Recent Post
Loading...

 শিখনফল: IUPAC পদ্ধতিতে জৈব যৌগের নামকরন করতে পারবে।



আগের পর্বগুলোতে আমরা সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন তথা অ্যালকেনের নামকরণ শিখেছি। যেমন-


যৌগটির দীর্ঘতম শিকলে  ৫টি  পরমাণু, ক্ষুদ্রতম দিক থেকে ২ নং অবস্থানে শাখা হিসেবে একটি মিথাইল মূলক, আর কার্বন-কার্বন একক বন্ধন এই বিষয়গুলি হিসেব করে আমারা এখন বলতে পারি যৌগটির নাম ২-মিথাইলপেন্টেন।

এখন এই নামের প্রতিটি অংশ লক্ষ্য করি।

  • ২ এই সংখ্যাটি দীর্ঘতম শিকলে শাখা বা কার্যকরী মূলকের অবস্থান নির্দেশক সংখ্যা।
  • মিথাইল-এটি মূল হাইড্রোকার্বন শিকলে শাখায় যুক্ত অ্যালকাইল মূলকের নাম। এটিকে উপপদ (prefix) বলে।
  • পেন্ট-মূল হাইড্রোকার্বন শিকলে কার্বনের সংখ্যা। এটি শব্ধ মূল বা (word root)
  • এন-এটি যৌগের প্রকৃতি অনুযায়ী যুক্ত হওয়া পরপদ (suffix)

আগের পর্বের নিয়মগুলো অনুশীলন করে এবং নিচের ছকে দেওয়া যৌগের প্রকৃতি তথা কার্যকরী মূলক অনুযায়ী prefix ও suffix এর নাম বসিয়ে পরবর্তী পর্ব গুলোতে আমরা অন্যান্য জৈব যৌগের নামকরণ শিখব।

group name
structure
prefix
suffix
alkane 
-H3C-CH3-

ane (-এন)
alkene 

-ene    (-ইন)
alkyne 

           
-yne (-আইন
alcohol
R-OH 
hydroxy (হাইড্রোক্সি
-ol (-অল)
aldehyde
R-CHO
oxo- (formyl) অক্সো (-ফরমাইল)
-al (অ্যাল)
ketone
R-CO-R
oxo-              (অক্সো)  
-one (ওন)
carboxylic acid
R-COOH
carboxy-         কার্বোক্সি
-oic acid (-ওয়িক এসিড)
amine
R-N= (-NH2)
amino- (অ্যামিনো)
-amine (-অ্যামিন)
alkyl
R= -CH3, -CH2CH3, ইত্যাদি
alkyl- (অ্যালকাইল)

CH3-
methyl- (মিথাইল)

CH3CH2-
ethyl- (ইথাইল)



isopropyl-


tert-butyl or t-butyl

alkoxy
R-O-
alkoxy- (অ্যালকোক্সি)

halogen
F-
fluoro- (ফ্লুরো)

Cl-
chloro- (ক্লোরো

Br-
bromo- (ব্রোমো)

I-
iodo- (আয়োডো)

nitro
NO2-
nitro- (নাইট্রো)

vinyl
CH2=CH-
vinyl- (ভিনাইল)

allyl
CH2=CH-CH2-
allyl- (অ্যালাইল)

phenyl

phenyl- (ফিনাইল)



নামকরণ করার চেষ্টা কর:

শিখনফল: IUPAC পদ্ধতিতে জৈব যৌগের নামকরণ করতে পারবে।


জৈব যৌগের নামকরণ-১


আগের পর্বে আমরা সরল শিকল অ্যালকেনের নামকরণ শিখেছি। এই পর্বে আমরা দেখব কিভাবে শাখাশিকল যুক্ত অ্যালকেনের নামকরণ করতে হয়। নিচের উদাহরণ লক্ষ্য করি-


শাখা শিকল যুক্ত অ্যালকেনের নামকরণের জন্য-
  •  মূল হাইড্রোকার্বন শিকল বা প্রধান শিকল নির্ণয় করতে হবে। যেভাবে হিসেব করলে শিকলে সবচেয়ে বেশী সংখ্যক কার্বন পরমাণু পাওয়া যাবে সেটিই মূল শিকল
  •  মূল শিকলে শাখা শিকলটির অবস্থান নির্ণয়ের জন্য মূল শিকলটিকে এমনভাবে সংখ্যায়িত করতে হবে যেন শাখাশিকলটি ন্যূনতম অবস্থান লাভ করে। অর্থাৎ যেদিক থেকে সংখ্যায়িত করলে শাখা শিকলটি আগে পাওয়া যাবে সেদিক থেকে সংখ্যায়িত করতে হবে। নামকরণের শুরুতেই এই অবস্থান সূচক সংখ্যাটি লিখতে হবে।
  • শিকলে সংযুক্ত অ্যালকাইল মূলকের নাম লিখতে হবে। (অ্যালকেন (CnH2n+2থেকে একটি হাইড্রোজেন সরালে যে মূলক (-CnH2n+1) পাওয়া যায় তাকে অ্যালকাইল মূলক বলে। যেমন-মিথেন থেকে মিথাইল, প্রোপেন থেকে প্রোপাইল ইত্যাদি)।
  • মূল শিকলে কার্বন পরমাণুর সংখ্যা অনুসারে হাইড্রোকার্বনের নামকরণ করতে হবে।


এই নিয়মগুলো অনুসরণ করে উপরের যৌগটির নামকরণ করি-


দেখা যাচ্ছে চিত্রের মতকরে সংখ্যায়িত করলে কার্বন শিকলটি দীর্ঘতর (৬টি পরমানু) হয় এবং ন্যূনতম অবস্থানে (৩ নং) প্রতিস্থাপিত মূলক বা শাখা শিকল (মিথাইল মূলক) পাওয়া যায়। তাই যৌগটির নাম ৩-মিথাইলহেক্সেন।

লক্ষ্য কর, শিকলের অবস্থান সূচক সংখ্য ও নামের আগে একটি হাইফেন (-) বসেছে। আর প্রতিস্থাপিত মূলক ও মূল হাইড্রোকার্বন শিকলের নামের আগে কোন স্পেস নেই। দুটি নাম একসাথে লিখতে হবে।

এবার আমরা নিচের যৌগদুটির নামকরণ করি-




  • দীর্ঘতম কার্বন শিকল নির্ণয় করি।
  • ন্যূনতম অবস্থানে শাখা রেখে মূল শিকল সংখ্যায়িত করি।
  • নামকরণ করি।

আগের উদাহরণ টি বুঝে থাকলে আমরা নিশ্চই এতক্ষণে বুঝে গেছি এই দুটি আসলে একই যৌগ। ২-মিথাইল পেন্টেন।

নামরকরণ করি-






উত্তর: যৌগদুটির নাম
৩-মিথাইলপেন্টেন
২-মিথাইল বিউটেন।

এইবার আরও একটি উদাহরণ লক্ষ্য করি-



এই যৌগের ২,৩ ও ৪ নং অবস্থানে একই প্রতিস্থাপিত মূলক রয়েছে। তাই একই প্রতিস্থাপিত মূলকের প্রতিটি অবস্থান নির্দেশক সংখ্যা পর পর কমা (,) দিয়ে লেখা হয়েছে এবং মূলকটি তিনবার আছে বলে ট্রাই শব্দটি বসেছে।

অনুরুপভাবে ২,৪,৫,৬,৭,৮ ইত্যাদি বারের একই প্রতিস্থাপিত মূলকের জন্য যথাক্রমে ডাই, টেট্রা, পেন্টা, হেক্সা, হেপ্টা, অক্টা ইত্যাদি শব্দ বসবে।

  • একই অবস্থানে একাধিকবার প্রতিস্থাপিত মূলক থাকলে প্রতিবারের জন্য অবস্থান নির্দেশক সংখ্যাটি লিখতে হবে। যেমন-


  • একই মূল শিকলে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিস্থাপিত মূলক থাকলে তাদের নাম ইংরেজী বর্ণমালার ক্রম অনুসারে লিখতে হবে। যেমন-


প্রথমে ethyl -এর e, তারপর methyl -এর ও সবশেষে propyl -এর p। লক্ষ্য কর যদিও মিথাইল এর আগে ট্রাই অর্থাৎ 't' শব্দটি ইংরেজী বর্ণানুক্রমানুসারে 'p' -এর পরে কিন্তু মনে রাখতে এটি মূলকের নাম নয় এটি মূলকের সংখ্যা। তাই এটি হিসেব হবে না। শুধুমাত্র মূলকের নামের বর্ণানুক্রম অনুসরণ করতে হবে। 
  • যদি দুই দিক থেকে একই অবস্থানে প্রতিস্থাপিত মূলক থাকে তবে দ্বিতীয় প্রতিস্থাপিত মূলকের ন্যুনতম অবস্থান হিসাব করতে হবে-

ডান ও বাম দুই দিক থেকেই এই যৌগটির ২ নং এ প্রথম প্রতিস্থাপক মূলক পাওয়া যায়। কিন্তু ডান দিক থেকে ৩ নং এ এবং বাম দিক থেকে ৫ নং এ দ্বিতীয় প্রতিস্থাপক মূলক পাওয়া যায়। তাই যৌগটির প্রধান শিকল ডান দিক থেকে সংখ্যায়িত করে নামকরণ করা হয়েছে।

  • শাখা শিকলের অবস্থান নির্দেশক সংখ্যার যোগফল যে দিক থেকে ক্ষুদ্রতর হবে সে দিক থেকে প্রধান শিকল সংখ্যায়িত করতে হবে। যেমন-

দুই দিক থেকে একই ২ নং অবস্থানে প্রতিস্থাপিত মূলক রয়েছে এবং দ্বিতীয় কোন প্রতিস্থাপক নেই। ডান দিক থেকে সংখ্যায়িত করলে অবস্থান নির্দেশক সংখ্যার যোগফল হয় (২+৪+৪=১০)। তাই বাম দিক থেকে (২+২+৪=৮) অর্থাৎ ক্ষুদ্রতর দিক থেকে সংখ্যায়িত করে নামকরণ করা হয়েছে।

  • যদি দুই বা ততোধিক ভিন্ন প্রকৃতির মূলক একই অবস্থানে থাকে তবে ইংরেজী বর্ণানুক্রমানুসারে যে মূলকটি আগে আসে তার অবস্থান টি আগে হিসেব করতে হবে।



ইথাইল ও মিথাইল উভয়ই ৩ নং অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু বর্ণানুক্রমানুসারে ইথাইলের অবস্থান ৩ হয়েছে।

  • সমসংখ্যক কার্বন পরমানুর দুটি আলাদা প্রধান শিকল সম্ভব হলে অধিক সংখ্যক বা মূলকযুক্ত কার্বন শিকলকে প্রধান শিকল হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।
  • শাখাশিকলে দুই এর অধিক কার্বন পরমাণুর জটিল প্রতিস্থাপক থাকলে শাখাটিকে পৃথকভাবে সংখ্যায়িত করে শাখাটির অবস্থান সূচক সংখ্যা লিখে নাম বন্ধনীর মধ্যে লিখতে হবে। যেমন-





এই নিয়মগুলো বারবার অনুশীলনের মাধ্যমে আয়ত্ত্ব করতে পারলে পরবর্তীতে অন্য যেকোন ধরনের জৈব যৌগের নামকরণ খুব সহজেই করা যায়।


নামকরণ কর-

 শিখনফল: IUPAC পদ্ধতিতে জৈব যৌগের নামকরণ করতে পারবে।


এই পর্বে আমরা সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের নামকরণ শিখব।

আমরা জানি, শুধুমাত্র কার্বন ও হাইড্রোজেন দ্বারা গঠিত কার্বন-কার্বন একক বন্ধনযুক্ত যৌগসমূহকে সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন বলে। এদের অ্যালকেন বলা হয়। 
অ্যালকেনের নামকে মূল নাম বিবেচনা করে সবরকম জৈব যৌগের নামকরণ করা যায় তাই আমরা শুরুতেই সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন বা অ্যালকেনের নাককরণ শিখব। 
হাইড্রোকার্বনের মূল শিকলে কার্বন পরমাণুর সংখ্যা অনুসারে নামের প্রথম অংশ লিখার পর শেষ অংশে অ্যালকেনের এন ( -ane ) শব্দটি যুক্ত করে নামকরণ করতে হয়। নিচের উদাহরণ টি লক্ষ্য করি-

                                                   
                                                                           
এই যৌগটির নাম পেন্টেন। এটি একটি সরল শিকল সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন। লক্ষ্য করলে দেখবে এই যৌগের হাইড্রোকার্বন শিকলে ৫টি C পরমাণু আছে। এই ৫টি C পরমাণুর জন্য যৌগের নামের প্রথম অংশ হিসেবে পেন্ট শব্দটি বসেছে আর যেহেতু এটি অ্যালকেন তাই পেন্ট শব্দটির পর এন যোগ করে এর নামকরণ করা হয়েছে পেন্টেন।

এইবার আমরা দেখি হাইড্রোকার্বন শিকলে কার্বন পরমাণুর সংখ্যা অনুসারে নামের প্রথম অংশ হিসেবে কি কি শব্দ বসবে।

হাইড্রোকার্বন
কার্বনের সংখ্যা-Cx
নামের প্রথম অংশ
নাম
CH4
C(1 টি কার্বন)
মিথ (-meth)

CH3-CH3
C2 (2 টি কার্বন)
ইথ (-eth)

CH3-CH2-CH3
C3 (3টি কার্বন)
প্রোপ (-prop)

CH3-(CH2)2-CH3
C4 (4 টি কার্বন)
বিউট (-but)

CH3-(CH2)3-CH3
C5 ( 5 টি কার্বন)
পেন্ট (-pent)

CH3-(CH2)4-CH3
C6 (6 টি কার্বন)
হেক্স (-hex)

CH3-(CH2)5-CH3
C7 (7 টি কার্বন)
হেপ্ট (-hept)

CH3-(CH2)6-CH3
C8 (8 টি কার্বন)
অক্ট (-oct)
অক্টেন
CH3-(CH2)7-CH3
C9 (9 টি কার্বন)
নন (-non)

CH3-(CH2)8-CH3
C10 (10 টি কার্বন)
ডেক (-dec)

CH3-(CH2)9-CH3
C11 (11 টি কার্বন)
উনডেক (-undec)

CH3-(CH2)10-CH3
C12 (12 টি কার্বন)
ডোডেক (-dodec) .....ইত্যাদি


নামকরণের সময় কার্বন পরমাণুর সংখ্যা অনুসারে নামের প্রথম অংশ লেখার জন্য এই শব্দ গুলো আমরা মনে রাখব। এইবার আমরা উপরের ছকের হাইড্রোকার্বনগুলির নামকরণ করার চেষ্টা করি। যেমন: 

                                                

শিকলে আটটি কার্বন তাই অক্ট শব্দের সাথে এন যুক্ত হয়ে যৌগটির নাম হয়েছে অক্টেন।


অনুরুপভাবে ছকের প্রতিটি হাইড্রোকার্বনের নামকরণ কর।