Recent Post
Loading...

প্রতীক

বর্তমানে পৃথিবীতে মোট ১১৮টি মৌল বা মৌলিক পদার্থ আছে। এদের নামগুলো কিছু এসেছে ল্যাটিন ভাষা থেকে, কিছু এসেছে ইংরেজি ভাষা থেকে। যখন কোনো মৌল সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখা হয় তখন কেবল ঐ মৌলের প্রতীককে ব্যবহার করে তা লিখা হয়। তাই মৌলিক পদার্থের ইংরেজি বা ল্যাটিন নামকে সংক্ষিপ্ত ভাবে প্রকাশের চিহ্নকে ঐ মৌলের প্রতীক বলে।

মৌলের প্রতীক লিখতে হলে কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হয়। এই নিয়মগুলো হচ্ছে-

  • যদি একটা অক্ষর বা Latter দিয়ে প্রতীক লিখতে হয়, তবে মৌলের ইংরেজি নামের কেবল প্রথম অক্ষর দিয়ে প্রতীক লিখতে হবে এবং প্রথম অক্ষরটি বড় হাতের হবে। যেমন নাইট্রোজেনের প্রতীক N.
  • যদি দুইটা অক্ষর বা Latter দিয়ে প্রতীক লিখতে হয়, তবে মৌলের ইংরেজি নামের প্রথম অক্ষর হবে বড় হাতের এবং পরের অক্ষরটি হবে ছোট হাতের। যেমন- ক্যালসিয়ামের প্রতীক Ca.
  • কিছু মৌলের প্রতীক তাদের ল্যাটিন নাম থেকে নেওয়া হয়, যেমন- সোডিয়ামের ল্যাটিন নাম Natrium যার সংকেত Na, সিলভারের ল্যাটিন নাম Argentum যার সংকেত Ag।

সংকেত

যখন একটা মৌলিক পদার্থের অণুকে প্রকাশ করা হয় তখন তাকে সংকেতের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। একইসাথে যদি অনেকগুলো মৌলিক পদার্থ মিলে একটা যৌগিক পদার্থ তৈরি করে তখন সেটাকেও সংকেতের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।

একটা মৌলিক পদার্থের সংকেতের মাধ্যমে ঐ মৌলিক পদার্থের একটা অণুতে কয়টা পরমাণু আছে সেটার সংখ্যা সম্পর্কে জানা যায়। যেমন হাইড্রোজেনের সংকেত H2, এর মানে হাইড্রোজেনের একটা অণুতে ২টা হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে। আবার সালফারের সংকেত S8, এর মানে সালফারের একটা অণুতে ৮ টা সালফার পরমাণু থাকে। এবার আরো কিছু মৌলিক পদার্থের সংকেত জেনে ফেলি-

হিলিয়াম – He

নাইট্রোজেন – N2

অক্সিজেন – O2

ফসফরাস – P5

ক্লোরিন – Cl2

একটা যৌগিক পদার্থের সংকেত বলতে বোঝায় ঐ যৌগে থাকা প্রতিটা মৌলিক পদার্থ কি অনুপাতে আছে সেটার সাংকেতিক প্রকাশকে। যেমন জিংক সালফেটের সংকেত ZnSO4, এই সংকেত থেকে বোঝা যাচ্ছে এই যৌগে জিংকের অনুপাত ১, সালফারের অনুপাত ১, অক্সিজেনের অনুপাত ৪। একইসাথে এই যৌগটি যে তিনটা মৌলিক পদার্থ – জিংক, সালফার, অক্সিজেন দিয়ে তৈরি তাও বোঝা যায়।

চলো আরো কিছু যৌগিক পদার্থের সংকেত শিখি-

অ্যামোনিয়া – NH3

সালফিউরিক এসিড – H2SO4

কপার সালফেট – CuSO4

লেড সালফাইড – PbS

অ্যামোনিয়াম হাইড্রোক্সাইড – NH4OH

ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড – MgCl2

জৈব রসায়নে ইউপ্যাক নামকরণ হলো আন্তর্জাতিক ফলিত রসায়ন সংস্থা (ইউপ্যাক) কর্তৃক প্রস্তাবিত পদ্ধতিগত নামকরণ। এই নামকরণের প্রস্তাবনাটি Nomenclature of Organic Chemistry (অনানুষ্ঠানিকভাবে নীল বই বলা হয়) এ প্রকাশিত হয়। আদর্শগতভাবে, প্রত্যেকটি সম্ভাব্য জৈব যৌগের এমন একটি নাম থাকা প্রয়োজন , যা হতে অদ্বৈত গাঠনিক সংকেত বের করা সম্ভব। অজৈব যৌগেরও ইউপ্যাক নামকরণ পদ্ধতি রয়েছে।

সাধারণ যোগাযোগের ক্ষেত্রে দীর্ঘ এবং ক্লান্তিকর নাম এড়াতে বাস্তবে শুধুমাত্র অদ্বৈত এবং পরম সংজ্ঞায়ন ব্যতীত সর্বদা ইউপ্যাক নামকরণ অনুসরণ করা হয় না। কখনো কখনো পূর্বের নামকরণের তুলনায় ইউপ্যাক নামকরণ সহজ হয় (যেমন ইথাইল অ্যালকোহল এর পরিবর্তে ইথানল)। তুলনামূলকভাবে ছোট অণুগুলোর অপদ্ধতিগত নামকরণের চাইতেও এটি সহজ এবং বোধগম্য। তবে সাধারণ অথবা প্রচলিত নামটি তুলনামূলকভাবে সংক্ষিপ্ত এবং তাদের প্রাধান্য দেওয়া হয়। এসব অপদ্ধতিগত নাম প্রায়ই যৌগের মূল উৎস থেকে গৃহীত। আবার অতিদীর্ঘ নামগুলো গাঠনিক সংকেতের তুলনায় কম বোধগম্য হতে পারে।


রসায়নে, যৌগে অবস্থিত বিভিন্ন কার্যকরী মূলকের অবস্থান এবং ধরন বর্ণনা করার জন্য অনেক উপসর্গ ও অনুসর্গ রয়েছে। একটি জৈব যৌগ কে নামকরণ এর ধাপসমূহ হল:

প্রধান কার্বন শিকল চিহ্নিতকরণঃ এক্ষেত্রে অবশ্যই ক্রমানুসারে নিম্নোক্ত নীতি সমূহ অনুসরণ করতে হবে :

1. এতে কার্যকরী মূলকের সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রতিস্থাপক থাকতে হবে। 

2. যদি একাধিক কার্যকরী মূলক উপস্থিত থাকে তবে সক্রিয়তা ক্রম ব্যবহার করতে হবে। 

3. এতে এর সর্বোচ্চ সংখ্যক দ্বিবন্ধন কিংবা ত্রিবন্ধন থাকতে হবে। 

4. এতে সর্বোচ্চ সংখ্যক একক বন্ধন থাকতে হবে। 

5. এর দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি হতে হবে। 

সর্বোচ্চ ক্রমানুসারে মূল কার্যকরী মূলক সনাক্তকরণঃ 

পার্শ্ব শিকল সনাক্তকরণঃ 

পার্শ্বশিকল হল সেসব কার্বন শিকল যেগুলো মূল শিকল নয় কিন্তু এর শাখা। যদি কোন সহকারী কার্যকরী মূলক থাকে, তবে তাদের আয়নিক উপসর্গ অনুসারে নামকরণ (যেমন hydroxy for -OH, oxy for =O, oxyalkane for O-R, ). ইংরেজি বর্ণমালার ক্রমানুসারে বিভিন্ন শাখা শিকল এবং কার্যকরী মূলকগুলো গ্রুপ করা হবে। এক্ষেত্রে সংখ্যা মূলক উপসর্গগুলো বিবেচনা করা হবে না (যেমন ডাই-,ট্রাই- ইত্যাদি)। যখন পার্শ্ব শিকল এবং সহকারী কার্যকরী মূলক উভয়ই উপস্থিত থাকে , তখন তাদেরকে বিভিন্ন গ্রুপে লেখার পরিবর্তে একই গ্রুপে লিখতে হবে। 

দ্বিবন্ধন এবং ত্রিবন্ধন সনাক্তকরণ শাখাটি ক্রমাংকিতকরণের জন্য প্রথমে শাখাটিকে উভয় দিক (বাম থেকে ডান এবং ডান থেকে বাম) থেকে সংখ্যায়িত করা হয়। অতঃপর নিম্নোক্ত নিয়ম অনুসরণ করে সঠিক সংখ্যায়ন বেছে নেয়া হয় সবচেয়ে নিকটবর্তী কার্যকরী মূলক অর্থাৎ যার সবচেয়ে কাছ থেকে কোন কার্যকরী মূলক সরাসরি যুক্ত রয়েছে যার সবচেয়ে নিকটবর্তী কার্বন এ একাধিক বন্ধন রয়েছে সবচেয়ে নিকটবর্তী কার্বনের কোন প্রতিস্থাপক যুক্ত রয়েছে বিভিন্ন প্রতিস্থাপক এবং বন্ধনকে তাদের কার্বনসংখ্যার ভিত্তিতে সংখ্যায়িতকরণঃ যদি একই ধরনের প্রতিস্থাপক কিংবা দ্বিবন্ধন একাধিক বার থাকে তবে তাদের সংখ্যার ভিত্তিতে উপসর্গ যুক্ত করা হয় ( di – 2 tri – 3 tetra – 4) এই পদ্ধতিতে বিন্যাসকরণ: ধাপ 3 এর প্রস্তুতকৃত সংখ্যায়িত কার্যকরী মূলক এবং পার্শ্ব শিকল + প্রধান শিকলের হাইড্রোকার্বন এর উপসর্গ + সংখ্যাসহ দ্বিবন্ধন/ত্রিবন্ধন (অথবা "ane") + সংখ্যাসহ প্রধান কার্যকরী মূলক সংখ্যা বলতে সংখ্যাসূচক শব্দ বোঝানো হয়েছে। চিহ্ন যোগ: সংখ্যাগুলোর মাঝে কমা ব্যবহৃত হয় (2 5 5 হয়ে যাবে 2,5,5) সংখ্যা এবং বর্ণের মাঝে হাইফেন ব্যবহৃত হয় (2 5 5 trimethylheptane হয়ে যাবে 2,5,5-trimethylheptane) দুটি পাশাপাশি শব্দকে একত্র করা হয় অর্থাৎ মাঝখানে কোনো ফাঁকা স্থান থাকে না (tri heptane হয়ে যায় trimethylheptane) বিঃদ্রঃ ইউপ্যাক সর্বদা এক শব্দ নামকরণ পদ্ধতি অবলম্বন করে। এ কারণে সবগুলো অংশ পরস্পর সংযুক্ত। চূড়ান্ত নামকরণটি এমন দেখাবে:  #,#-di<পার্শ্বশিকল>-#-<সহকারী কার্যকরী মূলক>-#-<পার্শ্বশিকল>-#,#,#-tri<সহকারী কার্যকারী মূলক><প্রধান শিকলের অনুসর্গ><যদি সবগুলো বন্ধন একক বন্ধন হয় তবে "ane" যুক্তকরণ>-#,#-di<দ্বিবন্ধন>-#-<ত্রিবন্ধন>-#-<প্রধান কার্যকরী মূলক> বিঃদ্রঃ: # কোন সংখ্যার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। পার্শ্ব শিকল এবং সহকারী কার্যকরী মূলকগুলো দেখানো উপায়ে নাও হতে পারে, কেননা সে গুলোকে বর্ণমালার ক্রমানুসারে সাজাতে হবে। ডাই- এবং ট্রাই- শুধুমাত্র তাদের সংখ্যার জন্য ( #,# এর পর ডাই-, #,#,# এর পর ট্রাই- ইত্যাদি) উদাহরণ  প্রধান কার্বন শিকল এর ২৩ টি কার্বন রয়েছে। একে বলা হয় tricosa-। সক্রিয়তা ক্রমানুসারে প্রধান কার্যকারী মুলক দুটো কিটোন মূলক মূলক গুলো 3 নং এবং 9 নং কার্বন এর সাথে সংযুক্ত। যেহেতু দুটি রয়েছে তাই লেখা হবে 3,9-dione. কিটোন মূলক অনুসারে যৌগটির সংখ্যায়ন করা হবে। যখন বাম থেকে ডানে সংখ্যায়িত করা হয় কিটোন মূলক গুলো 3 এবং 9 নং কার্বন থাকে। কিন্তু যখন ডান থেকে বামে সংখ্যায়িত করা হয় তখন কিটোন মূলক গুলো 15 এবং 21 নং কার্বন থাকে। যেহেতু 3, 15 এর চেয়ে ছোট তাই কিটোন মূলক গুলো 3 এবং 9 সংখ্যায়িত করা হবে। লক্ষনীয় যে ক্ষুদ্রতর সংখ্যাটি ব্যবহৃত হয়, সংখ্যাগুলোর সমষ্টি নয়। পার্শ্ব শিকল সমূহ হলো: 4 নং কার্বনে একটি ethyl- , 8 নং কার্বনে একটি ethyl- এবং 12 নং কার্বনে একটি butyl- বিঃদ্রঃ 15 নং কার্বনের -O-CH3 টি কোন পার্শ্বশিকল নয় বরং এটি মিথোক্সি মুলক দুটি ইথাইল মূলক রয়েছে তাই এদেরকে সংযুক্ত করে পাই 4,8-diethyl। পার্শ্ব শিকল গুলোকে গ্রুপ করা হয়: 12-butyl-4,8-diethyl। তবে এটি চূড়ান্ত নয়, কেননা আরো কার্যকরী মূলক যুক্ত হতে পারে (এবং নিশ্চিত করতে হবে যে এরা বর্ণানুক্রমিকভাবে সাজানো হয়েছে)। সহকারী কার্যকরী মূলক গুলো হল: 5 নং কার্বনের একটি হাইড্রক্সি, 11 নং কারণে একটি ক্লোরো, 15 নং কারণে একটি মিথোক্সি এবং 18 নং কার্বন এ একটি ব্রোমো। পার্শ্ব শিকলের সঙ্গে গ্রুপ করে পাওয়া যায় 18-bromo-12-butyl-11-chloro-4,8-diethyl-5-hydroxy-15-methoxy দুটি দ্বিবন্ধন রয়েছে - একটি 6 নং এবং 7 নং কার্বনে এবং অপরটি 13 নং ও 14 নং কার্বনে: এদেরকে বলা হবে "6,13-diene", 19 নং ও 20 নং কার্বনের একটি ত্রিবন্ধন রয়েছে। একে বলা হবে 19-yne। চিহ্ন সহকারে বিন্যাস টি হলো: 18-bromo-12-butyl-11-chloro-4,8-diethyl-5-hydroxy-15-methoxytricosa-6,13-dien-19-yne-3,9-dione সর্বশেষে সিস-ট্রান্স সমানুতার কারণে প্রত্যেকটি দ্বিবন্ধন এর সাপেক্ষে কার্যকরী মূলকের অবস্থান উল্লেখ করতে হবে। এই উদাহরণ এর জন্য এটি (6E,13E) সে ধরনের পার্শ্বশিকলে অবস্থিত প্রতিস্থাপকের সংখ্যায়ন পার্শ্বশিকলের নামের পূর্বে অবরোহী পদ্ধতিতে লেখা হয়। একই আলফা কার্বন বিশিষ্ট দুটি পার্শ্বশিকল থাকলে সংখ্যাটি দুইবার লেখা হয়, যেমন: 2,2,3-trimethyl-। যদি দ্বিবন্ধন এবং ত্রিবন্ধন উভয় থাকে তবে "yne" (ত্রিবন্ধন) এর পূর্বে "en" (দ্বিবন্ধন) লেখা হয়। যদি প্রধান কার্যকরী মূলক সমাপ্তি কার্যকরী মূলক (যে মূলক শুধু মাত্র শিকলের শেষে অবস্থান করে, যেমন কার্বক্সিল মূলক, ফর্মাইল মূলক) হয় তবে এতে সংখ্যায়নের প্রয়োজন নেই।

এখানে প্রধান কার্বন সংখ্যায়িত একটি যৌগের নামকরণ দেখানো হলো:

IUPAC naming example with carbons.png

IUPAC naming example without carbons.png

জটিলতা পরিহারের জন্য প্রধান শিকলে হাইড্রোজেন গুলো অপসারণ এবং কার্বন গুলো দেখিয়ে একই যৌগের নামকরণ দেখানো হলো

এখন উপরোক্ত নিয়মাবলী অনুসরণ করে:

অবশেষে নামকরণটি হলো (6E,13E)-18-bromo-12-butyl-11-chloro-4,8-diethyl-5-hydroxy-15-methoxytricosa-6,13-dien-19-yne-3,9-dione।

বেনজিন


বেনজিন এক প্রকার জৈব যৌগ যার আণবিক সংকেত C₆H₆। কখনো কখনো এর সংক্ষিপ্ত Ph-H রূপে লেখা হয়। বেনজিন বর্ণহীন, উচ্চদাহ্য, মিষ্টি গন্ধযুক্ত এবং উচ্চ গালনাঙ্কের তরল পদার্থ।

বেনজিনের ধর্ম

বেনজিন কম গলনাঙ্ক বিশিষ্ট কঠিন পদার্থ অথবা তরল। আণবিক ভর বৃদ্ধির সাথে তরলের স্ফুটনাঙ্ক বৃদ্ধি পায়।বেনজিনে ইলেকট্রফিলিক সংযোজন বিক্রিয়া ঘটে। বেনজিনে বহু-প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া ঘটে। বেনজিন বলয়ে প্রতিস্থাপক দুই প্রকার হতে পারে। যথা:

  • অর্থো-প্যারা নির্দেশক গ্রুপ


  • মেটা নির্দেশক গ্রপ

বেনজিনের রেজোন্যান্স বা অনুরণন ধর্ম আছে।


সূত্র: C6H6
পেষক ভর: ৭৮.১১ g/mol
স্ফুটনাঙ্ক: ১৭৬.২ ডিগ্রী ফারেনহাইট (৮০.১ °C)

ঘনত্ব: ৮৭৬ kg/m³

গলনাঙ্ক: ৪১.৯ ডিগ্রী ফারেনহাইট (৫.৫ °C)
IUPAC আইডি: Benzene

দ্রাব্য: Acetone, অ্যালকোহল, ক্লোরোফরম, অ্যাসিটিক এসিড, Carbon tetrachloride, Diethyl ether 

 শুধুমাত্র হাইড্রোজেন ও কার্বন দ্বারা গঠিত জৈব যৌগকে হাইড্রোকার্বন বলে। হাইড্রোকার্বন বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন অ্যালকেন, অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন অ্যালকিন ও অ্যালকাইন, ও অ্যারোম্যাটিক হাইড্রোকার্বন।

শ্রেণিবিভাগ:

ইউপ্যাক-এর জৈব যৌগ নামকরণ পদ্ধতি অনুসারে হাইড্রোকার্বনগুলিকে নিম্নলিখিত শ্রেণিতে ভাগ করা যায়ঃ

  1. সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনঃ এই ধরনের হাইড্রোকার্বনের (অ্যালকেন) সাধারণ সূত্র CnH2n+2। এই যৌগে কার্বন ও হাইড্রোজেন শুধুমাত্র একবন্ধন দ্বারা যুক্ত এবং একটিমাত্র শৃঙ্খলে বা শাখাযুক্ত শৃঙ্খলে সজ্জিত। পেট্রোলি্য়াম জাতীয় জৈব জ্বালানির মুখ্য উপাদান সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন। কার্বন শৃঙ্খল ও শাখার দৈর্ঘ্যের উপর ভিত্তি করে সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনে আইসোমেরিজম ও কাইরালিটি দেখা যেতে পারে।
  2. অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনঃ এই শ্রেণিতে কার্বন-কার্বন ও কার্বন-হাইড্রোজেন একবন্ধনের পাশাপাশি কার্বন-কার্বন দ্বিবন্ধন ও ত্রিবন্ধন বিদ্যমান। একটি দ্বিবন্ধন যুক্ত হাইড্রোকার্বনের সাধারণ সূত্র CnH2n (অ্যালকিন) ও একটি ত্রিবন্ধন যুক্ত হাইড্রোকার্বনের সাধারণ সূত্র CnH2n-2 (অ্যালকাইন)।
  3. বলয়াকার (সাইক্লিক) হাইড্রোকার্বনঃ এই ধরনের যৌগে এক বা একাধিক কার্বন বলয় উপস্থিত। একটি বলয় বিশিষ্ট সম্পৃক্ত বলয়াকার হাইড্রোকার্বনের সাধারণ সংকেত CnH2n
  4. অ্যারোম্যাটিক হাইড্রোকার্বনঃ এই শ্রেণির হাইড্রোকার্বনে এক বা একাধিক অ্যারোম্যাটিক বলয় (অ্যারোম্যাটিক রিং) থাকে। অ্যারোম্যাটিক হাইড্রোকার্বনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হল বেঞ্জিন।


 প্রশ্ন:- একটি জৈব গ্রিনহাউস গ্যাসের [Greenhouse Gas] নাম কী  ?

উত্তর:-  একটি জৈব গ্রিনহাউস গ্যাসের নাম হল মিথেন (CH4) ।

 

প্রশ্ন:- প্রোপান্যালের সমাবয়বী একটি যৌগের নাম কি ?

উত্তর:- প্রোপান্যালের (CH3CH2CHO) সমাবয়বী একটি যৌগের নাম হল অ্যাসিটোন বা প্রোপানোন (CH3-CO-CH3) ।

 

প্রশ্ন:- অ্যালকিনের [Alkenes] সাধারণ সংকেত কী ?

উত্তর:- অ্যালকিনের সাধারণ সংকেত হল CnH2n,  যেখানে nধনাত্বক পূর্ণসংখ্যা ।

 

প্রশ্ন:- মিথানল অ্যাসিডে উপস্থিত কার্যকরী গ্রুপের সংকেত কী ?

উত্তর:-  মিথানল অ্যাসিডে উপস্থিত কার্যকরী গ্রুপ হল অ্যালকোহলীয় হাইড্রক্সিল গ্রুপ (–OH) ।

 

প্রশ্ন:-  ইথানোয়িক অ্যাসিডে উপস্থিত কার্যকরী গ্রুপের সংকেত কী ?

উত্তর:- ইথানোয়িক অ্যাসিডে উপস্থিত কার্যকরী গ্রুপ হল কার্বক্সিলিক অ্যাসিড গ্রুপ (–COOH) ।

 

প্রশ্ন:- দুটি হাইড্রোজেন পরমাণুযুক্ত একটি হাইড্রোকার্বনের গঠন লেখো ।

উত্তর:- দুটি হাইড্রোজেন পরমাণুযুক্ত একটি হাইড্রোকার্বন হল অ্যাসিটিলিন এবং এর গঠন সংকেত হল H–C = C–H  ।

 

প্রশ্ন:-  সরলতম হাইড্রোকার্বনের নাম কী ?

উত্তর:- সরলতম হাইড্রোকার্বনের নাম হল মিথেন (CH4) ।

 

প্রশ্ন:-  আলেয়া (Will-O-the-Wisp) সৃষ্টিতে কোন গ্যাসটির ভুমিকা আছে ?

উত্তর:-  আলেয়া সৃষ্টিতে মিথেন (CH4) গ্যাসটির ভুমিকা আছে ।

 

প্রশ্ন:-  তিনটি কার্বন পরামাণুযুক্ত অ্যালকেনে হাইড্রোজেন পরমাণুর সংখ্যা কত ?

উত্তর:-  অ্যালকেনের সাধারণ সংকেত হল CnH2n+2 , যেখানে ‘n’ কার্বন পরমাণুর সংখ্যা । অতএব 3 টি কার্বন পরমাণুযুক্ত অ্যালকেনে H– পরমাণুর সংখ্যা = (2.3 + 2) = 8  ।

 

প্রশ্ন:- পলিমার কী ?

উত্তর:- একই বা ভিন্ন যৌগের বহু সংখ্যাক সরল অণুর সংযোগে গঠিত উচ্চ আণবিক ভর বিশিষ্ট যৌগকে পলিমার বলে ।

 

প্রশ্ন:-  অজৈব যৌগ থেকে প্রস্তুত প্রথম জৈব যৌগটির [OrganicCompound] নাম কী ?

উত্তর:-  অজৈব যৌগ [Inorganic Compound] থেকে প্রস্তুত প্রথম জৈব যৌগটির নাম হল ইউরিয়া ।

 

প্রশ্ন:-  কোন বিজ্ঞানী সর্বপ্রথম অজৈব যৌগ থেকে ইউরিয়া (জৈব যৌগ) আবিষ্কার করেন ?

উত্তর:- 1828 সালে জার্মান বিজ্ঞানী ফ্রেডরিক ভোলহারসর্বপ্রথম অজৈব যৌগ অ্যামোনিয়াম সায়ানেট (NH4CNO) থেকে জৈব যৌগ ইউরিয়া [CO(NH2)2] প্রস্তুত করেন ।

যথা :N{H_4}CNO\buildrel {heat} \over \longrightarrow CO{(N{H_2})_2}

ইউরিয়া একটি প্রকৃতিজাত জৈব পদার্থ, যা স্তন্যপায়ীর মূত্রে পাওয়া যায়  ।

 

প্রশ্ন:-  প্রথম কোন জৈব যৌগ [Oorganic Compound] সংশ্লেষিত হয় ? এটি কে আবিষ্কার করেন ?

উত্তর:-  প্রথম যে জৈব যৌগটি সংশ্লেষিত হয়, তা হল অ্যাসিটিক অ্যাসিড (CH3COOH) । 1845 সালে বিজ্ঞানী কোলবেপরীক্ষাগারে কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন ঘটিত এই জৈব যৌগটি প্রস্তুত করেন ।

 

প্রশ্ন:-  জৈব যৌগগুলি তড়িৎযোজী না সমযোজী পদার্থ  ?

উত্তর:-  জৈব যৌগগুলি হল সমযোজী পদার্থ ।

 

প্রশ্ন:-  কোন ধর্মের জন্য কার্বন পরমাণু নিজেদের মধ্যে দীর্ঘ শৃঙ্খল তৈরি করে ?

উত্তর:-  ক্যাটিনেশন বা শৃঙ্খলায়ন ধর্মের জন্য কার্বন পরমাণু নিজেদের মধ্যে দীর্ঘ শৃঙ্খল তৈরি করে ।

 

প্রশ্ন:-  নীচের যৌগগুলির মধ্যে কোন গুলি জৈব যৌগ ?

NaHCO3,   CH4,   CO2,  CHCl3,  CaC2

উত্তর:-  CH4 এবং CHCl3  হল জৈব যৌগ ।

 

প্রশ্ন:- কার্বাইড গ্যাস বাতিতে যে গ্যাসটি জ্বলে তার নাম কী ?

উত্তর:- কার্বাইড গ্যাস বাতিতে যে গ্যাসটি জ্বলে তার নাম হলঅ্যাসিটিলিন (C2H2) ।

 

প্রশ্ন:-  মিথেন [Methene] প্রস্তুতির প্রারম্ভিক দ্রব্যগুলি কী কী ?

উত্তর:-  মিথেন প্রস্তুতির প্রারম্ভিক দ্রব্যগুলি হল শুষ্ক সোডিয়াম অ্যাসিটেট এবং সোডালাইম ।

যথা:- C{H_3}COONa + NaOH\buildrel {heat} \over \longrightarrow C{H_4} \uparrow  + N{a_2}C{O_3}

 

প্রশ্ন:- ফল পাকাতে কোন গ্যাস ব্যবহার করা হয় ?

উত্তর:-  ফল পাকাতে ইথিলিন [Ethylene] গ্যাস ব্যবহার করা হয় ।

 

প্রশ্ন:-  ঝালাইয়ের কাজে যে দুটি গ্যাস ব্যবহার করা হয় তাদের নাম কী ?

উত্তর:-  ঝালাইয়ের কাজে যে দুটি গ্যাস ব্যবহার করা হয় তা হলঅক্সিজেন ও অ্যাসিটিলিন ।

 

প্রশ্ন:-  অ্যাসিটিলিনের উত্স কী ?

উত্তর:-  স্বাভাবিক চাপে প্রায় 1500oC উষ্ণতায় প্রাকৃতিক গ্যাসকে উত্তপ্ত করে ঠান্ডা করলে মিথেন অ্যাসিটিলিনের পরিনত হয় ।

    যথা:- 2CH4 = C2H2 + 3H

   এভাবে বর্তমানে C2H2 -এর পণ্য উত্পাদন করা হয় । কৃত্রিম রবার তৈরি করতে C2H2 ব্যবহৃত হয় ।

 

প্রশ্ন:-  ইথেন অণুতে কার্বন-কার্বন এবং কার্বন-হাইড্রোজেন বন্ধনগুলি কী ধরনের ? 

উত্তর:- ইথেন অণুতে কার্বন-কার্বন এক-বন্ধন দ্বারা এবং কার্বন-হাইড্রোজেন এক-বন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকে ।

 

প্রশ্ন:- অ্যাসিটিলিন প্রস্তুতিতে প্রারম্ভিক দ্রব্যগুলি কী কী ?

উত্তর:- অ্যাসিটিলিন প্রস্তুতিতে প্রারম্ভিক দ্রব্যগুলি হলক্যালসিয়াম কার্বাইড ও জল ।

       যথা:- CaC2 + 2H2O = Ca(OH)2 + C2H↑    ।

 

প্রশ্ন:- কোন জৈব অ্যাসিডে কার্বলিক মূলক নেই ?

উত্তর:- কার্বলিক অ্যাসিডে (C6H5OH) কার্বলিক মূলক (–COOH)  নেই  ।

 

প্রশ্ন:- ইথিলিনের [Ethylene]একটি ব্যবহার উল্লেখ করো ।

উত্তর:-  পলিথিন বা পলিইথিলিন [Polyethylene] প্লাস্টিকপ্রস্তুতিতে ইথিলিন ব্যবহৃত হয় ।

 

প্রশ্ন:-  মার্স গ্যাস কী ?

উত্তর:- মার্স গ্যাস হল মিথেন (CH4) ।  কর্দমাক্ত জলাভূমিতে উদ্ভিদ ও জীবজন্তুর পচনের ফলে মিথেন গ্যাস উত্পন্ন হয় । তাই মিথেন [Methane] গ্যাসকে মার্স গ্যাস বলে ।

 

প্রশ্ন:- অ্যালকাইনের [Alkyne] সাধারণ সংকেত কী ?

উত্তর:- অ্যালকাইনের সাধারণ সংকেত হল CnH2n-2,  যেখানে nধনাত্বক পূর্ণ সংখ্যা  ।

 

প্রশ্ন:-  সরলতম অ্যালকেনের [Alkanes] নাম কী ?

উত্তর:- সরলতম অ্যালকেনের হল মিথেন [Methane] ।

 

প্রশ্ন:-  অ্যাসিটিলিন কোন শ্রেণির জৈব যৌগ ?

উত্তর:-  অ্যাসিটিলিন অ্যালকাইন শ্রেণির জৈব যৌগ ।

 

প্রশ্ন:- ইথাইল অ্যালকোহলের কার্যকরী মুলকের [Functional group] নাম কী ?

উত্তর:-  ইথাইল অ্যালকোহলের কার্যকরী মুলকের নাম হলহাইড্রক্সিল (–OH) ।

 

প্রশ্ন:- অ্যাসিটোনের কার্যকরী মুলকের [Functional group] নাম কী ?

উত্তর:- অ্যাসিটোনের কার্যকরী মুলকের নাম হল কার্বনিল (> C = O)  ।

 

প্রশ্ন:-  পি. ভি. সি. (P.V.C.) পলিমারের মনোমার কী  ?

উত্তর:-  পি. ভি. সি. (P.V.C.) বা পলি-ভিনাইল ক্লোরাইড পলিমারের মনোমার হল ভিনাইল ক্লোরাইড (CH2 = CHCl) ।

 

প্রশ্ন:- টেফলনের [Teflon] মনোমার কী  ?

উত্তর:-  টেফলনের মনোমার হল ট্রেটাফ্লুওরো ইথিলিন (F2C =CF2) । এটি ফ্রাইং প্যান তৈরিতে ব্যবহার করা হয় ।

 

প্রশ্ন:-  একটি জৈব বিনাশী কৃত্রিম পলিমারের নাম কী ?

উত্তর:-  একটি জৈব বিনাশী কৃত্রিম পলিমার হলপলিহাইড্রক্সিবিউটারেট-বিটা  হাইড্রক্সিভ্যালোরেট (P.H.B.V.) । এটি কয়েক মাসের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে বিনষ্ট হয় ।

 

প্রশ্ন:-  একটি প্রাকৃতিক জৈব বিশ্লিষ্ট পলিমারের নাম কী ?

উত্তর:-  খড়, তুলো, কাগজ প্রভৃতির মধ্যে থাকা সেলুলোজ হল একটি প্রাকৃতিক জৈব বিশ্লিষ্ট পলিমার ।

 

প্রশ্ন:- মিথেন অণুতে H—C—H  বন্ধন কোণের মান কত ?

উত্তর:- মিথেন অণুতে H—C—H  বন্ধন কোণের মান হল 109o28’  ।

 

প্রশ্ন:-  দুটি সমাবয়বী যৌগের নাম লেখো ।

উত্তর:- দুটি সমাবয়বী যৌগের নাম হল : ইথাইল অ্যালকোহল(CH3CH2OH) এবং ডাই মিথাইল ইথার (CH3-O-CH3) ।

 

প্রশ্ন:- DNA -এর সম্পূর্ণ নাম কী ?

উত্তর:- DNA -এর সম্পূর্ণ নাম হল ডি-অক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড ।

 

প্রশ্ন:-  RNA  -এর সম্পূর্ণ নাম কী ?

উত্তর:-  RNA  -এর সম্পূর্ণ নাম হল রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড ।

 

প্রশ্ন:- কয়েকটি জীবজ অণুর নাম কী ?

উত্তর:- কয়েকটি জীবজ অণুর নাম হল কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, নিউক্লিক অ্যাসিড প্রভৃতি ।

 

প্রশ্ন:- কার্বোহাইড্রেটে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন কী অনুপাতে থাকে ?

উত্তর:- কার্বোহাইড্রেটে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন 2 : 1 অনুপাতে থাকে ।

 

প্রশ্ন:- প্রোটিনের মনোমার কী ?

উত্তর:- প্রোটিনের মনোমার হল অ্যামিনো অ্যাসিড ।

 

প্রশ্ন:- নিউক্লিক অ্যাসিডে কোন অ্যাসিড থাকে ?

উত্তর:- নিউক্লিক অ্যাসিডে ফসফরিক অ্যাসিড (H3PO4) থাকে ।

 

প্রশ্ন:- DNA -তে কোন শর্করা থাকে ?

উত্তর:- DNA -তে 5-C যুক্ত ডি-অক্সিরাইবোজ শর্করা থাকে ।

 

প্রশ্ন:- RNA -তে কোন শর্করা থাকে ?

উত্তর:- RNA -তে 5-C যুক্ত রাইবোজ শর্করা থাকে ।

 

প্রশ্ন:-  RNA - কয় প্রকার ও কী কী ?

উত্তর:- RNA - প্রধানত দুই প্রকার ।  যথা:- (i)  জেনেটিক RNA  এবং (ii)  নন-জেনেটিক RNA ।

নন-জেনেটিক RNA আবার তিন প্রকার :-

(a) r-RNA বা রাইবোজোমাল RNA  

(b) m-RNA বা মেসেঞ্জার (বার্তাবহ) RNA

(c) t-RNA বা ট্রান্সফার (পরিবৃত্তীয়) RNA ।

 

প্রশ্ন:- দুটি পলিস্যাকারাইডের নাম কী ?

উত্তর:- দুটি পলিস্যাকারাইডের নাম হল স্টার্চ বা শ্বেতসার এবংগ্লাইকোজেন ।

 

প্রশ্ন:- অ্যামিনো অ্যাসিড কী ?

উত্তর:- অ্যামিনো অ্যাসিড হল প্রোটিনের মনোমার । এটি একটি জৈব যৌগ, যার অণুতে অ্যামিনো মূলক (–NH2) এবং কার্বক্সিল মূলক (–COOH) উভয়ই বর্তমান থাকে ।

 

প্রশ্ন:-  দুটি অ্যামিনো অ্যাসিডের জীব অণুর নাম কী ?

উত্তর:- দুটি অ্যামিনো অ্যাসিডর জীব অণুর নাম হল ড্যালিন ওলিউসিন ।

 

প্রশ্ন:-  দুটি প্রাকৃতিক পলিমারের নাম লেখো ও এদের মনোমারের নাম কী ?

উত্তর:-  দুটি প্রাকৃতিক পলিমারের নাম হল সেলুলোজ ও প্রোটিন। সেলুলোজের মনোমারের নাম হল গ্লুকোজ এবং প্রোটিনের মনোমারের নাম হল অ্যামিনো অ্যাসিড ।

 

প্রশ্ন:-  দুটি উদ্ভিজ্জ জীবজ অণুর নাম কী ?

উত্তর:-  দুটি উদ্ভিজ্জ জীবজ অণুর নাম হল শ্বেতসার ওইনিউলিন 

 

প্রশ্ন:- দুটি প্রাণীজ জীবজ অণুর নাম কী ?

উত্তর:-  দুটি প্রাণীজ জীবজ অণুর নাম হল গ্লাইকোজেন ও অ্যালবুমিন ।

 ১৯২৩ সালে বিজ্ঞানী ফাজান পোলারায়ন সম্পর্কিত একটি নীতি প্রদান করেন। এ নীতি ফাজানের নীতি নামে পরিচিত।

এবার জেনে নিই, পোলারায়ন কী? পোলারায়ন হলো ক্যাটায়ন কর্তৃক অ্যানায়নের ইলেকট্রন মেঘের বিকৃতির ঘটনা। অর্থাৎ আয়নিক যৌগে দুটি বিপরীত চার্জযুক্ত আয়ন পরস্পরের কাছাকাছি এলে ক্যাটায়নের ধনাত্মক চার্জ অ্যানায়নের ঋণাত্মক ইলেকট্রন মেঘকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে। ফলে অ্যানায়নের ইলেকট্রন মেঘের বিকৃতি দেখা দেয়। ইলেকট্রন মেঘের এ ধরনের বিকৃতির ঘটনাকে পোলারায়ন বলে।

সুতরাং পোলারায়ন যত বেশি হবে ওই আয়নিক যৌগের সমযোজী বৈশিষ্ট্যও তত বেশি হবে। পোলারায়ন সম্পর্কিত ফাজানের নীতিগুলো হলো :

১। ক্যাটায়নের আকার যত ছোট হবে

২। অ্যানায়নের আকার যত বড় হবে

৩। ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নের চার্জ যত বেশি হবে

৪। ক্যাটায়নে d ও f অরবিটালে ইলেকট্রন থাকলে ওই যৌগের পোলারায়ন বেশি হবে। অর্থাৎ ওই যৌগটির সমযোজী বৈশিষ্ট্যও তত বেশি হবে।

এবার কিছু উদাহরণের মাধ্যমে ফাজানের নীতির প্রয়োগ দেখে নিই।

উদাহরণ-১

CaCl2 ও AlCl3 যৌগ দুটির মধ্যে কোনটি বেশি আয়নিক এবং কেন?


=>CaCl2 ও AlCl3 যৌগ দুটির ক্যাটায়ন যথাক্রমে Ca2+ I Al3+ এবং অ্যানায়ন হলো Cl-। ফাজানের নীতি অনুসারে ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নের চার্জ যত বেশি হবে, পোলারায়ন তত বেশি হবে। আর পোলারায়ন বেশি হলে যৌগটি বেশি সমযোজী হবে। এখন তোমাদের মনের মধ্যে প্রশ্ন জাগতে পারে যে আমরা যৌগ দুটির মধ্যকার ক্যাটায়নের চার্জসংখ্যা নিয়ে কার পোলারায়ন বেশি হবে তা নির্ণয় করব, নাকি অ্যানায়নের চার্জসংখ্যা নিয়ে পোলারায়ন কার বেশি হবে তা নির্ণয় করব। যেহেতু যৌগ দুটির মধ্যে অ্যানায়ন একই অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে আমাদের ক্যাটায়নের চার্জসংখ্যা নিয়ে কাজ করতে হবে। Ca2+ ও Al3+ ক্যাটায়ন দুটি মধ্যকার চার্জসংখ্যা যথাক্রমে +2 এবং +3, যেহেতু Ca2+ ও Al3+ -এর মধ্যে Al3+ -এর চার্জ বেশি, ফলে AlCl3 যৌগের পোলারায়ন বেশি হবে। অর্থাৎ AlCl3 যৌগটি বেশি সমযোজী হবে। অন্যদিকে Ca2+-এর চার্জসংখ্যা Al3+ -এর তুলনায় কম হওয়ায় CaCl2 যৌগটির পোলারায়ন কম হবে অর্থাৎ যৌগটি বেশি আয়নিক হবে।

সুতরাং  CaCl2 ও AlCl3 যৌগ দুটির মধ্যে CaCl2 যৌগটি বেশি আয়নিক হবে।

 ক্যালসিয়াম হাইপোক্লোরাইট


এটি একটি অজৈব যৌগ যার রাসায়নিক সংকেত Ca(OCl)Cl। পানি পরিশোধন এবং ব্লিচিং এজেন্ট হিসেবে ক্লোরিন পাউডার অথবা ব্লিচ পাউডার নামে বাজারে পাওয়া যায়। আর্দ্র এবং অনাদ্র দুই অবস্থায় ক্যালসিয়াম হাইপোক্লোরাইট পাওয়া যায়। এটা পানিতে খুব বেশি দ্রবীভূত হয় না। এর থেকে তীব্র ক্লোরিনের গন্ধ পাওয়া যায়।


বৈশিষ্ট্য

সাদা, অনিয়তাকার এবং একটি অজৈব পদার্থ ।ক্লোরিনের ঝাঁঝালো গন্ধ পাওয়া যায় ।কার্বন ডাই অক্সাইড এর সাথে বিক্রিয়ায়ক্যালসিয়াম কার্বনেট এবং ডাইক্লোরিন মনোক্সাইড উৎপন্ন করে।হাইড্রোক্লোরিক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করেক্যালসিয়াম ক্লোরাইড, পানি এবং ক্লোরিন গ্যাস উৎপন্ন করে।


Ca(OCl)2 + 4 HCl → CaCl2 + 2 H2O + 2 Cl2


উৎপাদন

ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইডের মধ্যে ক্লোরিন গ্যাস চালনা করে বাণিজ্যিক ভাবে হাইপো উৎপাদন করা হয়। বিভিন্ন ঘনত্বের ব্লিচ পাউডার পেতে কয়েক ধাপে বিক্রিয়া পরিচালনা করা হয়।


2 Cl2 + 2 Ca(OH)2 → Ca(OCl)2 + CaCl2 + 2 H2O


ব্যবহার

জীবাণুনাশক হিসাবে, পানি বিশুদ্ধ করতে, ক্লোরোফর্ম প্রস্তুতিতে, এবং বস্ত্র বিরঞ্জন করতে ব্যবহৃত হয় ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা হয় ।


আমরা জানি, জগতে জৈব যৌগের সংখ্যা অনেক। তার তুলনায় অজৈব যৌগের কম। তাই, এর নামকরণের জন্য সমস্যায় তেমন পড়তে হয় নাই।কিন্তু, যত দিন যাচ্ছে অজৈব যৌগের সংখ্যাও বাড়ছে এবং এদের নামকরণে তাই কিছু সমস্যা দেখা দেয়। কিছু কিছু যৌগের নাম তার যৌগতে উপস্থিত মৌলের নাম অনুসারে হয় একধরণের আর শিল্পক্ষেত্রে তার নাম ভিন্ন থাকে।আবার, অজৈব যৌগের গঠন ভৌত অবস্থার উপরে নির্ভর করে বলে নামকরণে অনেক ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। এরকম নানান সমস্যা সমধানের জন্য IUPAC অজৈব যৌগের নামকরণের কিছু নিয়ম তৈরি করে। কিন্তু এসমস্ত নিয়ম সকলের কাছে গ্রহনযোগ্য ছিল না বিধায় সেসকল নিয়মকে নামকরণের শ্রেনীবিভাগ হিসেবে বিবেচিত করা হয়।

যেমন – 

নামের পূর্বে প্রতিস্থাপকের সংখ্যা ,

 একইরকম লিগ্যান্ডের সংখ্যা, 

ঘনীভূত এসিডে একই রকম পরমাণু, 

অণু গঠনে একই রকম পরমাণু সংখ্যা ইত্যাদি প্রকাশে নামের পূর্বে mono,di,tri,tetra,penta ইত্যাদি ব্যবহৄত হয়।

**নামকরনের ক্ষেত্রে জারণ অবস্থার প্রকাশ**

১) যে সমস্ত মৌলের জারণ অবস্থা ২ টা থাকে তাদের বড় জারণ অবস্থার নামের শেষে (ইক) এবং ছোট জারণ অবস্থার নামের শেষে (আস) বসান হয়। যেমন- FeCl₂ (ফেরাস ক্লোরাইড); FeCl₃ (ফেরিক ক্লোরাইড)।

২) ১৯১৯ সালে স্টক জারণ অবস্থা প্রকাশের জন্য নামের পাশে রোমান সংখ্যা লিখার পক্ষে মতামত প্রকাশ করেন। যেমন- CuO কপার (II) অক্সাইড; Cu₂O কপার (I) অক্সাইড।

৩) উপরের নিয়মটা অনেক ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হয় না। যেমন - N₂O₄, Pb₃O₄ ইত্যাদিকে স্টক এর অনুসারে নাইট্রোজেন (IV) অক্সাইড, লেড (II,IV) অক্সাইড ইত্যাদি বলা হয়, যা NO₂, 2PbO, 2PbO₂ থেকে পৃথক করেনা। তাই, এরুপ থেকে ল্যাটিন বা গ্রিক শব্দ নামের পূর্বে mono, di, tri, tetra, penta সংযোজন করে নামকরন করা হয়। যেমন - N₂O₄ কে ডাইনাইট্রোজেন অক্সাইড, Pb₃O₄ কে ট্রাই-লেড টেট্রাঅক্সাইড বলা হয়।

**ধনাত্মক মূলকের নামকরণ**

১) স্থির যোজী মৌলের ক্ষেত্রে: মৌলের নাম + আয়ন

যেমন - Na⁺ ----> সোডিয়াম আয়ন

২) পরিবর্তনশীল যোজনীর ক্ষেত্রে: মৌলের নাম/ মৌলের ল্যাটিন নামের শব্দমূল + আস/ইক

[আস = নিম্ন জারণ অবস্থা ইক = উচ্চ জারণ অবস্থা]

{ বিঃদ্রঃ আধুনিক পদ্ধতিতে মৌলের নামের শেষে ব্র্যাকেটে জারণ অবস্থা রোমান সংখ্যায় লিখা হয় }

যেমন- Cu⁺ ----> কপার (আস); Cu²⁺ ----> কপার (ইক)

Fe²⁺ ----> ফেরাস/আয়রন (II); Fe³⁺ ----> ফেরিক /আয়রন (III)

**ধনাত্মক যৌগমূলকের নামকরণ**

ধনাত্মক যৌগমূলকের নামের শেষে ইয়াম/ আইল হয় ।

যেমন - H₃O⁺ ----> হাইড্রোনিয়াম; PH₄⁺ ----> ফসফোনিয়াম;

NO⁺ ----> নাইট্রোসাইল; SO₂⁺ ----> সালফনাইল।

**ঋনাত্মক মূলকের নামকরণ**

১) এক ও বহু পরমাণুযুক্ত ঋনাত্মক মূলকের শেষে আইড (ide) যুক্ত হয়।

যেমন - O²⁻ ----> অক্সাইড আয়ন; Cl⁻ ----> ক্লোরাইড আয়ন; CN⁻ ----> সায়ানাইড আয়ন ইত্যাদি ।

২) O⁻ যুক্ত যৌগমূলকের নামের শেষে আইট/ এট হবে।

যেমন - NO₂⁻ ----> নাইট্রাইট ; NO₃⁻ ----> নাইট্রেট

**দ্বি-মৌল যৌগের নামকরণ**

যে দুইটা মৌলের সমন্বয়ে দ্বি-মৌল যৌগ গঠিত হয়, উভয়ের মধ্যে অধিক তড়িৎধনাত্মক মৌলটির পুরো নাম প্রথমে লেখা হয় এবং পরে অপর মৌলটির নামের শেষের অপ্রয়োজনীয় অংশ বাদ দিয়ে আইড (ide) যুক্ত করে ঐ নামকরন করা হয় ।

যেমন- CaC₂ = ক্যালসিয়াম কার্বাইড; CaH₂ = ক্যালসিয়াম হাইড্রাইড ।

**ত্রি-মৌল যৌগের নামকরণ**

১) ধনাত্মক মৌলের নাম + ঋনাত্মক যৌগমূলকের নাম

যেমন- CuSO₄ ----> কপার সালফেট।

২) ধনাত্মক যৌগমূলকের নাম + ঋনাত্মক মৌলের শব্দনাম

যেমন- NH₄Cl ----> অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড ।

**হাইড্রেটসমূহের নামকরণ**

এক্ষেত্রে প্রথমে মূল যৌগের নাম লিখতে হয় এবং পানির অণুর সংখ্যা লিখে হাইড্রেট লিখতে হয়।

যেমন- CuSO₄.5H₂O = কপার সালফেট পেণ্টাহাইড্রেট;

CaSO₄.2H₂O = ক্যালসিয়াম সালফেট ডাই হাইড্রেট (জিপসাম) ।

**অক্সি-এসিডের নামকরণ**

অক্সি-এসিডের সংকেত ও এসিডের পূর্ণ নাম

HClO 

হাইপো- ক্লোরাস এসিড/ক্লোরিক (I) এসিড

HClO₂

ক্লোরাস এসিড/ক্লোরিক (III) এসিড

HClO₃ 

ক্লোরিক এসিড/ক্লোরিক (V) এসিড

HClO₄

পারক্লোরিক এসিড/ক্লোরিক (VII) এসিড

HPO₃ 

মেটা ফসফরিক এসিড

H₄P₂O₇

পাইরো ফসফরিক এসিড

H₃PO₄ 

অর্থো ফসফরিক এসিড

H₂SO₃

সালফিউরাস এসিড

H₂SO₄ 

সালফিউরিক এসিড

H₂S₂O₃

থায়ো সালফিউরিক এসিড

 

ইথানল যা ইথাইল অ্যালকোহল নামেও পরিচিত এক প্রকারের অ্যালকোহল। এটি দাহ্য, স্বাদবিহীন, বর্ণহীন, সামান্য বিষাক্ত ও বিশিষ্ট গন্ধযুক্ত এবং অধিকাংশ মদ এর প্রধান উপাদান। এতে ৯৯% বিশুদ্ধ অ্যালকোহল থাকে। এটি জৈব সংশ্লেষণে ব্যবহৃত হয়। এর রাসায়নিক সংকেত হল CH3-CH2-OH বা C2H6O বা EtOH C2H5OH বা C2H6O।


রাসায়নিক সংকেতঃ

ইথানল দুই কার্বন বিশিষ্ট এলকোহল। এর রাসায়নিক সংকেত হচ্ছে: CH3CH2OH । CH3–CH2–OH দ্বারা বোঝায় একটি মিথাইল মূলক (CH3–) একটি মিথিলিন মূলক (–CH2–) এর সাথে যুক্ত হয়ে হাইড্রোক্সিল মূলকের অক্সিজেন অণুর সাথে একক বন্ধন দ্বারা যুক্ত। এটা ডাইমিথাইল ইথারের একটি সমানু। রসায়ন শাস্ত্রে অনেক সময় ইথানলকে সংক্ষেপে EtOH লেখা হয়। Et দ্বারা ইথাইল গ্রুপকে বোঝানো হয়।


ইথানল নামকরণঃ

রসায়নের নামকরণের আন্তর্জাতিক সংস্থা IUPAC এর নিয়ম অনুসারে ইথানলের নামকরণ করা হয়েছে। ইথানলের অণুতে দুটি কার্বন থাকায় পুর্বপদে ইথ এবং হাইড্রোক্সিল মূলকের উপস্থিতির কারণে পরপদে অল ব্যবহার করা হয়েছে |


১৮৩৪ সালে জার্মান রসায়নবিদ জাস্টাস ফন লিয়েবেগ প্রথম ইথাইল শব্দটি ব্যবহার করেন।


ইথাইল শব্দটি ফরাসি শব্দ ইথার এবং গ্রিক শব্দ হাইল সমন্বয়ে গঠিত। ফরাসি ভাষায় ইথার বলতে সেই পদার্থকে বোঝায় যা কক্ষ তাপমাত্রায় বাষ্পীভূত হয় এবং গ্রিক ভাষায় হাইল অর্থ বস্তু বা পদার্থ।


১৮৯২ সালে জেনেভা, সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিতরাসায়নিক নামকরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ইথানল নামটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।


রসায়নের পরিভাষায় এলকোহল বলতে একটি রাসায়নিক পদার্থের গ্রুপকে বোঝালেও প্রচলিত অর্থে সাধারণ মানুষ এলকোহল বলতে ইথানলকে বোঝায়। আল কোরআনে শুরা বলতে এই ইথানলকেই বোঝানো হয়েছে।


প্রাকৃতিক উৎসঃ

ঈস্টের মেটাবলিক প্রসেসে উপজাত হিসেবে ইথানল পাওয়া যায়। তাই যেখানে ঈস্ট পাওয়া যাবে সেখানে ইথানল অবশ্যই পাওয়া যাবে। সাধারনত অতিরিক্ত পাকা ফলে ইথানল পাওয়া যায়। বারটাম পাম ফুলে সিমবায়োটিক ঈস্ট ইথানল উৎপাদন করে। কিছু কিছু পতঙ্গ যেমন পেনটেইলড ট্রিশ্রিউ ইথানলের উৎস খোঁজার প্রবণতা প্রদর্শন করে। তবে অধিকাংশ পতঙ্গ খাবারের উৎস হিসেবে ইথানল যুক্ত উৎস এড়িয়ে চলে। প্রাকৃতিক এনারোবায়োসিসের ফলাফল হিসাবে অনেক উদ্ভিদ ইথানল উৎপন্ন করে মহাশূন্যেও ইথানলের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।


মানবদেহে ইথানলঃ

এক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিজন সুস্থ মানুষের প্রশ্বাসে ২৪৪ppb ইথানল এবং এসিটালডিহাইড উপস্থিত থাকে। একই রকম আরেকটি গবেষণায় সুস্থ সবল একজন স্বেচ্ছাসেবকের প্রশ্বাসে ৪৫০ppb ইথানল পাওয়া গেছে। এই গবেষণায় মদ বা মদজাতীয় পানী পান করার পরের হিসাব ধরা হয়নি।


ফার্মাকোলজিঃ

ইথানলের নিচের ফার্মাকোলজিক্যাল কাজ করার ক্ষমতা রয়েছে।

    GABAA receptor [GABAA receptor) (primarily δ subunit-containing receptors) positive allosteric modulator

    NMDA receptor negative allosteric modulator

    Glycine receptor positive and negative allosteric modulator

    5-HT3 receptor (5-HT3 receptor) positive allosteric modulator

    Nicotinic acetylcholine receptor (nACh receptor) positive and negative allosteric modulator

    Dihydropyridine-sensitive L-type calcium channel|L-type Ca2+ channel blocker

    GIRK channel opener


বিক্রিয়াঃ

এলকোহলকে তিনভাগে ভাগ করা হয় । ইথানল প্রাইমারী এলকোহল। প্রাইমারী এলকোহল তাদের বলা হয় যাদের হাইড্রোক্সিল মূলক যুক্ত কার্বনের সাথে কমপক্ষে দুইটি হাইড্রোজেন যুক্ত থাকে। অধিকাংশ ইথানলের হাইড্রোক্সিল মূলক অংশে প্রধান বিক্রিয়া ঘটে।


এস্টার ফরমেশানঃ

এসিড প্রভাবকের উপস্থিতিতে ইথানল কার্বক্সিলিক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে ইথাইল এস্টার এবং পানি তৈরী করে:


    RCOOH + HOCH2CH3 → RCOOCH2CH3 + H2O


শিল্প কারখানায় প্রস্তুত এস্টার থেকে পানি অপসারণ করা হয়। এস্টার এসিড অথবা ক্ষারের উপস্থিতিতে বিক্রিয়া করে পূণরায় এলকোহল ও লবণ উৎপন্ন করে।এই বিক্রিয়াটি স্যাপোনিফিকেশান বা সাবানিকরণ বিক্রিয়া নামে পরিচিত। কারণ এই বিক্রিয়ার মাধ্যমে সাবান প্রস্তুত করা হয়।  অজৈব এসিডের সাথে ইথানল বিক্রিয়া করে এস্টার গঠন করে। সালফার ট্রাই অক্সাইড এবং ফসফরাস পেন্টাঅক্সাইডের সাথে ইথানলের বিক্রিয়ায় পর্যায়ক্রমে ডাই ইথাইল সালফেট এবং ট্রাই ইথাইল ফসফেট তৈরী হয়। অজৈব সংশ্লেষনে ডাই ইথাইল সালফেট উপকারী ইথাইলেটিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। সোডিয়াম নাইট্রাইট এবং সালফিউরিক এসিডের সাথে ইথানলের বিক্রিয়ায় ইথাইল নাইট্রাইট উৎপন্ন হয় যা ডাই ইউরেটিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।


পানি বিয়োজনঃ


শক্তিশালী এসিডের উপস্থিতিতে ইথানলের ডিহাইড্রেশান বা পানি বিয়োজন ঘটে। পানি বিয়োজিত হয়ে ইথানল ডাই ইথাইল ইথার এবং অন্যান্য উপজাত তৈরী করে। প্রতিবছর সালফিউরিক এসিড প্রভাবক হিসেবে ব্যবহার করে লক্ষ লক্ষ কেজি ডাই ইথাইল ইথার প্রস্তুত করা হয়:


    2 CH3CH2OH → CH3CH2OCH2CH3 + H2O (120 °C তাপমাত্রায়)


দহনঃ

ইথানলের পূর্ণ দহনে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং পানি উৎপন্ন হয়:


    C2H5OH (l) + 3 O2 (g) → 2 CO2 (g) + 3 H2O (liq); −ΔHc = 1371 kJ/mol


বিভিন্ন রকমের ইথানল:


রেক্টিফায়েড স্পিরিট


৯৫.৪% ইথানল ও ৪.৬% পানির মিশ্রণ ।

মেথিলেটেড স্পিরিট


মদ, বিয়ার, হুইস্কি, ব্রান্ডি প্রভৃতি পানীয় ইথাইল এলকোহল হতে প্রস্তুত করা হয়। এ পানীয়সমহূল প্রকৃতপক্ষে ইথাইল এলকোহলের বিভিন্ন ঘনমাত্রার জলীয় দ্রবণ বিশেষ। এসকল পানীয়ের উপর প্রচুর আবগারী শুল্ক দিতে হয়। তাই এগুলো অত্যন্ত মহার্ঘ। অনেক সময় মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা বাজার হতে সস্তা দামের ইথাইল এলকোহল কিনে এর সঙ্গে প্রয়োজন মত পানি মিশ্রিত করে দামী বাণিজ্যিক মদের বিকল্প হিসেবে পান করে। পানের কাজে এরূপ যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে ইথাইল এলকোহলের ঘাটতি পড়তে পারে। কারণ দ্রাবক এবং শিল্পজাত দ্রব্য উৎপাদনকাজে ইথাইল এলকোহল ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। তাই পানীয় হিসেবে ইথাইলে এলকোহলের অনঅনুমোদিত ব্যবহার বন্ধে এর সাথে মিথানল, পিরিডিন, ন্যাপথা প্রভৃতি বিষাক্ত পদার্থ মিশিয়ে বাজারজাত করা হয়। বাণিজ্যিকভাবে এরূপ অ্যালকোহলকে মেথিলেটেড স্পিরিট, ডি ন্যাচারড অ্যালকোহল বা অসেবনীয় অ্যালকোহল নামে পরিচিত। এটি বিশেষভাবে রং-বার্ণিশের কাজে দ্রাবক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। মেথিলেটেড স্পিরিটকে ইথানলের প্রকারভেদ হিসেবে গণ্য করা হয়।


বিবিধ বৈশিষ্ট্য:

মানুষের দেহ থেকে এলকোহল ডিহাইড্রোজিনেজ পদ্ধতিতে জারণের মাধ্যমে সীমিত ইথানল অপসারণ করা যায়। জিরো অর্ডার কাইনেটিকস বা শুন্যক্রমের মাধ্যমে রক্ত থেকে বড় আকারের এলকোহল সরিয়ে নেয়া সম্ভব।এর মানে একটি নির্দিষ্ট হারে শরীর থেকে এলকোহল বেরিয়ে যায়। বিশুদ্ধ বিশুদ্ধ ইথানল চামড়া ও চোখে জ্বালাপড়া সৃষ্টি করে। ইথানল সেবনে মাথা ঘোরা, বমি এবং বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। দীর্ঘকাল ধরে ইথানল সেবনে মারাত্বক লিভার ড্যামেজ হতে পারে।

 

“বাফার হলো এমন একটি দ্রবণ যা pH পরিবর্তনে বাধা প্রদান করে।” ব্যাপারটি অনেকটা এমন যে, বাফার হলো সেনাপতি আর pH হলো রাজা। রাজ্য দখল করার জন্য এসিড অথবা ক্ষার যে ই আসুক না কেন, বাফারের কাজই হলো শত্রুদের আপ্যায়ন করে pH কে ঠিক রাখা। একজন সেনাপতি কতটুকু দক্ষ তা নির্ভর করে শ্ত্রুর বিরুদ্ধে তার যুদ্ধকৌশলের উপর।  ঠিক একইভাবে বাফারের ক্ষমতা নির্ভর করে যে তা দ্রবণের pH কে পরিবর্তনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কতটুকু দক্ষ।

পানিতে যদি এসিড যোগ করা হয় তবে তার pH এর মান কমে যাবে। আবার যদি ক্ষার যোগ করা হয় তবে তার pH এর মান বেড়ে যাবে। এখন যদি আমরা, পানির বদলে বাফার দিই তবে দেখবো যে এসিড বা ক্ষার যাই যোগ করি না কেন দ্রবণে আগে যে pHছিল তার খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। এ পরিবর্তন সবসময় একটি নির্দিষ্ট রেঞ্জের ভেতর সীমাবদ্ধ থাকে। আর এই রেঞ্জকে যে বাফার যত ছোট রাখতে পারে সে তত শক্তিশালী বাফার। ধরা যাক, কোন বাফার দ্রবণের pH হলো  4.54। এখন তাতে যদি শক্তিশালী এসিড বা ক্ষার যা ই যোগ করি না তার pH পরিবর্তন না হয় তবে তা অনেক কার্যকরী বাফার।

বাফার দ্রবণ হলো দুর্বল এসিড ও তার অনুবন্ধী ক্ষার অথবা দুর্বল ক্ষার ও তার অনুবন্ধী এসিডের একটি মিশ্রণ। একটা বিষয় খেয়াল করেছ যে, ‘দুর্বল’ কথাটি বার বার চলে আসছে। এর দ্বারা বোঝা যায় যে বাফার দ্রবণ সাম্যাবস্থার ক্রিয়া কৌশল মেনে চলে।
( কোন ক্ষারের সাথে একটি প্রোটন যুক্ত হয়ে যে এসিড তৈরি করে তাকে ঐ ক্ষারের অনুবন্ধী অম্ল বলে। যেমন: NH₃ এর অনুবন্ধী অম্ল হচ্ছে NH₄⁺। )
বাফার সাধারনত দুই ধরনের হয়। অম্লীয় এবং ক্ষারীয়। যেকোন একটির ক্রিয়া কৌশল দেখলে অন্যটিও বোঝা যাবে। আমরা এখন এসিডিক বাফার কিভাবে কাজ করে তা দেখবো।

এসিডিক বাফার অ্যাসিটিক এসিড ও তার অনুবন্ধী ক্ষার নিয়ে গঠিত।

CH₃COOH ⇌ CH₃COO⁻ + H⁺
CH₃COO⁻  Na⁺ →  CH₃COO⁻ + Na⁺

এখন যদি এই সিস্টেমে এসিড যোগ করা হয় তবে তা অ্যাসিটেট আয়নের সাথে বিক্রিয়া করে অ্যাসিটিক এসিড হয়ে যাবে। তখন CH₃COO⁻(অ্যাসিটেট আয়ন) আয়নের ঘাটতি পড়বে। এই ঘাটতি তো পূরন করতে হবে। তখন এসিডের সাম্যাবস্থার বিক্রিয়াটি লা শাতেলীয় নীতি অনুসারে ডান দিকে চলে যায়। ফলে CH₃COO⁻ (অ্যাসিটেট আয়ন) এর উৎপাদন হয়। ঘাটতিও পূরণ হয় সাথে সাথে pH ও পরিবর্তন হয় না।
ব্যাপারটি এভাবে চিন্তা করা যাক, দুই গেরস্থ CH₃COOH (অ্যাসিটিক এসিড) এবং CH₃COONa (সোডিয়াম অ্যাসিটেট) সবাইকে বিরিয়ানী খাওয়াবে। সব মেহমানকেই বিরিয়ানী খাওয়াতে হবে এবং মোট বিরিয়ানীর পরিমাণ কিছুতেই কমানো যাবে না। বলে রাখা ভালো যে, বিরিয়ানীর নাম হচ্ছে CH₃COO⁻ (অ্যাসিটেট আয়ন)। প্রথমেই প্রোটন (H⁺) সাহেব চলে এলেন। যাওয়ার সময় বিরিয়ানী CH₃COO⁻ (অ্যাসিটেট আয়ন) নিয়ে CH₃COOH হয়ে চলে গেলেন। ফলে বিরিয়ানী কমে গেলো, মানে ঘাটতি দেখা গেল। তাই গেরস্থ (CH₃COOH) আরেকটা বিরিয়ানী (CH₃COO⁻) দেয়ার মাধ্যমে ঘাটতি পূরণ করে দিলো।
ঠিক একইভাবে যদি বাফার সিস্টেমে ক্ষার যোগ করা হয় তবে তা দ্রবণে যে প্রোটন (H⁺)আছে তার সাথে বিক্রিয়া করে পানি (H₂O) হয়ে যাবে। এখন, যেহেতু H⁺ এর ঘাটতি দেখা দিয়েছে তাই তা ভারসাম্য করার জন্য এসিডের সাম্যাবস্থার বিক্রিয়া ডান দিকে সরে যাবে এবং pH অপরিবর্তনীয় রাখবে।