Recent Post
Loading...


আয়রন নিষ্কাশন: 

আয়রন বা লোহার গুরুত্ব অপরীসিম। যে কোনো দেশের শিল্পোন্নয়নের জন্য লোহার তৈরী বিভিন্ন জিনিসের প্রয়োজন। এ ছাড়া প্রকৃতিতে আয়রন যথেষ্ট পরিমানে বিদ্যমান। ভূত্বকের শতকরা 4.15 ভাগ হচ্ছে লোহা। প্রকৃতিতে লোহা বিভিন্ন যৌগ হিসেবে আকরিকে থাকে। গুরুত্বপূর্ণ আকরিক হলো 

1.          ম্যাগনেটাইট Fe3O4

2.         হেমাটাইট Fe2O3

3.         লিমোনাইট Fe2O3.H2O

এ সকল আকরিক হতেই লোহা নিষ্কাশন করা হয়।

বাত্যাচুল্লী

লোহা নিষ্কাশনের ব্যবহৃত চিমনি আকৃতির বাত্যাচুল্লি আকারে বেশ বড় এবং পুরু ইস্পাতের পাত দ্বারা তৈরী। শতাধিক ফুট দীর্ঘ এ চুল্লির মাঝখানটি অপেক্ষাকৃত বেশ চওড়া। ইস্পাতের ভিতরের দিকে অগ্নিসহ মৃত্তিকার পুরু আস্তরন দেওয়া থাকে। চুল্লির নিচের অংশ ও এর চারদিকে কয়েকটি শক্ত ও মোটা নল থাকে। এগুলোকে টুইয়ের বলা হয়। এর সাহায্যে ভেতরে বায়ু সরবরাহ করা হয়। টুইয়ের নিচে চুল্লির নিম্নতম অংশে যে প্রকোষ্ঠ থাকে তাতে উৎপন্ন লোহা ও ধাতুমল জমা হয়। আকরিক, চুনাপাথর ও কোক প্রবেশ করানোর জন্য চুল্লির উপরে কাপ ও কোন নামক বিশেল ব্যবস্থা থাকে যা দিয়ে খনিজ প্রভৃতি ঢোকানোর সময় ভিতরের উত্তপ্ত গ্যাস বাইরে বেরিয়ে না আসে। চুল্লির বর্জ্য গ্যাস নির্গমনের জন্য একটি নির্গমন নালি থাকে। বর্জ্য গ্যাসে কার্বন ডাইঅক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রোজেন থাকে।


ভস্মীকৃত আকরিক, কোক ও চুনাপাথর উপর হতে কাপ ও কোনের সাহায্যে চুল্লির ভেতর প্রবেশ করানো হয়। টুইয়ের এর সাহায্যে প্রচুর শুষ্ক উত্তপ্ত বায়ু সর্বদা চুল্লিতে প্রবেশ করে। উত্তপ্ত বায়ুর সংস্পর্মে কোক জারিত হয়ে কার্বন মনোক্সাইডে পরিণত হয় ও প্রচুর উত্তাপের সৃষ্টি করে। ফলে চুল্লির বেতরের পদার্থগুলো অত্যন্ত উত্তপ্ত হয়। এর নিচের দিকে তাপমাত্রা প্রায় 15000C এবং উপরের দিকে তা কমতে কমতে 3000C-4000C হয়। এসব স্থানে আয়রন অক্সাইডের সঙ্গে কার্বন মনোক্সাইডের বিক্রিয়া ঘটে এবং ধাতব লৌহ উৎপন্ন হতে থাকে। নিম্নে একটি অ্যানিমেশন দেখানো হলো।



বাত্যাচুল্লির বিক্রিয়াসমূহ: 

চুল্লির নিম্নাংশে কোক পুড়ে প্রথমে কার্বন ডাইঅক্সাইড হয়। পরে এ কার্বন ডাইঅক্সাইড লোহিত তপ্ত কোকের সাথে বিক্রিয়ায় কার্বন মনোক্সাইড উপন্ন করে।

C+O2 CO2

C+ CO22CO

এই কার্বন মনোক্সাইড বিভিন্ন ধাপে আয়রন অক্সাইডকে জারিত করে ধাতব লোহাতে পরিনত করে।

3Fe2O3+CO3Fe3O4+CO2

Fe3O4+CO3FeO+ CO2

FeO+COFe+CO2

ব্যবহৃত চুনাপাথর বিয়োজিত হয়ে চুন ও কার্বন ডাইঅক্সাইড এ পরিনত হয়। চুন খনিজের সিলিকার সাথে যাক্ত হয়ে ক্যালসিয়াম সিলিকেটে পরিনত হয়। এটি অন্যান্য সিলিকেট ও খনিজের অপদ্রব্য শোষন করে ধাতুমল উপন্ন করে।

CaCO3CaO+ CO2

CaO+SiO2CaSiO3

চুল্লির নিচের অংশে খনিজের সাথে মিশ্রিত 55 এবং সিলিকা বিজারিত হয়ে যথাক্রমে ফসফরাস, ম্যাংগানিজ ও সিরিকনে পরিনত হয়।

Ca(PO4)23CaO+P2O5

P2O5+5C2P+5CO

MnO2+CMn+2CO

Mn2O3+3C2Mn+3CO

SiO2+2CSi+2CO

বিজারিত মৌলগুলো এবং সামান্য পরিমানে কার্বন গলিত লোহায় দ্রবীভূত অবস্থায় থাকে। ধাতুমল ও লোহা উভয়ই চুল্লির নিম্নতম প্রকোষ্ঠতে জমা হয়। ধাতুমল ধাতু অপেক্ষা হালকা বলে তা গলিত লোহার উপর ভাসমান অবস্থায় থাকে। দুইটি নির্গমণ পথের সাহায্যে ধাতুমল ও গলিত লোহাকে পৃথক পৃথকভাবে বের করে নেয়া হয়। গলিত লোহাকে ঠান্ডা করে পিন্ড করা হয়। একেই কাস্ট আয়রন বলে। এতে মোটামুটি 4% কার্বন, 0.4% ম্যাঙ্গানিজ, 1-1.5% সিলিকন ও 0.10% ফসফরাস থাকে। চুল্লি হতে নির্গত ধাতুমল রাস্তা নির্মানে, সিমেন্ট উপাদনে এবং অন্যান্য নানা কাজে ব্যবহৃত হয়।

 


ডাল্টনের পরমানুবাদ ও তার সীমাবদ্ধতা

সকল পদার্থ ক্ষুদ্রতম পদার্থ দ্বারা গঠিত। গ্রিক দার্শনিক ডেমোক্রিটাস খ্রিষ্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীতে এ অভিমত প্রকাশ করেন যে সকল পার্থিব পদার্থ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অবিভাজ্য কণা দ্বারা গঠিত। ডেমোক্রিটাস এ অবিভাজ্য ক্ষুদ্রতম কণার নাম দেন atomos। এ শব্দটি দুইটি গ্রিক শব্দ হতে উদ্ভূত: a অর্থ না এবং tomos অর্থ ভাগ করা। তাই atomos শব্দটির অর্থ হলো যা ভাগ করা যায় না। বিখ্যাত দার্শনিক অ্যারিস্টটল এর প্রভাবে এ মতবাদ চাপা পড়ে যায়। অ্যারিস্টটলের মতে পদার্থ নিরবিচ্ছিন্ন, তাকে যত ইচ্ছা ক্ষুদ্রতম অংশে ভাগ করা যায়। দীর্ঘ দিন পরে ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীতে পরমাণু মতবাদ আবার বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিকগনের সমর্থন লাভ করে।

অবশেষে গ্রিক দার্শনিক জন ডাল্টন 1803 সালে এ মতবাদকে বৈজ্ঞানিক মতবাদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। আধুনিক রসায়নের ভিত্তি হচ্ছে এ পরমানুবাদ। তাই জন ডাল্টনকে আধুনিক রসায়নের জনক হিসেবে অভিহিত করা হয়। 


স্বীকার্য সমূহ


1.    সকল পদার্থ অসংখ্য ক্ষুদ্র  ক্ষুদ্র কনা দ্বারা গঠিত। এ কনা গুলোর নাম  অ্যাটম বা পরমাণু। মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কনার নাম সরল পরমাণু(simple atom) এবং যৌগের ক্ষুদ্রতম কনার নাম যৌগিক বা যৌগ পরমাণু(compound atom) ।

2.   পরমানু অবিভাজ্য। তার র্সৃষ্টি ও ধ্বংস নেই। 

3.   পরমাণু সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যাই না, রাসায়নিক বিক্রিয়ায় শুধু এর সংযোগের পরিবর্তন হয়।

4.   একই পদার্থের সকল পরমাণুর ভর ও ধর্ম অভিন্ন

5.   ভিন্ন ভিন্ন পদার্থের পরমাণু ভর ও ধর্ম ভিন্ন। 

6.   পরমানু রাসায়নিক বিক্রিয়াই অংশ নিতে পারে।

7.   দুই বা ততোধিক পদার্থের পরমাণু সংযোগে নতুন পদার্থের সৃষ্টি হয়। এ সংযোগ পূর্ণ সংখ্যার নির্দিষ্ট সরল অনুপাতে হয়।


সীমাবদ্ধতা 

ডাল্টনের পরমানুবাদ পদার্থের গঠন সম্পর্কে সর্বপ্রথম কিছু বৈজ্ঞানিক ধারনা দিলেও এ মতবাদের বেশ কিছু ত্রুটি আছে। যেমন-

1. কিন্তু যৌগের ক্ষুদ্রতম কনা হল অনু আর মৌলের ক্ষুদ্রতম কনা হলো পরমানু। সুতরাং ডাল্টনের পরমাণুবাদ অনু ও পরমানুর মধ্যে পার্থক্য দেখাতে বার্থ।

2. পরমাণু অবিভাজ্য নয়। পরমানুকে ভাঙলে মুল কনিকা পাওয়া যায়। যেমনঃ ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন ।

3. ডাল্টনের মতে একই পদার্থের সকল পরমাণুর ভর ও ধর্ম অভিন্ন। কিন্তু আইসোটোপ গুলোর ভর একই নয়।

4. ভিন্ন মৌলের পারমানবিক ভর অনেক সময় অভিন্ন হয়। যেমন আইসোবার গুলোর ভর অভিন্ন।

 


1.    পাকা আম খেতে মিষ্টি লাগে কেন

কাঁচা আমে বিভিন্ন জৈব এসিড যেমন: সাক্সিনিক এসিডম্যালেয়িক এসিড ইত্যাদি থাকে বলে টক লাগে। আম পেঁকে গেলে তাতে গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজের সৃষ্টি হয়। ফলে মিষ্টি লাগে।

 

2.         পেটে এসিডিটির জন্য এন্টাসিড খাওয়া হয় কেন

পাকস্থলীতে অতিরিক্ত হাইড্রোক্লোরিক এসিড জমা হলে পেটে এসিডিটির সমস্যা হয়। এ সময় রোগীকে এন্টাসিড (অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রোক্সইডম্যাগনেসিয়াম হাইড্রোক্সাইড অথবা ক্ষার) খাওয়ানো হয় । তখন এন্টাসিড পেটের এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ+পানি উৎপন্ন করেএসিডকে প্রশমিত করে।

 

3.         বায়ূমণ্ডলী্য় বিজ্ঞানে রসায়নের গুরুত্ব কী

বায়ূমণ্ডলী্য় বিজ্ঞানে রসায়নের গুরুত্ব নিম্নরূপ

১. ওজোন ও ওজোন ক্ষয়কারী গ্যাসসমূহকে শনাক্ত করার জন্য রসায়নের ভূমিকা অনেক।

২. বায়ুমন্ডলে উপস্থিত কোন গ্যাস এসিড বৃষ্টি তৈরিতে সহায়ক তা নির্ণয়ে রসায়নের ভূমিকা রয়েছে।

 

4.         জীবদেহে খাবার গ্রহণে কীভাবে শক্তি উৎপন্ন হয়

জীবদেহে খাবার গ্রহণে বিপাক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শক্তি উৎপাদিত হয়খাদ্য দ্রব্য অক্সিজেনের উপস্থিতিতে ভেঙে সরল অণু ও শক্তিতে রূপান্তরিত হয় |

মানবদেহের অভ্যন্তরে নিম্নলিখিত বিক্রিয়া সংঘটিত হয়

 

5.         গণিত শাস্ত্রের উপর রসায়নের নির্ভরশীলতা ব্যাখ্যা কর

গণিতের উপর রসায়নের নির্ভরশীলতা অত্যধিক। গণিত ব্যতীত রসায়ন বিজ্ঞানের তত্ত্ব প্রদান করা বা তত্ত্বীয় জ্ঞানার্জন অসম্ভব। রসায়নের হিসাব-নিকাশসূত্র প্রদান ও গাণিতিক সম্পর্ক সবইতো গণিত। তাছাড়া রসায়নের একটি গুরুত্বপুর্ণ শাখা কোয়ান্টাম ম্যাকানিকস যা মূলত গাণিতিক হিসাব-নিকাশ এর সাহায্যে পরমাণুর গঠন ব্যাখ্যা করে। রসায়নের বিভিন্ন লেখচিত্রজ্যামিতিক হিসাব নিকাশ ইত্যাদি গণিতেরই অংশ।

 

6.         রসায়ন বলতে কী বোঝায়

প্রকৃতিতে বিদ্যমান বস্তুসমূহের বিভিন্ন ধর্মকে কাজে লাগিয়ে মানব জাতি ও পরিবেশের কল্যাণ সাধনে নিয়োজিত যে বিজ্ঞান তার নামই হলো রসায়ন। রসায়নকে বলা হয় কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রসায়নের উপস্থিতি সর্বত্র। গাছে ফল পাঁকালোহায় মরিচা পড়াআগুন জ্বালানো সবকিছুই রসায়ন।

 

7.         রসায়ন চর্চার মাধ্যমে কীভাবে মানুষের চাহিদা পুরণ হয়

প্রাচীন সভ্যতায় রসায়ণ প্রযুক্তি ব্যবহার করে খনিজ থেকে মূল্যবান ধাতু আহরণ করা হথো। রাসায়নিক প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে আরো অনেক ধাতুযেমন: প্রভৃতির উৎপাদন সম্ভবপর হয়। আজ শিল্প কারখানায় ভোজ্য তৈলচিচিকাগজকলমঔষধপত্রকাপড় সাবানরডসিমেন্ট থেকে শুরু করে সকল জিনিস রসায়নের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে।

 

8.মরিচা কীভাবে তৈরী হয়

লোহা বা সাধারণ ইস্পাতের তৈরি সামগ্রী অনেক দিন খোলা বাতাসে রেখে দিলে এর ওপরে লালচে বাদামী রঙের প্রলেপ পড়ে। এই প্রলেপকে মরিচা বলা হয়। আর্দ্র বাতাসের সংস্পর্শে এলে বাতাসের অক্সিজেনের সাথে লোহা বিক্রিয়া করে মরিচা সৃষ্টি করে।

 

9.         অনুসন্ধান ও গবেষণা প্রক্রিয়ার ধাপ লিখ

অনুসন্ধান ও গবেষণা প্রক্রিয়ার ধাপ নিম্নরূপ

বিষয়বস্তু নির্ধারণ

বই বা পুর্বের গবেষণাপত্রের সাহায্যে বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু ধারণা করা

প্রয়োজনীয় বস্তু ও পরীক্ষা প্রণালী নির্ধারণ

পরীক্ষণ

ফলাফল ও ফলাফল নিয়ে আলোচনা

 

10.        তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহারে সতর্কতা প্রয়োজন কেন

তেজস্ক্রিয় পদার্থসমূহ আলফাবিটাগামাসহ বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় রশ্মি নির্গত করে। এসব পদার্থ থেকে নির্গত ক্ষতিকারক রশ্মি ক্যান্সারের মতো ব্যাধি সৃষ্টি করতে পারি। তাই এসব পদার্থ ব্যবহারের সময় বিশেষ সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

 

11.        উদ্ভিদ ও প্রাণী মৃত্যুর পর কী হয়

উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃত্যর পর দেহের পচন হয় এবং নানা অণুজীব মাটির সাথে মিশে যায়। ভূগর্ভে তা তাপ ও চাপের প্রভাবে মাটিতে মিশে যাওয়া পদার্থের আরও রাসায়নিক পরিবর্তন হয় এবং তা খনিজে পরিণত হয়।

 

12.        বিষাক্ত পদার্থকে আবদ্ধ অবস্থায় রাখতে হয় কেন

মারাত্মক বিষাক্ত গ্যাসীয়তরল বা কঠিন পদার্থের ক্ষেত্রে বিষাক্ত পদার্থ সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। এসব পদার্থ যাতে আমাদের সংস্পর্শে না আসে তাই বিষাক্ত পদার্থকে আবদ্ধ অবস্থায় রাখতে হয়।

 

13.        প্রিজারভেটিভস কীভাবে খাদ্যকে নষ্ট হবার হাত থেকে রক্ষা করে

প্রিজারভেটিভস নিম্নলিখিত উপায়ে খাদ্যকে নষ্ট হবার হাত থেকে রক্ষা করে

1. খাদ্যে অম্লীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে পচনের হাত থেকে রক্ষা করে

2. খাদ্যকে বায়ু ও পানির সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখে

3. এনজাইমের ক্রিয়া ব্যাহত করার মাধ্যমে খাদ্য গুণাগুণ বজায় রাখে

 

14.        আমাদের দেহের জন্য পানি প্রয়োজন কেন

পানি আমাদের শরীরে বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহন করে। এটি শরীরের মধ্যে বিভিন্ন পদার্থের দ্রাবক হিসেবে কাজ কর্ শরীরে সৃষ্ট বিষাক্ত পদার্থ পানিতে দ্রবীভূত হয়ে প্রস্রাব ও ঘামের মাধ্যমে বের হয়ে যায়। খাবার পানিতে পানি ছাড়াও বিভিন্ন খনিজ লবণ যেমন: ক্যালসিয়ামম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি ধাতুর লবণ থাকেযা আমাদের শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী।

 

15.        সার্বজনীন সাংকেতিক চিহ্ন বলতে কী বুঝ

রাসায়নিক পদার্থসমূহ সরবরাহ বা সংরক্ষণ করতে হলে তার গায়ে লেবেলের সাহায্যে শ্রেণিভেদ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিহ্ন ব্যবহার করা হয়।এ ধরণের চিহ্নই সাংকেতিক চিহ্ন। পৃথিবীর সকলদেশে একইভাবে একই উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। তাই এগুলোকে সাংকেতিক চিহ্ন বলা হয়।

 

16.        রসায়ন পরীক্ষাগারে রিসাইক্লিং গুরুত্বপূর্ণ কেন

রসায়ন পরীক্ষাগারে যে সকল বর্জ্য উৎপন্ন হয় সেগুলো যদি রিসাইক্লিং করা হয় তাহলে একদিকে যেমন উৎপাদনে খরচ কমবে তেমনি পরিবেশের ঝুকিঁও কম হবে। কারণ যেকোনো রিসাইক্লিং প্রক্রিয়া জ্বালানির অপচয় রোধ হয় এবং উৎপাদনের সময়কালও কমে আসে। তাই রসায়ন পরীক্ষাগারে রিসাইক্লিং গুরুত্বপূর্ণ।

 

17.        বিদ্যুৎ উৎপাদনে রসায়নের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর

জারন-বিজারণ বিক্রিয়ায় বিক্রিয়ায় ইলেকট্রন আদান-প্রদানের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় এই জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ার ব্যাখ্যা রসায়নের দ্বারাই করা সম্ভব তাই বিদ্যুৎ উৎপাদনে রসায়নের ভূমিকা রয়েছে।


18.        রসায়নকে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বলা হয় কেন

বিজ্ঞানের সব শাখার সাথে রসায়নের নিবিঢ় সম্পর্ক রয়েছে। মেডিকেল সাইন্সে জীবনের রহস্য বুঝকেরোগ-ব্যাধির কারণ অনুসন্ধানএর নিরাময় এবং পথ্য  নিরূপণে রসায়ন অগ্রণি ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও অন্যান্য সকল শাখায় রসায়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই রসায়নকে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বলা হয়।

 

19.  পেঁপে পাকলে হলুদ হয় কেন

পেঁপে যখন কাঁচা থাকে তখন জৈব এসিডের উপস্থিতির জন্য তা সবুজ দেখায়। পরবর্তীতে জীব রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে এস্টার জাতীয় পদার্থ সৃষ্টি হওয়ায় পেঁপে হলুদ হয়।

 

20. কাঁচা ফল টক হয় কেন

কাচা ফলে বিভিন্ন প্রকার জৈব এসিড যেমন-এসিটিক এসিডফরমিক এসিডটারটারিক এসিডএসকরবিক এসিড প্রভূতি বিদ্যমান। কোনো কোনো ফলে সামান্য পরিমাণ অজৈব এসিডও থাকে। কাচা ফলে এসিড বিদ্যমান থাকায় pH এর মান কম হয় এবং এসিডিটি বেড়ে যায়। এসিড টক স্বাদ যুক্ত। তাই কাচা ফল টক হয়।

 

21.  পোশাক শিল্পে  রসায়ন এর গুরুত্ব কী

পোশাক শিল্পে উৎপাদিত পণ্যের মধ্যে শার্ট প্যান্ট ও উল রয়েছে। এগুলো জৈব যৌগ ও তন্তুর সমন্বয়ে গঠিত। রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন যৌগ থেকে তন্তুসমূহ সংগ্রহ করা হয়, যা রসায়নেরই অংশ। আবার এ সকল কৃত্রিম বা প্রাকৃতিক তন্তুর সাথে রণ্জকের সমন্বয় করে টেক্সটাইল ফেব্রিকস শিল্পে পোশাক তৈরি করা হয়। তন্তুর সাথে রণ্জকের সমন্বয়, তাও রসায়ন বিজ্ঞানেরই অংশ।

 

22. আমিষকে জৈব যৈাগ বলা হয় কেন

আমিষ সাধারণত কার্বন ও হাইড্রজেন এর সমন্বয়ে গঠিত। কার্বন ও হাইড্রোজেন যুক্ত যৌগকে জৈব যৌগ বলা হয়।যেহেতু আমিষ কার্বন ও হাইড্রোজেন দিয়ে তৈরি তাই আমিষ কে জৈব যৌগ বলা হয়

 


পাথুরে চুন বা ক্যালসিয়াম অক্সাইড

ক্যালসিয়াম অক্সাইড এর প্রকৃতি

  • ক) চুন হলো একটি কঠিন অনিয়তাকার অজৈব পদার্থ।
  • খ) ক্যালসিয়াম অক্সাইডের রং সাদা, উত্তাপে গলে না।
  • গ) পাথুরে চুনের কোন গন্ধ নেই।
  • ঘ) অক্সি হাইড্রোজেন শিখায় উজ্জ্বল আলো উৎপন্ন করে। একে লাইম লাইট বলে।
  • ঙ) আদ্র বাতাসে গরম হয়ে ওঠে এবং পাউডার এ পরিণত হয়।
  • চ) এটি একটি ক্ষারীয় অক্সাইড এসিডের সঙ্গে বিক্রিয়ায় লবণ উৎপন্ন করে।
  • ছ) ক্যালসিয়াম অক্সাইডের সঙ্গে জল মেশালে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয় ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড উৎপন্ন হয়।

পাথুরে চুন বা ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইডের ব্যবহার

  • ক) ক্যালসিয়াম কার্বাইড, সোডিয়াম কার্বনেট, কস্টিক সোডা প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয়।
  • খ) ধাতু নিষ্কাশনে বিগালক রূপে প্রচুর পরিমাণে ব্যবহৃত হয়।
  • গ) ইথাইল অ্যালকোহল, অ্যামোনিয়া প্রভৃতি জল মুক্ত করতে ব্যবহৃত হয়।
  • ঘ) গাঢ় কস্টিক সোডার সঙ্গে মিশিয়ে সোডা লাইম উৎপন্ন করা হয় যা মিথেন, বেনজিন ইত্যাদি প্রস্তুতিতে এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের শোষক রূপে ব্যবহৃত হয়।

কলিচুন

কলিচুনের প্রকৃতি

ক) কলিচুন একটি অজৈব পদার্থ।
খ) জলে সামান্য দ্রাব্য তাপমাত্রা বাড়লে এর দ্রাব্যতা কমে যায়।
গ) কলিচুন সাদা পাউডার
ঘ) জলে কলিচুন মেশালে উপরের অংশে যে স্বচ্ছ দ্রবণ পাওয়া যায়, তাকেই চুনজল বলে।
ঙ) কলিচুন তীব্র ক্ষারীয় পদার্থ।অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে লবণ এবং জল উৎপন্ন করে।
চ) অ্যামোনিয়াম লবণের সঙ্গে উত্তপ্ত করলে এমোনিয়া গ্যাস নির্গত হয়।
ছ) কলিচুন এর সঙ্গে ক্লোরিনের বিলিসিং পাউডার উৎপন্ন করা হয়।
জ) কলিচুন কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে। স্বচ্ছ চুন জলের মধ্যে কার্বন-ডাই-অক্সাইড চালনা করলে অদ্রাব্য CaCO3 উৎপন্ন হয়, তাই চুল জল ঘোলা হয়ে যায়।

কলিচুন এর ব্যবহার

ক) ব্লিচিং পাউডার এবং কস্টিক সোডা প্রস্তুতিতে কলিচুন ব্যবহার করা হয়।
খ) সলভে পদ্ধতিতে প্রাপ্ত অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড এবং কয়লার অন্তর্ধূম পাতনে প্রাপ্ত অ্যামোনিয়াম দ্রব্য থেকে অ্যামোনিয়া গ্যাস পুনরুদ্ধারে ব্যবহৃত হয়।
গ) খর জলকে মৃদু করতে কলিচুন ব্যবহার করা হয়।
ঘ) সিমেন্ট কংক্রিট প্রস্তুতিতে এবং অট্টালিকা নির্মাণে কলিচুনের ব্যবহার হয়।