Recent Post
Loading...




 

ভৌত পরিবর্তন (Physical Change) :

এ পরিবর্তনের ফলে পদার্থের নতুন অণু বা পরমাণুর সৃষ্টি হয় না। অর্থাৎ এ জাতীয় পরিবর্তনের ফলে পদার্থের অণুর গঠন
বা উপাদানের কোনো পরিবর্তন ঘটে না, কেবলমাত্র পদার্থের কিছু বিশেষ অবস্থা যেমন ভৌত অবস্থা, বৈদ্যুতিক অবস্থা ও
চৌম্বক অবস্থা ইত্যাদির পরিবর্তন ঘটে। একখন্ড ইস্পাতকে চুম্বক দ্বারা ঘর্ষণ করাতে থাকলে এটি এক সময় লোহাকে আকর্ষণ করার এক বিশেষ ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়। এটি অবশ্যই ভৌত পরিবর্তন। কেননা, এটি ইস্পাতের অস্থায়ী পরিবর্তন এবং এর ফলে কোনো নতুন অণুর সৃষ্টি হয় না। কিছু পরিমাণ খাবার লবণকে একটি কাঁচের পাত্রে নিয়ে পানি যোগ করে দ্রবণ তৈরী কর। এ দ্রবণ কে বিকারে নিয়ে উত্তপ্ত করলে পানি বাষ্পীভূত হয়ে উড়ে যায়। কঠিন অবশেষ হিসেবে লবণ পাওয়া যায়। কঠিন অবস্থায় বা দ্রবীভূত অবস্থায় উপাদান সমূহের গঠন ও সংযুক্তির কোনো পরিবতন ঘটে না। সুতরাং এটিও ভৌত পরিবর্তন।

রাসায়নিক পরিবর্তন (Chemical Change) :

আপনারা পূর্বেই জেনেছেন যে কয়লা, কাঠ, প্রাকৃতিক গ্যাস, কেরোসিন, ইত্যাদিকে জ্বালালে আলো, তাপ ও ধোঁয়া পাওয়া
যায়। পাশাপাশি উৎপন্ন হয় CO2 ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন গ্যাসীয় উপাদান।

C (কার্বন) + O2 = CO2 + তাপ

কার্বন অণুর ধর্ম ও গঠন কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2) অণুর ধর্ম ও গঠন থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির।

CH4 + 2O2 = CO2 + 2H2O + তাপ

কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) ও পানির ((H2O) অণুর ধর্ম ও গঠন মিথেন (CH4) অণুও অক্সিজেন অণুর গঠন থেকে সম্পূর্ণ
ভিন্ন প্রকৃতির। এগুলো রাসায়নিক পরিবর্তন। রাসায়নিক পরিবর্তনে পদার্থের পরমাণুসমূহের মধ্যবর্তী বন্ধন ভেঙ্গে নতুন বন্ধনের সৃষ্টি হয়। অণুস্থিত পরমাণুসূহের বন্ধন ভাঙ্গা ও নতুন বন্ধন সৃষ্টি হওয়ার কারণে তাপশক্তির পরিবর্তন ঘটে। এটি একটি স্থায়ী পরিবর্তন। মূল পদার্থের গঠন পরিবর্তিত হওয়ার কারণে মূল পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক উভয় প্রকার ধর্মই পরিবর্তিত হয়। এ পরিবর্তনের ফলে পদার্থের অণুর গঠন ও উপাদানের পরিবর্তন ঘটে এক বা একাধিক নতুন ধর্ম বিশিষ্ট পদার্থের উৎপত্তি ঘটে।
আমরা প্রতিদিন যেসব খাবার খাই তা আমাদের পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত, বৃহদন্ত্র প্রভৃতির মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে দেহের পুষ্টি সাধন ও শক্তি যোগায়। খাবারের রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে।

ভৌত ও রাসায়নিক পরিবর্তনের মধ্যে পার্থক্যঃ ভৌত ও রাসায়নিক পরিবর্তনের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরুপ-

১. ভৌত পরিবর্তনের মাধ্যমে কোন নতুন বস্তুর সৃষ্টি হয় না। অন্যদিকে রাসায়নিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ নতুন ধর্ম বিশিষ্ট এক বা একাধিক বস্তুর সৃষ্টি হয়।

২. ভৌত পরিবর্তনের মাধ্যমে বস্তুর শুধু ভৌত ধর্মের পরিবর্তন হয়। অন্যদিকে রাসায়নিক পরিবর্তনের মাধ্যমে বস্তুর ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মের পরিবর্তন হয়।

৩. ভৌত পরিবর্তনে বস্তুর অণু গঠনের কোন পরিবর্তন হয় না। অন্যদিকে রাসায়নিক পরিবর্তনে বস্তুর অণু গঠনের পরিবর্তন হয়ে সম্পূর্ণ নতুন অণুর সৃষ্টি হয়।

৪. ভৌত পরিবর্তনে বস্তুর রাসায়নিক সংযুতির পরিবর্তন হয় না। অন্যদিকে রাসায়নিক পরিবর্তন হলে সমানু ছাড়া বস্তুর রাসায়নিক সংযুতির পরিবর্তন হয়।

৫. ভৌত পরিবর্তনে তাপ শক্তির শোষণ বা উদগীরণ ঘটতে পারে, নাও পারে। অন্যদিকে রাসায়নিক পরিবর্তনে তাপ শক্তির শোষণ বা উদগীরণ অবশ্যই ঘটে।

৬. ভৌত পরিবর্তন অস্থায়ী। অন্যদিকে রাসায়নিক পরিবর্তন স্থায়ী হয়।



০১ . প্রাকৃতি গ্যাসের উপাদান কোনটি?

ক) মিথেন
খ) ইথেন
গ) প্রোপেন
ঘ) বিউটেন
সঠিক উত্তর: (ক)

০২. পেট্রোলের দহনে কোনটি উৎপন্ন হয়?
ক) বিদ্যুৎ
খ) শক্তি
গ) হাইড্রোজেন
ঘ) অক্সিজেন
সঠিক উত্তর: (খ)

০৩. কাঠের প্রধান রাসায়নিক উপাদান কোনটি?
ক) সেলুলোজ
খ) স্টার্চ
গ) হাইড্রোকার্বন
ঘ) হাইড্রোজেন
সঠিক উত্তর: (ক)

০৪. কোন ধরনের পদার্থ শরীরে ক্যান্সার সৃষ্টি করে?
ক) দাহ্য পদার্থ
খ) বিস্ফোরক পদার্থ
গ) তেজস্ক্রিয় পদার্থ
ঘ) জারক পদার্থ
সঠিক উত্তর: (গ)

০৫. জীবের দেহ গঠনের প্রধান জটিল অনু কোনটি?
ক) চর্বি
খ) সেলুলোজ
গ) প্রোটিন
ঘ) শ্বেতসার
সঠিক উত্তর: (গ)

০৬. পানীয় জলের উপাদানগুলো কী কী?
ক) হাইড্রোজেন ও কার্বন
খ) হাইড্রোজেন ও নাইট্রোজেন
গ) হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ও খনিজ লবণ
ঘ) অক্সিজেন, নাইট্রোজেন ও খনিজ লবণ
সঠিক উত্তর: (গ)

০৭. পুরাতন লোহার উপর লালচে বাদমী বর্ণের আবরণ হলো-
i. মরিচা
ii. কার্বন
iii. পানিযুক্ত ফেরিক অক্সাইড
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i,ii,ও iii
সঠিক উত্তর: (খ)

০৮. ‘পরিবশে’ সাংকেতিক চিহ্ন সংবলিত পদার্থের ক্ষেত্রে কোনটি প্রযোজ্য?
ক) পদার্থটি জারক
খ) পদার্থটি দাহ্য
গ) এটি মানবদেহকে বিকলাঙ্গ করে
ঘ) এটি জলজ জীবের জন্য ক্ষতিকর
সঠিক উত্তর: (ঘ)

০৯. ‘বিপজ্জনক’ সাংকেতিক চিহ্ন দ্বারা কোনটি বুঝায়?
ক) বিস্ফোরক দ্রব্য
খ) মারাত্মক বিষাক্ত পদার্থ
গ) জারক পদার্থ
ঘ) তেজস্ক্রিয় পদার্থ
সঠিক উত্তর: (খ)

১০. অন্তঃনির্ভরশীলতার ক্ষেত্রে-
i. তত্ত্বীয় জ্ঞানার্জনে রসায়ন গণিতের উপর নির্ভরশীল
ii. পেট্রোলিয়ামের উৎপত্তি রসায়নের সাহায্যে করা সম্ভব
iii. ওজোনস্তর ক্ষয়কারী গ্যাসের চিহ্নিতকরণ বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞানের
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i,ii,ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১১. খাবার গ্রহণে আমাদের শরীরে-
i. বিপাক প্রক্রিয়া ঘটে
ii. জৈব রাসায়নিক ক্রিয়া ঘটে
iii. দেহে তাপ উৎপন্ন হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i,ii,ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১২. রাসায়নিক সার মাটিতে কী প্রদান করে?
ক) উদ্ভিদের পুষ্টি
খ) উদ্ভিদের শক্তি
গ) উদ্ভিদের খাবার
ঘ) উদ্ভিদের তাপ
সঠিক উত্তর: (ক)

১৩. কৃষি জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে কী ঘটে?
ক) ফসল ভালো হয়
খ) ফসলের দ্রুত বৃদ্ধি ঘটে
গ) জলাশয়ের পানি দূষিত হয়
ঘ) ফসলের পোকামাকড় মারা যায়
সঠিক উত্তর: (গ)

১৪. কাঠ পোড়ালে কোনটি উৎপন্ন হয়?
ক) কার্বন ডাই অক্সাইড
খ) সালফার ডাই অক্সাইড
গ) ফসফরাস পেন্টাক্সাইড
ঘ) নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড
সঠিক উত্তর: (ক)

১৫. উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃত্যুর পর তা পচন এবং অণুজীব প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন খনিজে পরিণত হয়। কোন খনিজটি এ শ্রেণির অন্তর্ভূক্ত নয়?
ক) অক্টেন
খ) বিউটেন
গ) বিটুমিনাস কয়লা
ঘ) গ্যালেনা
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১৬. জৈব পার অক্সাইড এর ধর্ম কোনটি?
ক) সুস্থিত
খ) অস্থিত
গ) ক্ষায়কারক
ঘ) দাহ্য
সঠিক উত্তর: (খ)

১৭. আগুনের শিখা সাংকেতিক চিহ্ন সংবলিত পদার্থের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কোনটি?
ক) এটি সহজেই দাহ্য
খ) এটি জারক পদার্থ
গ) এটি গ্যাস বা তরল পদার্থ
ঘ) এটি পরিবেশের জন্যে ক্ষতিকর
সঠিক উত্তর: (ক)

১৮. মাছ সংরক্ষণে ফরমালিন ব্যবহার করা ঠিক নয়, এর কারণ কী?
ক) এটি মাছের স্বাদ নষ্ট করে
খ) এটি মাছের খাদ্যমান হ্রাস করে
গ) এটি মাছের পচন সৃষ্টি করে
ঘ) এটি মানুষের শরীরে প্রবেশ করে ক্যান্সার সৃষ্টি করে
সঠিক উত্তর: (ঘ)

১৯. নিঃস্বাসে গৃহীত বায়ুর কোন উপাদনটি আমাদের শারীরবৃত্তীয় কাজে ব্যবহৃত হয়?
ক) অক্সিজেন
খ) নাইট্রোজেন
গ) কার্বন ডাই অক্সাইড
ঘ) আর্গন
সঠিক উত্তর: (ক)

২০. কারখানায় উৎপাদিত সামগ্রীর মান ও গুণাগুণ বাজায় রাখার জন্য প্রয়োজন মালিক কর্মচারীদের-
i. সচেতনতা, সততা ও ন্যায়নিষ্ঠতা
ii. অপরিমিত রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানা
iii. সঠিক ও নির্দিষ্ট মাত্রার রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারে পারঙ্গমতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i,ii,ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২১. কার্বন ডাই অক্সাইড পরিবেশকে ক্ষতি করে-
i. গ্রিনহাউজ প্রভাব ঘটিয়ে
ii. পৃথিবীর উত্তাপ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
iii. ওজোন স্তর গঠনে সাহায্য করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ক)

২২. প্লাস্টিক ব্যবহৃত হয়-
i. রান্নাঘরের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরিতে
ii. খেলনা তৈরিতে
iii. ব্যাগ তৈরিতে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i, ii ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)

২৩. লোহায় মরিচা ধরা এক ধরনের পদার্থের পরিবর্তন-
i. গঠিত মরিচা একটি ভঙ্গুর পদার্থ
ii. লোহার অক্সাইড নামক পদার্থ উৎপন্ন হয়
iii. জলীয় বাষ্পের উপস্থিতিতে অক্সিজেনের সাথে বিশুদ্ধ লোহার বিক্রিয়া সংঘটিত হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ) i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i,ii,ও iii
সঠিক উত্তর: (ঘ)


 

জৈব যৌগ:

জৈব যৌগ হল এক ধরনের যৌগিক পদার্থ যার কমন উপাদান হিসেবে কার্বন থাকে। ঐতিহাসিক কারণে কিছু যৌগ যেমন- কার্বনেট, কার্বনের সাধারণ অক্সাইড, সায়ানাইড এবং কার্বনের রূপভেদকে অজৈব যৌগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৮২৮ সালের পূর্ব পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল যে, জৈব যৌগ শুধু প্রাণশক্তির প্রভাবে জীব ও প্রাণীদেহে সৃষ্টি হয়, একে পরীক্ষাগারে সংশ্লেষণ করা সম্ভব নয়। ফ্রেডরিখ ভোলার ১৮২৮ সালে অজৈব অ্যামোনিয়াম সায়ানেট থেকে পরীক্ষাগারে ইউরিয়া সংশ্লেষণ করেন, যা একটি জৈব যৌগ। এর ফলে শতাব্দীকাল ধরে প্রচলিত ধারণার অবসান ঘটে। জীব ও প্রাণিদেহ মূলত জৈব যৌগের সমন্বয়ে গঠিত।

অজৈব যৌগ:

অজৈব যৌগ সাধারণত একটি রাসায়নিক যৌগ যাতে কার্বন – হাইড্রোজেন বন্ধন থাকে না অর্থাৎ এটি একটি যৌগ যা কোনও জৈব যৌগ নয়। তবে, এই পার্থক্য যেমন সুস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত হয়নি তেমনি একমতও হওয়া যায়নি। অনেক কর্তৃপক্ষের এই বিষয়ে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। অজৈব যৌগের অধ্যয়ন অজৈব রসায়ন হিসাবে পরিচিত। পৃথিবীর ভূত্বকের বেশিরভাগটাই অজৈব যৌগ নিয়ে গঠিত। যদিও পৃথিবীর ভূগর্ভের অভ্যন্তরের উপাদান নিয়ে নানান অনুসন্ধান চলছে। কার্বনযুক্ত কিছু সাধারণ যৌগকে প্রায়শই অজৈব যৌগ হিসাবে ধরা হয়। উদাহরণস্বরূপ কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বনেটস্, কার্বাইডস্, সায়ানাইডসস, সায়ানেটস্ এবং থায়োকায়ানেটস্-এর নাম উল্লেখ করা যেতে পারে। এর মধ্যে বেশিরভাগই জৈব শ্রেণীর বা জীব সম্বন্ধযুক্ত।

জৈব ও অজৈব যৌগের মধ্যে পার্থক্য

। সমস্ত জৈব যৌগের অণুতে কার্বন  থাকবেই । যেমন: CH4, C2H3OH ইত্যাদি ।পক্ষান্তরে অজৈব যৌগের অণুতে কার্বন থাকতে পারে আবার নাও থাকতে পারে । অজৈব যৌগ সব রকম মৌল দিয়ে গঠিত হতে পারে । যেমন: NH3, CO2 ইত্যাদি ।

।  জৈব যৌগগুলি সমযোজ্যতা দ্বারা গঠিত । সুতরাং, জৈব যৌগগুলি সমযোজী : যেমন: মিথেন, ইথেন, প্রপেন, অ্যাসিটিলিন ইথিলিন, বেনজিন, মিথাইল অ্যালকোহল, ভিনিগার প্রভৃতি । পক্ষান্তরে  অজৈব যৌগগুলি সাধারণত তড়িৎযোজী বন্ধনের দ্বারা আবদ্ধ : যেমন, সোডিয়াম ক্লোরাইড, ক্যালশিয়াম অক্সাইড, ক্যালশিয়াম ক্লোরাইড ইত্যাদি । অজৈব যৌগগুলি তড়িৎযোজী হতে পারে আবার সমযোজীও হতে পারে ।

। জৈব যৌগগুলি সাধারণত জৈব দ্রাবকে দ্রবীভূত হয় । এরা সাধারণত জলে অদ্রাব্য । অর্থাৎ, জৈব যৌগগুলি সাধারণত অধ্রুবীয় দ্রাবকে দ্রাব্য এবং ধ্রুবীয় দ্রাবকে অদ্রাব্য ।  (কিছু জৈব যৌগ অবশ্য জলে দ্রাব্য) । পক্ষান্তরে অজৈব যৌগগুলি সাধারণত জল এবং সমধর্মী দ্রাবকে দ্রবীভূত হয় এবং এরা জৈব দ্রাবকে অদ্রাব্য । অর্থাৎ, অজৈব যৌগগুলি সাধারণত ধ্রুবীয় দ্রাবকে দ্রাব্য এবং অধ্রুবীয় দ্রাবকে অদ্রাব্য ।

।  সাধারণত জৈব যৌগের গলনাঙ্ক এবং স্ফুটনাঙ্ক অজৈব যৌগের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম, তাদের উদ্বায়ীতাও বেশি । পক্ষান্তরে অজৈব যৌগের গলনাঙ্ক এবং স্ফুটনাঙ্ক জৈব যৌগের তুলনায় অনেক বেশি । এগুলি সাধারণত অনুদ্বায়ী ।

।  জৈব যৌগগুলি দাহ্য প্রকৃতির হয় । সাধারণত কম সংখ্যক কার্বন পরমাণুযুক্ত যৌগগুলি অদীপ্ত শিখায় জ্বলে । আবার বেনজিন প্রভৃতি বেশি কার্বনযুক্ত যৌগগুলি ধোঁয়াটে শিখায় জ্বলে । পক্ষান্তরে অজৈব যৌগগুলি সাধারণত দাহ্য নয় ।

।  জৈব যৌগগুলি অনেকক্ষেত্রে পলিমারাইজেশন বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে । আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহৃত বস্তুর বেশির ভাগই জৈব পলিমার । যেমন— চাল, ময়দা, আলু, কাগজ জামা-কাপড়, প্লাস্টিক, ইত্যাদি । পক্ষান্তরে অজৈব যৌগের ক্ষেত্রে পলিমারাইজেশন বিক্রিয়া খুবই কম ।

। কার্বন পরমাণুর ক্যাটিনেশন ধর্মের জন্য জৈব যৌগের কার্বন পরমাণুগুলি পরস্পর যুক্ত হয়ে অতিদীর্ঘ কার্বন শৃঙ্খল গঠনের মাধ্যমে বেশি আণবিক গুরুত্ব বিশিষ্ট যৌগ উত্পন্ন করতে পারে  । পক্ষান্তরে অজৈব যৌগের অণুর গঠন অপেক্ষাকৃত সরল এবং আণবিক গুরুত্ব জৈব যৌগের তুলনায় কম 

 


First of all greetings.

Assalamu Alaikum. Hello everybody. How are you? I hope you are fine. I am also fine by the grace of almighty. Today I am telling about myself. Let’s get started.

·    Then your name.

My name is Riajul Islam Rishuk (tell your name here). But you can call me Rishuk (tell your nick-name here) as it’s my nickname. I am well known by this name.

·         Then a tiny description about your family.

My family consists of five members. There are my father, mother, two sisters and me. I have bo brother. My father’s name is Abdus Sakur (tell your father’s name here) and he is a banker. My mother’s name is Rina Begum (tell your mother’s name here) and she is a housewife. She takes good care of us. Both of my sisters are students.

·         Then a little discussion about my school/college.

I read in Jamalpur Zilla School (tell your school name here). I got admitted to the school in 2013 when I was in class three. But now I am studying in class 10 in science department and preparing myself for coming SSC exam.

·         Tell about something unique features you have or you do.

Besides my regular activities I participate in co-curricular activities. On last annual function, I won first prize on debate. I also help my friends who are weak in study. Besides I also try to do some social works. (tell description if you do)

·         Tell about your hobby and leisure time

I love to watch television, play video games, improve my computer skills and work on my blog I created. But I prefer working on my blog. I like travelling so much and it’s my hobby.

·         Tell about your aim of life.

In future I want to be a doctor. There are many doctors in our country. But they just think of money where they should try their best to treat people. They should not think patient is poor or rich. In a word, they have lack of morality. So I decided to be a doctor and serve the nation as far I can do.

·         Try to make proper ending.

Thank you everybody for paying attention to me.

Note:  You should not to copy whole text when you speak. Try to use something different. This is just an example to make you understand. Don’t mind if there is any mistake.



1.          জীবাশ্ম জ্বালানি বলতে কী বুঝ

বহু প্রাচীনকালের উদ্ভিদ ও প্রানী মাটির নিচে চাপা পরে যায়। এগুলো বায়ুর অনুপস্থিতিতে প্রচন্ড চাপ ও তাপে হাজার হাজার বছরে এক ধরনের জ্বালানিতে পরিণত হয়। একে জীবাশ্ম জ্বালানি বলা হয়। যেমন: পেট্রোলিয়াম, গ্যাস ও কয়লা।


2.         প্রাকৃতিক গ্যাসের শতকরা পরিমান লিখ

প্রাকৃতিক গ্যাসের শতকরা পরিমান হলো 1. মিথেন(80%) 2.ইথেন(7%) 3.প্রোপেন(6%) 4. বিউটেন ও আইসোবিউটেন(4%)


3.         ইথেন ও ইথিন এর মধ্যে কোনটি কম দাহ্য


                          ইথেন                    ইথিন

ইথেন এ কার্বন কার্বন একক বন্ধন থাকে। ইথিন এ কার্বন কার্বন দ্বিবন্ধন থাকে। ইথেন ও ইথিন উভয়েই সিগমা বন্ধন বিদ্যমান থাকলেও ইথিন এ দুর্বল পাই বন্ধন বিদ্যমান থাকে। পাই বন্ধন দূর্বল র্বিধায় এটি সহজেই অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে। তাই ইথেন ও ইথিন এর মধ্যে ইথেন কম দাহ্য ।


4.         অ্যালকেন, অ্যালকিন অপেক্ষা ভাল জ্বালানী কেন

অ্যালকেনে কার্বন কার্বন একক বন্ধন ও অ্যালকিনে কার্বন কার্বন দ্বিবন্ধন থাকে। একক বন্ধন থাকার কারনে অ্যালকেনে C-H বন্ধন বেশি থাকে বলে অ্যালকেন, অ্যালকিন অপেক্ষা ভাল জ্বালানী।


5.         বেনজিন অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন কেন

বেনজিন ছয় সদস্যের সমতলীয় চাক্রিক যৌগ | এতে একান্তর দ্বিবন্ধন বিদ্যমান | তাই বেনজিন একটি অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন |


6.         1টি সম্পৃক্ত ও 1টি অসম্পৃক্ত অ্যালিসাইক্লিক হাইড্রোকার্বনের উদাহরণ দাও

 

1টি সম্পৃক্ত অ্যালিসাইক্লিক হাইড্রোকার্বন


1টি অসম্পৃক্ত অ্যালিসাইক্লিক হাইড্রোকার্বন


7.         ফেনলকে অ্যারোমেটিক যৌগ বলা হয় কেন

ফেনলকে অ্যারোমেটিক যৌগ বলা হয়।

 

ফেনলকে অ্যারোমেটিক যৌগের মত ফেনলের আকৃতি সমতলীয় চাক্রিক। ফেনলে অ্যারোমেটিক যৌগের মত একান্তর দ্বিবন্ধন থাকে। তাই ফেনল একটি অ্যারোমেটিক যৌগ।


8.         অ্যালিসাইক্লিক হাইড্রোকার্বন কী

বদ্ধ শিকল অ্যালিফেটিক হাইড্রোকার্বনকে অ্যালিসাইক্লিক হাইড্রোকার্বন বলে। এতে কার্বন কার্বন একক বা দ্বি-বন্ধন থাকতে পারে। এদের দুভাগে ভাগ করা হয়। 1.সম্পৃক্ত 2.অসম্পৃক্ত


9.         কার্যকরীমূলক জৈব যৌগের ধর্ম নিয়ন্ত্রন করে

কার্যকরীমূলক সাধারণত জৈব যৌগের ধর্ম ও বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রন করে। বিক্রিয়ার প্রকৃতি নির্ধারিত হয় কার্যকরীমূলক দ্বারা এবং বিক্রিয়া শেষেও কার্যকরীমূলক পরিবর্তিত হয়।

CH3COOH+ NaOH → CH3COONa+H2O

CH3COOH + NaOH → CH3COONa+H2O

এখানে বিক্রিয়া দুটিতে বিক্রিয়কের কার্যকরীমূলকCOOH হওয়ায় এরা একইরূপে বিক্রিয়া করেছে এবং বিক্রিয়া শেষেএটি পরিবর্তিত হয়েছে। তাই কার্যকরীমূলক জৈব যৌগের ধর্ম নিয়ন্ত্রন করে।


10.        অ্যারোমেটিক যৌগ বলতে কী বুঝ

আ্যরোমেটিক যৌগসমূহ সাধারণত ৫,৬ বা ৭ সদস্যের সমতলীয় চক্রীয় যৌগ । এতে একান্তর দ্বিবন্ধন থাকে অর্থাৎ কার্বন কার্বন একটি একক বন্ধন এবং একটি দ্বি-বন্ধন থাকে।


11.        অ্যালকেনকে প্যারাফিন বলা হয় কেন

অ্যালকেনে কার্বন কার্বন একক বন্ধন থাকে। এগুলো সাধারনত সিগমা বন্ধন। সিগমা বন্ধন শক্তিশালী বিধায় এগুলো ভাঙতে অধিক শক্তি ব্যয় হয়। তাই এগুলো সহজে বিক্রিয়া করে না অর্থাৎ আসক্তিহীন। তাই অ্যালকেনকে প্যারাফিন বলা হয়।


12.        ডিকার্বোক্সিলেশন বিক্রিয়া কী

জৈব এসিডকে সোডা লাইম দ্বারা উত্তপ্ত করলে ঐ এসিডের কার্বন সংখ্যা এক কমে যায়। এ বিক্রিয়াকে ডিকার্বোক্সিলেশন বিক্রিয়া বলে। যেমন

CH3COONa + NaOH-----→    CH4  + NaCO3

সোডিয়াম ইথানয়েট              CaO, ▲          মিথেন


13.        ক্যালসিয়াম কার্বাইড থেকে কীভাবে ইথাইন তৈরি করা যায়

ক্যালসিয়াম কার্বাইড পানির সাথে বিক্রিয়ায় ইথাইন তৈরি করে

    CaC2   + 2H2O → CH≡CH + Ca(OH)2

ক্যালসিয়াম কার্বাইড             ইথাইন


14.        অ্যালকাইন সনাক্তকরনের দুইটি বিক্রিয়া ব্যাখ্যা কর

অ্যালকাইন দ্রবনের মধ্যে কয়েকফোঁটা ব্রোমিন দ্রবণ যোগ করে ঝাঁকাতে হয়। অ্যালকিন লাল বর্ণের ব্রোমিন দ্রবণের সাথে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। ফলে ব্রোমিন দ্রবণের লাল বর্ণ বিনষ্ট হয়।

এছাড়া অ্র্যালকাইন দ্রবনের সাথে  KMnO4,KOH ও পানি মিশ্রিত করলে অ্যালকাইন গ্লাইকলে পরিনত হয়। যেমন:

CH2=CH2 + H2O + [O] --------→ CH2OH-CH2OH

  ইথিন                           KMnO4+KOH     ইথিলিন গ্লাইকল


15.        গাঁজন প্রক্রিয়ায় কীভাবে ইথানল তৈরি করা হয়

গাজন প্রক্রিয়ায় অ্যালকোহল প্রস্তুতিতে প্রথমে স্টার্চ বা শ্বেতসারকে গ্রুকোজে পরিনত করা হয়। গ্লুকোজের জলীয় দ্রবণে ইস্ট মিশিয়ে 20-250C তাপমাত্রায় কয়েক ঘন্টা রেখে দিলে ইস্ট থেকে নিঃসৃত এনজাইম জাইমেজ এর উপস্থিতিতে গ্লুকোজের ফার্মেন্টেশনে অ্যালকোহল উৎপন্ন হয়।

C6H12O6 ------------→ CH2=CH2

            জাইমেজ, 20-250C


16.        ইথানলকে জৈব জ্বালানী বলা হয় কেন

 ইথানল হলো একটি জৈব রাসায়নিক যৌগ, যা শ্বেতসার জাতীয় শস্য দানা যেমনঃ আলু, ভুট্টা, ইক্ষু প্রভৃতি থেকে গাজন প্রক্রিয়ার(fermentation reaction) মাধ্যমে উৎপন্ন করা যায়। এজন্য ইথানলকে জৈব জ্বালানি(bio-fuel) বলা হয়


17.        মেথিলেটেড স্পিরিট কী

ইথানল এর 96% জলীয় দ্রবণকে রেকটিফাইড স্পিরিট বলে। রেকটিফাইড স্পিরিট এর সাথে সামান্য পরিমানে মিথানল যোগ করলে তা বিষাক্ত হয়। এই মিথানল যুক্ত রেকটিফাইড স্পিরিটকে মেথিলেটেড স্পিরিট বলে।


18.        প্লাস্টিককে নন-বায়োডিগ্রেডেবল পদার্থ বলা হয় কেন

যে সব পদার্থ ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিয়োজিত হয় না তাকে নন-বায়োডিগ্রেবল পদার্থ বলে। প্লাস্টিক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিয়োজিত হয় না বলে একে নন-বায়োডিগ্রেডেবল পদার্থ বলা হয়।


19.        PVC কে যুত পলিমার বলা হয় কেন

PVC বলতে পলিভিনাইল ক্লোরাইড বোঝানো হয়। ভিনাইল ক্লোরাইডকে জৈব পার অক্সাইড এর উপস্থিতিতে 2500C তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে পলিভিনাইল ক্লোরাইড উৎপন্ন হয়।

nCH2=CHCl   -----------------→     -(CH2-CHCl)-n

ভিনাইল ক্লোরাইড       উচ্চ চাপ, তাপমাত্রা,(জৈব পার অক্সাইড)      পলিভিনাইল ক্লোরাইড


20.       বায়োপলিমার ব্যবহার করা উচিত কেন

সাধারন পলিমার মাটিতে পচে না বলে এটি পরিবেশ দুষনের জন্য দায়ী। বায়োপলিমার সাধারনত ভুট্টা ও ইক্ষু হতে উৎপন্ন করা হয়। এগুলো মাটিতে পচে যায় বলে পরিবেশ দুষন কম হয়। তাই বায়োপলিমার ব্যবহার করা উচিত।


21.        PVC পুনঃ পুনঃ ব্যবহার করা যায় কিভাবে

PVC বলতে পলিভিনাইল ক্লোরাইড বোঝানো হয়। এটি ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে গেলে তা গলিয়ে আবার নতুন জিনিসপত্র তৈরি করা যায়। এভাবেই PVC পুনঃ পুনঃ ব্যবহার করা যায়।


22.       পলিমার বলতে কী বোঝায়

একই পদার্থের অসংখ্য অণু বা একাধিক পদার্থের অসংখ্য অণু পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে বৃহৎ অণু গঠন করার প্রক্রিয়াকে পলিমারকরণ বলে। এই বিক্রিয়ায় উৎপন্ন বৃহৎ অণুকে পলিমার এবং বিক্রিয়ক অসংখ্য ক্ষুদ্র অণুর প্রত্যেকটিকে মনোমার বলে।


23.       পেট্রোলিয়ামের উপাদানসমূহ পৃথক করার মূলনীতি কী

পেট্রোলিয়াম মূলত হাইড্রোকার্বন ও অন্যান্য কিছু জৈব যৌগের তরল মিশ্রণ। পেট্রোলিয়ামে বিদ্যমান উপাদানের স্ফুটনাঙ্কের উপর ভিত্তি করে আংশিক পাতন পদ্ধতিতে এর বিভিন্ন অংশ পৃথক করা হয়।


24.       লুব্রিকেটিং তেল বলতে কী বুঝ

আংশিক পাতন কলামের 270-3400C তাপমাত্রা অঞ্চল থেকে পেট্রোলিয়াম এর দুটি অংশ পৃথক হয়। একটি লুব্রিকেটিং তেল এবং অপরটি জ্বালানি তেল। লুব্রিকেটিং তেলএ কার্বন সংখ্যা 20-35 হয়। এ অংশকে পিছ্লিকারক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।


25.       ইথানল ও ডাইমিথাইল ইথার পরস্পরের সমাণু ব্যাখ্যা কর

একাধিক যৌগের আনবিক সংকেত একই হলেও গাঠনিক সংকেত ভিন্ন তারা একে অপরের সমানু।ইথানল ও ডাইমিথাইল ইথার পরস্পরের সমাণু।

এখানে উভয় যৌগের আনবিক সংকেত একই হলেও গাঠনিক সংকেত ভিন্ন। সুতরাং ইথানল ও ডাইমিথাইল ইথার পরস্পরের সমাণু।


26.       CH3-OH হাইড্রোকার্বন নয় কেন

হাইড্রোজেন ও কার্বনের সমন্বয়ে গঠিত যৌগকে হাইড্রোকার্বন বলা হয়।CH3-OH যৌগে কার্বন ও হাইড্রোজেন ছাড়াও অক্সিজেন বিদ্যমান। তাই CH3-OH হাইড্রোকার্বন নয়।


27.       জৈব ও অজৈব যৌগের মধ্যে পার্থক্য লিখ

জৈব যৌগ

অজৈব যৌগ

সাধারণত সমযোজী বন্ধন বিদ্যমান

সাধারণত আয়নিক বন্ধন বিদ্যমান

গলনাংক, স্ফূটনাংক নিম্ন

গলনাংক, স্ফূটনাংক উচ্চ


28.       মৃক্ত শিকল হাইড্রোকার্বন বলতে কী বুঝ

যে সকল হাইড্রোকার্বনের কার্বন শিকলে কমপক্ষে দুটি প্রান্তীয় কার্বন পরমাণু থাকে তাদেরকে মুক্ত শিকল হাইড্রোকার্বন বলে। যেমন: মিথেন, ইথেন, প্রোপেন।


29.       সকল হাইড্রোকার্বন জৈব যৌগ ব্যাখ্যা কর

হাইড্রোজেন ও কার্বনের সমন্বয়ে গঠিত যৌগকে হাইড্রোকার্বন বলা হয়। জৈব যৌগতে কার্বন বিদ্যমান থাকে, এদের গলনাংক, স্ফূটনাংক নিম্ন হয়। হাইড্রোকার্বনেও কার্বন রয়েছে এবং এদের গলনাংক, স্ফূটনাংক নিম্ন বিধায় সকল হাইড্রোকার্বন জৈব যৌগ।


30.       জৈব যৌগে কার্বনের চতুযোজ্যতা ব্যাখ্যা কর

সাধারণত অবস্থায় কার্বনের বহিঃস্থ কক্ষপথে 2টি বিজোড় ইলেকট্রন থাকে। তব উত্তপ্ত অবস্থায় কার্বনের বিজোড় ইলেকট্রনের সংখ্যা দাড়ায় 4টিতে। এতে এরা হাইড্রোজেন বা অন্যান্য যৌগ/মৌল/যৌগমুলক এর সাথে যুক্ত হয়ে জৈব যৌগ গঠন করে। তাই জৈব যৌগে কার্বনের যোজনী চার হয়।


31.        ফেনল ও অ্যালকোহলের মধ্যে কীভাবে পার্থক্য করবে

Br2 দ্রবনের সাহায্যে ফেনল ও অ্যালকোহলের মধ্যে পার্থক্য করা যায়। ব্রোমিন দ্রবনের সাথে অ্যালকোহল বিক্রিয়া করে না। কিন্তু ফেনল ব্রোমিন দ্রবণের সাথে বিক্রিয়ায় 2,4,6-ট্রাইব্রোমো ফেনলের সাদু অধঃক্ষেপ দেয়। বিক্রিয়াটি হলো


32.       C4H8 যৌগটি অ্যালিসাইক্লিক না অ্যারোমেটিক ব্যাখ্যা দাও

C4H8 যৌগটি অ্যালিসাইক্লিক

 

এখানে এটির বদ্ধ শিকল বিদ্যমান। তবে এর একান্তর দ্বি-বন্ধন নেই। এতে সঞ্চারণশীল পাই ইলেকট্রন নেই। তাই C4H8 যৌগটি অ্যালিসাইক্লিক।


33.       অ্যারোমেটিক যৌগের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ কর

•        এরা চাক্রিক যৌগ

•        একান্তর দ্বি-বন্ধন থাকে

•        সঞ্চারণশীল ইলেকট্রন থাকে


34.       অ্যালকেনসমূহকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয় কেন

অ্যালকেনে কার্বন-হাইড্রোজেন বন্ধন বেশি থাকে বিধায় এগুলোকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অ্যালকিন ও অ্যালকাইন এ বন্ধন এর সংখ্যা কম থাকে বলে এর দহনে কম শক্তি উৎপন্ন হয়। তাই অ্যালকেনসমূহকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।


35.       বিউটিন থেকে কীভাবে অ্যালকেন তৈরি করা যায়

বিউটিনকে নিকেল প্রভাবকের উপস্থিতিতে 1800C-2000C তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে বিউটিন থেকে বিউটেন উৎপন্ন করে।

CH3-CH=CH2 + H2 ----------→   CH3-CH2-CH3

 বিউটিন                         Ni, 1800C-2000C            বিউটেন


36.       মিথেনের অপূর্ণ দহন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কেন

মিথেনের সাথে অপর্যাপ্ত অক্সিজেনের সংযোগে সংঘটিত অপূর্ণ দহনে বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস ও কালো ধোঁয়ার সাথে কার্বন কণা নির্গত হয়। এগুলো পরিবেশের এবং মানুষের শ্বাস প্রশ্বাসের মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই মিথেনের অপূর্ণ দহন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।


37.       ক্লোরিনযুক্ত হাইড্রোকার্বন বিষাক্ত কেন

ক্লোরিনযুক্ত হাইড্রোকার্বন সাধারনত কীটনাশক, চেতনানাশক ও দ্রাবক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এসব যৌগের স্থায়ীত্ব অনেক বেশি বিধায় অবিযোযিত অবস্থায় জীবজন্তু তথা মানুষের খাদ্যশৃঙ্খল এ প্রবেশ করে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করে। তাই ক্লোরিনযুক্ত হাইড্রোকার্বন বিষাক্ত।


38.       অ্যালকেন প্রস্তুতির 2টি বিক্রিয়া লিখ

ইথিন ও ইথাইন প্রভাবকের উপস্থিতেতে হাইড্রোজেন এর সাথে বিক্রিয়া করে ইথেন(অ্যালকেন) উৎপন্ন করে।

CH≡ CH + 2H2----------→   CH3-CH3

 ইথাইন                    Ni, 1800C-2000C          ইথেন

CH2=CH2 + H2----------→   CH3-CH3

 ইথিন                     Ni, 1800C-2000C         ইথেন


39.       সমসংখ্যক কার্বন বিশিষ্ট মুক্ত শিকল অ্যালকেনের তুলনায় বদ্ধ শিকল অ্যালেকেনে হাইড্রোজেন কম কেন

অ্যালকেন এর প্রান্তীয় কার্বন পরমানু থাকে যা অধিক(3) হাইড্রোজেন ধারনে সক্ষম হয়। তবে বদ্ধ শিকল অ্যালকেনে প্রান্তীয় কার্বন পরমানু থাকে না। এতে কার্বন অন্যান্য কার্বনের সাথে বন্ধনে আবদ্ধ থাকে। ফলে এরা বেশি সংখ্যক হাইড্রোজেন ধারন করতে পারে না। তাই সমসংখ্যক কার্বন বিশিষ্ট মুক্ত শিকল অ্যালকেনের তুলনায় বদ্ধ শিকল অ্যালেকেনে হাইড্রোজেন কম হয়।


40.       অ্যালকেনের ব্যবহার উল্লেখ কর

•        বিভিন্ন ইঞ্জিনের জ্বালানি হিসেবে

•        বিদ্যুৎ উৎপাদনে

•        পিচ্ছিলকারক তেল হিসেবে

•        অ্যালকেনকে মোম তৈরির জন্য

•        রাস্তা পাকা করার জন্য


41.        CH≡CH যৌগটি অসম্পৃক্ত কেন

অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন লাল বর্ণের ব্রোমিন দ্রবণের সাথে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। ফলে ব্রোমিন দ্রবণের লাল বর্ণ বিনষ্ট হয়। CH≡  CH যৌগটি ব্রোমিন এর সাথে বিক্রিয়া করে বিধায় এটি অসম্পৃক্ত যৌগ। যেমন:

CH≡CH + 2Br2 →    CHBr2-CHBr2

ইথাইন    ব্রোমিন           টেট্রা ব্রোমো ইথেন


42.       অ্যালকেন সহজে বিক্রিয়া করে না কেন

অ্যালকেন অণুতে কার্বন-কার্বন একক-বন্ধন থাকায় এর রাসায়নিকভাবে অত্যন্ত নিষ্ক্রিয়। কারণ একক-বন্ধনের বন্ধনটি শক্তিশালী। তাই এটি সহজে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহন করে না।


43.       অজৈব যৌগ থেকেও জৈব যৌগ তৈরি করা যায় কীভাবে

ক্যালসিয়াম কার্বাইড ও পানির বিক্রিয়ায় ইথাইন উৎপন্ন হয়। বিক্রিয়াটি নিম্নরূপ

CaC2      +      2H2O → CH≡CH + Ca(OH)2

ক্যালসিয়াম কার্বাইড              ইথাইন


44.       অ্যালকেন পলিমারকরণ বিক্রিয়ায় অংশগ্রহন করে না কেন

অ্যালকেন অণুতে কার্বন-কার্বন একক-বন্ধন থাকায় এর রাসায়নিকভাবে অত্যন্ত নিষ্ক্রিয়। কারণ একক-বন্ধনের বন্ধনটি শক্তিশালী। তাই এটি পলিমারকরণ বিক্রিয়ায় অংশগ্রহন করে না।


45.       অ্যালকিন পলিমারকরণ বিক্রিয়ায় অংশগ্রহন করে কেন

অ্যালকিন অণুতে কার্বন-কার্বন দ্বি-বন্ধন থাকায় এর রাসায়নিকভাবে অত্যন্ত সক্রিয়।কারণ দ্বি-বন্ধনের একটি বন্ধন শক্তিশালী হলেও অন্য বন্ধন তুলনামূলক দুর্বল । তাই এটি পলিমারকরণ বিক্রিয়ায় অংশগ্রহন করে।


46. জৈব যৌগে অসম্পৃক্ততা নির্ণয়ে ব্রোমিন পরীক্ষা বর্ণনা কর

সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের মধ্যে ব্রোমিন দ্রবণ যোগ করে ঝাঁকাতে হয়। সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন লাল বর্ণের ব্রোমিন দ্রবণের সাথে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না। অপরদিকে অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন লাল বর্ণের ব্রোমিন দ্রবণের সাথে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। ফলে ব্রোমিন দ্রবণের লাল বর্ণ বিনষ্ট হয়। যেমন:

CH2=CH2 + Br2  → CH2Br-CH2Br

ইথিন             ব্রোমিন        1,2-ডাইব্রোমো ইথেন

CH≡CH + 2Br2 →  CHBr2-CHBr2

ইথাইন           ব্রোমিন            টেট্রা ব্রোমো ইথেন


47.       সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ কর

সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ

সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন

অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন

কার্বন-কার্বন একক বন্ধন বিদ্যমান থাকে

কার্বন-কার্বন দ্বি-বন্ধন বা ত্রি-বন্ধন বিদ্যমান থাকে

যেমন: প্রোপেন( CH3-CH2-CH3)

যেমন: প্রোপিন(CH3-CH=CH2), প্রোপাইন(CH3-C≡CH)


48.       অ্যালকিন অত্যন্ত সক্রিয় কেন

অ্যালকিনসমূহ দাহ্য। অ্যালকিন অণুতে কার্বন-কার্বন দ্বি-বন্ধন থাকায় এরা রাসায়নিকভাবে অত্যন্ত সক্রিয়। কারণ দ্বি-বন্ধনের একটি বন্ধনশক্তিশালী হলেও অন্য বন্ধন তুলনামূলক দুর্বল। তাই এটি সহজে বিক্রিয়া করে। তাই এটি অত্যন্ত সক্রিয়।


49.       অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন বলতে কী বুঝ

যে সমস্ত হাইড্রোকার্বনে কার্বন-কার্বন দ্বি-বন্ধন বা ত্রি বন্ধন বিদ্যমান থাকে সেগুলোকে অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন বলে। যেমন: প্রোপিন( CH3-CH=CH2), প্রোপাইন(CH3-C≡CH)


50.       প্রোপিন থেকে প্রোপানল তৈরির বিক্রিয়া লিখ

প্রোপিন HClএর সাথে বিক্রিয়া করে প্রোপাইল ক্লোরাইড উৎপন্ন করে যা NaOH এর জলীয় দ্রবনের সাথে বিক্রিয়া করে প্রোপানলে পরিনত হয়।

CH3-CH=CH2 + HCl → CH3-CH2-CH2Cl   +   HCl

প্রোপিন                    প্রোপা্ইল ক্লোরাইড

CH3-CH2-CH2Cl   +   NaOH ---→   CH3CH2CH2OH + NaCl

প্রোপা্ইল ক্লোরাইড                  ▲           প্রোপানল


51.        ইথেন থেকে কীভাবে ইথানল প্রস্তুত করা যায়

ইথেন আলোর উপস্থিতিতে Cl2 এর সাথে বিক্রিয়া করে ইথাইল ক্লোরাইড উৎপন্ন করে যা NaOH এর জলীয় দ্রবনের সাথে বিক্রিয়া করে ইথানলে পরিনত হয়।

CH3-CH3 + Cl2 ------→   CH3-CH2Cl   +   HCl

ইথেন                 UV     ইথাইল ক্লোরাইড

CH3-CH2Cl  +  NaOH ----→  CH3CH2OH + NaCl

ইথাইল ক্লোরাইড             ▲      ইথানল


52.       উন্নত দেশে পেট্রোল এর সাথে ইথানল মিশিয়ে ব্যবহার করা হয় কেন

ইথানল জৈব জ্বালানী। এটি শ্বেতসার থেকে উৎপন্ন করা হয়। তাই এটি ফুরাবার ভয় নেই। অপরদিকে পেট্রোল একসময় ফুরিয়ে যাবে। তাই পেট্রোলের উপর চাপ কমাতে উন্নত দেশে পেট্রোল এর সাথে ইথানল মিশিয়ে ব্যবহার করা হয়।


53.       ওষুধ ও খাদ্য শিল্প ব্যতীত অন্যান্য শিল্পে রেকটিফাইড এর সাথে মিথানল যোগ করা হয় কেন

মিথানল বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ। ইথানলের 96% জলীয় দ্রবণকে রেকটিফাইড স্পিরিট বলে। রেকটিফাইড স্পিরিট সামান্য মিথানল যোগে বিষাক্ত করে মেথিলেটেড স্পিরিট তৈরি করা হয়। ওষুধ ও খাদ্য শিল্পে বিষাক্ত পদার্থ ব্যবহার করা উচিত নয়। এছাড়া কাঠ এবং ধাতুর তৈরি আসবাবপত্র বার্নিশ করার জন্য মেথিলেটেড স্পিরিট ব্যবহার করা হয়।


54.       ঘনীভবন পলিমার বলতে কী বুঝ

একাধিক বিক্রিয়কের অসংখ্য অণু যুক্ত হয়ে পলিমার গঠন করার প্রক্রিয়াকে ঘনীভবন পলিমারকরণ বলে। ঘনীভবন পলিমারকরণে অসংখ্য মনোমার অণু যুক্ত হওয়ার সময় পানি কার্বন ডাইঅক্সাইডের ন্যায় ক্ষুদ্র অণু অপসারিত হয়। যেমন:

nHOOC-(CH2)4-COOH  + nNH2-(CH2)6-NH2------→

অ্যাডিপিক এসিড                         হেক্সামিথিন ডাই অ্যামিন            TiO2(▲)            

(-OC-(CH2)4-CONH-(CH2)6-NH-)n + nH2O

            নাইলন 6:6


55.       মনোমার গ্যাসীয় হলেও পলিমার কঠিন কেন

সাধারণ মনোমারসমূহ এক থেকে চার কার্বন সংখ্যা বিশিষ্ট, তাই এরা গ্যাসীয়। অপরদিকে পলিমারের কার্বন সংখ্যা 16 এর বেশি বিধায় এরা কঠিন।


56.       প্লাস্টিক বলতে কী বুঝ

প্লাস্টিক শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ Plasticos থেকে। Plasticos অর্থ হলো গলানো সম্ভব। রাসায়নিক পদার্থ বিশেষত দ্বি-বন্ধন বিশিষ্ট অ্যালকিন, বিক্রিয়ার মাধ্যমে প্লাস্টিক প্রস্তুত করা হয়। বলপেন, চেয়ার ইত্যাদি তৈরিতে প্লাস্টিক ব্যবহৃত হয়।


57.       থার্মোপ্লাস্টিক বলতে কী বুঝ

এক ধরনের পলিমারে কার্বন শিকলসমূহের মধ্যে দুর্বল আকর্ষণ বল কাজ করে। এই শিকলগুলো একটি অপরটির ওপর দিয়ে চলাচল করতে পারে। এ জাতীয় পলিমারকে সহজে বাঁকানো এবং তাপ প্রয়োগে গলানো যায়। এ ধরনের পলিমারকে থার্মোপ্লাস্টিক বলে। উদাহরণ: পলিথিন, PVC ইত্যাদি।


58.       থার্মোসেটিং বলতে কী বুঝ

এ ধরনের পলিমারে কার্বন পরমাণুসমূহ শিকলের মধ্যে সমযোজী এবং একই সাথে পার্শ্ববর্তী শিকলের কার্বনের সাথে দৃঢ়ভাবে হাইড্রোজেন বন্ধনের মাধ্যমে যুক্ত থাকে। এ ধরনের পলিমার থার্মোসেটিং। থার্মোসেটিং প্লাস্টিক শক্ত এবং কম নমনীয়। তাপ প্রয়োগে  কয়লায় পরিণত হয়। এগুলোকে একবার মাত্র গলানো এবং আকার দেওয়া যায়। যেমন: ব্যাকেলাইট, ফাইবার গ্লাস ইত্যাদি


59.       নাইলন তৈরি একটি ঘনীভবন পলিমারকরণ বিক্রিয়া ব্যাখ্যা কর

একাধিক বিক্রিয়কের অসংখ্য অণু যুক্ত হয়ে পলিমার গঠন করার প্রক্রিয়াকে ঘনীভবন পলিমারকরণ বলে। ঘনীভবন পলিমারকরণে অসংখ্য মনোমার অণু যুক্ত হওয়ার সময় পানি কার্বন ডাইঅক্সাইডের ন্যায় ক্ষুদ্র অণু অপসারিত হয়। যেমন:

nHOOC-(CH2)4-COOH  + nNH2-(CH2)6-NH2------→

অ্যাডিপিক এসিড                         হেক্সামিথিন ডাই অ্যামিন            TiO2(▲)            

(-OC-(CH2)4-CONH-(CH2)6-NH-)n + nH2O

            নাইলন 6:6


60.       সংযোজন ও ঘনীভবন পলিমারের পার্থক্য লিখ

সংযোজন ও ঘনীভবন পলিমারের পার্থক্য নিম্নরূপ

সংযোজন পলীমার

ঘনীভবন পলিমার

একই ধরনের মনোমারের অসংখ্য অণু যুক্ত হয়ে পলিমার গঠন করে

ভিন্ন ধরনের মনোমারের অণু যুক্ত হয়ে পলিমার গঠন করে

কোনো অণু অপসারিত হয় না

ক্ষুদ্র অণু অপসারিত হয়

 


বাক্যের সংঙ্গা গুণ ও প্রকরণ

মূল উপকরণ বাক্য এবং বাক্যের মৌলিক উপাদান শব্দ। যে সুবিন্যস্ত পদসমষ্টি দ্বারা কোনো বিষয়ে বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত হয় তাকে বাক্য বলে। কতগুলো পদের সমষ্টিতে বাক্য গঠিত হলেও যে কোনো পদসমষ্টিই বাক্য নয়। বাক্যের বিভিন্ন পদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বা অন্বয় থাকা আবশ্যক। এ ছাড়াও বাক্যের অন্তর্গত বিভিন্ন পদ দ্বারা মিলিতভাবে একটি অখণ্ড ভাব পূর্ণ রূপে প্রকাশিত হওয়া প্রয়োজন তবেই তা বাক্য হবে।  


সার্থক বাক্যের গুণ


ভাষার বিচারে বাক্যের তিনটি গুণ রয়েছে। যেমন: আকাঙ্ক্ষা, আসত্তি, যোগ্যতা

আকাঙ্ক্ষা

বাক্যের অর্থ পরিষ্কারভাবে বোঝার জন্য এক পদের পর অন্য পদ শোনার যে ইচ্ছা তাই আকাঙ্ক্ষা। যেমন: ‘চন্দ্র পৃথিবীর চারদিকে’-এটুকু বললে বাক্যটি সম্পূর্ণ মনোভাব প্রকাশ করে না, আরও কিছু ইচ্ছা থাকে। বাক্যটি এভাবে পূর্ণাঙ্গ করা যায়; চন্দ্র পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে। এখানে আকাঙ্ক্ষার নিবৃত্তি হয়েছে বলে এটি পূর্ণাঙ্গ বাক্য।

আসত্তি

মনোভাব প্রকাশের জন্য বাক্যে শব্দগুলো এমনভাবে পর পর সাজাতে হবে যাতে মনোভাব প্রকাশ বাধাগ্রস্ত না হয়। বাক্যের অর্থসঙ্গতি রক্ষার জন্য সুশৃঙ্খল পদবিন্যাসই আসত্তি। যেমন: কাল বিতরণী হবে উসব স্কুলে আমাদের পুরস্কার অনুষ্ঠিত। লেখা হওয়াতে পদ সন্নিবেশ ঠিকভাবে না হওয়ায় শব্দগুলোর অন্তর্নিহিত ভাবটি যথাযথ প্রকাশিত হয়নি। তাই এটি একটি বাক্য হয়নি। মনোভাব পূর্ণ ভাবে প্রকাশ করার জন্য সকল পদকে নিম্নলিখিতভাবে যথাস্থানে সন্নিবিষ্ট করতে হয়। যেমন: কাল আমাদের স্কুলে পুরস্কার বিতরণী উসব অনুষ্ঠিত হবে। বাক্যটি আসত্তিসম্পন্ন।

যোগ্যতা

বাক্যস্থিত পদসমূহের অন্তর্গত এবং ভাবগত মিলবন্ধনের নাম যোগ্যতা। যেমন: বর্ষার বৃষ্টিতে প্লাবনের সৃষ্টি হয়। এটি একটি যোগ্যতাসম্পন্ন বাক্য। কারণ বাক্যটিতে পদসমূহের অর্থগত এবং ভাবগত সমন্বয় রয়েছে।
কিন্তু ‘বর্ষার রৌদ্র প্লাবনের সৃষ্টি করে’ - বললে বাক্যটি ভাবপ্রকাশের যোগ্যতা হারাবে। কারণ রৌদ্র প্লাবন সৃষ্টি করে না।

যোগ্যতার বিষয়: 


যোগ্যতার সঙ্গে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো জড়িত থাকে-

রীতিসিদ্ধ অর্থবাচকতা: 


প্রকৃতি-প্রত্যয়জাত অর্থে শব্দ সর্বদা ব্যবহৃত হয়। যোগ্যতার দিক থেকে রীতিসিদ্ধ অর্থের প্রতি লক্ষ রেখে কতগুলো শব্দ ব্যবহার করতে হয়। যেমন:
  শব্দ
রীতিসিদ্ধ
প্রকৃতি + প্রত্যয়
প্রকৃতি+প্রত্যয়জাত অর্থ
১. বাধিত
অনুগৃহীত বা কৃতজ্ঞ
বাধ + ইত
বাধাপ্রাপ্ত
২. তৈল
তিল জাতীয় বিশেষ কোনো শস্যের রস
তিল + ষ্ণ
তিলজাত স্নেহ পদার্থ

দুর্বোধ্যতা


অপ্রচলিত ও দুর্বোধ্য শব্দ ব্যবহার করলে বাক্যের যোগ্যতা বিনষ্ট হয়। যেমন: তুমি 
আমার সঙ্গে প্রপঞ্চ করেছ।(চাতুরী বা মায়া অর্থে, কিন্তু বাংলা ‘প্রপঞ্চ’ শব্দটি অপ্রচলিত)

উপমার ভুল প্রয়োগ


ঠিকভাবে উপমা অলংকার ব্যবহার না করলে যোগ্যতার হানি ঘটে। যেমন: আমার হৃদয়-মন্দিরে আশার বীজ উপ্ত হলো। বীজ ক্ষেতে বপন করা হয়, মন্দিরে নয়। কাজেই বাক্যটি হওয়া উচিত: আমার হৃদয়-ক্ষেত্রে আশার বীজ উপ্ত হলো।

বাহুল্য-দোষ


প্রয়োজনের অতিরিক্ত শব্দ ব্যবহারে বাহুল্য দোষ বটে এবং এর ফলে শব্দ তার যোগ্যতা হারায়। যেমন: দেশের সব আলেমগণই এ ব্যাপারে আমাদের সমর্থন দান করেন। ‘আলেমগণ’ বহু বচনবাচক শব্দ। এর সঙ্গে ‘সব’ শব্দটির অতিরিক্ত ব্যবহার বাহুল্য-দোষ সৃষ্টি করেছে।

বাগধারার শব্দ পরিবর্তন


বাগধারা ভাষাবিশেষের ঐতিহ্য। এর যথেচ্ছ পরিবর্তন করলে শব্দ তার যোগ্যতা হারায়। যেমন: অরণ্যে রোদন(অর্থ: নিষ্ফল আবেদন)-এর পরিবর্তে যদি বলা হয়, ‘বনে ক্রন্দন’ তবে বাগধারাটি তার যোগ্যতা হারাবে।

গুরুচণ্ডালী দোষ


সম শব্দের সঙ্গে দেশীয় শব্দের প্রয়োগ কখনো কখনো গুরুচণ্ডালী দোষ সৃষ্টি করে। এ দোষে দুষ্ট শব্দ তার যোগ্যতা হারায়। ‘গরুর গাড়ি’, ‘শবদাহ’, ‘মড়াপোড়া’ প্রভৃতি স্থলে যথাক্রমে ‘গরুর শকট’, ‘শবপোড়া’, ‘মড়াদাহ’ প্রভৃতির ব্যবহার গুরুচণ্ডালী দোষ সৃষ্টি করে।

বাক্যের অংশ (উদ্দেশ্য ও বিধেয়)

প্রতিটি বাক্যে দুটি অংশ থাকে: উদ্দেশ্য ও বিধেয়

উদ্দেশ্য:  বাক্যের যে অংশে কাউকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলা হয় তাকে উদ্দেশ্য বলে।

বিধেয়: উদ্দেশ্য সম্বন্ধে যা বলা হয় তাকে বিধেয় বলে। যেমন:
খোকা এখন   বই পড়ছে
(উদ্দেশ্য)    (বিধেয়)
বিশেষ্য বা বিশেষ্যস্থানীয় অন্যান্য পদ বা পদসমষ্টিযোগে গঠিত বাক্যাংশও বাক্যের উদ্দেশ্য হতে পারে। যেমন:
 লোকেরাই প্রকৃত সুখী(বিশেষ্যরূপে ব্যবহৃত বিশেষণ)
মিথ্যা কথা বলা খুবই অন্যায়(ক্রিয়াজাত বাক্যাংশ)

উদ্দেশ্যের প্রকারভেদ


সরল উদ্দেশ্য: একটিমাত্র পদবিশিষ্ট কর্তৃপদকে সরল উদ্দেশ্য বলে।

সম্প্রসারিত উদ্দেশ্য: উদ্দেশ্যের সঙ্গে বিভিন্ন পদ যুক্ত করে তাকে বর্ধিত করলে তাকে সম্প্রসারিত উদ্দেশ্য বলে।
উদ্দেশ্যের সম্প্রসারণ:
সম্প্রসারণ
উদ্দেশ্য
বিধেয়
১. বিশেষণ যোগে-
কুখ্যাত
দস্যুদল
ধরা পড়েছে।
২. সম্বন্ধ যোগে-
হাসিমের 
ভাই
এসেছে।
৩. সমার্থক বাক্যাংশ যোগে-
যারা অত্যন্ত পরিশ্রমী
তারাই
উন্নতি করে।
৪. অসমাপিকা ক্রিয়াবিশেষণ যোগে-
চাটুকার পরিবৃত হয়েই 
বড় সাহেব
থাকেন।
৫. বিশেষণ স্থানীয় বাক্যাংশ যোগে-     
যার কথা তোমরা বলে থাক
তিনি
এসছেন।

বিধেয় সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া:


সম্প্রসারক: একটি বাক্যের উদ্দেশ্য অংশ ছাড়া কারকসম্বন্ধযুক্ত অন্যান্য পদগুচ্ছ এবং বিধেয় ক্রিয়ার বিশেষণকে অর্থা যে পদ বা পদগুচ্ছের দ্বারা বিধেয় পদের দোষ, গুণ, অবস্থা বা বিধেয় সম্বন্ধে অতিরিক্ত সংবাদ দেওয়া হয় সেগুলোকে বিধেয়ের সম্প্রসারক বলা হয়। যেমন:
রহিম অত্যন্ত চতুর ছেলে।

বিধেয় ক্রিয়ার পরিপূরক: যে পদ বা পদগুচ্ছ বিধেয় ক্রিয়াকে সম্পূর্ণ করে সেগুলোকে বিধেয় পরিপূরক বা বিধেয় সম্পূরক বলে। বিধেয় ক্রিয়ার পরিপূরক কখনো থাকে কখনো থাকে না। বাক্যে বিধেয় ক্রিয়াটি সকর্মক হলে কর্মপদটিই বিধেয় ক্রিয়ার পরিপূরক এর কাজ করে। যেমন: তিনি অত্যন্ত দানশীল ছিলেন। এখানে দানশীল বিধেয় ক্রিয়া। দানশীল ছাড়া নিয়ম অনুসারে বাক্য হলেও অর্থের পূর্ণতা পায় না। তাই এখানে দানশীল বিধেয়ের পরিপূরক।
বিধেয়ের সম্প্রসারণ:
উদ্দেশ্য
সম্প্রসারণ
বিধেয়
১. ক্রিয়া বিশেষণ যোগে-
ঘোড়া
দ্রুত
চলে।
২. ক্রিয়া বিশেষণীয় যোগে-
জেট বিমান
অতিশয় দ্রুত
চলে।
৩. কারকাদি যোগে-
ভুবনের
ঘাটে ঘাটে
ভাসিছে।
৪. ক্রিয়া বিশেষণ স্থানীয় বাক্যাংশ যোগে-
তিনি
যে ভাবেই হোক
আসবেন।
৫. বিধেয় বিশেষণ যোগে-
ইনি
আমার বিশেষ
অন্তরঙ্গ বন্ধু(হন)।









গঠন অনুসারে বাক্যের শ্রেণিবিভাগ


গঠন অনুসারে বাক্য তিন প্রকার। যথা:
সরল বাক্য
২. মিশ্র বা জটিল বাক্য
৩. যৌগিক বাক্য


সরল বাক্য


যে বাক্যে একটিমাত্র কর্তা (উদ্দেশ্য) এবং একটিমাত্র সমাপিকা ক্রিয়া (বিধেয়) থাকে তাকে সরল বাক্য বলে। যেমন: পুকুরে পদ্মফুল জন্মে। এখানে ‘পদ্মফুল’ উদ্দেশ্য আর ‘জন্ম’ বিধেয়।
তদ্রূপ   : বৃষ্টি হচ্ছে।
তোমরা বাড়ি যাও।


মিশ্র বা জটিল বাক্য


যে বাক্যে একটি প্রধান খণ্ডবাক্যের এক বা একাধিক আশ্রিত বাক্য পরস্পর সাপেক্ষভাবে ব্যবহৃত হয়, তাকে মিশ্র বা জটিল বাক্য বলে। যেমন:

প্রধান খণ্ডবাক্য  : যে খন্ডবাক্য নিজের অর্থ প্রকাশে গঠনগত দিক দিয়ে অন্য কোন খন্ডবাক্যের উপর নির্ভর করে না তাকে প্রধান খন্ডবাক্য বলে।

আশ্রিত খন্ডবাক্য : বাক্যস্থিত যে খন্ডবাক্য তার অর্থ সম্পূর্ণরূপে প্রকাশে অন্য বাক্যের উপর নির্ভর করে তাকে আশ্রিত খন্ডবাক্য বলে।
আশ্রিত বাক্য, 
প্রধান খণ্ডবাক্য,
যে পরিশ্রম করে,  
সে-ই সুখ লাভ করে।,
সে যে অপরাধ করেছে,
তা মুখ দেখেই বুঝেছি।,

আশ্রিত খণ্ডবাক্য তিন প্রকার। 

উদাহরণ:
১. বিশেষ্য স্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য
২. বিশেষণ স্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য
৩. ক্রিয়াবিশেষণ স্থানীয় খণ্ডবাক্য

বিশেষ্য স্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য


যে আশ্রিত খণ্ডবাক্য প্রধান খণ্ডবাক্যের যে কোনো পদের আশ্রিত থেকে বিশেষ্যের কাজ করে তাকে বিশেষ্য স্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য বলে। যেমন: আমি মাঠে গিয়ে দেখলাম, খেলা শেষ হয়ে গিয়েছে। (বিশেষ্য স্থানীয় খণ্ডবাক্য ক্রিয়ার কর্মরূপে ব্যবহৃত)
তদ্রূপ   : তিনি বাড়ি আছেন কিনা, আমি জানি না।
 ব্যাপারটি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করলে ফল ভালো হবে না।

বিশেষণ স্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য


যে আশ্রিত খণ্ডবাক্য প্রধান খণ্ডবাক্যের অন্তর্গত কোনো বিশেষ্য বা সর্বনামের দোষ, গুণ ও অবস্থা প্রকাশ করে তাকে বিশেষণ স্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য বলে। যেমন:
লেখাপড়া করে যেই, গাড়ি ঘোড়া চড়ে সেই। (আশ্রিত বাক্যটি ‘সেই’ সর্বনামের অবস্থা প্রকাশ করছে)
তদ্রূপ   : খাঁটি সোনার চাইতে খাঁটি, আমার দেশের মাটি।
 ধনধান্য পুষ্পে ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা।
 যে এ সভায় অনুপস্থিত সে বড় দুর্ভাগা।

ক্রিয়াবিশেষণ স্থানীয় খণ্ডবাক্য


যে আশ্রিত খণ্ডবাক্য ক্রিয়াপদের স্থান, কাল ও কারণ নির্দেশক অর্থে ব্যবহৃত হয় তাকে ক্রিয়াবিশেষণ স্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য বলে। যেমন: যতই করিবে দান তত যাবে বেড়ে।
তদ্রূপ   :তুমি আসবে বলে আমি অপেক্ষা করছি।
      যেখানে আকাশ আর সমুদ্র একাকার হয়ে গেছে সেখানেই দিকচক্রবাল।

জটিল বাক্য তিন প্রকার।


যথা:
১. আশ্রয়-আশ্রিত জটিল বাক্য
২. সাপেক্ষ পদযুক্ত জটিল বাক্য
৩. প্রতিনির্দেশক সর্বনামযুক্ত জটিল বাক্য

আশ্রয়-আশ্রিত জটিল বাক্য


এ বাক্যে আশ্রিত খন্ডবাক্যটি প্রধান খন্ডবাক্যের আশ্রয়ে থেকে প্রধান খন্ডবাক্যের ক্রিয়ার কর্মস্থানীয় হয়ে বা সম্পূরকরূপে কাজ করে। ফলে আশ্রিত খন্ডবাক্যটি বিশেষ খন্ডবাক্য হয়ে থাকে। যেমন: আমি চেয়ে দেখলাম, ‘তুমি চলে গেলে।’
‘এখানে আমি চেয়ে দেখলাম’ প্রধান খন্ডবাক্য। বিধেয় ক্রিয়া ‘দেখলাম’ এখানে দেখলাম ক্রিয়ার কর্ম হচ্ছে ‘তুমি চলে গেলে’। এটি অপ্রধান খন্ডবাক্য এবং সম্পূরক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

সাপেক্ষ পদযুক্ত জটিল বাক্য


সাপেক্ষ পদযুক্ত জটিল বাক্যে অধীন বা আশ্রিত খন্ডবাক্য প্রধান খন্ডবাক্যের বিধেয় ক্রিয়ার সংঘটনের উপর নির্ভর করে। এ ধরনের জটিল বাক্যের প্রধান খন্ডবাক্যে সাধারণত সাপেক্ষ অব্যয় ‘যদি’ এবং অধীন খন্ডবাক্যে তাহলে/তবে/না/হয় ইত্যাদি যুক্ত থাকে। অধীন খন্ডবাক্যটি যদি যুক্ত প্রধান খন্ডবাক্যের বিধেয় ক্রিয়ার ক্রিয়াবিশেষণ স্থানীয় খন্ডবাক্য হয়ে থাকে। যেমন: তুমি যদি না বল তাহলে আমি আর কোনোদিন আসব না।
কখনো কখনো যদি ‘তবে’ উহ্য থাকতে পারে। যেমন: অন্যায় স্বীকার কর, ক্ষমা করে দিব।

প্রতিনির্দেশক সর্বনামযুক্ত জটিল বাক্য


যখন-তখন, যা-তা, যাহা-তাহা,যার-তার, যেখানে-সেখানে ইত্যাদি প্রতিনির্দেশক সর্বনাম ব্যবহার করে জটিল বাক্য গঠন করলে তাকে প্রতিনির্দেশক সর্বনামযুক্ত জটিল বাক্য বলে।
এ ধরনের জটিল বাক্যে যুগ্ম সর্বনামের প্রথম সর্বনামটি অর্থা যখন, যা, যাহা, যার, যেখানে, যথা ইত্যাদি সর্বনামযুক্ত বাক্যটি হয় অধীন বা আশ্রিত খন্ডবাক্য এবং বাক্যটি প্রধান খন্ডবাক্যের কোনো পদের বিশেষণ স্থানীয় হয়। যেমন:
যারা পরিশ্রম করে তারা সফলতা পায়।        (কর্তার বিশেষণ স্থানীয়)
যখন সন্ধ্যা নামল তখন আমরা ছাত্রাবাসে ফিরলাম।(সময়বাচক পদের বিশেষণ স্থানীয়)
যতই পড়িবে ততই শিখিবে। কর্তা উহ্য        (ক্রিয়াবাচক পদের বিশেষণ স্থানীয়)

যৌগিক বাক্য

পরস্পর নিরপেক্ষ দুই বা ততোধিক সরল বা মিশ্র বাক্য মিলিত হয়ে একটি সম্পূর্ণ বাক্য গঠন করলে তাকে যৌগিক বাক্য বলে।
জ্ঞাতব্য: যৌগিক বাক্যের অন্তর্গত নিরপেক্ষ বাক্যগুলো এবং, ও, কিন্তু, অথবা, অথচ, কিংবা, বরং, তথাপি প্রভৃতি অব্যয় যোগে সংযুক্ত বা সমন্বিত থাকে।
যেমন   :নেতা জনগণকে উসাহিত করলেন বটে কিন্তু কোনো পথ দেখাতে পারলেন না।
বস্ত্র মলিন কেন, কেহ জিজ্ঞাসা করিলে সে ধোপাকে গালি পাড়ে অথচ ধৌত বস্ত্রে তাহার গৃহ পরিপূর্ণ।
উদয়াস্ত পরিশ্রম করব তথাপি অন্যের দ্বারস্থ হব না।

বাক্যের অর্থগত প্রকরণ

অর্থ অনুসারে বাক্য সাত প্রকার। যেমন:
১. বিবৃতিমূলক বা বর্ণনাত্মক বা নির্দেশাত্মক বাক্য
২. প্রশ্নবোধক বাক্য
৩. অনুজ্ঞাসূচক বাক্য
৪. ইচ্ছা বা প্রার্থনাসূচক বাক্য:
৫. আবেগসূচক বাক্য
৬. কার্যকাণাত্মক বাক্য
৭. সংশয়সূচক বা সন্দেহদ্যোতক বাক্য

১. বিবৃতিমূলক বা বর্ণনাত্মক বা নির্দেশাত্মক বাক্য


যে বাক্যে কোনো ঘটনার ভাব বা তথ্য থাকে এবং সেই বক্তব্যকে সাধারণভাবে বিবৃত বা নির্দেশ করা হয় তাকে বর্ণনাত্মক বা নির্দেশাত্মক বাক্য বলে।

এ ধরনের বাক্যে সাধারণ হ্যাঁ বা না বোঝায়। বিবৃতিমূলক বাক্য দুই প্রকার। যেমন:
অস্তি বাচক বাক্য: যে বাক্যে কোনো ঘটনার ভাব বা তথ্যের অস্তিত্ব হাঁ সূচক বোঝায় তাকে অস্তিবাচক বা অস্ত্যর্থক বাক্য বলে। যেমন: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বকবি।
নেতি বাচক বাক্য: যে বাক্যে কোনো ঘটনার ভাব বা তথ্যের অস্তিত্ব না সূচক বোঝায় তাকে নেতিবাচক বাক্য বলে। যেমন: বাবা বাড়ি নেই।

২. প্রশ্নবোধক বাক্য


যে বাক্যে কোন বিষয় সম্পর্কে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করা হয় তাই প্রশ্নবোধক বাক্য। যেমন: কোথায় যাচ্ছ? কী পড়ছ? কেন এসেছ? যাবে নাকি?

প্রশ্নবোধক বাক্য দু ধরনের হতে পারে।
হ্যাঁ-না বাচক: যে ধরনের প্রশ্নবাচক বাক্যের উত্তরে হ্যাঁ-না নিযেই শেষ করা যায় তাকে হ্যাঁ-না প্রশ্নবাচক বাক্য বলে। যেমন: আপনি কি আজ বাজারে গিয়েছেন?
বস্তুগত প্রশ্নবোধক বাক্য     : যে ধরনের প্রশ্নবাচক বাক্যের উত্তরে হ্যাঁ-না দিয়ে শেষ হয় না বিষয় বা বস্তুগত উত্তর করতে হয় তাকে বস্তুগত প্রশ্নকোধক বাক্য বলে। যেমন: জাতীয় স্মৃতিসৌধ কোথায়?

৩.অনুজ্ঞাসূচক বাক্য


যে বাক্য দ্বারা বর্তমান ও ভবিষ্যকালের আদেশ, অনুরোধ, উপদেশ, নিষেধ, প্রস্তাব ইত্যাদি বোঝায় তাকে

অনুজ্ঞাবাচক বাক্য বলে। যেমন:
আদেশ 
ঘর থেকে বের হয়ে যাও।
অনুরোধ
দয়া করে সাহায্য করুন।
উপদেশ
অযথা ঋণ করো না।
নিষেধ 
অনুমতি ছাড়া কখনো অধ্যক্ষের কক্ষে প্রবেশ করবে না।
প্রস্তাব  
চলো কোথাও ঘুরতে যাই।








৪. ইচ্ছা বা প্রার্থনাসূচক বাক্য


যে বাক্যে ইচ্ছা বা প্রার্থনাসূচক অর্থ প্রকাশ পায় তাকে ইচ্ছা বা প্রার্থনাসূচক বাক্য বলে।
ইচ্ছা  
আমার যেতে ইচ্ছে করছে।
প্রার্থনা 
খোদা তোমার সহায় হোক।
উচ্ছ্বাস 
আমি পাস করেছি।

৫. আবেগসূচক বাক্য


যে বাক্যে আশ্চর্য কিছু বোঝায় তাকে আবেগসূচক বাক্য বলে। যেমন:
বিস্ময় 
 সমুদ্রের এত বড় ঢেউ!
ঘৃণা   
 তুমি এত নীচ!
বিষাদ 
 আহা! গাছ থেকে পড়ে পা ভেঙেছে।
ক্রোধ  
 আমি তোমাকে দেখে নেব।
ভয়   
 আমি অন্ধকার ঘরে একা থাকতে পারব না।
বিরক্তি 
 আহ! ভালো লাগছে না।
আদর  
 বড্ড শুকিয়ে গেছিস রে!

৬. কার্যকারণাত্মক বাক্য


যদ্যপি, যদি প্রভৃতি অব্যয়ের সাহায্যে বাক্য গঠিত হয় এবং যাতে কার্যকারণ সম্পর্ক প্রকাশ পায় তাকে কার্যকারণাত্মক বাক্য বলে।
যেমন   :দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহীতে(শর্ত)
নিয়ম-কানুন না মানলে জীবনে উন্নতি করা যায় না।(নিয়ম)
বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র।(স্বীকৃতি)

৭. সংশয়সূচক বা সন্দেহদ্যোতক বাক্য


যে ধরনের নির্দেশক বাক্যে বক্তব্য বিষয় সম্পর্কে সংশয়, সন্দেহ, সম্ভাবনা, অনুমান, অনিশ্চয়তা ইত্যাদি ভাব প্রকাশিত হয় তাকে সংশয়সূচক বা সন্দেহদ্যোতক বাক্য বলে।
এ ধরনের বাক্যে হয়তো, বুঝি, বুঝিবা, সম্ভবত, বোধহয়, নাকি, নিশ্চয়, প্রভৃতি ক্রিয়াবিশেষন ব্যবহৃত হয়।
যেমন   :লোকটা খারাপ বোধহয়।
মনে হয়, সে পার হবে।

বাক্য রূপান্তর


অর্থের কোনোরূপ রূপান্তর না করে এক প্রকারের বাক্যকে অন্য প্রকার বাক্যে রূপান্তর করার নামই বাক্য রূপান্তর।

সরল বাক্য  মিশ্র বাক্য


Ø মৌলিক অর্থের কোনো পরিবর্তন হয় না।
Ø সরল বাক্যের কোনো অংশকে খণ্ডবাক্যে পরিণত করতে হয়
Ø উভয় খন্ডবাক্যের সংযোগ বিধানে সম্বন্ধসূচক (যদি, তবে, যে, সে প্রভৃতি) পদ ব্যবহার করতে হয়।
সরল বাক্য           : ভালো ছেলেরা শিক্ষকের আদেশ পালন করে।
মিশ্র বাক্য     : যারা ভালো ছেলে তারা শিক্ষকের আদেশ পালন করে।
সরল বাক্য     : তার দর্শনমাত্রই আমরা প্রস্থান করলাম।
মিশ্র বাক্য     : যেই তার দর্শন পেলাম সেই আমরা প্রস্থান করলাম।

মিশ্র বাক্য  সরল বাক্যে


Ø মৌলিক অর্থের কোনো পরিবর্তন হয় না।
Ø মিশ্র বাক্যের অপ্রধান খণ্ডবাক্যটিকে সংকুচিত করে একটি পদ বা একটি বাক্যাংশে পরিণত করতে হয়।
মিশ্র বাক্য     : যাদের বুদ্ধি নেই তারাই এ কথা বিশ্বাস করবে।
সরল বাক্য     : নির্বোধরা/ বুদ্ধিহীনরা এ কথা বিশ্বাস করবে।
মিশ্র বাক্য     : যতদিন জীবিত থাকব ততদিন এ ঋণ স্বীকার করব।
সরল বাক্য     : আজীবন এ ঋণ স্বীকার করব।

সরল বাক্য  যৌগিক বাক্য


Ø মৌলিক অর্থের কোনো পরিবর্তন হয় না।
Ø সরল বাক্যের কোনো অংশকে নিরপেক্ষ বাক্যে রূপান্তর করতে হয়।
Ø যথাসম্ভব সংযোজক বা বিয়োজক অব্যয়ের(এবং, কিন্তু, তথাপি, তবে) প্রয়োগ করতে হয়।
সরল বাক্য     : তিনি আমাকে পাঁচ টাকা দিয়ে বাড়ি যেতে বললেন।
যৌগিক বাক্য  : তিনি আমাকে পাঁচটি টাকা দিলেন এবং বাড়ি যেতে বললেন।
সরল বাক্য     : পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য এখন থেকেই তোমার পড়া উচিত।
যৌগিক বাক্য   : এখন থেকেই তোমার পড়া উচিত তবেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবে।

যৌগিক বাক্য  সরল বাক্য


Ø মৌলিক অর্থের কোনো পরিবর্তন হয় না।
Ø বাক্যসমূহের একটি সমাপিকা ক্রিয়াকে অপরিবর্তিত রাখতে হয়।
Ø অন্যান্য সমাপিকা ক্রিয়াকে অসমাপিকা ক্রিয়ায় পরিণত করতে হয়।
Ø অব্যয় পদ থাকলে তা বর্জন করতে হয়।
Ø কোনো কোনো স্থলে একটি বাক্যকে হেতুবোধক বাক্যাংশে পরিণত করতে হয়। যেমন:
যৌগিক বাক্য  : সত্য কথা বলিনি তাই বিপদে পড়েছি।
সরল বাক্য     : সত্য কথা না বলে বিপদে পড়েছি।
যৌগিক বাক্য   : তার বয়স হয়েছে কিন্তু বুদ্ধি হয়নি।
সরল বাক্য     : তার বয়স হলেও বুদ্ধি হয়নি।

যৌগিক বাক্য  মিশ্র বাক্য


Ø মৌলিক অর্থের কোনো পরিবর্তন হয় না।
Ø নিরপেক্ষ বাক্য দুটির প্রথমটির পূর্বে ‘যদি/যদিও’ এবং দ্বিতীয়টির পূর্বে ‘তাহলে/তথাপি’ অব্যয়গুলো ব্যবহার করতে হয়।
Ø একটি খন্ডবাক্যকে অপ্রধান খন্ডবাক্যে পরিনত করতে হবে।
যৌগিক বাক্য   : দোষ স্বীকার কর তবে তোমাকে কোনো শাস্তি দেব না।
মিশ্র বাক্য     : যদি দোষ স্বীকার কর তাহলে তোমাকে কোনো শাস্তি দেব না।
যৌগিক বাক্য   : তিনি অত্যন্ত দরিদ্র কিন্তু তাঁর অন্তঃকরণ অতিশয় উচ্চ।
মিশ্র বাক্য     : যদিও তিনি অত্যন্ত দরিদ্র তথাপি তাঁর অন্তঃকরণ অতিশয় উচ্চ।

সাপেক্ষ অব্যয়ের সাহায্যেও যৌগিক বাক্যকে মিশ্র বাক্যে পরিবর্তন করা যায়।
যৌগিক বাক্য   : এ গ্রামে একটি দরগাহ আছে, সেটি পাঠানযুগে নির্মিত হয়েছে।
মিশ্র বাক্য     : এ গ্রামে যে দরগাহ আছে, সেটি পাঠানযুগে নির্মিত হয়েছে।

মিশ্র বাক্য  যৌগিক বাক্য


Ø মৌলিক অর্থের কোনো পরিবর্তন হয় না।
Ø খণ্ডবাক্যকে এক একটি স্বাধীন বাক্যে পরিবর্তন করে তাদের মধ্যে সংযোজক অব্যয়ের ব্যবহার করতে হয়।
Ø অপ্রধান খন্ডবাক্যকে প্রধান স্বনির্ভর উপবাক্যে পরিণত করা যায়।
মিশ্র বাক্য     : যদি সে কাল আসে তাহলে আমি যাব।
যৌগিক বাক্য  : সে কাল আসবে এবং আমি যাব।
মিশ্র বাক্য     : যখন বিপদ আসে তখন দুঃখও আসে।
যৌগিক বাক্য   : বিপদ এবং দুঃখ এক সময়ে আসে।

নির্দেশক বাক্য  প্রশ্নবোধক বাক্য


Ø প্রথম অংশ বসিয়ে কে, কী, কাকে, কার ইত্যাদি প্রশ্নবোধক শব্দ বসিয়ে বাকি অংশ লিখতে হবে।
Ø বাক্য শেষে প্রশ্নবোধক চিহ্ন দিতে হবে।
Ø বাক্যটি হাঁ বোধক থাকলে প্রশ্নবোধক বাক্যটি না বোধক হয় এবং না বোধক থাকলে তা হা বোধক হবে।
নির্দেশক       : আনন্দ সকলের কাম্য।
প্রশ্নবোধক      : আনন্দ কার না কাম্য?
নির্দেশক       : তাহা আমি বলি নাই।
প্রশ্নবোধক      : তাই কি আমি বলিয়াছি?

প্রশ্নবোধক বাক্য  নির্দেশক বাক্য


Ø প্রথম অংশ বসিয়ে কে, কী, কাকে, কার ইত্যাদি প্রশ্নবোধক শব্দ তুলে দিয়ে বাকি অংশ লিখতে হবে।
Ø বাক্য শেষে প্রশ্নবোধক চিহ্ন তুলে দিতে হবে।
Ø প্রশ্নবোধক বাক্যটি হাঁ বোধক থাকলে প্রশ্নবোধক বাক্যটি না বোধক হয় এবং না বোধক থাকলে তা হা বোধক হবে।
প্রশ্নবোধক      : এদের দোষ কী?
নির্দেশক       : এদের দোষ নেই।
প্রশ্নবোধক      : আমরা যাব কী করে?
নির্দেশক       : আমাদের যাবার উপায় নেই।

অস্তিবাচক বাক্য  নেতিবাচক বাক্য


Ø বাক্যের অর্থ পরিবর্তন না করে অস্তিবাচক বাক্যকে নেতিবাচক বাক্যে পরিবর্তন করতে হবে।
Ø অস্তিবাচক বাক্যের সমাপিকা ক্রিয়ার পার্শ্ববর্তী পদের সাথে অ, অন ইত্যাদি নেতিবাচক উপসর্গ যোগ করতে হয় এবং তারপরে না, নয়, নহে ইত্যাদি নঞর্থক অব্যয় ব্যবহার করতে হয় অনেক সময়।
Ø অনেক সময় কোন পদের বিপরীত পদ ব্যবহার করতে হয়।
অস্তিবাচক      : সে যথার্থ বলেছে।
নেতিবাচক      : সে অযথার্থ বলে নাই।
অস্তিবাচক      : ভূমি অনন্ত।
নেতিবাচক      : ভূমির অন্ত নেই।

নেতিবাচক বাক্য  অস্তিবাচক বাক্য


Ø বাক্যের অর্থ পরিবর্তন না করে নেতিবাচক বাক্যকে অস্তিবাচক বাক্যে পরিবর্তন করতে হবে।
Ø নেতিবাচক বাক্যের মধ্যে থাকা অ, অন ইত্যাদি নেতিবাচক উপসর্গ অনেক সময় উঠিয়ে দিতে হয়।
Ø তারপরে না, নয়, নহে ইত্যাদি নঞর্থক অব্যয় উঠিয়ে দিতে হয়।
Ø অনেক সময় কোন পদের বিপরীত পদ ব্যবহার করতে হয়।
নেতিবাচক      : জগতে কিছুই চিরস্থায়ী নয়।
অস্তিবাচক      : জগতে সবকিছুই ক্ষণস্থায়ী।
নেতিবাচক      : বরফ গলিল না।
অস্তিবাচক      : বরফ অগলিত রহিল।

নির্দেশক বাক্য  অনুজ্ঞাসূচক বাক্য


Ø অর্থের কোনো পরিবর্তন হয় না।
Ø কর্তা মধ্যম পুরুষ হবে।
Ø নিষেধার্থক বাক্য হলে অনুজ্ঞাবাচক ক্রিয়ার সাথে না অব্যয় যুক্ত হবে।
নির্দেশক       : তোমাকে এই খাতায় লিখতে হবে।
অনুজ্ঞাসূচক     : তুমি এই খাতা লেখো
নির্দেশক       : ভয় করলে হবে না।
অনুজ্ঞাসূচক     : ভয় করো না

নির্দেশক বাক্য  বিস্ময়সূচক বাক্য


Ø মৌলিক অর্থের কোনো পরিবর্তন হয় না।
Ø অস্তিবাচক নির্দেশক বাক্যের বিশেষণের পরিবর্তে কী, কেমন, কত, ভারী ইত্যাদি আবেগসূচক ক্রিয়াবিশেষণ যোগ করতে হয়।
Ø নির্দেশক বাক্যটি নেতিবাচক হলে নঞর্থক অব্যয়ের পরিবর্তে সাধারণ ক্রিয়াবিশেষ যুক্ত করে বা বাক্যটিকে প্রশ্নবোধক করে পরিবর্তন করতে হয়।
Ø প্রয়োজেনে বাক্যে উঃ, আঃ, আহা! ইত্যাদি আবেগবোধক অব্যয় যোগ করতে হয়।
নির্দেশক       : যা দেখলাম, ভারী সুন্দর।
বিস্ময়সূচক     : আহ্ কী দেখলাম!
নির্দেশক       : তার গানের গলা ভারি মিষ্টি।
বিস্ময়সূচক     : তার গানের গলা কী মিষ্টি!
নির্দেশক       : ও কথায় ভুলবার ছেলে নহে।
বিস্ময়সূচক     : ও ভারী কথায় ভুলাইবার ছেলে।

বিস্ময়সূচক বাক্য  নির্দেশক বাক্য


Ø মৌলিক অর্থের কোনো পরিবর্তন হয় না।
Ø বিস্ময়সূচক বাক্যের কী, কেমন, কত, ভারী ইত্যাদি আবেগসূচক ক্রিয়াবিশেষণের পরিবর্তে বিশেষণ যোগ করতে হয়।
Ø নঞর্থক ভাবের আবেগবাচক অব্যয় থাকলে প্রশ্নবোধক ভাব পরিহার করতে হয় না, নয় ইত্যাদি নেতিবাচক অব্যয় ব্যবহার করে।
Ø বাক্যের শুরুতে উঃ, আঃ, আহা! ইত্যাদি আবেগবোধক অব্যয় পরিহার করতে হয়।
বিস্ময়সূচক     :বাঃ! কি সুন্দর নাম।
নির্দেশক       :নামটি খুবই সুন্দর।
বিস্ময়সূচক     :কি দারুণ কবিতাটি!
নির্দেশক       :কবিতাটি অত্যন্ত দারুণ।
বিস্ময়সূচক     :ওখানে যেতে ভারি বয়ে গেছে।
নির্দেশক       :ওখানে যাবার কোন প্রয়োজন একেবারেই নেই।

নির্দেশক বাক্য  প্রার্থনাসূচক বাক্য


Ø মৌলিক অর্থের কোনো পরিবর্তন হয় না।
Ø ধাতুর সাথে প্রত্যয়যোগে অসমাপিকা ক্রিয়া এবং তার সাথে ইচ্ছা করি, কামনা করি ইত্যাদি উঠিয়ে হোক, হোন, হও ইত্যাদি ক্রিয়া বসিয়ে বাক্যের সমাপ্তি টানতে হবে।
নির্দেশক       : এমন কাজ আর না করার জন্য বলছি।
প্রার্থনাসূচক     : এমন কাজ যেন আর না করো।
নির্দেশক       : আগামী শ্রক্রবারই যেন বনভোজন হয়, এমন চাইছি।
প্রার্থনাসূচক     : আগামী শুক্রবারই বনভোজন হোক।


প্রার্থনাসূচক বাক্য  নির্দেশক বাক্য


Ø মৌলিক অর্থের কোনো পরিবর্তন হয় না।
Ø সমাপিকা ক্রিয়াটি বর্জন করে তার পরিবর্তে এই ক্রিয়ার ধাতুর সাথে প্রত্যয়যোগে অসমাপিকা ক্রিয়া তৈরি করতে হয় এবং তার সাথে ইচ্ছা করি, কামনা করি ইত্যাদি যোগ করতে হয়।
প্রার্থনাসূচক     : এমন কাজ যেন আর না করো।
নির্দেশক       : এমন কাজ আর না করার জন্য বলছি।
প্রার্থনাসূচক     : আগামী শুক্রবারই বনভোজন হোক।
নির্দেশক       : আগামী শ্রক্রবারই যেন বনভোজন হয়, এমন চাইছি।

অনুজ্ঞাসূচক বাক্য  নির্দেশক বাক্য


Ø অস্তিবাচক বাক্যের ক্ষেত্রে আবেগবাচক ক্রিয়াবিশেষণের পরিবর্তে পরিমাণবাচক বা অন্য কোনো ক্রিয়া বিশেষণ ব্যবহার করতে হয়।
Ø নঞর্থক ভাবের আবেগবাচক বাক্যের জিজ্ঞাসার ভাব পরিহার করতে হয় না, নয়, নাই ইত্যাদি নেতিবাচক অব্যয় ব্যবহার করে।
অনুজ্ঞাসূচক     : মন দিয়ে লেখাপড়া করো
নির্দেশক       : মন দিয়ে লেখাপড়া করতে বলছি।
অনুজ্ঞাসূচক     : ভীত হইও না।
নির্দেশক       : ভীত হওয়ার কিছু নাই।

সন্দেহবাচক বাক্য  নির্দেশক বাক্য


Ø মৌলিক অর্থের কোনো পরিবর্তন হয় না।
Ø বুঝি, বোধ হয়, যেন, হয়তো, মনে হয়, সম্ভবত ইত্যাদি সন্দেহদ্যোতক শব্দ লোপ পায়।
সন্দেহবাচক     : সে আমার নাম জানে হয়তো।
নির্দেশক       : সে আমার নাম জানে।
সন্দেহবাচক     : প্রায় চমকে উঠেছিলাম বোধ হয়।
নির্দেশক       : চমকে উঠেছিলাম

বাক্য বিশ্লেষণ

বাক্যের বিভিন্ন অংশ পৃথক করে তাদের পারস্পরিক সম্বন্ধ নির্ণয় প্রণালীকে বাক্য বিশ্লেষণ বলে।

সরল বাক্যের বিশ্লেষণ


১. মহারাজ শুদ্ধোধনের পুত্র শাক্যসিংহ যৌবনে সংসার ত্যাগ করেন।
২. ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর (রা) দীন ইসলামের জন্য তাঁর যথাসর্বস্ব দান করেছিলেন।
ওপরে লিখিত বাক্য দুটিকে উদ্দেশ্য, উদ্দেশ্যের সম্প্রসারক, বিধেয়, বিধেয়ের সম্প্রসারণ এ চারটি অংশে বিশ্লেষণ করতে হবে। যেমন:
বিশ্লেষণ
উদ্দেশ্যের সম্প্রসারক
উদ্দেশ্য 
বিধেয়ের সম্প্রসারক
বিধেয়
মহারাজ শুদ্ধোধনের পুত্র
শাক্যসিংহ
যৌবনে সংসার        
ত্যাগ করেন।
ইসলামের প্রথম খলিফা
হযরত আবু বকর (রা)
দীন ইসলামের জন্য তাঁর যথাসর্বস্ব 
দান করেছিলেন।
                                               

মিশ্র বাক্যের বিশ্লেষণ


Ø প্রথমে প্রধান বাক্যটি প্রদর্শন করতে হয়।
Ø খণ্ডবাক্য(গুলো) প্রদর্শন করে তাদের সঙ্গে প্রধান বাক্যের সম্বন্ধ উল্লেখ করতে হয়।
Ø প্রধান ও অপ্রধান খণ্ডবাক্যের মধ্যে কোনো সংযোজক পদ থাকলে তাও দেখাতে হয়। যেমন:
আমি স্থির করলাম যে, এরূপ অল্প বয়স্ক বালককে পাঠাব না। এখানে প্রধান বাক্য, ‘আমি স্থির করলাম।’; সংযোজক পদ, ‘যে’; বিশেষ্য-স্থানীয়-খণ্ডবাক্য, ‘অল্প বয়স্ক বালককে পাঠাব না।’
বিশ্লেষণ
উদ্দেশ্য
বিধেয়ের সম্প্রসারক
      বিধেয়
সংযোজক অব্যয়
আমি

স্থির করলাম   
যে
আমি(উহ্য)
অল্প বয়স্ক বালককে
পাঠাব না।
     


যৌগিক বাক্যের বিশ্লেষণ


Ø প্রত্যেকটি স্বাধীন বা নিরপেক্ষ বাক্যকে সরল বাক্যের ন্যায় বিশ্লেষণ করতে হবে।
Ø কোনো সংযোজক অব্যয় থাকলে তা প্রদর্শন করতে হবে।
বিশ্লেষণ
উদ্দেশ্য
বিধেয়ের সম্প্রসারক
বিধেয়
সংযোজক অব্যয়
ত্যাগ  
মানুষকে মুক্তির পথে
পরিচালিত করে 
এবং
জ্ঞান  
মানুষকে মুক্তির পথে
পরিচালিত করে