Recent Post
Loading...



কোন নির্দিষ্ট উষ্ণতায় ১০০ গ্রাম দ্রাবকে গ্রামে প্রকাশিত যে পরিমাণ দ্রব দ্রবীভূত হয়ে সম্পৃক্ত দ্রবণ উৎপন্ন করে     তাকে ঐ উষ্ণতায় ঐ দ্রবের দ্রাব্যতা বলে। 

দ্রাব্যতা পদার্থের একটি ভৌত ধর্ম। কোন নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট পরিমাণ দ্রাবককে সম্পৃক্ত দ্রবণে পরিণত করতে যে পরিমাণ দ্রব দ্রবীভূত করতে হয় তাকেই ঐ তাপমাত্রায় ঐ দ্রবের দ্রাব্যতা বলে। কোন পদার্থের দ্রাব্যতা প্রকৃতপক্ষে ব্যবহৃত দ্রাবক, তাপমাত্রা ও চাপের উপর নির্ভর করে। তাপমাত্রার মত চাপও দ্রবণকে প্রভাবিত করে, সেটা তরল হোক বা বায়বীয়ই হোক। তাই দ্রাব্যতার সংজ্ঞা দেওয়ার সময় একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও চাপ উল্লেখ করা হয়। দ্রাব্যতা প্রকাশ করা হয় ঘনমাত্রা প্রকাশের বিভিন্ন একক (মোলারিটি, মোলালিটি, নরমালিটি ইত্যাদি) দ্বারা। কারণ দ্রাব্যতা মূলত কোন দ্রবণে দ্রবের সর্বোচ্চ ঘনমাত্রাকেই প্রকাশ করে । দ্রাব্যতা একটি আনুপাতিক রাশি। এর কোন একক নেই। যেমনঃ ৩৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় KNO3 এর দ্রাব্যতা হল 60 তাহলে বোঝা যাবে যে ঐ তাপমাত্রায় 100g পানিতে সর্বাধিক 60g KNO3 দ্রবীভূত হয়ে দ্রবণ উৎপন্ন করবে ।






বিক্রিয়া তাপের উপর ভিত্তি করে রাসায়নিক বিক্রিয়াকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

যথাঃ তাপোৎপাদী ও তাপহারী।

তাপোৎপাদী ও তাপহারী বিক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপঃ

১. যে রাসায়নিক পরিবর্তনের ফলে তাপশক্তির শোষণ এবং বিক্রিয়া অঞ্চলের তাপমাত্রা হ্রাস পায় তাকে তাপহারী বিক্রিয়া বলে।

অপরদিকে যে রাসায়নিক পরিবর্তনের ফলে তাপশক্তি উৎপন্ন হয় এবং বিক্রিয়া অঞ্চলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় তাকে তাপোৎপাদী বিক্রিয়া বলে।

২. তাপহারী বিক্রিয়ায় উৎপাদের মোট এনথালপি বিক্রিয়কের মোট এনথালপি অপেক্ষা বেশি হয়।

কিন্তু তাপোৎপাদী বিক্রিয়ায় উৎপাদের মোট এনথালপি বিক্রিয়কের মোট এনথালপি অপেক্ষা কম হয়।

 ৩. তাপহারী বিক্রিয়ায় তাপের শোষণ এবং ΔH এর মান ধনাত্মক হয়।

কিন্তু তাপোৎপাদী বিক্রিয়ায় তাপ উৎপন্ন হয় এবং ΔH এর মান ঋণাত্মক হয়।



জৈব রসায়নেঅ্যালকিন বা অলিফিন হলো অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন যাতে অবশ্যই একটি বা একাধিক কার্বন-কার্বন দ্বিবন্ধন (>C=C<) থাকবে।
সরলতম অ্যালকিনের উদাহরণ হল ইথিন(C2H4)।
অ্যালকোহল এর সাথে দ্বিগুণ পরিমাণ গাঢ় সালফিউরিক এসিড যোগ করে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় অ্যালকাইল হাইড্রোজেন সালফেট উৎপন্ন করা হয়। একে ১৬৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে অ্যালকিন। উৎপন্ন হয়।


CH3COOH + H2SO4(100 °C)→ CH3CHSO4 (165 °C) --> C2H4


C12H26 (500 °C)→ C10H22 + C2H4



i) অ্যালকাইন থেকে অ্যালকেন:

Ni চূর্ণ প্রভাবকের উপস্থিতিতে২০০' C তাপমাত্রায় প্রোপাইন এক অনু হাইড্রোজেন এর সাথে যুক্ত হয়ে প্রোপিন উৎপন্ন করে।উৎপন্ন প্রোপিন আবার এক অনু হাইড্রোজেনের সাথে যুক্ত হয়ে প্রোপেন উৎপন্ন করে।

ii) ফ্যাটি এসিডের সোডিয়াম লবনকে সোডালাইমের সাথে উওপ্ত করলে অ্যালকেন উৎপন্ন হয়।

iii) ধাতব প্রভাবক(Ni) উপস্থিতিতে ১৮০-২০০' C তাপমাত্রায় অ্যালকিন হাইড্রোজেনের বিক্রিয়া করে অ্যালকেন উৎপন্ন হয়।

iv) কার্বন মনোক্সাইড ও হাইড্রোজেন অথবা কার্বন ডাইঅক্সাইড ও হাইড্রোজেনের মিশ্রণকে ২৫০ তাপমাত্রায় উওপ্ত প্রভাবকের উপর দিয়ে প্রবাহিত করলে প্রচুর পরিমানে মিথেন উৎপন্ন হয়।


অ্যালকাইল হ্যালাইডের শুষ্ক ইথারীয় দ্রবণে ধাতব সোডিয়াম যোগ করে রিফ্লাক্স করলে উচ্চতর অ্যালকেন উৎপন্ন করার বিক্রিয়াকে উর্টজ বিক্রিয়া বলে।

   2RX + 2Na = R-R + 2NaX 

এখানে, R = অ্যালকাইল মূলক

         X= হ্যালাইড

উল্লেখ্য অনেকেই মনে করে উর্টজ বিক্রিয়া দ্বারা কেবল মাত্র জোড় সংখ্যক অ্যালকাইল মূলক বিশিষ্ট অ্যালকেন উৎপন্ন সম্ভব ! কিন্তু এ ধারণা ভুল !


একই ধরণের দুটি অ্যালকাইল হ্যালাইড ব্যবহার না করে যদি একটি জোড় ও একটি বিজোড় অ্যালকাইল হ্যালাইড ব্যবহার করা হয় তবে বিজোড় অ্যালকাইল মূলক বিশিষ্ট অ্যালকেন উৎপন্ন সম্ভব !

উদাহরণ-

CH3Cl + C2H5Cl + 2Na = 2NaCl + CH3-C2H5 (C3H8)



ডিকার্বক্সিলেশনঃ  জৈব এসিডের 

(R - COONa) সোডিয়াম লবণকে সোডালাইম {NaOH(CaO)} দ্বারা উত্তপ্ত করলে অ্যালকেন (R-H) প্রস্তুত হয়। 
জৈব এসিড থেকে অ্যালকেন প্রস্তুতির এ বিক্রিয়াকে ডিকার্বক্সিলেশন বিক্রিয়া বলে। 

এ বিক্রিয়ায় উৎপন্ন অ্যালকেনে, বিক্রিয়ক এসিডের লবণ থেকে একটি কার্বন পরমাণু কম থাকে বলে এরূপ নামকরণ করা হয়।

R-COONa+NaOH(CaO) ---->R-H +  Na₂CO₃(CaO)
 
যেমনঃ সোডিয়াম ইথানয়েট কে সোডালাইম সহ উত্তপ্ত করলে মিথেন উৎপন্ন হয়।

CH₃COONa + NaOH(CaO) ----->  CH₄ +  
                                                 Na₂CO₃(CaO)

 
এ বিক্রিয়ায় উৎপন্ন মিথেনে বিক্রিয়ক সোডিয়াম ইথানয়েট থেকে একটি কার্বন কম থাকে। 
এ বিক্রিয়ার মাধ্যমে জৈব যৌগে কার্বন পরমাণু হ্রাস করা যায়।



যেসব যৌগের অণুতে এক বা একাধিক বেনজিন চক্র বিদ্যমান থাকে তাদেরকে অ্যারোমেটিক যৌগ বলে। 

উদাহরণ : বেনজিন (C 66), পিরিডিন (C 55N) এবং ফেনল (C 65OH) ইত্যাদি। এসব যৌগ সমতলীয় চক্রিয় হয় এবং এতে একান্তর দ্বি-বন্ধনের উপস্থিতি থাকে। অ্যারোমেটিক যৌগসমূহ ৫, ৬ বা ৭ সদস্যের সমতলীয় চাক্রিয় যৌগ



দুটি ভিন্ন ধাতুর মৌল দ্বারা গঠিত তড়িৎদ্বারকে দুটি ভিন্ন তড়িৎ বিশ্লেষ্য দ্রবণে আংশিক নিমজ্জিত করে দ্বি-প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট যে কোষ গঠন করা হয় তাকে গ্যালভানিক কোষ বলে।

গ্যালভানিক কোষে রাসায়নিক শক্তি বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। 

যে ধাতুর তড়িৎদ্বার অধিক সক্রিয় তাকে অ্যানোড হিসাবে এবং যে ধাতুর তড়িৎদ্বার কম সক্রিয় তাকে ক্যাথোড হিসেবে ব্যবহার করা হয়। গ্যালভানিক কোষে অ্যানোডে জারণ ও ক্যাথোড বিজারণ সংঘটিত হয়। অ্যানোডে ধাতব পরমাণু ইলেকট্রন ত্যাগ করে ধনাত্মক আয়ন হিসেবে দ্রবণে যায়। এজন্য অ্যানোডে ইলেকট্রন ঘনত্ব বেশি থাকে। 

যার কারণে অ্যানোড ঋণাত্মক হয়। অপরদিকে ক্যাথোডে ইলেকট্রন ঘনত্ব কম থাকায় গ্যালভানিক কোষে ক্যাথোড ধনাত্মক হয়।




হাইড্রোজেন সালফাইডের জলীয় দ্রবণ অম্লীয়। 

কারণ এর জলীয় দ্রবণে প্রোটন আয়ন (H+) ত্যাগ করে। এই প্রোটন আয়ন নীল লিটমাসকে লাল লিটমাসকে পরিণত করে। 

H₂S(aq) <-----> H+(aq)+HS-(aq)

নীল লিটমাস + H+(aq) ------> লাল লিটমাস

আবার, সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড এর সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি গঠন করে। 

H₂S(g) + 2NaOH(aq) -----> Na₂S(aq) + 2H₂O(l)

সেজন্য বলা যায়, হাইড্রোজেন সালফাইড এর জলীয় দ্রবণ অম্লধর্মী।



 উদ্ভিদ জগতের প্রধান দুটি পলিস্যাকারাইড হলো স্টার্চ ও সেলুলোজ। 

সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ এ দুটি পলিস্যাকারাইড প্রস্তুত করে। এসকল পলিস্যাকারাইডের মনোমার বা ক্ষুদ্র একক অণু গ্লুকোজ। উদ্ভিদের সবুজ পাতায় ক্লোরোফিল ও সূর্যালোকের প্রভাবে বায়ু থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও মাটি থেকে মূলের মাধ্যমে সংগৃহীত পানি রাসায়নিক ভাবে পরিবর্তিত হয়ে গ্লুকোজ (C₆H₁₂O₆) নামক মনোস্যাকারাইড তৈরি করে। এ পদ্ধতিকে সালোকসংশ্লেষণ বলে। 

6CO₂ +6H₂O -----> C₆H₁₂O₆ +6O₂


অন্যদিকে, একই উদ্ভিদে হাজার হাজার গ্লুকোজ অণু পলিমারকরনের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে উদ্ভিদ দেহের গঠন উপাদান সেলুলোজ উৎপন্ন করে।

আবার, ভিন্নভাবে অসংখ্য গ্লুকোজ অণু উদ্ভিদ দেহে যুক্ত হয়ে স্টার্চ অণু সৃষ্টি করে এবং উদ্ভিদের বীজ, রূপান্তরিত মূল ও কান্ডে ভবিষ্যতের খাদ্যরূপে সঞ্চিত হয়। 
এইরূপে প্রাকৃতিক পলিস্যাকারাইড স্টার্চ ও সেলুলোজ [(C₆H₁₀O₅)n] গঠিত হয়। 

nC₆H₁₂O₆  -----> (C₆H₁₀O₅)n + nH₂O

মানুষের পরিপাকতন্ত্রে স্টার্চ ও জীবজন্তুর পরিপাকতন্ত্রে স্টার্চ এবং সেলুলোজ ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়ায় গ্লুকোজে পরিণত ও শোষিত হয়ে রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে লিভারে পৌঁছালে গ্লাইকোজেন বা প্রাণীজ স্টার্চ রূপে অব্যবহৃত গ্লুকোজ জমা থাকে।