব হয় তাকে গাঠনিক সমাণুতা বলে।
গাঠনিক সমাণু পাঁচ প্রকার। যেমন-
১। শিকল সমাণুতা: যৌগের অণুস্থিত কার্বন শিকলের গঠনের পার্থক্যের জন্য সৃষ্ট সমাণুতাকে শিকল সমাণুতা বলে। যেমন- C4H10।
(সমাণু দুটিতে যথাক্রমে ৪ টি ও ৩টি কার্বন পরমাণুর প্রধান শিকল)
C5H12-এর শিকল সমাণু নির্ণয় করার চেষ্টা কর।
২। অবস্থান সমাণুতা: কার্বন শিকলে দ্বিবন্ধন ও ত্রিবন্ধনের অবস্থান অথবা কার্যকরী মূলক বা প্রতিস্থাপিত পরমাণু বা মূলকের অবস্থানের পার্থক্যের জন্য সৃষ্ট সমাণুতাকে অবস্থান সমাণুতা বলে। যেমন- C3H8O।
(সমাণু দুটিতে –OH মূলকের অবস্থান যথাক্রমে ১নং ও ২নং কার্বনে)
C4H8- এর অবস্থান সমাণু নির্ণয় করার চেষ্টা কর।
৩। কার্যকরী মূলক সমাণুতা: কার্যকরী মূলকের বিভিন্নতার কারনে সৃষ্ট সমাণুতাকে কার্যকরী মূলক সমাণুতা বলে। যেমন-C3H6O।
(প্রথমটিতে অ্যালডিহাইডের কার্যকরী মূলক এবং দ্বিতীয়টিত কিটোনের কার্যকরী মূলক)
C2H6O-এর কার্যকরী মূলক সমাণুতা নির্ণয় করার চেষ্টা কর।
৪। মেটামারিজম: একই সমগোত্রীয় শেণীর অন্তর্ভুক্ত সমাণুগুলোতে কার্যকরী মূলকের উভয় পার্শ্বে কার্বন পরমানুর সংখ্যার ভিন্নতার কারনে সৃষ্ট সমাণুতাকে মেটামারিজম বলে। এবং এসব সমাণুকে মেটামার বলে। যেমন- C5H10O।
(একই সমগোত্রীয় (কিটোন) শ্রেণীর যৌগ, কিন্তু দুটি সমাণুতে কার্যকরী মূলকের (-CO-) দুপাশে কার্বনের সংখ্যা ভিন্ন। তাই এরা মেটামার। উপরের আলোচনা থেকে লক্ষ্য করে দেখ, এরা কিন্তু একই সাথে অবস্থান সমাণুক। সাধারণত ইথার,কিটোন,ও সেকেন্ডারী অ্যামিনসমূহ মেটমরিজম প্রদর্শন করে। )
C4H10O –এর মেটামার নির্ণয় করার চেষ্টা কর।
৫। টটোমারিজম: টটোমারিজম হল একটি বিশেষ ধরনের কার্যকরী মূলক সমাণুতা। এ প্রক্রিয়ায় সমাণুগুলো এক প্রকার কার্যকরী মূলক বিশিষ্ট গঠন থেকে স্বতঃস্ফুর্তভাবে অন্য প্রকার কার্যকরী মূলক বিশিষ্ট গঠনে রূপান্তরিত হয় এবং উভয় গঠনের মধ্যে সাম্যাবস্থা বিরাজমান থাকে। তাই টটোমারিজম কে গতিশীল কার্যকরী মূলক সমাণুতা বলে। এরূপ সমাণুর একটি কে অপরটির টটোমার বলে। যেমন: কিটো-ইনল টটোমারিজম।
(প্রথম যৌগের কিটোনের কার্যকরী মূলক পরিবর্তিত হয়ে দ্বিতীয় যৌগ অ্যালকোহলের কার্যকরী মূলক হয়েছে)
খ. স্টেরিও সমাণুতা:
যে সব যৌগের আণবিক ও গাঠনিক সংকেত একই কিন্তু বিভিন্ন পরমাণু ও মূলকের ত্রিমাত্রিক অবস্থান বিন্যাসের কারনে এদের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মে পার্থক্য দেখা যায় সে সব যৌগকে স্টেরিও সমাণু এবং এদের এই ধর্মকে স্টেরিও বা ত্রিমাত্রিক সমাণুতা বলে।
স্টেরিও সমাণুতা দু’ প্রকার। যেমন-
১। জ্যামিতিক সমাণুতা
২। আলোক সমাণুতা
১। জ্যামিতিক সমাণুতা: জৈব যৌগের কার্বন-কার্বন বন্ধনের অক্ষ বরাবর মুক্ত আবর্তন সম্ভব না হলে তখন ভিন্ন কনফিগারেশন বা জ্যামিতিক বিন্যাসযুক্ত দু’ধরনের যৌগ অণু সৃষ্টি হয়। এদেরকে জ্যামিতিক সমাণু এবং এ ধরণের সমাণুতাকে জ্যামিতিক সমাণুতা বলে। সাধারণত প্রতিস্থাপিত অ্যালকিনসমূহ এবং চাক্রিক যৌগসমূহ জ্যামিতিক সমাণুতা প্রদর্শন করে।
জ্যামিতিক সমাণুতে দ্বিবন্ধনের দুপাশে একই পরমাণু বা মূলকদ্বয় যখন দ্বিবন্ধনযুক্ত কার্বন পরমাণুর একই পার্শ্বে থাকে তখন তাকে সিস (cis) সমাণু আর বিপরীত পার্শ্বে থাকলে তখন তাকে ট্রান্স (trans) সমাণু বলে। যেমন-
(দ্বিবন্ধনের দুপাশে একই পরমাণু Br ও H। এখানে Br বা H দ্বিবন্ধনের একদিকে যেদিকে আছে (Br নীচে এবং H উপরে) দ্বিবন্ধনের অন্যদিকেও সেদিকে আছে। তাই এটি সিস সমাণু)
(দ্বিবন্ধনের দুপাশে একই পরমাণু Br ও H। এখানে Br বা H দ্বিবন্ধনে একদিকে যে দিকে আছে অন্যদিকে তার বিপরীত দিকে আছে। তাই এটি ট্রান্স সমাণু)
২-বিউটিন -এর সিস-ট্রান্স সমাণু দুটি লেখার চেষ্টা কর।
২। আলোক সমাণুতা: একই আনবিক ও গাঠনিক সংকেত বিশিষ্ট যৌগের দুই বা ততোধিক ভিন্ন কনফিগারেশন যখন একবর্ণী এক-সমতলীয় আলোর প্রতি ভিন্ন আচরন প্রদর্শন করে তখন তাদের আলোক সক্রিয় সমাণু এবং একবর্ণী এক-সমতলীয় আলোর প্রতি তাদের এই আচরণকে আলোক সমাণুতা বলে।
আলোক সমাণুগুলোর অপ্রতিসম কার্বন পরমাণু বা কাইরাল কেন্দ্র থাকে, এরা একে অপরের দর্পণ প্রতিবিম্ব হয় এবং কনফিগারেশন গুলো পরস্পর অসমপাতিত হয়। যেমন- ল্যাকটিক এসিডের (CH3.CH.(OH).COOH) দুটি আলোক সমাণু আছে। একটি d-ল্যাকটিক এসিড ( যেসব আলোক সমাণু এক-সমতলীয় আলোর তলকে ডানদিকে ঘুরায় তাদের দক্ষিনাবর্ত বা (+) বা d (dextro-rotatory) যৌগ বলে) এবং অপরটি l-ল্যাকটিক এসিড (যেসব আলোক সমাণু এক-সমতলীয় আলোর তলকে বামদিকে ঘুরায় তাদের বামাবর্ত বা (-) বা l (laevo-rotatory) যৌগ বলে)।
(একটি অপরটির দর্পন প্রতিবিম্ব)
CH3-CH(NH2)-COOH -এর আলোক সমাণুগুলি লেখার চেষ্টা কর।
কাইরাল কার্বন:
একই কার্বন পরমাণুতে চারটি ভিন্ন মূলক যুক্ত থাকলে ঐ কার্বন পরমাণুর সাপেক্ষে যৌগটি অপ্রতিসম হয় তাই ঐ যৌগকে অপ্রতিসম বা কাইরাল যৌগ এবং ঐ কার্বন কে কাইরাল কার্বন (chiral) বলে। যৌগের সংকেতে একে তারকা (*) চিহ্ন দ্বারা দেখানো হয়। (একটি যৌগে যদি nটি কার্বন পরমাণু থাকে তবে তার 2n সংখ্যক আলোক সমাণু থাকবে।)
এনানসিওমারিজম:
অপ্রতিসম কার্বন পরমাণু যুক্ত কোন যৌগ অনু ও এর দর্পন প্রতিবিম্ব পরস্পর সমাপতিত না হলে এরূপ দুই ভিন্ন গঠনের অণু আলোক সক্রিয় হয়। এরূপ দুই আলোক সক্রিয় সমাণুকে এনানসিওমার বলা হয়।
রেসিমিক মিশ্রণ:
দুটি এনানসিওমার যেমন d-ল্যাকটিক এসিড ও l-ল্যাকটিক এসিড উভয়েই এক-সমতলীয় আলোর তলকে সমান কৌণিক পরিমাণে বিপরীত দিকে ঘুরায়। তাই d-সামাণু ও l-সমাণুর সমপরিমান মিশ্রণ পরস্পরের বিপরীত ঘূর্ণন ক্রিয়াকে নষ্ট করে অর্থাৎ দুটি বিপরীত আলোক সক্রিয় মিশ্রণ আলোক নিষ্ক্রিয় হয়। দুটি এনানসিওমারের সমমোলার মিশ্রণকে রেসিমিক মিশ্রণ বা dl মিশ্রণ বা (+/-) মিশ্রণ বলে।

 পরমাণু

মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা যা ঐ পদার্থের বৈশিষ্ট্য রক্ষা করে। যাকে বিশ্লেষিত করলে আরো ক্ষুদ্রতম কণা ইলেক্ট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন পাওয়া যায়। পরমাণুকে দুটি ভিন্ন অঞ্চলে ভাগ করা যায়। একটিকে কেন্দ্র বলা হয়- যে অংশে পরমাণুর সকল ভর ও ধনাত্বক চার্জ পুঞ্জীভূত থাকে। অর্থাৎ নিরপেক্ষ নিউট্রন ও ধনাত্বক প্রোটন একত্রে কেন্দ্র বা নিউক্লিয়াসে থাকে আর দ্বিতীয়টিকে বলা হয় বহিঃঅঞ্চল- যে অংশে নির্দিষ্ট শক্তির কতক শক্তিস্তর থাকে আর ঐ শক্তিস্তরে নির্দিষ্ট শক্তির ঋণাত্বক চার্জ যুক্ত ইলেক্ট্রন পরিক্রমণরত অবস্থায় থাকে।

পদার্থ

যার ভর আছে, কোন স্থান দখল করে অবস্থান করে এবং যা স্থিতিশীল বা গতিশীল অবস্থার বাধা প্রদান করে, তাকে পদার্থ বলে। পৃথিবীর সমস্ত পদার্থকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে । যথা:কঠিন,তরল ও বায়বীয় ।এছাড়া ও পদার্থের আরেকটি অবস্থা ও হিসাব করা হয়, যাকে প্লাজমা বলে।এটিকে উচ্চ তাপমাত্রায় আয়নিত গ্যাস বলা হয়।

যৌগ

একাধিক মৌলের সমন্বয়ে গঠিত নতুন পদার্থকে যৌগ বলে। যেমন: সোডিয়াম ক্লোরাইড, কার্বন‌ ডাই অক্সাইড সালফিউরিক এসিড ইত্যাদি।

বস্তু

যেকোন পদার্থের নির্দিষ্ট একটা অংশকে বস্তু বলে। যেমনঃ মৌল, এক অণু বিশিষ্ট যৌগ। অর্থাৎ হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, পানি ইত্যাদি।

অণু

দুই বা ততোধিক পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত ক্ষুদ্র কণাকে বলা হয় অণু। যেমন: হাইড্রোজেনের দুটি পরমাণু পরস্পর যুক্ত হয়ে অণু গঠন করে।

হাইড্রোজেনের পরমাণু H এবং হাইড্রোজেনের অণু H2

মোল

কোনো পদার্থের পারমাণবিক ভর বা আণবিক ভরকে গ্রাম এককে প্রকাশ করলে যে পরিমাণ পাওয়া যায়, তাকে ঐ পদার্থের এক মোল বলে। ১ mole=৬.০২x১০ ২৩ টি অণু/পরমাণু/আয়ন।

এই সংখ্যাটিকে অ্যাভোগেড্রোর সংখ্যা বলা হয়। কোন পদার্থের যে পরিমাণের মধ্যে অ্যাভোগেড্রোর সংখ্যার সমান সংখ্যক অণু/পরমাণু/আয়ন বিদ্যমান থাকে তাকে ঐ পদার্থের একমোল বলে।

কার্বনের পারমাণবিক ভর ১২

একে গ্রাম এককে প্রকাশ করলে,

১২ গ্রাম কার্বন = ১ মোল কার্বন

আবার পানির আণবিক ভর ১৮

সুতরাং ১ মোল পানি = ১৮ গ্রাম পানি।


অম্লত্ব ও ক্ষারত্ব

অম্ল বা ক্ষারের কয়েকটি তত্ত্ব রয়েছে; তার মধ্যে সবচেয়ে চেয়ে সহজতর তত্ত্বটি হচ্ছে 'আরহেনিয়াসের তত্ত্ব'। তার মতে, অম্ল হচ্ছে এমন ধরনের বস্তু যা পানির সাথে দ্রবীভুত হলে হাইড্রনিয়াম আয়ন উৎপন্ন করে এবং ক্ষার হল যা পানির সাথে দ্রবীভূত হলে হাইড্রোক্সাইড আয়ন উৎপন্ন করে। ব্রনস্টেড-লাউরি‘র অম্ল-ক্ষার সূত্রানুসারে, রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় যদি একটি মৌল অন্য একটি মৌলকে ধ্ণাত্মক হাইড্রোজেন আয়ন প্রদান করে তবে তাকে অম্ল বলে; অপরপক্ষে ক্ষার হচ্ছে ঐ বস্তুু যা ঐ হাইড্রোজেন আয়ন গ্রহণ করে। এ সম্বন্ধে লুইস এর অম্ল-ক্ষার তত্ত্ব নামে তৃতীয় একটা তত্ত্ব রয়েছে,যার ভিত্তি হল নতুন রাসায়নিক বন্ধন গঠন করা। লুইসের তত্ত্বানূসারে অম্ল হচ্ছে ঐ মৌল যা বন্ধন গঠনের সময় অন্য মৌল হতে এক জোড়া ইলেক্ট্রন গ্রহণ করতে সক্ষম; অন্যদিকে ক্ষার হচ্ছে ঐ মৌল যা নতুন বন্ধনে এক জোড়া ইলেক্ট্রন দিতে পারে। তাছাড়া আরো অনেক ভাবেও অম্ল ও ক্ষার কে সঙ্গায়িত করা হয়ে থাকে।

অম্লের ক্ষমতা প্রধানত ২ পদ্ধতিতে পরিমাপ করা হয়ে থাকে।একটা পদ্ধতি হচ্ছে আরহেনিয়াসের অম্লত্বের বর্ণনার উপর ভিত্তি করে, pH ,যেটা দ্রবণে ঘণীভূত হাইড্রোনিয়াম আয়ন কে বোঝায়,যেটাকে ঋণাত্মক লগারিদ্মিক স্কেল এ প্রকাশ করা হয়। এভাবে,যে দ্রবণের pH এর মান কম ও উচ্চ ঘণীভূত হাইড্রনিয়াম আয়ন তবে সেটা অধিক অম্লীয়। অন্য পদ্ধতি টা হচ্ছে, ব্রনস্টেড-লাউরি‘র বর্ণনার উপর ভিত্তি করে,যে বস্তুর ka এর মান অধিকতর এবং রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় নিম্নতর ka মানের তুলনায় অত্যধিক পরিমাণে হাইড্রোজেন আয়ন প্রদান করে। ব্রনস্টেড-লাউরি‘র অম্ল-ক্ষার সূত্রানুসারে, রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় যদি একটি মৌল অন্য একটি মৌলকে ধ্ণাত্মক হাইড্রোজেন আয়ন প্রদান করে তবে তাকে অম্ল বলে; অপরপক্ষে ক্ষার হচ্ছে ঐ বস্তু যা ঐ হাইড্রোজেন আয়ন গ্রহণ করে। এ সম্বন্ধে লুইস এর অম্ল-ক্ষার তত্ত্ব নামে তৃতীয় একটা তত্ত্ব রয়েছে,যার ভিত্তি হল নতুন রাসায়নিক বন্ধন গঠন করা। লুইসের তত্ত্বানূসারে অম্ল হচ্ছে ঐ মৌল যা বন্ধন গঠনের সময় অন্য মৌল হতে এক জোড়া ইলেক্ট্রন গ্রহণ করতে সক্ষম; অন্যদিকে ক্ষার হচ্ছে ঐ মৌল যা নতুন বন্ধনে এক জোড়া ইলেক্ট্রন দিতে পারে। তাছাড়া আরো অনেক ভাবেও অম্ল ও ক্ষার কে সঙ্গায়িত করা হয়ে থাকে।

অম্লের ক্ষমতা প্রধানত ২ পদ্ধতিতে পরিমাপ করা হয়ে থাকে।একটা পদ্ধতি হচ্ছে আরহেনিয়াসের অম্লত্বের বর্ণনার উপর ভিত্তি করে, pH ,যেটা দ্রবণে ঘণীভূত হাইড্রোনিয়াম আয়ন কে বোঝায়,যেটাকে ঋণাত্মক লগারিদ্মিক স্কেল এ প্রকাশ করা হয়। এভাবে,যে দ্রবণের pH এর মান কম ও উচ্চ ঘণীভূত হাইড্রনিয়াম আয়ন তবে সেটা অধিক অম্লীয়। অন্য পদ্ধতি টা হচ্ছে, ব্রনস্টেড-লাউরি‘র বর্ণনার উপর ভিত্তি করে,যে বস্তুর ka এর মান অধিকতর এবং রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় নিম্নতর ka মানের তুলনায় অত্যধিক পরিমাণে হাইড্রোজেন আয়ন প্রদান করে।

দশা

পদার্থের নির্দিষ্ট ভৌত অবস্থাকে (কঠিন, তরল,গ্যাসীয় ও প্লাজমা ) নির্দেশ করা হয়।

জারণ-বিজারণ

যে বিক্রিয়ায় ইলেক্ট্রন আদান প্রদান হয় তাকে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া বলে । যে বিক্রিয়ায় ইলেক্ট্রন ত্যাগ বা বর্জন করা হয় তাকে জারণ বলে । আবার যে বিক্রিয়ায় ইলেক্ট্রন গ্রহণ করা হয় তাকে বিজারণ বলে । জারক ইলেক্ট্রন গ্রহণ করে নিজে বিজারিত হয় এবং অপরকে জারিত করে আর বিজারক ইলেক্ট্রন ত্যাগ করে নিজে জারিত হয় এবং অপরকে বিজারিত করে ।

বন্ধন

অনুতে পরমাণু সমূহ পরস্পর যেভাবে আন্তঃ আণবিক শক্তিতে যুক্ত থাকে, তাকে রাসায়নিক বন্ধন বলে।

বিক্রিয়া

রসায়নের পরিভাষায় যে পদ্ধতিতে দুই বা ততোধিক মৌল বা যৌগ পরস্পর যুক্ত হয়ে এক বা একাধিক নতুন যৌগ উৎপন্ন করে তাকে বিক্রিয়া বলে। যদি একাধিক মৌল বা যৌগ পরস্পর যুক্ত নতুন যৌগ উৎপন্ন না-করে তবে তাকে বিক্রিয়া বলা যাবে না। বিক্রিয়ায় মূলত পরমাণু বা ইলেকট্রনের আদান প্রদান ঘটে।

রাসায়নিক সমীকরণ

রাসায়নিক বিক্রিয়াকে সংক্ষেপে উপস্থাপন করার জন্য রাসায়নিক সমীকরণ ব্যবহার করা হয় ৷ অর্থাৎ সমীকরণ হলো রাসায়নিক শর্টহ্যান্ড (Chemical Shorthand ) ও কোনো রাসায়নিক প্রক্রিয়াকে রসায়নের ভাষায় প্রকাশ৷ রাসায়নিক সমীকরণ লেখার নিয়ম:

  1. রাসায়নিক বিক্রিয়া যে সকল পদার্থ নিয়ে শুরু হয় তাদেরকে বিক্রিয়ক ( Reactant ) এবং যে সকল পদার্থ উৎপন্ন হয়, তাদেরকে উৎপাদ (Product) বলে ৷ রাসায়নিক সমীকরণে বিক্রিয়কসমূহ বামপাশে এবং উৎপাদসমূহ ডানপাশে লিখে মাঝখানে সমান (=) অথবা তীর( → ) চিহ্ন দেয়া হয় ৷
  2. বিক্রিয়ায় একাধিক বিক্রিয়ক এবং একাধিক উৎপাদ থাকলে তাদেরকে (+) চিহ্ন দিয়ে লেখা হয় ৷
  3. সমীকরণের বামপাশে বিভিন্ন মৌলের পরমাণু সংখ্যা এবং ডানপাশে একই মৌলের পরমাণু সংখ্যা সমান করা হয় ৷ বিক্রিয়ক এবং উৎপাদ ভিন্ন যৌগ হলেও তা অভিন্ন মৌলের পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত হয় ৷ এতে ভরের সংরক্ষণ নীতি অনুসরণ করে ৷
  4. বিক্রিয়ক ও উৎপাদের ভৌত অবস্থা যৌগের ডানপাশে নিচে প্রথম বন্ধনীর মধ্যে লেখা হয় ৷ যৌগের ভৌত অবস্থা কঠিন (Solid)

হলে (s), তরল (Liquid) হলে (l) এবং গ্যাসীয় (Gaseous) হলে (g) লেখা হয় ৷ বিক্রিয়ক এবং উৎপাদ হিসেবে কোনো যৌগের জলীয় দ্রবণ (Aqueous solution) থাকলে (aq) লেখা হয় ৷

রাসায়নিক সাম্যাবস্থা

উভমুখী বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে সময়ের সাথে এক সময় বিক্রিয়ার সম্মুখবেগ ও পশ্চাৎবেগ সমান হয়। এ অবস্থাকে রাসায়নিক সাম্যাবস্থা বলে। সাম্যাবস্থা তখনই হয়, যখন কোনো পদার্থের বিভিন্ন ধরনের গঠন সম্ভব হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, বিভিন্ন যৌগের একটি মিশ্রণ যারা একজন আরেকজন এর সাথে বিক্রিয়া করতে পারে অথবা যখন একটি যৌগ একাধিক অবস্থায় থাকতে পারে সেটাই সাম্যাবস্থা।

শক্তি

বস্তুর শক্তি হচ্ছে ঐ বস্তু মোট যতখানি কাজ করতে পারে।

কোন কাননে ফুটিলো ফুল এমন তাহার ঘ্রান,
ঘ্রান শুনে উছলে উঠে মম এই প্রান।

সুবাস শুনে প্রশ্ন জাগে কোথায় তাহার বাস,
কোন চাষী বা এমন করে করলো তারে চাষ।

ঘ্রান শুনে প্রানে মোর ধরলো ভীমরতি,
ইচ্ছে করে মানুষ থেকে হতে প্রজাপতি।

প্রজাপতি যেমন করে থাকে ওরে মিশে,
তেমন করে থাকতে চাই তোমায় ভালোবেসে।

ইমন রায়হান 
সূত্রঃ
মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া ব্যবহার কমানোর ক্ষেত্রে –
ব্যবহার হ্রাসের হার = (১০০ X মূল্য বৃদ্ধির হার) / (১০০ + মূল্য বৃদ্ধির হার)
উদাহারণঃ
১) যদি তেলের মূল্য ২৫% বৃদ্ধি পায় তবে তেলের ব্যবহার শতকরা কত কমালে তেল বাবদ খরব বৃদ্ধিপাবে না
সূত্রানুসারে শর্টকাট টেকনিকঃ
ব্যবহার হ্রাসের হার = (১০০X ২৫) / (১০০ +২৫)
= ২০%
২) চিনির মূল্য ২০% বৃদ্ধি পয়ায়াতে কোন এক পরিবারের চিনি খাওয়া কেমন কমালে চিনি বাবদ ব্যয়বৃদ্ধি পাবে না?
শর্টকাট টেকনিকঃ
ব্যবহার হ্রাসের হার = (১০০X ২০) / (১০০+২০)
= ১৬.৬৭%
সূত্রঃ
মূল্য হ্রাস পাওয়া ব্যবহার বাড়ানোর ক্ষেত্রে –
ব্যবহার বৃদ্ধির হার = (১০০ X মূল্য হ্রাসের হার) / (১০০ – মূল্য বৃদ্ধির হার)
উদাহারণঃ
১) কাপড়ের মূল্য ২০% কমে গেল।কোন ব্যক্তির খরচ বৃদ্ধি না করেও কাপড়ের ব্যবহার শতকরা কতবৃদ্ধি করতে পারে?
সূত্রানুসারে শর্টকাট টেকনিকঃ
ব্যবহার বৃদ্ধির হার = (১০০X ২০) / (১০০ -২৫)
= ২৫%
২) চালের মূল্য ২৫% কমে গেল। একই খরচে চাল কেনা শতকরা কি পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে?
শর্টকাট টেকনিকঃ
ব্যবহার বৃদ্ধির হার = (১০০X ২৫) / (১০০-২৫)
= ৩৩.৩৩%
সূত্রঃ 
দুটি সংখ্যার শতকরা হারের তুলনার ক্ষেত্রে –
শতকরা কম / বেশি = (১০০ X শতকরা কম বা বেশি) / (১০০ + শতকরা কম বা বেশি)
উদাহারণঃ
১) ক এর বেতন খ এর বেতন অপেক্ষা ৩৫ টাকা বেশি হলে খ এর বেতন ক অপেক্ষা কত টাকা কম?
শতকরা কম বা বেশি = (১০০ X ৩৫) / (১০০ + ৩৫)
= ২৫.৯৩%
২) রুমির আয় দীপুর আয় অপেক্ষা ২৫% বেশি। দীপুর আয় রুমি অপেক্ষা শতকরা কত কম?
শতকরা কম বা বেশি = (১০০X ২৫) / (১০০ + ২৫)
= ২০%
সূত্রঃ 
দ্রব্যমূল্যের শতকরা হার বৃদ্ধি পাওয়া –
দ্রব্যের বর্তমান মূল্য = (বৃদ্ধির প্রাপ্ত মূল্যে হার X মোট মূল্য) / (১০০ + যে পরিমাণ পণ্য কম হয়েছে)
উদাহারাণঃ
১) চিনির মূল্য ৬% বেড়ে যাওয়ায় ১০৬০ টাকায় পূর্বে যত কেজি চিনি কেনা যেত এখন তার চেয়ে ৩কেজি চিনি কম কেনা যায়! চিনির বর্তমান দর কেজি প্রতি কত?
দ্রব্যের বর্তমান মূল্য = (৬ X ১০৬০) / (১০০ X ৩)
= ২১.২০ টাকা
সূত্রঃ 
দ্রব্যমূল্যের শতকরা হার হ্রাস পাওয়া –
দ্রব্যের বর্তমান মূল্য = (হ্রাসকৃত মূল্যেহার X মোট মূল্য) / (১০০ + যে পরিমাণ পণ্য বেশি হয়েছে)
উদাহারাণঃ
১) চালের মূল্য ১২% কমে যাওয়ায় ৬,০০০ টাকায় পূর্বাপেক্ষা ১ কুইন্টাল চাল বেশি পাওয়া যায়। ১কুইন্টাল চালের দাম কত?
দ্রব্যের বর্তমান মূল্য = (১২ X ৬০০০) / (১০০ X ১)
= ৭২০ টাকা
সূত্রঃ 
মূল্য বা ব্যবহার হ্রাস-বৃদ্ধির ক্ষেত্রে –
হ্রাসের হার = (বৃদ্ধির হার X হ্রাসের হার) / ১০০
উদাহারাণঃ
১) চিনির মূল্য ২০% কমলো কিন্তু চিনির ব্যবহার ২০% বেড়ে গেল এতে চিনি বাবদ ব্যয় শতকরা কতবাড়বে বা কমবে?
হ্রাসের হার = (২০ X ২০) / ১০০
= ৪%
সূত্রঃ 
পূর্ব মূল্য এবং বর্তমান মূল্য অনুপাতে দেওয়া থাকলে মূল্যের স্তকরা হ্রাস বের করতে হলে –
শতকরা মূল্য হ্রাস = (অনুপাতের বিয়োগফল X ১০০) / অনুপাতের প্রথম সংখ্যা
উদাহারণঃ
১) মাসুদের আয় ও ব্যয় এর অনুপাত ২০:১৫ হলে তার মাসিক সঞ্চয় আয়ের শতকরা কত ভাগ?
শতকরা মূল্য হার = (২০-১৫) X ১০০ / ২০
= ২৫%
টাইপ–১: (যদি দাম বাড়ে) চালের দাম যদি ৪০% বেড়ে যায় তবে চালের ব্যাবহার শতকরা কত কমালে চালের ব্যয় অপরিবর্তিত থাকবে?
টেকনিকঃ কমানো % = (100 × r) / (100 – r) (দাম বাড়লে ফর্মুলায় মাইনাস ব্যাবহার হয়েছে), এখানে r = 40%
Answer = (100 × 40)/(100 – 40) = 28.57%
টাইপ–: (যদি দাম কমে) চালের দাম যদি ৪০% কমে যায় তবে চালের ব্যাবহার শতকরা কত বাড়ালে চালের ব্যয় অপরিবর্তিত থাকবে?
টেকনিকঃ বাড়ানো % = (100 × r)/(100+ r) (দাম কমলে ফর্মুলায় প্লাস ব্যাবহার হয়েছে), এখানে r = 40% ,  Answer = (100 × 40)/(100+ 40) = 66.66%
টাইপ–: (যদি r এর মান ২০% দেয়া থাকে তবে বাড়ুক কমুক যে টাইপ সমস্যাই দেয়া হোক না কেন চোখ বন্ধ করে উত্তর হবে ২৫%, আর ২৫% দেয়া থাকলে উত্তর হবে ২০% )
Example 1: চালের দাম যদি 25% বেড়ে যায় তবে চালের ব্যাবহার শতকরা কত কমালে চালের ব্যয় অপরিবর্তিত থাকবে?
উত্তরঃ 20%
Example 2: চালের দাম যদি 20% বেড়ে যায় তবে চালের ব্যাবহার শতকরা কত কমালে চালের ব্যয় অপরিবর্তিত থাকবে?
উত্তরঃ 25%
টাইপ–যদি A এর আয় B এর আয় অপেক্ষা r% বেশী হয়, তবে B এর আয় A এর আয় অপেক্ষা কম হবে = (r x ১০০) / (১০০+r)%
সূত্রের প্রয়োগঃ ক-এর বেতন খ-এর বেতন অপেক্ষা ৩৫ টাকা বেশি হলে খ-এর বেতন ক-এর বেতন অপেক্ষা কত কম?
সমাধানঃ (৩৫ x ১০০) / (১০০+৩৫) = ৩৫০০/১৩৫ = ২৫.৯৩ টাকা
আরো কিছু টেকনিক
  1. যদি A এর আয় B এর আয় অপেক্ষা r% কম হয়, তবে B এর আয় A এর আয় অপেক্ষা বেশী হবে = (r x ১০০)/(১০০ – r)%
  2. কোন স্থানের জনসংখ্যা p হলে এবং বৃদ্ধির হার r% হলে, n বছর পর জনসংখ্যা হবে = p(১ + r/১০০)n
  3. n বছর আগে জনসংখ্যা ছিল = p/ (১ + r/১০০)n
  4. কোন স্থানের জনসংখ্যা p হলে এবং হ্রাসের পরিমাণ r% হলে n বছর পর জনসংখ্যা হবে = p(১- r/১০০)n
  5. একই বস্তুর পরপর বৃদ্ধি এবং হ্রাস পেলে বস্তুটির পরিবর্তন হবে = (+ r) + (- r){(+ r)(- r)/১০০} , [এখানে, + r বৃদ্ধি এবং – r হ্রাস বুঝানো হয়েছে]
  6. পরপর দুটি discount থাকলে (Successive discount) = (- r) + (- r) + {(- r) (- r)/১০০}, [এখানে, + r বৃদ্ধি এবং – r হ্রাস বুঝানো হয়েছে]
সিমেন্ট হল সেই সকল গুঁড়া জাতীয় পদার্থের সাধারণ নাম, যাদেরকে পানি বা অন্য কোন তরলের সাথে মিশ্রিত করলে কাদার মত নমনীয় পদার্থ পাওয়া যায় এবং তা কিছু সময়ের মধ্যে জমে গিয়ে বিভিন্ন দৃঢ়তার শক্ত পদার্থ গঠন করে। সিমেন্ট বাড়ী-ঘর, রাস্তা, সেতু ইত্যাদি যাবতীয় নির্মাণ কাজের প্রধান উপাদান।
সিমেন্ট কয়েক ধরনের হয়ে থাকে। যেমন:

  • পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট
  • পজুলানা সিমেন্ট
  • অধিক অ্যালুমিনা সমৃদ্ধ সিমেন্ট
  • ক্ষয়রোধী সিমেন্ট
  • পানিরোধী সিমেন্ট
  • রঙিন সিমেন্ট ইত্যাদি
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট।
সিমেন্টের মূল উপাদানগুলি হল - চুনাপাথর, সিলিকা, (বালি), আয়রন অক্সাইড ইত্যাদি। এসব উপাদানকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়:
  • ক. চুন জাতীয় পদার্থ। (চক্, চুনাপাথর ইত্যাদি)
  • খ. মাটি জাতীয় পদার্থ। (সিলিকা, আয়রন অক্সাইড, এ্যালুমিনা ইত্যাদি)
পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট (portland cement) আধুনিক সিমেন্টের একটি প্রকরণ। সাধারণত এই সিমেন্ট সাধারণ সকল ধরনের নির্মাণ কাজে বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। এই কারণে একে অনেক সময় OPC (Ordinary Portland Cement) বলা হয়। এই সিমেন্ট কংক্রিট, মশল্লা (mortar), এবং স্টাকো (stucco)-তে ব্যবহৃত হয়। এই সিমেন্ট তৈরিতে মূল উপাদান হিসাবে পোর্টল্যান্ড ক্লিঙ্কার ব্যবহার করা হয়। পোর্টল্যান্ড ক্লিঙ্কার চুনা পাথর (ক্যালসিয়াম কার্বোনেট, CaCO3) সাথে সামান্য কাদা বা এ্যালুমিনো সিলিকেট (Al 2SiO5) মিশিয়ে একটি বিশেষায়িত চুল্লি বা কিলন(Kiln)-এ ১৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বা তারচেয়ে বেশি তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে, ক্যালসিয়াম কার্বনেট থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড আলাদা হয়ে গিয়ে ক্যালসিয়াম অক্সাইড অবমুক্ত হয়। এই অবস্থায় একে বলা হয় কুইক লাইম। আর এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় ক্যালসিনেশন। ক্যালসিয়াম অক্সাইড চুল্লিতে থাকা সিলিকেটের সাথে বিক্রিয়া করে কঠিন দানাদার ক্যালসিয়াম সিলিকেটে পরিণত হয়। একেই ক্লিঙ্কার বলা হয়। উল্লেখ্য এক্ষেত্রে ক্যালসিয়াম অক্সাইড ও সিলিকেটের অনুপাত ২ এর বেশি রাখা হয়। মূলত এই ক্লিঙ্কারে ন্যুনতম ৯৫% ক্যালসিয়াম সিলিকেট থাকে। বাকি অংশে থাকে অ্যালুমিনিয়াম ও লোহাজাত পদার্থ ও অন্যান্য উপাদান। উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সবসময় অন্যদিকে ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড কখনোই মোট ভরের ৫%এর বেশি রাখা হয় না। ক্লিঙ্কারের দানা ৩ মিলিমিটার থেকে ২৫ মিলিমিটার ব্যাসবিশিষ্ট হতে পারে। ক্লিঙ্কার চূর্ণ করে তার সাথে সামান্য জিপসাম মিশিয়ে আধুনিক পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট তৈরি হয়। ক্লিঙ্কার বাতাসের জলীয় বাষ্পের সাথের বিক্রিয়া করে, তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারায়। এই কারণে একে শুকনো স্থানে সংরক্ষণ করা হয়। পোর্টল্যান্ড সিমেন্টের ইতিহাস ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে, ব্রিটেনে প্রাকৃতিক সিমেন্ট থেকে এই সিমেন্ট তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবিত হয়েছিল। ইংল্যান্ডের ডরসেটের খনি থেকে প্রাপ্ত এক প্রকার নির্মাণোপযোগী পাথরকে বলা হতো পোর্টল্যান্ড পাথর। এই পাথরের নামানুসারে এই বিশেষ ধরনের সিমেন্টের নামকরণ করা হয়েছিল পোরল্যান্ড সিমেন্ট। এই সিমেন্টের সাথে বিশেষভাবে জড়িয়ে আছে ব্রিটেনের লিডস নগরীর রাজমিস্ত্রী জোসেফ এ্যাসপডিন (Joseph Aspdin)। আইজ্যাক জনসন নামক তার জনৈক শ্রমিক এর উৎপাদন কৌশল উন্নয়ন করেন। তাদের এই উন্নয়নকৃত সিমেন্ট নির্মাণকার্যে দ্রুত জমাট বাঁধতো এবং যথেষ্ট মজবুতও হতো। ১৮২৩ খ্রিষ্টাব্দে এই সিমেন্টের নাম ডিরেক্টরিতে গৃহীত হয়েছিল। ডিরেক্টরিতে অন্যান্য সহযোগী কিছু ব্যক্তিদের নামও ছিল। এঁরা ছিলেন- উইলিয়াম লকউড (William Lockwood), ডেভ স্টুয়ার্ট (Dave Stewart) প্রমুখ। ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দে এই প্রক্রিয়াটির স্বত্বাধিকার গ্রহণ করেন জোসেফ এ্যাসপডিন । ১৭৯৬ খ্রিষ্টাব্দে জেমস পার্কারের স্বত্বাধিকার-কৃত রোমান সিমেন্টের মতোই তাদের সিমেন্টও একই কাজ করতো। এই সিমেন্টের অনুরূপ আরও একটি সিমেন্ট সে সময়ে প্রচলিত ছিল। এর নাম ছিল ব্রিটিশ সিমেন্ট। এই সিমেন্ট ১৮১১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে জেমস ফ্রস্ট ব্যবহার করে আসছিলেন। এর স্বত্বাধিকার গ্রহণ করা হয়েছিল ১৮২২ খ্রিষ্টাব্দে। জোসেফ এ্যাসপডিন-এর ছেলে উইলিয়াম, ১৮৪৩ খ্রিষ্টাব্দে এই সিমেন্টের আরও উন্নয়ন সাধন করেন। প্রাথমিকভাবে এর নাম ছিল— Patent Portland cement। ১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দে উইলিয়াম পুনরায় এর উন্নয়ন সাধন করেন এবং ১৮৫৩ খ্রিষ্টাব্দে সিমেন্ট তৈরির কাজে জার্মানীতে যান। জার্মানিতে এই সিমেন্টের ব্যাপক উন্নয়ন করা হয় এবং ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে জার্মান সরকার আদর্শ পোর্টল্যান্ডের সিমেন্টের মানদণ্ড নির্ধারণ করে দেয়।




পর্যায় সারণী মনে রাখার সহজ কৌশল

মনে রাখবেন, আপনাকে যেকোন উপায়ে মনেরাখতেই হবে। সেটা শুনতে খারাপ, ভাল হয়নি এরুপ ভাবলে কখনও মনে রাখতে পারবেন না। আরব্যতিক্রমী না হলে আপনি কখনও কিছু মনে রাখতেপারবেন না। তাই আসুন নিচের প্রয়োজনীয়মৌলগুলোর নাম সহজভাবে মনে রাখি।

গ্রুপ 1A:
H Li Na K Rb Cs Fr
হা লায় না কি রাবি-তে
কাশ ফেলেছে

গ্রুপ 2A :
Be Mg Ca Sr Ba Ra
বেয়াদব মাইয়াগো কাম শরীর বাইরে রাখা

গ্রুপ 3A :
B Al Ga In Tl
বলে এলাম জাই য়েন তাইলে

গ্রুপ 4A:
C Si Ge Sn Pb
ছি! সিলেট গেলেন? সমস্যায় পড়বেন

গ্রুপ 5A:
N P As Sb Bi
না পারলে আসলে সুবিধা বেশি

গ্রুপ 6A :
O S Se Te Po
ওর ছোট ছেলেটা টেবিলে পড়ে

গ্রুপ 7A :
F Cl I Br At
ফেল করলেও আইজ বাড়িতে আসতাম

পর্যায়-2
Li Be B C N O F Ne
লি বেন? বেনী চুড়ি? নিপস্টিক ও ফা ইন

পর্যায়-3
Na Mg Al Si P S Cl Ar
না! মগা আলু ছিলতে পারে সব কিলি য়ার

পর্যায়-4
Sc Ti V Cr Mn Fe Co Ni Cu Zn
স্কুল টি ভাঙায় চেয়ার ম্যান ফের কমিশন নিয়ে
কাজে যাচ্ছেন

পর্যায়-5
Y Zr Nb Mo Tc Ru Rh Pd Ag Cd
ইওর জ্বর নামবে মন টাকে আরো রেস্ট-হতে দাও
পারলে আগে কাঁদো

ল্যান্থানাইডঃ
Ce Pr Nd Pm Sm Eu Gd Tb Dy Ho Er Tm Yb Lu
ছেলের প্রীতি এন্ড প্রেম সমানইউরোপ গুড তবে
ডাইরিয়া হয় এর টমেটো ইয়লো ব্লু

অ্যাক্টিনাইডঃ
Th Pa U Np Pu Am Cm Bk Cf Es Fm Md No Lr
থাকলে পাশে ইউএনপি পুঁথি আমার কমেনা বিকেলে
ক্যাফেতে এসে এফ এম মোডে নুডলস লাড়ি

বি:দ্র: কেউ অন্য উপায়ে মনে রাখলে প্লিজ এটা
মনে রাখার দরকার নেই। কারন, এলামেলো হয়ে
যেতে পারে।
 
১. জৈব যৌগ কাকে বলে/ বলতে কি বুঝ?
উত্তর- হাইড্রোজেন ও কার্বন দ্বারা গঠিত হাইড্রোকার্বন ও হাইড্রোকার্বন থেকে উদ্ভূত যৌগসমূহকে জৈব যৌগ বলে।

২. কিছু জৈব যৌগের উদাহরন-
উত্তর- মিথেন (CH4), আয়োডো মিথেন (CH3I)
মিথানল (CH3OH), গ্লুকোজ (C6H12O6), বেনজিন (C6H6) ইত্যাদি।

৩. বৈশিষ্ট্য অনুসারে জৈব যৌগ কত প্রকার?
উত্তর- দুই প্রকার, যথা- অ্যালিফেটিক যৌগ,অ্যারোমেটিক যৌগ।

৪. অ্যালিফেটিক শব্দটির পরিচয় কি?
উত্তর- অ্যালিফেটিক এর অর্থ হল চর্বিজাত, অ্যালিফার একটি গ্রিক শব্দ, এর অর্থ চর্বি হতে প্রাপ্ত।

৫. কিসের উপর ভিত্তি করে অ্যালিফেটিক যৌগসমূহকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তর- শিকলের প্রকৃতি ও গঠনের উপর।

৬. মুক্ত শিকল অ্যালিফেটিক যৌগ কাকে বলে?
উত্তর- যেসব যৌগের দু প্রান্তের কার্বন পরমাণু কখনোই যুক্ত হয়না, তাকে মুক্ত শিকল অ্যালিফেটিক যৌগ বলে। বিউটেন (CH3-CH2-CH3), হেক্সেন (CH3-CH2-CH2-CH2-CH3)

৭. মুক্ত শিকল অ্যালিফেটিক যৌগ কত প্রকার ও কি কি?
উত্তর- দুই প্রকার, যথা- সম্পৃক্ত যৌগ, অসম্পৃক্ত যৌগ।

৮. সম্পৃক্ত যৌগ কাকে বলে?
উত্তর- যেসব যৌগের অণুতে শুধুমাত্র কার্বন- কার্বন একক বন্ধন তথা সিগমা বন্ধন বর্তমান থাকে, তাদেরকেই সম্পৃক্ত যৌগ বলে।যথা- প্রোপেন ( CH3-CH2-CH3)

৯. অসম্পৃক্ত যৌগ কাকে বলে?
উত্তর- যেসব যৌগের অণুতে অন্ততপক্ষে দুটি কার্বন পরমাণু পরস্পর দ্বিবন্ধন বা ত্রিবন্ধন দ্বারা যুক্ত হয়ে যৌগ গঠন করে, তাদেরকে অসম্পৃক্ত যৌগ বলে।যথা- (প্রোপিন, প্রোপাইন)

১০. সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত উভয় শ্রেণীর অ্যালিফেটিক যৌগসমূহকে কয় ভাগে ভাগ করা যায় এবং কি কি?
উত্তর- দুই ভাগে, যথা- সরল শিকল, শাখা শিকল।