Recent Post
Loading...

 ১৯২৩ সালে বিজ্ঞানী ফাজান পোলারায়ন সম্পর্কিত একটি নীতি প্রদান করেন। এ নীতি ফাজানের নীতি নামে পরিচিত।

এবার জেনে নিই, পোলারায়ন কী? পোলারায়ন হলো ক্যাটায়ন কর্তৃক অ্যানায়নের ইলেকট্রন মেঘের বিকৃতির ঘটনা। অর্থাৎ আয়নিক যৌগে দুটি বিপরীত চার্জযুক্ত আয়ন পরস্পরের কাছাকাছি এলে ক্যাটায়নের ধনাত্মক চার্জ অ্যানায়নের ঋণাত্মক ইলেকট্রন মেঘকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে। ফলে অ্যানায়নের ইলেকট্রন মেঘের বিকৃতি দেখা দেয়। ইলেকট্রন মেঘের এ ধরনের বিকৃতির ঘটনাকে পোলারায়ন বলে।

সুতরাং পোলারায়ন যত বেশি হবে ওই আয়নিক যৌগের সমযোজী বৈশিষ্ট্যও তত বেশি হবে। পোলারায়ন সম্পর্কিত ফাজানের নীতিগুলো হলো :

১। ক্যাটায়নের আকার যত ছোট হবে

২। অ্যানায়নের আকার যত বড় হবে

৩। ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নের চার্জ যত বেশি হবে

৪। ক্যাটায়নে d ও f অরবিটালে ইলেকট্রন থাকলে ওই যৌগের পোলারায়ন বেশি হবে। অর্থাৎ ওই যৌগটির সমযোজী বৈশিষ্ট্যও তত বেশি হবে।

এবার কিছু উদাহরণের মাধ্যমে ফাজানের নীতির প্রয়োগ দেখে নিই।

উদাহরণ-১

CaCl2 ও AlCl3 যৌগ দুটির মধ্যে কোনটি বেশি আয়নিক এবং কেন?


=>CaCl2 ও AlCl3 যৌগ দুটির ক্যাটায়ন যথাক্রমে Ca2+ I Al3+ এবং অ্যানায়ন হলো Cl-। ফাজানের নীতি অনুসারে ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নের চার্জ যত বেশি হবে, পোলারায়ন তত বেশি হবে। আর পোলারায়ন বেশি হলে যৌগটি বেশি সমযোজী হবে। এখন তোমাদের মনের মধ্যে প্রশ্ন জাগতে পারে যে আমরা যৌগ দুটির মধ্যকার ক্যাটায়নের চার্জসংখ্যা নিয়ে কার পোলারায়ন বেশি হবে তা নির্ণয় করব, নাকি অ্যানায়নের চার্জসংখ্যা নিয়ে পোলারায়ন কার বেশি হবে তা নির্ণয় করব। যেহেতু যৌগ দুটির মধ্যে অ্যানায়ন একই অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে আমাদের ক্যাটায়নের চার্জসংখ্যা নিয়ে কাজ করতে হবে। Ca2+ ও Al3+ ক্যাটায়ন দুটি মধ্যকার চার্জসংখ্যা যথাক্রমে +2 এবং +3, যেহেতু Ca2+ ও Al3+ -এর মধ্যে Al3+ -এর চার্জ বেশি, ফলে AlCl3 যৌগের পোলারায়ন বেশি হবে। অর্থাৎ AlCl3 যৌগটি বেশি সমযোজী হবে। অন্যদিকে Ca2+-এর চার্জসংখ্যা Al3+ -এর তুলনায় কম হওয়ায় CaCl2 যৌগটির পোলারায়ন কম হবে অর্থাৎ যৌগটি বেশি আয়নিক হবে।

সুতরাং  CaCl2 ও AlCl3 যৌগ দুটির মধ্যে CaCl2 যৌগটি বেশি আয়নিক হবে।

 ক্যালসিয়াম হাইপোক্লোরাইট


এটি একটি অজৈব যৌগ যার রাসায়নিক সংকেত Ca(OCl)Cl। পানি পরিশোধন এবং ব্লিচিং এজেন্ট হিসেবে ক্লোরিন পাউডার অথবা ব্লিচ পাউডার নামে বাজারে পাওয়া যায়। আর্দ্র এবং অনাদ্র দুই অবস্থায় ক্যালসিয়াম হাইপোক্লোরাইট পাওয়া যায়। এটা পানিতে খুব বেশি দ্রবীভূত হয় না। এর থেকে তীব্র ক্লোরিনের গন্ধ পাওয়া যায়।


বৈশিষ্ট্য

সাদা, অনিয়তাকার এবং একটি অজৈব পদার্থ ।ক্লোরিনের ঝাঁঝালো গন্ধ পাওয়া যায় ।কার্বন ডাই অক্সাইড এর সাথে বিক্রিয়ায়ক্যালসিয়াম কার্বনেট এবং ডাইক্লোরিন মনোক্সাইড উৎপন্ন করে।হাইড্রোক্লোরিক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করেক্যালসিয়াম ক্লোরাইড, পানি এবং ক্লোরিন গ্যাস উৎপন্ন করে।


Ca(OCl)2 + 4 HCl → CaCl2 + 2 H2O + 2 Cl2


উৎপাদন

ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইডের মধ্যে ক্লোরিন গ্যাস চালনা করে বাণিজ্যিক ভাবে হাইপো উৎপাদন করা হয়। বিভিন্ন ঘনত্বের ব্লিচ পাউডার পেতে কয়েক ধাপে বিক্রিয়া পরিচালনা করা হয়।


2 Cl2 + 2 Ca(OH)2 → Ca(OCl)2 + CaCl2 + 2 H2O


ব্যবহার

জীবাণুনাশক হিসাবে, পানি বিশুদ্ধ করতে, ক্লোরোফর্ম প্রস্তুতিতে, এবং বস্ত্র বিরঞ্জন করতে ব্যবহৃত হয় ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা হয় ।


আমরা জানি, জগতে জৈব যৌগের সংখ্যা অনেক। তার তুলনায় অজৈব যৌগের কম। তাই, এর নামকরণের জন্য সমস্যায় তেমন পড়তে হয় নাই।কিন্তু, যত দিন যাচ্ছে অজৈব যৌগের সংখ্যাও বাড়ছে এবং এদের নামকরণে তাই কিছু সমস্যা দেখা দেয়। কিছু কিছু যৌগের নাম তার যৌগতে উপস্থিত মৌলের নাম অনুসারে হয় একধরণের আর শিল্পক্ষেত্রে তার নাম ভিন্ন থাকে।আবার, অজৈব যৌগের গঠন ভৌত অবস্থার উপরে নির্ভর করে বলে নামকরণে অনেক ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। এরকম নানান সমস্যা সমধানের জন্য IUPAC অজৈব যৌগের নামকরণের কিছু নিয়ম তৈরি করে। কিন্তু এসমস্ত নিয়ম সকলের কাছে গ্রহনযোগ্য ছিল না বিধায় সেসকল নিয়মকে নামকরণের শ্রেনীবিভাগ হিসেবে বিবেচিত করা হয়।

যেমন – 

নামের পূর্বে প্রতিস্থাপকের সংখ্যা ,

 একইরকম লিগ্যান্ডের সংখ্যা, 

ঘনীভূত এসিডে একই রকম পরমাণু, 

অণু গঠনে একই রকম পরমাণু সংখ্যা ইত্যাদি প্রকাশে নামের পূর্বে mono,di,tri,tetra,penta ইত্যাদি ব্যবহৄত হয়।

**নামকরনের ক্ষেত্রে জারণ অবস্থার প্রকাশ**

১) যে সমস্ত মৌলের জারণ অবস্থা ২ টা থাকে তাদের বড় জারণ অবস্থার নামের শেষে (ইক) এবং ছোট জারণ অবস্থার নামের শেষে (আস) বসান হয়। যেমন- FeCl₂ (ফেরাস ক্লোরাইড); FeCl₃ (ফেরিক ক্লোরাইড)।

২) ১৯১৯ সালে স্টক জারণ অবস্থা প্রকাশের জন্য নামের পাশে রোমান সংখ্যা লিখার পক্ষে মতামত প্রকাশ করেন। যেমন- CuO কপার (II) অক্সাইড; Cu₂O কপার (I) অক্সাইড।

৩) উপরের নিয়মটা অনেক ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হয় না। যেমন - N₂O₄, Pb₃O₄ ইত্যাদিকে স্টক এর অনুসারে নাইট্রোজেন (IV) অক্সাইড, লেড (II,IV) অক্সাইড ইত্যাদি বলা হয়, যা NO₂, 2PbO, 2PbO₂ থেকে পৃথক করেনা। তাই, এরুপ থেকে ল্যাটিন বা গ্রিক শব্দ নামের পূর্বে mono, di, tri, tetra, penta সংযোজন করে নামকরন করা হয়। যেমন - N₂O₄ কে ডাইনাইট্রোজেন অক্সাইড, Pb₃O₄ কে ট্রাই-লেড টেট্রাঅক্সাইড বলা হয়।

**ধনাত্মক মূলকের নামকরণ**

১) স্থির যোজী মৌলের ক্ষেত্রে: মৌলের নাম + আয়ন

যেমন - Na⁺ ----> সোডিয়াম আয়ন

২) পরিবর্তনশীল যোজনীর ক্ষেত্রে: মৌলের নাম/ মৌলের ল্যাটিন নামের শব্দমূল + আস/ইক

[আস = নিম্ন জারণ অবস্থা ইক = উচ্চ জারণ অবস্থা]

{ বিঃদ্রঃ আধুনিক পদ্ধতিতে মৌলের নামের শেষে ব্র্যাকেটে জারণ অবস্থা রোমান সংখ্যায় লিখা হয় }

যেমন- Cu⁺ ----> কপার (আস); Cu²⁺ ----> কপার (ইক)

Fe²⁺ ----> ফেরাস/আয়রন (II); Fe³⁺ ----> ফেরিক /আয়রন (III)

**ধনাত্মক যৌগমূলকের নামকরণ**

ধনাত্মক যৌগমূলকের নামের শেষে ইয়াম/ আইল হয় ।

যেমন - H₃O⁺ ----> হাইড্রোনিয়াম; PH₄⁺ ----> ফসফোনিয়াম;

NO⁺ ----> নাইট্রোসাইল; SO₂⁺ ----> সালফনাইল।

**ঋনাত্মক মূলকের নামকরণ**

১) এক ও বহু পরমাণুযুক্ত ঋনাত্মক মূলকের শেষে আইড (ide) যুক্ত হয়।

যেমন - O²⁻ ----> অক্সাইড আয়ন; Cl⁻ ----> ক্লোরাইড আয়ন; CN⁻ ----> সায়ানাইড আয়ন ইত্যাদি ।

২) O⁻ যুক্ত যৌগমূলকের নামের শেষে আইট/ এট হবে।

যেমন - NO₂⁻ ----> নাইট্রাইট ; NO₃⁻ ----> নাইট্রেট

**দ্বি-মৌল যৌগের নামকরণ**

যে দুইটা মৌলের সমন্বয়ে দ্বি-মৌল যৌগ গঠিত হয়, উভয়ের মধ্যে অধিক তড়িৎধনাত্মক মৌলটির পুরো নাম প্রথমে লেখা হয় এবং পরে অপর মৌলটির নামের শেষের অপ্রয়োজনীয় অংশ বাদ দিয়ে আইড (ide) যুক্ত করে ঐ নামকরন করা হয় ।

যেমন- CaC₂ = ক্যালসিয়াম কার্বাইড; CaH₂ = ক্যালসিয়াম হাইড্রাইড ।

**ত্রি-মৌল যৌগের নামকরণ**

১) ধনাত্মক মৌলের নাম + ঋনাত্মক যৌগমূলকের নাম

যেমন- CuSO₄ ----> কপার সালফেট।

২) ধনাত্মক যৌগমূলকের নাম + ঋনাত্মক মৌলের শব্দনাম

যেমন- NH₄Cl ----> অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড ।

**হাইড্রেটসমূহের নামকরণ**

এক্ষেত্রে প্রথমে মূল যৌগের নাম লিখতে হয় এবং পানির অণুর সংখ্যা লিখে হাইড্রেট লিখতে হয়।

যেমন- CuSO₄.5H₂O = কপার সালফেট পেণ্টাহাইড্রেট;

CaSO₄.2H₂O = ক্যালসিয়াম সালফেট ডাই হাইড্রেট (জিপসাম) ।

**অক্সি-এসিডের নামকরণ**

অক্সি-এসিডের সংকেত ও এসিডের পূর্ণ নাম

HClO 

হাইপো- ক্লোরাস এসিড/ক্লোরিক (I) এসিড

HClO₂

ক্লোরাস এসিড/ক্লোরিক (III) এসিড

HClO₃ 

ক্লোরিক এসিড/ক্লোরিক (V) এসিড

HClO₄

পারক্লোরিক এসিড/ক্লোরিক (VII) এসিড

HPO₃ 

মেটা ফসফরিক এসিড

H₄P₂O₇

পাইরো ফসফরিক এসিড

H₃PO₄ 

অর্থো ফসফরিক এসিড

H₂SO₃

সালফিউরাস এসিড

H₂SO₄ 

সালফিউরিক এসিড

H₂S₂O₃

থায়ো সালফিউরিক এসিড

 

ইথানল যা ইথাইল অ্যালকোহল নামেও পরিচিত এক প্রকারের অ্যালকোহল। এটি দাহ্য, স্বাদবিহীন, বর্ণহীন, সামান্য বিষাক্ত ও বিশিষ্ট গন্ধযুক্ত এবং অধিকাংশ মদ এর প্রধান উপাদান। এতে ৯৯% বিশুদ্ধ অ্যালকোহল থাকে। এটি জৈব সংশ্লেষণে ব্যবহৃত হয়। এর রাসায়নিক সংকেত হল CH3-CH2-OH বা C2H6O বা EtOH C2H5OH বা C2H6O।


রাসায়নিক সংকেতঃ

ইথানল দুই কার্বন বিশিষ্ট এলকোহল। এর রাসায়নিক সংকেত হচ্ছে: CH3CH2OH । CH3–CH2–OH দ্বারা বোঝায় একটি মিথাইল মূলক (CH3–) একটি মিথিলিন মূলক (–CH2–) এর সাথে যুক্ত হয়ে হাইড্রোক্সিল মূলকের অক্সিজেন অণুর সাথে একক বন্ধন দ্বারা যুক্ত। এটা ডাইমিথাইল ইথারের একটি সমানু। রসায়ন শাস্ত্রে অনেক সময় ইথানলকে সংক্ষেপে EtOH লেখা হয়। Et দ্বারা ইথাইল গ্রুপকে বোঝানো হয়।


ইথানল নামকরণঃ

রসায়নের নামকরণের আন্তর্জাতিক সংস্থা IUPAC এর নিয়ম অনুসারে ইথানলের নামকরণ করা হয়েছে। ইথানলের অণুতে দুটি কার্বন থাকায় পুর্বপদে ইথ এবং হাইড্রোক্সিল মূলকের উপস্থিতির কারণে পরপদে অল ব্যবহার করা হয়েছে |


১৮৩৪ সালে জার্মান রসায়নবিদ জাস্টাস ফন লিয়েবেগ প্রথম ইথাইল শব্দটি ব্যবহার করেন।


ইথাইল শব্দটি ফরাসি শব্দ ইথার এবং গ্রিক শব্দ হাইল সমন্বয়ে গঠিত। ফরাসি ভাষায় ইথার বলতে সেই পদার্থকে বোঝায় যা কক্ষ তাপমাত্রায় বাষ্পীভূত হয় এবং গ্রিক ভাষায় হাইল অর্থ বস্তু বা পদার্থ।


১৮৯২ সালে জেনেভা, সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিতরাসায়নিক নামকরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ইথানল নামটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।


রসায়নের পরিভাষায় এলকোহল বলতে একটি রাসায়নিক পদার্থের গ্রুপকে বোঝালেও প্রচলিত অর্থে সাধারণ মানুষ এলকোহল বলতে ইথানলকে বোঝায়। আল কোরআনে শুরা বলতে এই ইথানলকেই বোঝানো হয়েছে।


প্রাকৃতিক উৎসঃ

ঈস্টের মেটাবলিক প্রসেসে উপজাত হিসেবে ইথানল পাওয়া যায়। তাই যেখানে ঈস্ট পাওয়া যাবে সেখানে ইথানল অবশ্যই পাওয়া যাবে। সাধারনত অতিরিক্ত পাকা ফলে ইথানল পাওয়া যায়। বারটাম পাম ফুলে সিমবায়োটিক ঈস্ট ইথানল উৎপাদন করে। কিছু কিছু পতঙ্গ যেমন পেনটেইলড ট্রিশ্রিউ ইথানলের উৎস খোঁজার প্রবণতা প্রদর্শন করে। তবে অধিকাংশ পতঙ্গ খাবারের উৎস হিসেবে ইথানল যুক্ত উৎস এড়িয়ে চলে। প্রাকৃতিক এনারোবায়োসিসের ফলাফল হিসাবে অনেক উদ্ভিদ ইথানল উৎপন্ন করে মহাশূন্যেও ইথানলের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।


মানবদেহে ইথানলঃ

এক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিজন সুস্থ মানুষের প্রশ্বাসে ২৪৪ppb ইথানল এবং এসিটালডিহাইড উপস্থিত থাকে। একই রকম আরেকটি গবেষণায় সুস্থ সবল একজন স্বেচ্ছাসেবকের প্রশ্বাসে ৪৫০ppb ইথানল পাওয়া গেছে। এই গবেষণায় মদ বা মদজাতীয় পানী পান করার পরের হিসাব ধরা হয়নি।


ফার্মাকোলজিঃ

ইথানলের নিচের ফার্মাকোলজিক্যাল কাজ করার ক্ষমতা রয়েছে।

    GABAA receptor [GABAA receptor) (primarily δ subunit-containing receptors) positive allosteric modulator

    NMDA receptor negative allosteric modulator

    Glycine receptor positive and negative allosteric modulator

    5-HT3 receptor (5-HT3 receptor) positive allosteric modulator

    Nicotinic acetylcholine receptor (nACh receptor) positive and negative allosteric modulator

    Dihydropyridine-sensitive L-type calcium channel|L-type Ca2+ channel blocker

    GIRK channel opener


বিক্রিয়াঃ

এলকোহলকে তিনভাগে ভাগ করা হয় । ইথানল প্রাইমারী এলকোহল। প্রাইমারী এলকোহল তাদের বলা হয় যাদের হাইড্রোক্সিল মূলক যুক্ত কার্বনের সাথে কমপক্ষে দুইটি হাইড্রোজেন যুক্ত থাকে। অধিকাংশ ইথানলের হাইড্রোক্সিল মূলক অংশে প্রধান বিক্রিয়া ঘটে।


এস্টার ফরমেশানঃ

এসিড প্রভাবকের উপস্থিতিতে ইথানল কার্বক্সিলিক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে ইথাইল এস্টার এবং পানি তৈরী করে:


    RCOOH + HOCH2CH3 → RCOOCH2CH3 + H2O


শিল্প কারখানায় প্রস্তুত এস্টার থেকে পানি অপসারণ করা হয়। এস্টার এসিড অথবা ক্ষারের উপস্থিতিতে বিক্রিয়া করে পূণরায় এলকোহল ও লবণ উৎপন্ন করে।এই বিক্রিয়াটি স্যাপোনিফিকেশান বা সাবানিকরণ বিক্রিয়া নামে পরিচিত। কারণ এই বিক্রিয়ার মাধ্যমে সাবান প্রস্তুত করা হয়।  অজৈব এসিডের সাথে ইথানল বিক্রিয়া করে এস্টার গঠন করে। সালফার ট্রাই অক্সাইড এবং ফসফরাস পেন্টাঅক্সাইডের সাথে ইথানলের বিক্রিয়ায় পর্যায়ক্রমে ডাই ইথাইল সালফেট এবং ট্রাই ইথাইল ফসফেট তৈরী হয়। অজৈব সংশ্লেষনে ডাই ইথাইল সালফেট উপকারী ইথাইলেটিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। সোডিয়াম নাইট্রাইট এবং সালফিউরিক এসিডের সাথে ইথানলের বিক্রিয়ায় ইথাইল নাইট্রাইট উৎপন্ন হয় যা ডাই ইউরেটিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।


পানি বিয়োজনঃ


শক্তিশালী এসিডের উপস্থিতিতে ইথানলের ডিহাইড্রেশান বা পানি বিয়োজন ঘটে। পানি বিয়োজিত হয়ে ইথানল ডাই ইথাইল ইথার এবং অন্যান্য উপজাত তৈরী করে। প্রতিবছর সালফিউরিক এসিড প্রভাবক হিসেবে ব্যবহার করে লক্ষ লক্ষ কেজি ডাই ইথাইল ইথার প্রস্তুত করা হয়:


    2 CH3CH2OH → CH3CH2OCH2CH3 + H2O (120 °C তাপমাত্রায়)


দহনঃ

ইথানলের পূর্ণ দহনে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং পানি উৎপন্ন হয়:


    C2H5OH (l) + 3 O2 (g) → 2 CO2 (g) + 3 H2O (liq); −ΔHc = 1371 kJ/mol


বিভিন্ন রকমের ইথানল:


রেক্টিফায়েড স্পিরিট


৯৫.৪% ইথানল ও ৪.৬% পানির মিশ্রণ ।

মেথিলেটেড স্পিরিট


মদ, বিয়ার, হুইস্কি, ব্রান্ডি প্রভৃতি পানীয় ইথাইল এলকোহল হতে প্রস্তুত করা হয়। এ পানীয়সমহূল প্রকৃতপক্ষে ইথাইল এলকোহলের বিভিন্ন ঘনমাত্রার জলীয় দ্রবণ বিশেষ। এসকল পানীয়ের উপর প্রচুর আবগারী শুল্ক দিতে হয়। তাই এগুলো অত্যন্ত মহার্ঘ। অনেক সময় মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা বাজার হতে সস্তা দামের ইথাইল এলকোহল কিনে এর সঙ্গে প্রয়োজন মত পানি মিশ্রিত করে দামী বাণিজ্যিক মদের বিকল্প হিসেবে পান করে। পানের কাজে এরূপ যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে ইথাইল এলকোহলের ঘাটতি পড়তে পারে। কারণ দ্রাবক এবং শিল্পজাত দ্রব্য উৎপাদনকাজে ইথাইল এলকোহল ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। তাই পানীয় হিসেবে ইথাইলে এলকোহলের অনঅনুমোদিত ব্যবহার বন্ধে এর সাথে মিথানল, পিরিডিন, ন্যাপথা প্রভৃতি বিষাক্ত পদার্থ মিশিয়ে বাজারজাত করা হয়। বাণিজ্যিকভাবে এরূপ অ্যালকোহলকে মেথিলেটেড স্পিরিট, ডি ন্যাচারড অ্যালকোহল বা অসেবনীয় অ্যালকোহল নামে পরিচিত। এটি বিশেষভাবে রং-বার্ণিশের কাজে দ্রাবক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। মেথিলেটেড স্পিরিটকে ইথানলের প্রকারভেদ হিসেবে গণ্য করা হয়।


বিবিধ বৈশিষ্ট্য:

মানুষের দেহ থেকে এলকোহল ডিহাইড্রোজিনেজ পদ্ধতিতে জারণের মাধ্যমে সীমিত ইথানল অপসারণ করা যায়। জিরো অর্ডার কাইনেটিকস বা শুন্যক্রমের মাধ্যমে রক্ত থেকে বড় আকারের এলকোহল সরিয়ে নেয়া সম্ভব।এর মানে একটি নির্দিষ্ট হারে শরীর থেকে এলকোহল বেরিয়ে যায়। বিশুদ্ধ বিশুদ্ধ ইথানল চামড়া ও চোখে জ্বালাপড়া সৃষ্টি করে। ইথানল সেবনে মাথা ঘোরা, বমি এবং বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। দীর্ঘকাল ধরে ইথানল সেবনে মারাত্বক লিভার ড্যামেজ হতে পারে।

 

“বাফার হলো এমন একটি দ্রবণ যা pH পরিবর্তনে বাধা প্রদান করে।” ব্যাপারটি অনেকটা এমন যে, বাফার হলো সেনাপতি আর pH হলো রাজা। রাজ্য দখল করার জন্য এসিড অথবা ক্ষার যে ই আসুক না কেন, বাফারের কাজই হলো শত্রুদের আপ্যায়ন করে pH কে ঠিক রাখা। একজন সেনাপতি কতটুকু দক্ষ তা নির্ভর করে শ্ত্রুর বিরুদ্ধে তার যুদ্ধকৌশলের উপর।  ঠিক একইভাবে বাফারের ক্ষমতা নির্ভর করে যে তা দ্রবণের pH কে পরিবর্তনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কতটুকু দক্ষ।

পানিতে যদি এসিড যোগ করা হয় তবে তার pH এর মান কমে যাবে। আবার যদি ক্ষার যোগ করা হয় তবে তার pH এর মান বেড়ে যাবে। এখন যদি আমরা, পানির বদলে বাফার দিই তবে দেখবো যে এসিড বা ক্ষার যাই যোগ করি না কেন দ্রবণে আগে যে pHছিল তার খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। এ পরিবর্তন সবসময় একটি নির্দিষ্ট রেঞ্জের ভেতর সীমাবদ্ধ থাকে। আর এই রেঞ্জকে যে বাফার যত ছোট রাখতে পারে সে তত শক্তিশালী বাফার। ধরা যাক, কোন বাফার দ্রবণের pH হলো  4.54। এখন তাতে যদি শক্তিশালী এসিড বা ক্ষার যা ই যোগ করি না তার pH পরিবর্তন না হয় তবে তা অনেক কার্যকরী বাফার।

বাফার দ্রবণ হলো দুর্বল এসিড ও তার অনুবন্ধী ক্ষার অথবা দুর্বল ক্ষার ও তার অনুবন্ধী এসিডের একটি মিশ্রণ। একটা বিষয় খেয়াল করেছ যে, ‘দুর্বল’ কথাটি বার বার চলে আসছে। এর দ্বারা বোঝা যায় যে বাফার দ্রবণ সাম্যাবস্থার ক্রিয়া কৌশল মেনে চলে।
( কোন ক্ষারের সাথে একটি প্রোটন যুক্ত হয়ে যে এসিড তৈরি করে তাকে ঐ ক্ষারের অনুবন্ধী অম্ল বলে। যেমন: NH₃ এর অনুবন্ধী অম্ল হচ্ছে NH₄⁺। )
বাফার সাধারনত দুই ধরনের হয়। অম্লীয় এবং ক্ষারীয়। যেকোন একটির ক্রিয়া কৌশল দেখলে অন্যটিও বোঝা যাবে। আমরা এখন এসিডিক বাফার কিভাবে কাজ করে তা দেখবো।

এসিডিক বাফার অ্যাসিটিক এসিড ও তার অনুবন্ধী ক্ষার নিয়ে গঠিত।

CH₃COOH ⇌ CH₃COO⁻ + H⁺
CH₃COO⁻  Na⁺ →  CH₃COO⁻ + Na⁺

এখন যদি এই সিস্টেমে এসিড যোগ করা হয় তবে তা অ্যাসিটেট আয়নের সাথে বিক্রিয়া করে অ্যাসিটিক এসিড হয়ে যাবে। তখন CH₃COO⁻(অ্যাসিটেট আয়ন) আয়নের ঘাটতি পড়বে। এই ঘাটতি তো পূরন করতে হবে। তখন এসিডের সাম্যাবস্থার বিক্রিয়াটি লা শাতেলীয় নীতি অনুসারে ডান দিকে চলে যায়। ফলে CH₃COO⁻ (অ্যাসিটেট আয়ন) এর উৎপাদন হয়। ঘাটতিও পূরণ হয় সাথে সাথে pH ও পরিবর্তন হয় না।
ব্যাপারটি এভাবে চিন্তা করা যাক, দুই গেরস্থ CH₃COOH (অ্যাসিটিক এসিড) এবং CH₃COONa (সোডিয়াম অ্যাসিটেট) সবাইকে বিরিয়ানী খাওয়াবে। সব মেহমানকেই বিরিয়ানী খাওয়াতে হবে এবং মোট বিরিয়ানীর পরিমাণ কিছুতেই কমানো যাবে না। বলে রাখা ভালো যে, বিরিয়ানীর নাম হচ্ছে CH₃COO⁻ (অ্যাসিটেট আয়ন)। প্রথমেই প্রোটন (H⁺) সাহেব চলে এলেন। যাওয়ার সময় বিরিয়ানী CH₃COO⁻ (অ্যাসিটেট আয়ন) নিয়ে CH₃COOH হয়ে চলে গেলেন। ফলে বিরিয়ানী কমে গেলো, মানে ঘাটতি দেখা গেল। তাই গেরস্থ (CH₃COOH) আরেকটা বিরিয়ানী (CH₃COO⁻) দেয়ার মাধ্যমে ঘাটতি পূরণ করে দিলো।
ঠিক একইভাবে যদি বাফার সিস্টেমে ক্ষার যোগ করা হয় তবে তা দ্রবণে যে প্রোটন (H⁺)আছে তার সাথে বিক্রিয়া করে পানি (H₂O) হয়ে যাবে। এখন, যেহেতু H⁺ এর ঘাটতি দেখা দিয়েছে তাই তা ভারসাম্য করার জন্য এসিডের সাম্যাবস্থার বিক্রিয়া ডান দিকে সরে যাবে এবং pH অপরিবর্তনীয় রাখবে।

জৈব যৌগের সমাণুতা:

যেসব যৌগের আনবিক সংকেত এক হওয়া সত্ত্বেও এদের গাঠনিক সংকেতের ভিন্নতার কারণে এবং অণুস্থিত পরমাণুসমূহের ত্রিমাত্রিক বিন্যাসের ভিন্নতার কারণে এদের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মের পার্থক্য দেখা যায় সেসব যৌগকে পরস্পরের সমাণু এবং যৌগের এরূপ ধর্মকে সমাণুতা বলে।
সমাণুতার প্রকারভেদ:
সমাণুতাকে প্রধানত দু শ্রেণীতে ভাগ করা যায়-
ক. গাঠনিক সমাণুতা।
এবং খ. ত্রিমাত্রিক বা স্টেরিও সমাণুতা।
ক. গাঠনিক সমাণুতা:
যৌগের অণুস্থিত বিভিন্ন পরমাণুর সম্ভাব্য একাধিক অবস্থান তথা ভিন্ন ভিন্ন গাঠনিক সংকেতের পার্থক্যের জন্য যে সমাণুতার উদ্ভব হয় তাকে গাঠনিক সমাণুতা বলে।
গাঠনিক সমাণু পাঁচ প্রকার। যেমন-
১। শিকল সমাণুতা: যৌগের অণুস্থিত কার্বন শিকলের গঠনের পার্থক্যের জন্য সৃষ্ট সমাণুতাকে শিকল সমাণুতা বলে। যেমন- C4H10।
(সমাণু দুটিতে যথাক্রমে ৪ টি ও ৩টি কার্বন পরমাণুর প্রধান শিকল)
C5H12-এর শিকল সমাণু নির্ণয় করার চেষ্টা কর।
২। অবস্থান সমাণুতা: কার্বন শিকলে দ্বিবন্ধন ও ত্রিবন্ধনের অবস্থান অথবা কার্যকরী মূলক বা প্রতিস্থাপিত পরমাণু বা মূলকের অবস্থানের পার্থক্যের জন্য সৃষ্ট সমাণুতাকে অবস্থান সমাণুতা বলে। যেমন- C3H8O।
(সমাণু দুটিতে –OH মূলকের অবস্থান যথাক্রমে ১নং ও ২নং কার্বনে)
C4H8- এর অবস্থান সমাণু নির্ণয় করার চেষ্টা কর।
৩। কার্যকরী মূলক সমাণুতা: কার্যকরী মূলকের বিভিন্নতার কারনে সৃষ্ট সমাণুতাকে কার্যকরী মূলক সমাণুতা বলে। যেমন-C3H6O।
(প্রথমটিতে অ্যালডিহাইডের কার্যকরী মূলক এবং দ্বিতীয়টিত কিটোনের কার্যকরী মূলক)
C2H6O-এর কার্যকরী মূলক সমাণুতা নির্ণয় করার চেষ্টা কর।
৪। মেটামারিজম: একই সমগোত্রীয় শেণীর অন্তর্ভুক্ত সমাণুগুলোতে কার্যকরী মূলকের উভয় পার্শ্বে কার্বন পরমানুর সংখ্যার ভিন্নতার কারনে সৃষ্ট সমাণুতাকে মেটামারিজম বলে। এবং এসব সমাণুকে মেটামার বলে। যেমন- C5H10O।
(একই সমগোত্রীয় (কিটোন) শ্রেণীর যৌগ, কিন্তু দুটি সমাণুতে কার্যকরী মূলকের (-CO-) দুপাশে কার্বনের সংখ্যা ভিন্ন। তাই এরা মেটামার। উপরের আলোচনা থেকে লক্ষ্য করে দেখ, এরা কিন্তু একই সাথে অবস্থান সমাণুক। সাধারণত ইথার,কিটোন,ও সেকেন্ডারী অ্যামিনসমূহ মেটমরিজম প্রদর্শন করে। )
C4H10O –এর মেটামার নির্ণয় করার চেষ্টা কর।
৫। টটোমারিজম: টটোমারিজম হল একটি বিশেষ ধরনের কার্যকরী মূলক সমাণুতা। এ প্রক্রিয়ায় সমাণুগুলো এক প্রকার কার্যকরী মূলক বিশিষ্ট গঠন থেকে স্বতঃস্ফুর্তভাবে অন্য প্রকার কার্যকরী মূলক বিশিষ্ট গঠনে রূপান্তরিত হয় এবং উভয় গঠনের মধ্যে সাম্যাবস্থা বিরাজমান থাকে। তাই টটোমারিজম কে গতিশীল কার্যকরী মূলক সমাণুতা বলে। এরূপ সমাণুর একটি কে অপরটির টটোমার বলে। যেমন: কিটো-ইনল টটোমারিজম।
(প্রথম যৌগের কিটোনের কার্যকরী মূলক পরিবর্তিত হয়ে দ্বিতীয় যৌগ অ্যালকোহলের কার্যকরী মূলক হয়েছে)
খ. স্টেরিও সমাণুতা:
যে সব যৌগের আণবিক ও গাঠনিক সংকেত একই কিন্তু বিভিন্ন পরমাণু ও মূলকের ত্রিমাত্রিক অবস্থান বিন্যাসের কারনে এদের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মে পার্থক্য দেখা যায় সে সব যৌগকে স্টেরিও সমাণু এবং এদের এই ধর্মকে স্টেরিও বা ত্রিমাত্রিক সমাণুতা বলে।
স্টেরিও সমাণুতা দু’ প্রকার। যেমন-
১। জ্যামিতিক সমাণুতা
২। আলোক সমাণুতা
১। জ্যামিতিক সমাণুতা: জৈব যৌগের কার্বন-কার্বন বন্ধনের অক্ষ বরাবর মুক্ত আবর্তন সম্ভব না হলে তখন ভিন্ন কনফিগারেশন বা জ্যামিতিক বিন্যাসযুক্ত দু’ধরনের যৌগ অণু সৃষ্টি হয়। এদেরকে জ্যামিতিক সমাণু এবং এ ধরণের সমাণুতাকে জ্যামিতিক সমাণুতা বলে। সাধারণত প্রতিস্থাপিত অ্যালকিনসমূহ এবং চাক্রিক যৌগসমূহ জ্যামিতিক সমাণুতা প্রদর্শন করে।
জ্যামিতিক সমাণুতে দ্বিবন্ধনের দুপাশে একই পরমাণু বা মূলকদ্বয় যখন দ্বিবন্ধনযুক্ত কার্বন পরমাণুর একই পার্শ্বে থাকে তখন তাকে সিস (cis) সমাণু আর বিপরীত পার্শ্বে থাকলে তখন তাকে ট্রান্স (trans) সমাণু বলে। যেমন-
(দ্বিবন্ধনের দুপাশে একই পরমাণু Br ও H। এখানে Br বা H দ্বিবন্ধনের একদিকে যেদিকে আছে (Br নীচে এবং H উপরে) দ্বিবন্ধনের অন্যদিকেও সেদিকে আছে। তাই এটি সিস সমাণু)
(দ্বিবন্ধনের দুপাশে একই পরমাণু Br ও H। এখানে Br বা H দ্বিবন্ধনে একদিকে যে দিকে আছে অন্যদিকে তার বিপরীত দিকে আছে। তাই এটি ট্রান্স সমাণু)
২-বিউটিন -এর সিস-ট্রান্স সমাণু দুটি লেখার চেষ্টা কর।
২। আলোক সমাণুতা: একই আনবিক ও গাঠনিক সংকেত বিশিষ্ট যৌগের দুই বা ততোধিক ভিন্ন কনফিগারেশন যখন একবর্ণী এক-সমতলীয় আলোর প্রতি ভিন্ন আচরন প্রদর্শন করে তখন তাদের আলোক সক্রিয় সমাণু এবং একবর্ণী এক-সমতলীয় আলোর প্রতি তাদের এই আচরণকে আলোক সমাণুতা বলে।
আলোক সমাণুগুলোর অপ্রতিসম কার্বন পরমাণু বা কাইরাল কেন্দ্র থাকে, এরা একে অপরের দর্পণ প্রতিবিম্ব হয় এবং কনফিগারেশন গুলো পরস্পর অসমপাতিত হয়। যেমন- ল্যাকটিক এসিডের (CH3.CH.(OH).COOH) দুটি আলোক সমাণু আছে। একটি d-ল্যাকটিক এসিড ( যেসব আলোক সমাণু এক-সমতলীয় আলোর তলকে ডানদিকে ঘুরায় তাদের দক্ষিনাবর্ত বা (+) বা d (dextro-rotatory) যৌগ বলে) এবং অপরটি l-ল্যাকটিক এসিড (যেসব আলোক সমাণু এক-সমতলীয় আলোর তলকে বামদিকে ঘুরায় তাদের বামাবর্ত বা (-) বা l (laevo-rotatory) যৌগ বলে)।
(একটি অপরটির দর্পন প্রতিবিম্ব)
CH3-CH(NH2)-COOH -এর আলোক সমাণুগুলি লেখার চেষ্টা কর।
কাইরাল কার্বন:
একই কার্বন পরমাণুতে চারটি ভিন্ন মূলক যুক্ত থাকলে ঐ কার্বন পরমাণুর সাপেক্ষে যৌগটি অপ্রতিসম হয় তাই ঐ যৌগকে অপ্রতিসম বা কাইরাল যৌগ এবং ঐ কার্বন কে কাইরাল কার্বন (chiral) বলে। যৌগের সংকেতে একে তারকা (*) চিহ্ন দ্বারা দেখানো হয়। (একটি যৌগে যদি nটি কার্বন পরমাণু থাকে তবে তার 2n সংখ্যক আলোক সমাণু থাকবে।)
এনানসিওমারিজম:
অপ্রতিসম কার্বন পরমাণু যুক্ত কোন যৌগ অনু ও এর দর্পন প্রতিবিম্ব পরস্পর সমাপতিত না হলে এরূপ দুই ভিন্ন গঠনের অণু আলোক সক্রিয় হয়। এরূপ দুই আলোক সক্রিয় সমাণুকে এনানসিওমার বলা হয়।
রেসিমিক মিশ্রণ:
দুটি এনানসিওমার যেমন d-ল্যাকটিক এসিড ও l-ল্যাকটিক এসিড উভয়েই এক-সমতলীয় আলোর তলকে সমান কৌণিক পরিমাণে বিপরীত দিকে ঘুরায়। তাই d-সামাণু ও l-সমাণুর সমপরিমান মিশ্রণ পরস্পরের বিপরীত ঘূর্ণন ক্রিয়াকে নষ্ট করে অর্থাৎ দুটি বিপরীত আলোক সক্রিয় মিশ্রণ আলোক নিষ্ক্রিয় হয়। দুটি এনানসিওমারের সমমোলার মিশ্রণকে রেসিমিক মিশ্রণ বা dl মিশ্রণ বা (+/-) মিশ্রণ বলে।

 পরমাণু

মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা যা ঐ পদার্থের বৈশিষ্ট্য রক্ষা করে। যাকে বিশ্লেষিত করলে আরো ক্ষুদ্রতম কণা ইলেক্ট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন পাওয়া যায়। পরমাণুকে দুটি ভিন্ন অঞ্চলে ভাগ করা যায়। একটিকে কেন্দ্র বলা হয়- যে অংশে পরমাণুর সকল ভর ও ধনাত্বক চার্জ পুঞ্জীভূত থাকে। অর্থাৎ নিরপেক্ষ নিউট্রন ও ধনাত্বক প্রোটন একত্রে কেন্দ্র বা নিউক্লিয়াসে থাকে আর দ্বিতীয়টিকে বলা হয় বহিঃঅঞ্চল- যে অংশে নির্দিষ্ট শক্তির কতক শক্তিস্তর থাকে আর ঐ শক্তিস্তরে নির্দিষ্ট শক্তির ঋণাত্বক চার্জ যুক্ত ইলেক্ট্রন পরিক্রমণরত অবস্থায় থাকে।

পদার্থ

যার ভর আছে, কোন স্থান দখল করে অবস্থান করে এবং যা স্থিতিশীল বা গতিশীল অবস্থার বাধা প্রদান করে, তাকে পদার্থ বলে। পৃথিবীর সমস্ত পদার্থকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে । যথা:কঠিন,তরল ও বায়বীয় ।এছাড়া ও পদার্থের আরেকটি অবস্থা ও হিসাব করা হয়, যাকে প্লাজমা বলে।এটিকে উচ্চ তাপমাত্রায় আয়নিত গ্যাস বলা হয়।

যৌগ

একাধিক মৌলের সমন্বয়ে গঠিত নতুন পদার্থকে যৌগ বলে। যেমন: সোডিয়াম ক্লোরাইড, কার্বন‌ ডাই অক্সাইড সালফিউরিক এসিড ইত্যাদি।

বস্তু

যেকোন পদার্থের নির্দিষ্ট একটা অংশকে বস্তু বলে। যেমনঃ মৌল, এক অণু বিশিষ্ট যৌগ। অর্থাৎ হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, পানি ইত্যাদি।

অণু

দুই বা ততোধিক পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত ক্ষুদ্র কণাকে বলা হয় অণু। যেমন: হাইড্রোজেনের দুটি পরমাণু পরস্পর যুক্ত হয়ে অণু গঠন করে।

হাইড্রোজেনের পরমাণু H এবং হাইড্রোজেনের অণু H2

মোল

কোনো পদার্থের পারমাণবিক ভর বা আণবিক ভরকে গ্রাম এককে প্রকাশ করলে যে পরিমাণ পাওয়া যায়, তাকে ঐ পদার্থের এক মোল বলে। ১ mole=৬.০২x১০ ২৩ টি অণু/পরমাণু/আয়ন।

এই সংখ্যাটিকে অ্যাভোগেড্রোর সংখ্যা বলা হয়। কোন পদার্থের যে পরিমাণের মধ্যে অ্যাভোগেড্রোর সংখ্যার সমান সংখ্যক অণু/পরমাণু/আয়ন বিদ্যমান থাকে তাকে ঐ পদার্থের একমোল বলে।

কার্বনের পারমাণবিক ভর ১২

একে গ্রাম এককে প্রকাশ করলে,

১২ গ্রাম কার্বন = ১ মোল কার্বন

আবার পানির আণবিক ভর ১৮

সুতরাং ১ মোল পানি = ১৮ গ্রাম পানি।


অম্লত্ব ও ক্ষারত্ব

অম্ল বা ক্ষারের কয়েকটি তত্ত্ব রয়েছে; তার মধ্যে সবচেয়ে চেয়ে সহজতর তত্ত্বটি হচ্ছে 'আরহেনিয়াসের তত্ত্ব'। তার মতে, অম্ল হচ্ছে এমন ধরনের বস্তু যা পানির সাথে দ্রবীভুত হলে হাইড্রনিয়াম আয়ন উৎপন্ন করে এবং ক্ষার হল যা পানির সাথে দ্রবীভূত হলে হাইড্রোক্সাইড আয়ন উৎপন্ন করে। ব্রনস্টেড-লাউরি‘র অম্ল-ক্ষার সূত্রানুসারে, রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় যদি একটি মৌল অন্য একটি মৌলকে ধ্ণাত্মক হাইড্রোজেন আয়ন প্রদান করে তবে তাকে অম্ল বলে; অপরপক্ষে ক্ষার হচ্ছে ঐ বস্তুু যা ঐ হাইড্রোজেন আয়ন গ্রহণ করে। এ সম্বন্ধে লুইস এর অম্ল-ক্ষার তত্ত্ব নামে তৃতীয় একটা তত্ত্ব রয়েছে,যার ভিত্তি হল নতুন রাসায়নিক বন্ধন গঠন করা। লুইসের তত্ত্বানূসারে অম্ল হচ্ছে ঐ মৌল যা বন্ধন গঠনের সময় অন্য মৌল হতে এক জোড়া ইলেক্ট্রন গ্রহণ করতে সক্ষম; অন্যদিকে ক্ষার হচ্ছে ঐ মৌল যা নতুন বন্ধনে এক জোড়া ইলেক্ট্রন দিতে পারে। তাছাড়া আরো অনেক ভাবেও অম্ল ও ক্ষার কে সঙ্গায়িত করা হয়ে থাকে।

অম্লের ক্ষমতা প্রধানত ২ পদ্ধতিতে পরিমাপ করা হয়ে থাকে।একটা পদ্ধতি হচ্ছে আরহেনিয়াসের অম্লত্বের বর্ণনার উপর ভিত্তি করে, pH ,যেটা দ্রবণে ঘণীভূত হাইড্রোনিয়াম আয়ন কে বোঝায়,যেটাকে ঋণাত্মক লগারিদ্মিক স্কেল এ প্রকাশ করা হয়। এভাবে,যে দ্রবণের pH এর মান কম ও উচ্চ ঘণীভূত হাইড্রনিয়াম আয়ন তবে সেটা অধিক অম্লীয়। অন্য পদ্ধতি টা হচ্ছে, ব্রনস্টেড-লাউরি‘র বর্ণনার উপর ভিত্তি করে,যে বস্তুর ka এর মান অধিকতর এবং রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় নিম্নতর ka মানের তুলনায় অত্যধিক পরিমাণে হাইড্রোজেন আয়ন প্রদান করে। ব্রনস্টেড-লাউরি‘র অম্ল-ক্ষার সূত্রানুসারে, রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় যদি একটি মৌল অন্য একটি মৌলকে ধ্ণাত্মক হাইড্রোজেন আয়ন প্রদান করে তবে তাকে অম্ল বলে; অপরপক্ষে ক্ষার হচ্ছে ঐ বস্তু যা ঐ হাইড্রোজেন আয়ন গ্রহণ করে। এ সম্বন্ধে লুইস এর অম্ল-ক্ষার তত্ত্ব নামে তৃতীয় একটা তত্ত্ব রয়েছে,যার ভিত্তি হল নতুন রাসায়নিক বন্ধন গঠন করা। লুইসের তত্ত্বানূসারে অম্ল হচ্ছে ঐ মৌল যা বন্ধন গঠনের সময় অন্য মৌল হতে এক জোড়া ইলেক্ট্রন গ্রহণ করতে সক্ষম; অন্যদিকে ক্ষার হচ্ছে ঐ মৌল যা নতুন বন্ধনে এক জোড়া ইলেক্ট্রন দিতে পারে। তাছাড়া আরো অনেক ভাবেও অম্ল ও ক্ষার কে সঙ্গায়িত করা হয়ে থাকে।

অম্লের ক্ষমতা প্রধানত ২ পদ্ধতিতে পরিমাপ করা হয়ে থাকে।একটা পদ্ধতি হচ্ছে আরহেনিয়াসের অম্লত্বের বর্ণনার উপর ভিত্তি করে, pH ,যেটা দ্রবণে ঘণীভূত হাইড্রোনিয়াম আয়ন কে বোঝায়,যেটাকে ঋণাত্মক লগারিদ্মিক স্কেল এ প্রকাশ করা হয়। এভাবে,যে দ্রবণের pH এর মান কম ও উচ্চ ঘণীভূত হাইড্রনিয়াম আয়ন তবে সেটা অধিক অম্লীয়। অন্য পদ্ধতি টা হচ্ছে, ব্রনস্টেড-লাউরি‘র বর্ণনার উপর ভিত্তি করে,যে বস্তুর ka এর মান অধিকতর এবং রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় নিম্নতর ka মানের তুলনায় অত্যধিক পরিমাণে হাইড্রোজেন আয়ন প্রদান করে।

দশা

পদার্থের নির্দিষ্ট ভৌত অবস্থাকে (কঠিন, তরল,গ্যাসীয় ও প্লাজমা ) নির্দেশ করা হয়।

জারণ-বিজারণ

যে বিক্রিয়ায় ইলেক্ট্রন আদান প্রদান হয় তাকে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া বলে । যে বিক্রিয়ায় ইলেক্ট্রন ত্যাগ বা বর্জন করা হয় তাকে জারণ বলে । আবার যে বিক্রিয়ায় ইলেক্ট্রন গ্রহণ করা হয় তাকে বিজারণ বলে । জারক ইলেক্ট্রন গ্রহণ করে নিজে বিজারিত হয় এবং অপরকে জারিত করে আর বিজারক ইলেক্ট্রন ত্যাগ করে নিজে জারিত হয় এবং অপরকে বিজারিত করে ।

বন্ধন

অনুতে পরমাণু সমূহ পরস্পর যেভাবে আন্তঃ আণবিক শক্তিতে যুক্ত থাকে, তাকে রাসায়নিক বন্ধন বলে।

বিক্রিয়া

রসায়নের পরিভাষায় যে পদ্ধতিতে দুই বা ততোধিক মৌল বা যৌগ পরস্পর যুক্ত হয়ে এক বা একাধিক নতুন যৌগ উৎপন্ন করে তাকে বিক্রিয়া বলে। যদি একাধিক মৌল বা যৌগ পরস্পর যুক্ত নতুন যৌগ উৎপন্ন না-করে তবে তাকে বিক্রিয়া বলা যাবে না। বিক্রিয়ায় মূলত পরমাণু বা ইলেকট্রনের আদান প্রদান ঘটে।

রাসায়নিক সমীকরণ

রাসায়নিক বিক্রিয়াকে সংক্ষেপে উপস্থাপন করার জন্য রাসায়নিক সমীকরণ ব্যবহার করা হয় ৷ অর্থাৎ সমীকরণ হলো রাসায়নিক শর্টহ্যান্ড (Chemical Shorthand ) ও কোনো রাসায়নিক প্রক্রিয়াকে রসায়নের ভাষায় প্রকাশ৷ রাসায়নিক সমীকরণ লেখার নিয়ম:

  1. রাসায়নিক বিক্রিয়া যে সকল পদার্থ নিয়ে শুরু হয় তাদেরকে বিক্রিয়ক ( Reactant ) এবং যে সকল পদার্থ উৎপন্ন হয়, তাদেরকে উৎপাদ (Product) বলে ৷ রাসায়নিক সমীকরণে বিক্রিয়কসমূহ বামপাশে এবং উৎপাদসমূহ ডানপাশে লিখে মাঝখানে সমান (=) অথবা তীর( → ) চিহ্ন দেয়া হয় ৷
  2. বিক্রিয়ায় একাধিক বিক্রিয়ক এবং একাধিক উৎপাদ থাকলে তাদেরকে (+) চিহ্ন দিয়ে লেখা হয় ৷
  3. সমীকরণের বামপাশে বিভিন্ন মৌলের পরমাণু সংখ্যা এবং ডানপাশে একই মৌলের পরমাণু সংখ্যা সমান করা হয় ৷ বিক্রিয়ক এবং উৎপাদ ভিন্ন যৌগ হলেও তা অভিন্ন মৌলের পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত হয় ৷ এতে ভরের সংরক্ষণ নীতি অনুসরণ করে ৷
  4. বিক্রিয়ক ও উৎপাদের ভৌত অবস্থা যৌগের ডানপাশে নিচে প্রথম বন্ধনীর মধ্যে লেখা হয় ৷ যৌগের ভৌত অবস্থা কঠিন (Solid)

হলে (s), তরল (Liquid) হলে (l) এবং গ্যাসীয় (Gaseous) হলে (g) লেখা হয় ৷ বিক্রিয়ক এবং উৎপাদ হিসেবে কোনো যৌগের জলীয় দ্রবণ (Aqueous solution) থাকলে (aq) লেখা হয় ৷

রাসায়নিক সাম্যাবস্থা

উভমুখী বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে সময়ের সাথে এক সময় বিক্রিয়ার সম্মুখবেগ ও পশ্চাৎবেগ সমান হয়। এ অবস্থাকে রাসায়নিক সাম্যাবস্থা বলে। সাম্যাবস্থা তখনই হয়, যখন কোনো পদার্থের বিভিন্ন ধরনের গঠন সম্ভব হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, বিভিন্ন যৌগের একটি মিশ্রণ যারা একজন আরেকজন এর সাথে বিক্রিয়া করতে পারে অথবা যখন একটি যৌগ একাধিক অবস্থায় থাকতে পারে সেটাই সাম্যাবস্থা।

শক্তি

বস্তুর শক্তি হচ্ছে ঐ বস্তু মোট যতখানি কাজ করতে পারে।

কোন কাননে ফুটিলো ফুল এমন তাহার ঘ্রান,
ঘ্রান শুনে উছলে উঠে মম এই প্রান।

সুবাস শুনে প্রশ্ন জাগে কোথায় তাহার বাস,
কোন চাষী বা এমন করে করলো তারে চাষ।

ঘ্রান শুনে প্রানে মোর ধরলো ভীমরতি,
ইচ্ছে করে মানুষ থেকে হতে প্রজাপতি।

প্রজাপতি যেমন করে থাকে ওরে মিশে,
তেমন করে থাকতে চাই তোমায় ভালোবেসে।

ইমন রায়হান 
সূত্রঃ
মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া ব্যবহার কমানোর ক্ষেত্রে –
ব্যবহার হ্রাসের হার = (১০০ X মূল্য বৃদ্ধির হার) / (১০০ + মূল্য বৃদ্ধির হার)
উদাহারণঃ
১) যদি তেলের মূল্য ২৫% বৃদ্ধি পায় তবে তেলের ব্যবহার শতকরা কত কমালে তেল বাবদ খরব বৃদ্ধিপাবে না
সূত্রানুসারে শর্টকাট টেকনিকঃ
ব্যবহার হ্রাসের হার = (১০০X ২৫) / (১০০ +২৫)
= ২০%
২) চিনির মূল্য ২০% বৃদ্ধি পয়ায়াতে কোন এক পরিবারের চিনি খাওয়া কেমন কমালে চিনি বাবদ ব্যয়বৃদ্ধি পাবে না?
শর্টকাট টেকনিকঃ
ব্যবহার হ্রাসের হার = (১০০X ২০) / (১০০+২০)
= ১৬.৬৭%
সূত্রঃ
মূল্য হ্রাস পাওয়া ব্যবহার বাড়ানোর ক্ষেত্রে –
ব্যবহার বৃদ্ধির হার = (১০০ X মূল্য হ্রাসের হার) / (১০০ – মূল্য বৃদ্ধির হার)
উদাহারণঃ
১) কাপড়ের মূল্য ২০% কমে গেল।কোন ব্যক্তির খরচ বৃদ্ধি না করেও কাপড়ের ব্যবহার শতকরা কতবৃদ্ধি করতে পারে?
সূত্রানুসারে শর্টকাট টেকনিকঃ
ব্যবহার বৃদ্ধির হার = (১০০X ২০) / (১০০ -২৫)
= ২৫%
২) চালের মূল্য ২৫% কমে গেল। একই খরচে চাল কেনা শতকরা কি পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে?
শর্টকাট টেকনিকঃ
ব্যবহার বৃদ্ধির হার = (১০০X ২৫) / (১০০-২৫)
= ৩৩.৩৩%
সূত্রঃ 
দুটি সংখ্যার শতকরা হারের তুলনার ক্ষেত্রে –
শতকরা কম / বেশি = (১০০ X শতকরা কম বা বেশি) / (১০০ + শতকরা কম বা বেশি)
উদাহারণঃ
১) ক এর বেতন খ এর বেতন অপেক্ষা ৩৫ টাকা বেশি হলে খ এর বেতন ক অপেক্ষা কত টাকা কম?
শতকরা কম বা বেশি = (১০০ X ৩৫) / (১০০ + ৩৫)
= ২৫.৯৩%
২) রুমির আয় দীপুর আয় অপেক্ষা ২৫% বেশি। দীপুর আয় রুমি অপেক্ষা শতকরা কত কম?
শতকরা কম বা বেশি = (১০০X ২৫) / (১০০ + ২৫)
= ২০%
সূত্রঃ 
দ্রব্যমূল্যের শতকরা হার বৃদ্ধি পাওয়া –
দ্রব্যের বর্তমান মূল্য = (বৃদ্ধির প্রাপ্ত মূল্যে হার X মোট মূল্য) / (১০০ + যে পরিমাণ পণ্য কম হয়েছে)
উদাহারাণঃ
১) চিনির মূল্য ৬% বেড়ে যাওয়ায় ১০৬০ টাকায় পূর্বে যত কেজি চিনি কেনা যেত এখন তার চেয়ে ৩কেজি চিনি কম কেনা যায়! চিনির বর্তমান দর কেজি প্রতি কত?
দ্রব্যের বর্তমান মূল্য = (৬ X ১০৬০) / (১০০ X ৩)
= ২১.২০ টাকা
সূত্রঃ 
দ্রব্যমূল্যের শতকরা হার হ্রাস পাওয়া –
দ্রব্যের বর্তমান মূল্য = (হ্রাসকৃত মূল্যেহার X মোট মূল্য) / (১০০ + যে পরিমাণ পণ্য বেশি হয়েছে)
উদাহারাণঃ
১) চালের মূল্য ১২% কমে যাওয়ায় ৬,০০০ টাকায় পূর্বাপেক্ষা ১ কুইন্টাল চাল বেশি পাওয়া যায়। ১কুইন্টাল চালের দাম কত?
দ্রব্যের বর্তমান মূল্য = (১২ X ৬০০০) / (১০০ X ১)
= ৭২০ টাকা
সূত্রঃ 
মূল্য বা ব্যবহার হ্রাস-বৃদ্ধির ক্ষেত্রে –
হ্রাসের হার = (বৃদ্ধির হার X হ্রাসের হার) / ১০০
উদাহারাণঃ
১) চিনির মূল্য ২০% কমলো কিন্তু চিনির ব্যবহার ২০% বেড়ে গেল এতে চিনি বাবদ ব্যয় শতকরা কতবাড়বে বা কমবে?
হ্রাসের হার = (২০ X ২০) / ১০০
= ৪%
সূত্রঃ 
পূর্ব মূল্য এবং বর্তমান মূল্য অনুপাতে দেওয়া থাকলে মূল্যের স্তকরা হ্রাস বের করতে হলে –
শতকরা মূল্য হ্রাস = (অনুপাতের বিয়োগফল X ১০০) / অনুপাতের প্রথম সংখ্যা
উদাহারণঃ
১) মাসুদের আয় ও ব্যয় এর অনুপাত ২০:১৫ হলে তার মাসিক সঞ্চয় আয়ের শতকরা কত ভাগ?
শতকরা মূল্য হার = (২০-১৫) X ১০০ / ২০
= ২৫%
টাইপ–১: (যদি দাম বাড়ে) চালের দাম যদি ৪০% বেড়ে যায় তবে চালের ব্যাবহার শতকরা কত কমালে চালের ব্যয় অপরিবর্তিত থাকবে?
টেকনিকঃ কমানো % = (100 × r) / (100 – r) (দাম বাড়লে ফর্মুলায় মাইনাস ব্যাবহার হয়েছে), এখানে r = 40%
Answer = (100 × 40)/(100 – 40) = 28.57%
টাইপ–: (যদি দাম কমে) চালের দাম যদি ৪০% কমে যায় তবে চালের ব্যাবহার শতকরা কত বাড়ালে চালের ব্যয় অপরিবর্তিত থাকবে?
টেকনিকঃ বাড়ানো % = (100 × r)/(100+ r) (দাম কমলে ফর্মুলায় প্লাস ব্যাবহার হয়েছে), এখানে r = 40% ,  Answer = (100 × 40)/(100+ 40) = 66.66%
টাইপ–: (যদি r এর মান ২০% দেয়া থাকে তবে বাড়ুক কমুক যে টাইপ সমস্যাই দেয়া হোক না কেন চোখ বন্ধ করে উত্তর হবে ২৫%, আর ২৫% দেয়া থাকলে উত্তর হবে ২০% )
Example 1: চালের দাম যদি 25% বেড়ে যায় তবে চালের ব্যাবহার শতকরা কত কমালে চালের ব্যয় অপরিবর্তিত থাকবে?
উত্তরঃ 20%
Example 2: চালের দাম যদি 20% বেড়ে যায় তবে চালের ব্যাবহার শতকরা কত কমালে চালের ব্যয় অপরিবর্তিত থাকবে?
উত্তরঃ 25%
টাইপ–যদি A এর আয় B এর আয় অপেক্ষা r% বেশী হয়, তবে B এর আয় A এর আয় অপেক্ষা কম হবে = (r x ১০০) / (১০০+r)%
সূত্রের প্রয়োগঃ ক-এর বেতন খ-এর বেতন অপেক্ষা ৩৫ টাকা বেশি হলে খ-এর বেতন ক-এর বেতন অপেক্ষা কত কম?
সমাধানঃ (৩৫ x ১০০) / (১০০+৩৫) = ৩৫০০/১৩৫ = ২৫.৯৩ টাকা
আরো কিছু টেকনিক
  1. যদি A এর আয় B এর আয় অপেক্ষা r% কম হয়, তবে B এর আয় A এর আয় অপেক্ষা বেশী হবে = (r x ১০০)/(১০০ – r)%
  2. কোন স্থানের জনসংখ্যা p হলে এবং বৃদ্ধির হার r% হলে, n বছর পর জনসংখ্যা হবে = p(১ + r/১০০)n
  3. n বছর আগে জনসংখ্যা ছিল = p/ (১ + r/১০০)n
  4. কোন স্থানের জনসংখ্যা p হলে এবং হ্রাসের পরিমাণ r% হলে n বছর পর জনসংখ্যা হবে = p(১- r/১০০)n
  5. একই বস্তুর পরপর বৃদ্ধি এবং হ্রাস পেলে বস্তুটির পরিবর্তন হবে = (+ r) + (- r){(+ r)(- r)/১০০} , [এখানে, + r বৃদ্ধি এবং – r হ্রাস বুঝানো হয়েছে]
  6. পরপর দুটি discount থাকলে (Successive discount) = (- r) + (- r) + {(- r) (- r)/১০০}, [এখানে, + r বৃদ্ধি এবং – r হ্রাস বুঝানো হয়েছে]
সিমেন্ট হল সেই সকল গুঁড়া জাতীয় পদার্থের সাধারণ নাম, যাদেরকে পানি বা অন্য কোন তরলের সাথে মিশ্রিত করলে কাদার মত নমনীয় পদার্থ পাওয়া যায় এবং তা কিছু সময়ের মধ্যে জমে গিয়ে বিভিন্ন দৃঢ়তার শক্ত পদার্থ গঠন করে। সিমেন্ট বাড়ী-ঘর, রাস্তা, সেতু ইত্যাদি যাবতীয় নির্মাণ কাজের প্রধান উপাদান।
সিমেন্ট কয়েক ধরনের হয়ে থাকে। যেমন:

  • পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট
  • পজুলানা সিমেন্ট
  • অধিক অ্যালুমিনা সমৃদ্ধ সিমেন্ট
  • ক্ষয়রোধী সিমেন্ট
  • পানিরোধী সিমেন্ট
  • রঙিন সিমেন্ট ইত্যাদি
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট।
সিমেন্টের মূল উপাদানগুলি হল - চুনাপাথর, সিলিকা, (বালি), আয়রন অক্সাইড ইত্যাদি। এসব উপাদানকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়:
  • ক. চুন জাতীয় পদার্থ। (চক্, চুনাপাথর ইত্যাদি)
  • খ. মাটি জাতীয় পদার্থ। (সিলিকা, আয়রন অক্সাইড, এ্যালুমিনা ইত্যাদি)
পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট (portland cement) আধুনিক সিমেন্টের একটি প্রকরণ। সাধারণত এই সিমেন্ট সাধারণ সকল ধরনের নির্মাণ কাজে বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। এই কারণে একে অনেক সময় OPC (Ordinary Portland Cement) বলা হয়। এই সিমেন্ট কংক্রিট, মশল্লা (mortar), এবং স্টাকো (stucco)-তে ব্যবহৃত হয়। এই সিমেন্ট তৈরিতে মূল উপাদান হিসাবে পোর্টল্যান্ড ক্লিঙ্কার ব্যবহার করা হয়। পোর্টল্যান্ড ক্লিঙ্কার চুনা পাথর (ক্যালসিয়াম কার্বোনেট, CaCO3) সাথে সামান্য কাদা বা এ্যালুমিনো সিলিকেট (Al 2SiO5) মিশিয়ে একটি বিশেষায়িত চুল্লি বা কিলন(Kiln)-এ ১৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বা তারচেয়ে বেশি তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে, ক্যালসিয়াম কার্বনেট থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড আলাদা হয়ে গিয়ে ক্যালসিয়াম অক্সাইড অবমুক্ত হয়। এই অবস্থায় একে বলা হয় কুইক লাইম। আর এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় ক্যালসিনেশন। ক্যালসিয়াম অক্সাইড চুল্লিতে থাকা সিলিকেটের সাথে বিক্রিয়া করে কঠিন দানাদার ক্যালসিয়াম সিলিকেটে পরিণত হয়। একেই ক্লিঙ্কার বলা হয়। উল্লেখ্য এক্ষেত্রে ক্যালসিয়াম অক্সাইড ও সিলিকেটের অনুপাত ২ এর বেশি রাখা হয়। মূলত এই ক্লিঙ্কারে ন্যুনতম ৯৫% ক্যালসিয়াম সিলিকেট থাকে। বাকি অংশে থাকে অ্যালুমিনিয়াম ও লোহাজাত পদার্থ ও অন্যান্য উপাদান। উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সবসময় অন্যদিকে ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড কখনোই মোট ভরের ৫%এর বেশি রাখা হয় না। ক্লিঙ্কারের দানা ৩ মিলিমিটার থেকে ২৫ মিলিমিটার ব্যাসবিশিষ্ট হতে পারে। ক্লিঙ্কার চূর্ণ করে তার সাথে সামান্য জিপসাম মিশিয়ে আধুনিক পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট তৈরি হয়। ক্লিঙ্কার বাতাসের জলীয় বাষ্পের সাথের বিক্রিয়া করে, তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারায়। এই কারণে একে শুকনো স্থানে সংরক্ষণ করা হয়। পোর্টল্যান্ড সিমেন্টের ইতিহাস ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে, ব্রিটেনে প্রাকৃতিক সিমেন্ট থেকে এই সিমেন্ট তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবিত হয়েছিল। ইংল্যান্ডের ডরসেটের খনি থেকে প্রাপ্ত এক প্রকার নির্মাণোপযোগী পাথরকে বলা হতো পোর্টল্যান্ড পাথর। এই পাথরের নামানুসারে এই বিশেষ ধরনের সিমেন্টের নামকরণ করা হয়েছিল পোরল্যান্ড সিমেন্ট। এই সিমেন্টের সাথে বিশেষভাবে জড়িয়ে আছে ব্রিটেনের লিডস নগরীর রাজমিস্ত্রী জোসেফ এ্যাসপডিন (Joseph Aspdin)। আইজ্যাক জনসন নামক তার জনৈক শ্রমিক এর উৎপাদন কৌশল উন্নয়ন করেন। তাদের এই উন্নয়নকৃত সিমেন্ট নির্মাণকার্যে দ্রুত জমাট বাঁধতো এবং যথেষ্ট মজবুতও হতো। ১৮২৩ খ্রিষ্টাব্দে এই সিমেন্টের নাম ডিরেক্টরিতে গৃহীত হয়েছিল। ডিরেক্টরিতে অন্যান্য সহযোগী কিছু ব্যক্তিদের নামও ছিল। এঁরা ছিলেন- উইলিয়াম লকউড (William Lockwood), ডেভ স্টুয়ার্ট (Dave Stewart) প্রমুখ। ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দে এই প্রক্রিয়াটির স্বত্বাধিকার গ্রহণ করেন জোসেফ এ্যাসপডিন । ১৭৯৬ খ্রিষ্টাব্দে জেমস পার্কারের স্বত্বাধিকার-কৃত রোমান সিমেন্টের মতোই তাদের সিমেন্টও একই কাজ করতো। এই সিমেন্টের অনুরূপ আরও একটি সিমেন্ট সে সময়ে প্রচলিত ছিল। এর নাম ছিল ব্রিটিশ সিমেন্ট। এই সিমেন্ট ১৮১১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে জেমস ফ্রস্ট ব্যবহার করে আসছিলেন। এর স্বত্বাধিকার গ্রহণ করা হয়েছিল ১৮২২ খ্রিষ্টাব্দে। জোসেফ এ্যাসপডিন-এর ছেলে উইলিয়াম, ১৮৪৩ খ্রিষ্টাব্দে এই সিমেন্টের আরও উন্নয়ন সাধন করেন। প্রাথমিকভাবে এর নাম ছিল— Patent Portland cement। ১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দে উইলিয়াম পুনরায় এর উন্নয়ন সাধন করেন এবং ১৮৫৩ খ্রিষ্টাব্দে সিমেন্ট তৈরির কাজে জার্মানীতে যান। জার্মানিতে এই সিমেন্টের ব্যাপক উন্নয়ন করা হয় এবং ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে জার্মান সরকার আদর্শ পোর্টল্যান্ডের সিমেন্টের মানদণ্ড নির্ধারণ করে দেয়।