কোনো পদার্থের কেন্দ্রে থাকে প্রোটন ও নিউট্রন এবং এর চারপাশে বিভিন্ন কক্ষপথে ইলেকট্রন ঘোরে। এটা আমরা সবাই জানি। এখন প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, প্রোটন বা নিউট্রন কেন ইলেকট্রনের মতো ঘোরে না? এর কারণ হলো, নিউক্লিয়াসের প্রোটন ও নিউট্রন মৌলিক কণা (এলিমেন্টারি পার্টিকেল) দ্বারা গঠিত। এদের বলা হয় কোয়ার্ক। এরা শক্তিশালী নিউক্লিয়ার ফোর্স বা পারমাণবিক বল দিয়ে বাঁধা থাকে। এই শক্তিই নিউট্রন ও প্রোটনকে শক্ত বন্ধনে আটকে রাখে। সে জন্য তারা সেভাবে ঘুরতে পারে না। কিন্তু ইলেকট্রন এই শক্তির অধিকারী নয়। এরা নিউক্লিয়াসের চারপাশে ঘোরে।
তবে ঠিক আক্ষরিক অর্থে কক্ষপথে ঘোরে না। এরা বাস্তবে নিউক্লিয়াসের চারপাশের একধরনের মেঘাচ্ছন্ন অস্বচ্ছ (ক্লাউড) অবস্থায় থাকে। পরমাণুর নিউক্লিয়াস খুব ভারী এবং ধনাত্মক চার্জযুক্ত, অন্যদিকে ইলেকট্রন হালকা এবং ঋণাত্মক চার্জযুক্ত। এরা একে অপরকে আকর্ষণ করে। ইলেকট্রন যখন একটি নির্দিষ্ট গতিতে একপাশে সরে যেতে থাকে, তখন সে কেন্দ্রের আকর্ষণে কেন্দ্রের দিকে ঝুঁকে পড়তে চায়, কিন্তু পার্শ্বগতির জন্য পারে না। এ অবস্থায় কেন্দ্রের চারপাশে ঘোরে। ঠিক যেভাবে সূর্যের চারপাশে পৃথিবী বা পৃথিবীর চারপাশে চাঁদ ঘোরে। তবে ইলেকট্রন নিজ অক্ষরেখার চারপাশেও ঘোরে।
প্রোটনে দুটি আপ কোয়ার্ক ও একটি ডাউন কোয়ার্ক থাকে। ফলে এর মোট স্পিন বা ঘূর্ণন হয় +১/২। আবার নিউট্রনে দুটি ডাউন কোয়ার্ক ও একটি আপ কোয়ার্ক থাকে। ফলে এর স্পিন -১/২। মোট প্রোটন ও নিউট্রন মিলে নিউক্লিয়াসের স্পিন হয়ে যায় শূন্য। তবে নিউট্রনের চেয়ে প্রোটনের সংখ্যা বেশি থাকলে, মোট স্পিন বা ঘূর্ণন অশূন্য হয়ে যায়।