Recent Post
Loading...



অ্যানায়নের ধ্রুবায়নেরর(Polarisation) মাত্রা বেশি হলে তড়িৎযোজী যৌগটি রঙিন হয়, কিন্তু কম হলে যৌগটি সাদা বা বর্ণহীন হয়।

Cl ও I আয়ন দুটির মধ্যে I এর আকার বড় হওয়ায় সহজেই Ag+ দ্বারা ধ্রুবায়ন ঘটে। অন্যদিকে Cl এর আকার ছোট হওয়ায় Ag+ দ্বারা Cl এর ধ্রুবায়ন মাত্রা কম হয়।

এই কারণেই AgClসাদা বা বর্ণহীন অন্যদিকে AgI হলুদ।


জলে ক্লোরিন আয়নের রং সাদা তাই কিছু মেটালিক ক্লোরাইড ( ফেরিক,কিউপ্রিক, নিকেল ইত্যাদি ) ছাড়া বেশীর ভাগ ক্লোরাইডের রং সাদাই ৷ জলে আয়োডিন আয়নের রং বাদামী তাই বেশীর ভাগ আয়োডাইড বাদামী বা হলুদ রংয়ের ৷

 মূলত পোলারায়ন এর জন্যই PbCl2 এর বর্ণ সাদা হলেও PbI2 এর বর্ণ উজ্জ্বল সোনালি হলুদ হয়।

আয়নিক বন্ধনে আবদ্ধ অবস্থায় , যখন কোন ক্যাটায়ন একটি অ্যানায়নের খুব নিকটে আসে তখন ক্যাটায়নের সামগ্রিক ধনাত্নক চার্জ অ্যানায়নের ইলেকট্রন মেঘকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে। একই সাথে ক্যাটায়নটি অ্যানায়নের নিউক্লিয়াসকে বিকর্ষণ করে।আকর্ষণ বিকর্ষণ এর নীট ক্রিয়ায় অ্যানায়নের ইলেকট্রন মেঘ ক্যাটায়নের দিকে সরে আসে। এ ঘটনাকে ক্যাটায়ন কর্তৃক অ্যানায়নের বিকৃতি বা পোলারায়ন বলে ।।

পোলারায়ন পরিমাণ বৃদ্ধির সাথে সাথে যৌগের প্রকৃতি আদর্শ আয়নিক বন্ধনের প্রকৃতি থেকে বিচ্যুত হয়ে সমযোজী প্রকৃতির দিকে ধাবিত হয়।

এ বিষয়ট "ফাজানের সূত্র " দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায়। আয়নিক যৌগের আয়নিক বন্ধনের এরূপ পরিবর্তন বা বিকৃতি ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে বিখ্যাত বিজ্ঞানী ফাজান 1923 সালে কিছু শর্তের প্রস্তাব করেন। এ শর্তগুলি হলো-

  1. ক্যাটায়নের আকার যতো ছোট এবং অ্যানায়নের আকার যতো বড় হয়।
  2. ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নের চার্জের পরিমাণ যতো বেশি হয়।
  3. ক্যাটায়নের ইলেকট্রন বিন্যাসের ক্ষেত্রে d ও f অরবিটালে ইলেকট্রনের উপস্থিতি।

১ম শর্ত হতে বলা যায় একই ক্যাটায়ন দ্বারা গঠিত বিভিন্ন প্রকার যৌগে অ্যানায়নের আকার ভিন্ন হলে যৌগের মধ্যে পোলারায়নের মাত্রাও ভিন্ন হয়। যৌগে অ্যানায়নের আকার বড় হলে যৌগের পোলারায়ন মাত্রা বেড়ে যায়। এ পোলারায়ন আরো বেড়ে যায় যদি যৌগটি আলোকরশ্মি শোষণ করে। সাধারণত অতিবেগুনি রশ্মি, X-Ray এর ন্যায় উচ্চ কম্পাঙ্কের রশ্মি শোষণ করলে যৌগের মধ্যে পোলারায়ন মাত্রা বেড়ে যায়। এমনকি দৃশ্যমান আলোকরশ্মি শোষণ করলেও পোলারায়ন সহজ হয়। দৃশ্যমান আলো সাতটি বিভিন্ন কম্পাঙ্ক বিশিষ্ট আলোর সমষ্টি। দৃশ্যমান আলো যৌগের ওপর আপতিত হলে বিভিন্ন কম্পাঙ্ক বিশিষ্ট সাতটি বিভিন্ন বর্ণের আলোকরশ্মির মধ্যে কয়েকটি বর্ণের আলোকরশ্মি যৌগ কর্তৃক শোষিত হয়ে পোলারায়ন ঘটায়। অবশিষ্ট আলোক রশ্মিগুলো প্রতিফলিত হয়। বিভিন্ন বর্ণের আলোক রশ্মিগুলো মিলিত হলে বর্ণ নির্ধারিত হয়। বিকিরিত রশ্মিগুলো মিলিত হয়ে যে বর্ণের সৃষ্টি করে যৌগটি সে বর্ণের হয়।

PbI2 ও PbCl2 যৌগে ক্যাটায়ন একই আর সেটি হচ্ছে Pb2+

PbI2 যৌগে I- এর আকার বড় হওয়ায় দৃশ্যমান আলোকরশ্মি যৌগটির ওপর পড়লে কয়েকটি বর্ণের আলোকরশ্মি PbI2 দ্বারা শোষিত হয় এবং যৌগের অণুতে পোলারায়ন ঘটায়। অবশিষ্ট আলোকরশ্মি যৌগটি দ্বারা প্রতিফলিত হয়। বিকিরিত বিভিন্ন বর্ণের আলোকরশ্মি মিলিত হয়ে উজ্জ্বল সোনালি হলুদ বর্ণের সৃষ্টি করে।

PbCl2 যৌগের Cl- আয়নের আকার I- আয়ন অপেক্ষা যথেষ্ট ছোট হওয়ায় দৃশ্যমান আলোর সাতটি বিভিন্ন কম্পাঙ্কের আলোকরশ্মি PbCl2 অণুতে পোলারায়ন ঘটাতে পারে না। এ দৃশ্যমান আলো PbCl2 যৌগের বন্ধনের উপর কোনোভাবে পোলারায়ন না ঘটিয়ে রশ্মির সামান্য অংশ শোষিত হয়। অবশিষ্ট সাতটি বর্ণের আলোকরশ্মি মিলিত বর্ণ হলো সাদা ।

এ কারণে PbI2 যৌগের বর্ণ উজ্জ্বল সোনালি হলুদ হলেও PbCl2 যৌগের বর্ণ সাদা হয়।।


PbI2 যৌগটির বন্ধন পূর্ণ আয়নিক (ionic) নয়। কিছুটা সমযোজী (Covalent) বন্ধন ধর্মও বিদ্যমান। সুতরাং, বর্ণহীন আয়ন I(-) এবং Pb(2+) যুক্ত হয়ে একটি নতুন যৌগ গঠন করে যার বর্ণ হলুদ।

এমন অনেক উদাহরণ আছে যারা বর্ণহীন আয়ন (-) এবং (+) যুক্ত হয়ে একটি নতুন বর্ণযুক্ত যৌগ গঠন করে। যেমনঃ

Hg(2+) + 2I(-) --> HgI2 (colorless --> very bright red/orange)
Pb(2+) + S(2-) --> PbS (colorless --> black)
Cd(2+) + S(2-) --> CdS (colorless --> bright yellow)
Cd(2+) + Se(2-) --> CdSe (colorless --> red)

কারন এ ধরনের যৌগগুলো যাদের বর্ণ আছে এদের সমযোজী (Covalent) বন্ধন থাকার কারনে এরা বড় ইলেকট্রন অর্বিটাল গঠন করে এবং এসব অর্বিটালের ion গুলো অনুর বাইরে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারনতঃ এ ধরনের বড় ইলেকট্রন অর্বিটাল দীর্ঘ তরঙ্গর আলোর বর্ণালির সাথে মিথষ্ক্রিয়া ঘটানোর সামর্থ্য রাখে এবং দৃশ্যমান বর্ণালিগুলোতে প্রবেশ করে। এর ফলে যৌগগুলোর ইলেকট্রন অর্বিটাল গঠন অনুযায়ী ion গুলো যার যার নির্দিষ্ট দৃশ্যমান বর্ণালিগুলোতে প্রবেশ করে শোষিত হয় এবং নির্দিষ্ট বর্ণ বিকিরন করে। সাধারনতঃ ছোট ion গুলো UV range এ শোষিত হয়।

PbI2 এর ion সমূহ শোষিত হয় বর্ণালির ৫৭৫ ন্যানোমিটার হতে ৫৮৫ ন্যানোমিটার বিস্তারের মধ্যে। বর্ণালির ৫৭৫-৫৮৫ ন্যানোমিটার উজ্জ্বল হলুদ বর্ণ প্রদর্শন করে থাকে।




আগুন দ্রুত গতিতে ঘটা একটি তাপমোচী অক্সিডেশন বিক্রিয়া যাতে নির্দিষ্ট উষ্ণতায় অক্সিজেনের সাহায্যে কিছু পদার্থের দহন ঘটে এবং তাপ, আলো ও অন্যান্য কিছু পদার্থ উৎপন্ন হয়। আগুনকে জানতে হলে এর দুটি অংশ বিবেচনা করতে হবে। একটি হল তার শিখা আন্যটি হল সেই শিখা থেকে সৃষ্ট আলো আর তাপ। আলো আর তাপ যে শক্তি সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। কাজেই আগুনের "শক্তি " ধর্ম আছ। আবার আগুনের শিখা হল বিভিন্ন গ্যাসের সমষ্টি। এতে থাকে CO2,CO,H2O প্রভৃতি গ্যাস। কাজেই শিখাতে পদার্থ আছে অর্থাৎ আগুনের "পদার্থ" ধর্ম আছে! তাই আগুন একই সাথে পদার্থ ও শক্তির একটি সমন্বিত রূপ প্রদর্শন করে থাকে।

এখন আসা যাক আসল প্রশ্নে,"আগুন কেন অভিকর্ষর বিপরীতে প্রবাহিত হয়" অর্থাৎ "আগুনের বেলায় অভিকর্ষ কেন কাজ করে না?" উত্তরটি হল আগুন আসলে অভিকর্ষ-র বিপরীতে প্রবাহিত হয় না। কারণ পৃথিবীর অন্য সকল বস্তুর মত আগুনের বেলাতেও অভিকর্ষ সমানভাবে কার্যকর!আরও একটু উদ্ভট শোনালেও সত্যি যে অভিকর্ষজ বল কাজ করে বলেই আগুনের শিখা উপরের দিকে উঠে। এমনটা হয় কারণ যখন আগুন জ্বলে তখন তাপ উৎপন্ন হয় বলে আগুনের আশেপাশের বাতাস উত্তপ্ত হয়ে হাল্কা হয়ে যায়। তখন চারপাশের( বিশেষত উপরের দিকের) যে তুলনামূলক ভারী ও ঠান্ডা বাতাস আছে তা সেই আগুনের নিকটবর্তী হালকা বাতাসের যায়গায় এসে হালকা ও গরম বাতাসটিকে উপরের দিকে ঠেলে দেয় আর নিজে সেই জায়গা দখল করে ফেলে। এখানে অভিকর্ষজ বল কাজ করে বলেই ঠান্ডা বাতাস নিচে নেমে আসে আর গরম বাতাসকে উপরে ঠেলে দেয়। তাই আমরা দেখি আগুনের শিখা তথা আগুন উপরের দিকে উঠে।

এখন যদি কোনভাবে অভিকর্ষকে নাই করে দিয়ে আগুন জ্বালানো হয় তাহলে কী হতে পারে -জানেন কি? এরকম পরিস্থিতিতে আগুনের শিখা কিন্তু উপরের দিকে যাবে না, চারপাশে বৃত্তাকারে ছড়িয়ে পড়বে, মনে হবে একটা আগুনের বল জ্বলছে। চাইলে এমন পরীক্ষা মহাশূন্যে করে দেখতে পারেন!

 

আপনার প্রশ্নটি ভালো। তবে আমি বেশী অবাক হয়েছি এই প্রশ্নের অন্যন্য উত্তরগুলো দেখে। তারা এত জ্ঞানী যে, সহজ একটি বিষয় জটিল করে তুলেছে। বারবার আইনেস্টাইনের সেই কথাটা মনে পড়ে - তুমি যদি কোন জিনিস সহজভাবে বোঝাতে না পারো, তার মানে, তুমি নিজেই জিনিসটা ভালো বোঝ না।

পদার্থবিজ্ঞানের একেবারে প্রাথমিক জ্ঞান - পদার্থ কি? একজন ৫ম শ্রেনীর শিশুরও এটা জানার কথা। পদার্থ হল- যার আয়তন আছে, ওজন আছে, স্থান দখল করে, বল প্রয়োগ করলে বাধা দেয়। পানি, গ্যাস, বাতাস, ইত্যাদি সবই পদার্থ। তবে, আগুন কোন পদার্থ নয়। আগুনের আয়তন ও ওজন নেই, এটি স্থান দখল করে না, বল প্রয়োগ করলে বাধা দেয় না।

পদার্থ নয়, এমন আরো জিনিস আছে, যেমন আলো, শব্দ, তাপ ইত্যাদি। এগুলো কিন্তু পৃথিবীর মধ্যকর্ষণ শক্তি টানে না। কারন একটাই, এমন টানাটানি (আকর্ষণ) করতে হলে, জিনিসটি অবশ্যই পদার্থ হতে হবে। আগুন কোন পদার্থ নয়, এটাকে পৃথিবীর মধ্যকর্ষণ শক্তি টানে না।

তবে, আগুন উপরে উঠার পেছনে মধ্যকর্ষণ শক্তির ভুমিকা রয়েছে। আগুনের আশেপাশে বাতাস ঘিরে থাকে। সেই বাতাসের গরম অংশ হালকা হয়ে উপরে ভেসে ওঠে, আর ঠান্ডা ও ভারী অংশ পৃথিবীর মধ্যকর্ষণ শক্তি টানে নীচে নামে। চারিদিকের বাতাসের এমন অবিরাম ওঠা-নামার ফলে চারপাশ থেকে চাপ লেগে, আগুনের শিখা অমন লম্বা হয়ে যায়। মহাশূন্যে মধ্যকর্ষণ শক্তি টানে না, বাতাস ওঠা-নামা করে চাপ দেয় না। এই কারনে, মহাশূন্যে আগুনের শিখা গোল হয়ে জ্বলে (উপরে ছবি দেখুন)

সাধারনত সমভূমিতে দূরত্ব এবং গতি পরিমাপের জন্য মাইল বা কিলোমিটার ব্যবহার করা হয়ে থাকে, কিন্তু নাবিকরা/বৈমানিকরা নৌযান/আকাশযানে চলার সময় পরিমাপের জন্য নটিক্যাল মাইল (nautical mile) এবং নট ব্যবহার করেন।

সমুদ্রে এবং আকাশের গণনাগুলিতে, বিধিবদ্ধ পরিমাপটি বিশেষ তাৎপর্যের একটি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য হিসাবে ব্যবহার হয়। সমুদ্রের নটিক্যাল মাইল এবং নটগুলির ব্যবহার করে মেরিনারা অক্ষ্যাংশ এবং দ্রাঘিমাংশ ব্যবহার করে চার্টগুলি দ্রুত পড়তে পারে।

বর্তমানে, নটিক্যাল মাইলটি আকাশ এবং সমুদ্রের নেভিগেশনে পরিমাপের একক হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

০১ নটিক্যাল মাইলটি =০১.১৫ মাইল=০১.৮৫ কিলোমিটার।

নিরক্ষীয় অঞ্চলে (the equator) পৃথিবীকে কাল্পনিক অর্ধেক বরারব কেটে নেওয়ার হলে যে বৃত্তের পরিধি পাওয়া যাবে, তাকে (৩৬০x৬০ বা ২১৬০০) দ্বারা ভাগ করলে, যে চাপ (Arc) পাওয়া যাবে তাই ১ নটিক্যাল মাইল। তর্কের খাতিরে এটিকে বক্ররেখা বলা যেতে পারে। আর আমরাও এই একই তল-পৃষ্ঠে বসবাস করছি।



নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলোর সর্বশেষ শক্তিস্তরে যেমন ২টি বা ৮ টি ইলেকট্রন বিদ্যমান,তেমনি অণু গঠনে কোনো পরমাণুর সর্বশেষ শক্তিস্তরে এক বা একাধিক জোড়া ইলেকট্রন বিদ্যমান থাকবে, এটিই হচ্ছে " দুই "এর নিয়ম।

" অষ্টক "( অণু গঠন কালে কোনো মৌল ইলেকট্রন গ্রহণ, বর্জন অথবা ভাগাভাগির মাধ্যমে তার সর্বশেষ শক্তিস্তরে ৮ টি করে ইলেকট্রন ধারণের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে। একে "অষ্টক" নিয়ম বলে।) নিয়মের কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে বিজ্ঞানিরা "দুই" এর নিয়ম উপস্থাপন করেন। "দুই " এর নিয়মটি অষ্টক নিয়ম থেকে অধিকতর উপযোগী ও আধুনিক।

  1. কেন মৌল সমূহ 'দুই' ও 'অষ্টক' নিয়ম অনুসরণ করে??  

সর্বশেষ শক্তিস্তরে দিত্ব বা অষ্টক পূর্ণ থাকার কারণে নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলো অধিকতর স্থিতিশীল হয়। আর অন্য মৌলগুলোর এই নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলোর দেখে হিংসে হয় বলে তারাও ওদের মতো হতে চায়। অর্থাৎ স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্যই তারা তাদের সর্বশেষ শক্তিস্তরে দিত্ব বা অষ্টক পূরণ করতে চায়। এই কারণেই তারা " দুই " ও "অষ্টক" নিয়ম অনুসরণ করে।

  1. জোড়া ইলেকট্রন থাকলে নাকি হিলিয়ামের ইলেক্ট্রন বিন্যাস অর্জন করলে দুইয়ের নিয়ম হয়??  

প্রথমেই বলেছি, সর্বশেষ শক্তিস্তরে এক বা একাধিক জোড়া ইলেকট্রন থাকলে তখনই দুই এর নিয়ম হবে।

হিলিয়ামের সর্বশেষ শক্তিস্তরে একজোড়া অর্থাৎ ২টি ইলেকট্রন রয়েছে। তাই হিলিয়ামের ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করলে অবশ্যই সেটা "দুই " এর নিয়ম অনুসরণ করবে।

আবার,

BeCl₂ অণুর কেন্দ্রীয় পরমাণু Be এর সর্বশেষ শক্তিস্তরে দুই জোড়া অর্থাৎ 4 টি ইলেকট্রন বিদ্যমান। এটি অষ্টক বলা হিলিয়ামের ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করেনি । কিন্তু দুই এর নিয়ম অনুসরণ করেছে।



প্যালাডিয়ামের ইলেকট্রন সংখ্যা 46।

তাহলে আউফবাউ নীতি অনুসারে প্যালাডিয়ামের ইলেকট্রন বিন্যাস:

Pd(46)->

1s2 2s2 2p6 3s2 3p6 3d10 4s2 4p6 4d8 5s2

কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, প্যালাডিয়ামের ইলেকট্রন বিন্যাস:

Pd(46)->

1s2 2s2 2p6 3s2 3p6 3d10 4s2 4p6 4d10

এর কারণ হলো, একই উপশক্তিস্তর p ও d এর অরবিটারগুলো অর্ধপূর্ণ (p3, d5) বা সম্পূর্ণরূপে পূর্ণ (p6, d10) অবস্থায় অধিকতর সুস্থিত হয়।

4d অরবিটালকে সম্পূর্ণরূপে পূর্ণ করার মাধ্যমে প্যালাডিয়ামের ইলেকট্রন বিন্যাসকে সুস্থিত করার জন্য 5s অরবিটাল থেকে 2টি ইলেকট্রন 4d অরবিটালে গমন করে। এর ফলে প্যালাডিয়ামের ইলেকট্রন বিন্যাসে 4d অরবিটালে 10টি এবং 5s অরবিটালে 0টি ইলেকট্রন দেখা যায়।

এ কারণেই প্যালাডিয়ামের ইলেকট্রন বিন্যাসটা একটু বেতিক্রম।



কোন মৌলের সাধারণ ইলেক্ট্রন বিন্যাস হল কোন শক্তি শোসন করার আগে হুন্ডের নীতি মেনে যে ইলেক্ট্রন বিন্যাস হয় সেটা।

আর উত্তেজিত অবস্থায় ইলেক্ট্রন শক্তি শোসন করে যুগ্ম থেকে অযুগ্ম হয়ে যায় এবং অন্য অরবিটালে প্রবেশ করে। এর ফলে নতুন যে বিন্যাস হয় সেটি হুন্ডের নীতি মেনে চলে না এবং এটিই হল উত্তেজিত অবস্থায় ইলেক্ট্রন বিন্যাস। p block মৌলে এই প্রবণতা বেশি।


সাধারণ অবস্থায় কোনো মৌলের ইলেকট্রনবিন্যাস নিষ্ক্রিয় অবস্হায় থাকে। তখন মৌলটি কোনো যৌগ গঠনে অংশগ্রহণকরেনা অর্থাৎ ইলেকট্রন গ্রহণ বা ত্যাগ করে না।অন্যদিকে যখন মৌলকে উত্তেজিত করা হয় তখন সে শক্তিশোষণ করে নিম্নশক্তি স্তর থেকে উচ্চ শক্তিস্তর যায়।এবং ইলেকট্রন অযুগ্মঅবস্থায় থাকে। ফলে আরো ইলেকট্রনগ্রহণ করে যৌগ গঠনে অংশ নেয়



জলের অর্থাৎ H2O এর মোলার ভর = 18.01528 gm/ mol,

হইড্রোজেন সালফাইড বা H2S এর মোলার ভর= 34.1 gm/mol,

এখন আমরা জানি ফ্লুরিন এর ইলেক্ট্রো নেগেটিভিটি সর্বোচ্চ, ঠিক তার পরেই অক্সিজেন স্থান দখল করে।

এর ফলে H2O তার হাইড্রোজেন অক্সিজেন বন্ধনের (H—O) ইলেক্ট্রন এর মেঘ অধিক ইলেক্ট্রো নেগেটিভ অক্সিজেন এর দিকে সরে আসে। ফলত অক্সিজেনের চারিপাশে একটি আংশিক ঋণাত্মক আবেশ তৈরি হয় এবং ইলেক্ট্রন সরে আসার জন্য হইড্রোজেন এর পাশে আংশিক ধনাত্মক আবেশ তৈরি হয়। এর ফলে পার্শ্ববর্তী H2O অনুর হইড্রোজেন এর সাথে আলোচিত H2O অনুর অক্সিজেন একটি দুর্বল হইড্রোজেন বন্ধন গঠন করে। অপরপক্ষে আলোচিত অনুর হইড্রোজেন অনুর সাথে তৃতীয় কোনো অনুর একই প্রকার বন্ধন গঠন হয়।


[লাল বল গুলি অক্সিজেনের অনুরূপ এবং সাদা বল গুলি হাইড্রোজেনের অনুরূপ, সবুজ দাগ গুলি হল হাইড্রোজেন বন্ধন]

যার ফলে অন্ত:আণবিক বন্ধন গঠন হয় । যার জন্য ঘরের তাপমাত্রায় H2O তরল অবস্থায় থাকে। কিন্তু H2S এর ক্ষেত্রে এমন কোনো অবসর তৈরি হয়না। তাই H2S সাধারণ তাপমাত্রায় গ্যাসীয়।


O ও S পর্যায় সারণির একই গ্রুপ ১৪তম গ্রুপের মৌল। তাই এদের হাইড্রাইড যেমনঃ H2O ও H2S এর ধর্মে গ্রুপভিত্তিক সাদৃশ্য থাকাই খুব স্বাভাবিক। কিন্তু H2O সাধারণ তাপমাত্রায় তরল হলেও H2S সাধারণ তাপমাত্রায় গ্যাসীয়। এর কারণ H2O অণুতে হাইড্রোজেন পরমাণুর সাথে যুক্ত অক্সিজেন পরমাণু অতিশয় তড়িৎ ঋণাত্মক ও আকারে সালফার পরমাণু অপেক্ষা ছোট হওয়ায় H2O অণুতে সমযোজী বন্ধনে অতিমাত্রায় ডাইপোলের সৃষ্টি হয়। বন্ধনে পোলারিটি বা ডাইপোলের ফলে H2O অণুতে হাইড্রোজেন বন্ধনের সৃষ্টি হয়।

হাইড্রোজেন বন্ধন সৃষ্টির কারনেই H2O অণুসমুহ পরস্পর পরস্পরকে আকৃষ্ট করে সংবদ্ধ আকার ধারণ করে। অপরপক্ষে কম তড়িৎ ঋণাত্মক এবং আকারে অক্সিজেন অপেক্ষা বড়। তাই H2O অণুতে H-S বন্ধনে খুবই সামান্য স্বল্পমাত্রায় পোলারায়ন ঘটে। যার ফলে H2S অণুসমুহে মধ্যে আর হাইড্রোজেন বন্ধন গঠন করা সম্ভব হয় না। H2S পৃথক অণুরুপে গ্যাসীয় অবস্থায় অবস্থান করে।

এজন্য H2O তরল, কিন্তু H2S গ্যাস।