আগুন দ্রুত গতিতে ঘটা একটি তাপমোচী অক্সিডেশন বিক্রিয়া যাতে নির্দিষ্ট উষ্ণতায় অক্সিজেনের সাহায্যে কিছু পদার্থের দহন ঘটে এবং তাপ, আলো ও অন্যান্য কিছু পদার্থ উৎপন্ন হয়। আগুনকে জানতে হলে এর দুটি অংশ বিবেচনা করতে হবে। একটি হল তার শিখা আন্যটি হল সেই শিখা থেকে সৃষ্ট আলো আর তাপ। আলো আর তাপ যে শক্তি সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। কাজেই আগুনের "শক্তি " ধর্ম আছ। আবার আগুনের শিখা হল বিভিন্ন গ্যাসের সমষ্টি। এতে থাকে CO2,CO,H2O প্রভৃতি গ্যাস। কাজেই শিখাতে পদার্থ আছে অর্থাৎ আগুনের "পদার্থ" ধর্ম আছে! তাই আগুন একই সাথে পদার্থ ও শক্তির একটি সমন্বিত রূপ প্রদর্শন করে থাকে।
এখন আসা যাক আসল প্রশ্নে,"আগুন কেন অভিকর্ষর বিপরীতে প্রবাহিত হয়" অর্থাৎ "আগুনের বেলায় অভিকর্ষ কেন কাজ করে না?" উত্তরটি হল আগুন আসলে অভিকর্ষ-র বিপরীতে প্রবাহিত হয় না। কারণ পৃথিবীর অন্য সকল বস্তুর মত আগুনের বেলাতেও অভিকর্ষ সমানভাবে কার্যকর!আরও একটু উদ্ভট শোনালেও সত্যি যে অভিকর্ষজ বল কাজ করে বলেই আগুনের শিখা উপরের দিকে উঠে। এমনটা হয় কারণ যখন আগুন জ্বলে তখন তাপ উৎপন্ন হয় বলে আগুনের আশেপাশের বাতাস উত্তপ্ত হয়ে হাল্কা হয়ে যায়। তখন চারপাশের( বিশেষত উপরের দিকের) যে তুলনামূলক ভারী ও ঠান্ডা বাতাস আছে তা সেই আগুনের নিকটবর্তী হালকা বাতাসের যায়গায় এসে হালকা ও গরম বাতাসটিকে উপরের দিকে ঠেলে দেয় আর নিজে সেই জায়গা দখল করে ফেলে। এখানে অভিকর্ষজ বল কাজ করে বলেই ঠান্ডা বাতাস নিচে নেমে আসে আর গরম বাতাসকে উপরে ঠেলে দেয়। তাই আমরা দেখি আগুনের শিখা তথা আগুন উপরের দিকে উঠে।
এখন যদি কোনভাবে অভিকর্ষকে নাই করে দিয়ে আগুন জ্বালানো হয় তাহলে কী হতে পারে -জানেন কি? এরকম পরিস্থিতিতে আগুনের শিখা কিন্তু উপরের দিকে যাবে না, চারপাশে বৃত্তাকারে ছড়িয়ে পড়বে, মনে হবে একটা আগুনের বল জ্বলছে। চাইলে এমন পরীক্ষা মহাশূন্যে করে দেখতে পারেন!
0 comments:
Post a Comment