1. জীবাশ্ম জ্বালানি বলতে কী বুঝ
বহু প্রাচীনকালের উদ্ভিদ ও প্রানী মাটির নিচে চাপা পরে যায়। এগুলো বায়ুর অনুপস্থিতিতে প্রচন্ড চাপ ও তাপে হাজার হাজার বছরে এক ধরনের জ্বালানিতে পরিণত হয়। একে জীবাশ্ম জ্বালানি বলা হয়। যেমন: পেট্রোলিয়াম, গ্যাস ও কয়লা।
2. প্রাকৃতিক গ্যাসের শতকরা পরিমান লিখ
প্রাকৃতিক গ্যাসের শতকরা পরিমান হলো 1. মিথেন(80%) 2.ইথেন(7%) 3.প্রোপেন(6%) 4. বিউটেন ও আইসোবিউটেন(4%)
3. ইথেন ও ইথিন এর মধ্যে কোনটি কম দাহ্য
ইথেন ইথিন
ইথেন এ কার্বন কার্বন একক বন্ধন থাকে। ইথিন এ কার্বন কার্বন দ্বিবন্ধন থাকে। ইথেন ও ইথিন উভয়েই সিগমা বন্ধন বিদ্যমান থাকলেও ইথিন এ দুর্বল পাই বন্ধন বিদ্যমান থাকে। পাই বন্ধন দূর্বল র্বিধায় এটি সহজেই অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে। তাই ইথেন ও ইথিন এর মধ্যে ইথেন কম দাহ্য ।
4. অ্যালকেন, অ্যালকিন অপেক্ষা ভাল জ্বালানী কেন
অ্যালকেনে কার্বন কার্বন একক বন্ধন ও অ্যালকিনে কার্বন কার্বন দ্বিবন্ধন থাকে। একক বন্ধন থাকার কারনে অ্যালকেনে C-H বন্ধন বেশি থাকে বলে অ্যালকেন, অ্যালকিন অপেক্ষা ভাল জ্বালানী।
5. বেনজিন অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন কেন
বেনজিন ছয় সদস্যের সমতলীয় চাক্রিক যৌগ | এতে একান্তর দ্বিবন্ধন বিদ্যমান | তাই বেনজিন একটি অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন |
6. 1টি সম্পৃক্ত ও 1টি অসম্পৃক্ত অ্যালিসাইক্লিক হাইড্রোকার্বনের উদাহরণ দাও
1টি সম্পৃক্ত অ্যালিসাইক্লিক হাইড্রোকার্বন
1টি অসম্পৃক্ত অ্যালিসাইক্লিক হাইড্রোকার্বন
7. ফেনলকে অ্যারোমেটিক যৌগ বলা হয় কেন
ফেনলকে অ্যারোমেটিক যৌগ বলা হয়।
ফেনলকে অ্যারোমেটিক যৌগের মত ফেনলের আকৃতি সমতলীয় চাক্রিক। ফেনলে অ্যারোমেটিক যৌগের মত একান্তর দ্বিবন্ধন থাকে। তাই ফেনল একটি অ্যারোমেটিক যৌগ।
8. অ্যালিসাইক্লিক হাইড্রোকার্বন কী
বদ্ধ শিকল অ্যালিফেটিক হাইড্রোকার্বনকে অ্যালিসাইক্লিক হাইড্রোকার্বন বলে। এতে কার্বন কার্বন একক বা দ্বি-বন্ধন থাকতে পারে। এদের দুভাগে ভাগ করা হয়। 1.সম্পৃক্ত 2.অসম্পৃক্ত
9. কার্যকরীমূলক জৈব যৌগের ধর্ম নিয়ন্ত্রন করে
কার্যকরীমূলক সাধারণত জৈব যৌগের ধর্ম ও বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রন করে। বিক্রিয়ার প্রকৃতি নির্ধারিত হয় কার্যকরীমূলক দ্বারা এবং বিক্রিয়া শেষেও কার্যকরীমূলক পরিবর্তিত হয়।
CH3COOH+ NaOH → CH3COONa+H2O
CH3COOH + NaOH → CH3COONa+H2O
এখানে বিক্রিয়া দুটিতে বিক্রিয়কের কার্যকরীমূলকCOOH হওয়ায় এরা একইরূপে বিক্রিয়া করেছে এবং বিক্রিয়া শেষেএটি পরিবর্তিত হয়েছে। তাই কার্যকরীমূলক জৈব যৌগের ধর্ম নিয়ন্ত্রন করে।
10. অ্যারোমেটিক যৌগ বলতে কী বুঝ
আ্যরোমেটিক যৌগসমূহ সাধারণত ৫,৬ বা ৭ সদস্যের সমতলীয় চক্রীয় যৌগ । এতে একান্তর দ্বিবন্ধন থাকে অর্থাৎ কার্বন কার্বন একটি একক বন্ধন এবং একটি দ্বি-বন্ধন থাকে।
11. অ্যালকেনকে প্যারাফিন বলা হয় কেন
অ্যালকেনে কার্বন কার্বন একক বন্ধন থাকে। এগুলো সাধারনত সিগমা বন্ধন। সিগমা বন্ধন শক্তিশালী বিধায় এগুলো ভাঙতে অধিক শক্তি ব্যয় হয়। তাই এগুলো সহজে বিক্রিয়া করে না অর্থাৎ আসক্তিহীন। তাই অ্যালকেনকে প্যারাফিন বলা হয়।
12. ডিকার্বোক্সিলেশন বিক্রিয়া কী
জৈব এসিডকে সোডা লাইম দ্বারা উত্তপ্ত করলে ঐ এসিডের কার্বন সংখ্যা এক কমে যায়। এ বিক্রিয়াকে ডিকার্বোক্সিলেশন বিক্রিয়া বলে। যেমন
CH3COONa + NaOH-----→ CH4 + NaCO3
সোডিয়াম ইথানয়েট CaO, ▲ মিথেন
13. ক্যালসিয়াম কার্বাইড থেকে কীভাবে ইথাইন তৈরি করা যায়
ক্যালসিয়াম কার্বাইড পানির সাথে বিক্রিয়ায় ইথাইন তৈরি করে
CaC2 + 2H2O → CH≡CH + Ca(OH)2
ক্যালসিয়াম কার্বাইড ইথাইন
14. অ্যালকাইন সনাক্তকরনের দুইটি বিক্রিয়া ব্যাখ্যা কর
অ্যালকাইন দ্রবনের মধ্যে কয়েকফোঁটা ব্রোমিন দ্রবণ যোগ করে ঝাঁকাতে হয়। অ্যালকিন লাল বর্ণের ব্রোমিন দ্রবণের সাথে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। ফলে ব্রোমিন দ্রবণের লাল বর্ণ বিনষ্ট হয়।
এছাড়া অ্র্যালকাইন দ্রবনের সাথে KMnO4,KOH ও পানি মিশ্রিত করলে অ্যালকাইন গ্লাইকলে পরিনত হয়। যেমন:
CH2=CH2 + H2O + [O] --------→ CH2OH-CH2OH
ইথিন KMnO4+KOH ইথিলিন গ্লাইকল
15. গাঁজন প্রক্রিয়ায় কীভাবে ইথানল তৈরি করা হয়
গাজন প্রক্রিয়ায় অ্যালকোহল প্রস্তুতিতে প্রথমে স্টার্চ বা শ্বেতসারকে গ্রুকোজে পরিনত করা হয়। গ্লুকোজের জলীয় দ্রবণে ইস্ট মিশিয়ে 20-250C তাপমাত্রায় কয়েক ঘন্টা রেখে দিলে ইস্ট থেকে নিঃসৃত এনজাইম জাইমেজ এর উপস্থিতিতে গ্লুকোজের ফার্মেন্টেশনে অ্যালকোহল উৎপন্ন হয়।
C6H12O6 ------------→ CH2=CH2
জাইমেজ, 20-250C
16. ইথানলকে জৈব জ্বালানী বলা হয় কেন
ইথানল হলো একটি জৈব রাসায়নিক যৌগ, যা শ্বেতসার জাতীয় শস্য দানা যেমনঃ আলু, ভুট্টা, ইক্ষু প্রভৃতি থেকে গাজন প্রক্রিয়ার(fermentation reaction) মাধ্যমে উৎপন্ন করা যায়। এজন্য ইথানলকে জৈব জ্বালানি(bio-fuel) বলা হয়
17. মেথিলেটেড স্পিরিট কী
ইথানল এর 96% জলীয় দ্রবণকে রেকটিফাইড স্পিরিট বলে। রেকটিফাইড স্পিরিট এর সাথে সামান্য পরিমানে মিথানল যোগ করলে তা বিষাক্ত হয়। এই মিথানল যুক্ত রেকটিফাইড স্পিরিটকে মেথিলেটেড স্পিরিট বলে।
18. প্লাস্টিককে নন-বায়োডিগ্রেডেবল পদার্থ বলা হয় কেন
যে সব পদার্থ ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিয়োজিত হয় না তাকে নন-বায়োডিগ্রেবল পদার্থ বলে। প্লাস্টিক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিয়োজিত হয় না বলে একে নন-বায়োডিগ্রেডেবল পদার্থ বলা হয়।
19. PVC কে যুত পলিমার বলা হয় কেন
PVC বলতে পলিভিনাইল ক্লোরাইড বোঝানো হয়। ভিনাইল ক্লোরাইডকে জৈব পার অক্সাইড এর উপস্থিতিতে 2500C তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে পলিভিনাইল ক্লোরাইড উৎপন্ন হয়।
nCH2=CHCl -----------------→ -(CH2-CHCl)-n
ভিনাইল ক্লোরাইড উচ্চ চাপ, তাপমাত্রা,(জৈব পার অক্সাইড) পলিভিনাইল ক্লোরাইড
20. বায়োপলিমার ব্যবহার করা উচিত কেন
সাধারন পলিমার মাটিতে পচে না বলে এটি পরিবেশ দুষনের জন্য দায়ী। বায়োপলিমার সাধারনত ভুট্টা ও ইক্ষু হতে উৎপন্ন করা হয়। এগুলো মাটিতে পচে যায় বলে পরিবেশ দুষন কম হয়। তাই বায়োপলিমার ব্যবহার করা উচিত।
21. PVC পুনঃ পুনঃ ব্যবহার করা যায় কিভাবে
PVC বলতে পলিভিনাইল ক্লোরাইড বোঝানো হয়। এটি ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে গেলে তা গলিয়ে আবার নতুন জিনিসপত্র তৈরি করা যায়। এভাবেই PVC পুনঃ পুনঃ ব্যবহার করা যায়।
22. পলিমার বলতে কী বোঝায়
একই পদার্থের অসংখ্য অণু বা একাধিক পদার্থের অসংখ্য অণু পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে বৃহৎ অণু গঠন করার প্রক্রিয়াকে পলিমারকরণ বলে। এই বিক্রিয়ায় উৎপন্ন বৃহৎ অণুকে পলিমার এবং বিক্রিয়ক অসংখ্য ক্ষুদ্র অণুর প্রত্যেকটিকে মনোমার বলে।
23. পেট্রোলিয়ামের উপাদানসমূহ পৃথক করার মূলনীতি কী
পেট্রোলিয়াম মূলত হাইড্রোকার্বন ও অন্যান্য কিছু জৈব যৌগের তরল মিশ্রণ। পেট্রোলিয়ামে বিদ্যমান উপাদানের স্ফুটনাঙ্কের উপর ভিত্তি করে আংশিক পাতন পদ্ধতিতে এর বিভিন্ন অংশ পৃথক করা হয়।
24. লুব্রিকেটিং তেল বলতে কী বুঝ
আংশিক পাতন কলামের 270-3400C তাপমাত্রা অঞ্চল থেকে পেট্রোলিয়াম এর দুটি অংশ পৃথক হয়। একটি লুব্রিকেটিং তেল এবং অপরটি জ্বালানি তেল। লুব্রিকেটিং তেলএ কার্বন সংখ্যা 20-35 হয়। এ অংশকে পিছ্লিকারক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
25. ইথানল ও ডাইমিথাইল ইথার পরস্পরের সমাণু ব্যাখ্যা কর
একাধিক যৌগের আনবিক সংকেত একই হলেও গাঠনিক সংকেত ভিন্ন তারা একে অপরের সমানু।ইথানল ও ডাইমিথাইল ইথার পরস্পরের সমাণু।
এখানে উভয় যৌগের আনবিক সংকেত একই হলেও গাঠনিক সংকেত ভিন্ন। সুতরাং ইথানল ও ডাইমিথাইল ইথার পরস্পরের সমাণু।
26. CH3-OH হাইড্রোকার্বন নয় কেন
হাইড্রোজেন ও কার্বনের সমন্বয়ে গঠিত যৌগকে হাইড্রোকার্বন বলা হয়।CH3-OH যৌগে কার্বন ও হাইড্রোজেন ছাড়াও অক্সিজেন বিদ্যমান। তাই CH3-OH হাইড্রোকার্বন নয়।
27. জৈব ও অজৈব যৌগের মধ্যে পার্থক্য লিখ
জৈব যৌগ
অজৈব যৌগ
সাধারণত সমযোজী বন্ধন বিদ্যমান
সাধারণত আয়নিক বন্ধন বিদ্যমান
গলনাংক, স্ফূটনাংক নিম্ন
গলনাংক, স্ফূটনাংক উচ্চ
28. মৃক্ত শিকল হাইড্রোকার্বন বলতে কী বুঝ
যে সকল হাইড্রোকার্বনের কার্বন শিকলে কমপক্ষে দুটি প্রান্তীয় কার্বন পরমাণু থাকে তাদেরকে মুক্ত শিকল হাইড্রোকার্বন বলে। যেমন: মিথেন, ইথেন, প্রোপেন।
29. সকল হাইড্রোকার্বন জৈব যৌগ ব্যাখ্যা কর
হাইড্রোজেন ও কার্বনের সমন্বয়ে গঠিত যৌগকে হাইড্রোকার্বন বলা হয়। জৈব যৌগতে কার্বন বিদ্যমান থাকে, এদের গলনাংক, স্ফূটনাংক নিম্ন হয়। হাইড্রোকার্বনেও কার্বন রয়েছে এবং এদের গলনাংক, স্ফূটনাংক নিম্ন বিধায় সকল হাইড্রোকার্বন জৈব যৌগ।
30. জৈব যৌগে কার্বনের চতুযোজ্যতা ব্যাখ্যা কর
সাধারণত অবস্থায় কার্বনের বহিঃস্থ কক্ষপথে 2টি বিজোড় ইলেকট্রন থাকে। তব উত্তপ্ত অবস্থায় কার্বনের বিজোড় ইলেকট্রনের সংখ্যা দাড়ায় 4টিতে। এতে এরা হাইড্রোজেন বা অন্যান্য যৌগ/মৌল/যৌগমুলক এর সাথে যুক্ত হয়ে জৈব যৌগ গঠন করে। তাই জৈব যৌগে কার্বনের যোজনী চার হয়।
31. ফেনল ও অ্যালকোহলের মধ্যে কীভাবে পার্থক্য করবে
Br2 দ্রবনের সাহায্যে ফেনল ও অ্যালকোহলের মধ্যে পার্থক্য করা যায়। ব্রোমিন দ্রবনের সাথে অ্যালকোহল বিক্রিয়া করে না। কিন্তু ফেনল ব্রোমিন দ্রবণের সাথে বিক্রিয়ায় 2,4,6-ট্রাইব্রোমো ফেনলের সাদু অধঃক্ষেপ দেয়। বিক্রিয়াটি হলো
32. C4H8 যৌগটি অ্যালিসাইক্লিক না অ্যারোমেটিক ব্যাখ্যা দাও
C4H8 যৌগটি অ্যালিসাইক্লিক
এখানে এটির বদ্ধ শিকল বিদ্যমান। তবে এর একান্তর দ্বি-বন্ধন নেই। এতে সঞ্চারণশীল পাই ইলেকট্রন নেই। তাই C4H8 যৌগটি অ্যালিসাইক্লিক।
33. অ্যারোমেটিক যৌগের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ কর
• এরা চাক্রিক যৌগ
• একান্তর দ্বি-বন্ধন থাকে
• সঞ্চারণশীল ইলেকট্রন থাকে
34. অ্যালকেনসমূহকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয় কেন
অ্যালকেনে কার্বন-হাইড্রোজেন বন্ধন বেশি থাকে বিধায় এগুলোকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অ্যালকিন ও অ্যালকাইন এ বন্ধন এর সংখ্যা কম থাকে বলে এর দহনে কম শক্তি উৎপন্ন হয়। তাই অ্যালকেনসমূহকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
35. বিউটিন থেকে কীভাবে অ্যালকেন তৈরি করা যায়
বিউটিনকে নিকেল প্রভাবকের উপস্থিতিতে 1800C-2000C তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে বিউটিন থেকে বিউটেন উৎপন্ন করে।
CH3-CH=CH2 + H2 ----------→ CH3-CH2-CH3
বিউটিন Ni, 1800C-2000C বিউটেন
36. মিথেনের অপূর্ণ দহন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কেন
মিথেনের সাথে অপর্যাপ্ত অক্সিজেনের সংযোগে সংঘটিত অপূর্ণ দহনে বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস ও কালো ধোঁয়ার সাথে কার্বন কণা নির্গত হয়। এগুলো পরিবেশের এবং মানুষের শ্বাস প্রশ্বাসের মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই মিথেনের অপূর্ণ দহন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।
37. ক্লোরিনযুক্ত হাইড্রোকার্বন বিষাক্ত কেন
ক্লোরিনযুক্ত হাইড্রোকার্বন সাধারনত কীটনাশক, চেতনানাশক ও দ্রাবক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এসব যৌগের স্থায়ীত্ব অনেক বেশি বিধায় অবিযোযিত অবস্থায় জীবজন্তু তথা মানুষের খাদ্যশৃঙ্খল এ প্রবেশ করে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করে। তাই ক্লোরিনযুক্ত হাইড্রোকার্বন বিষাক্ত।
38. অ্যালকেন প্রস্তুতির 2টি বিক্রিয়া লিখ
ইথিন ও ইথাইন প্রভাবকের উপস্থিতেতে হাইড্রোজেন এর সাথে বিক্রিয়া করে ইথেন(অ্যালকেন) উৎপন্ন করে।
CH≡ CH + 2H2----------→ CH3-CH3
ইথাইন Ni, 1800C-2000C ইথেন
CH2=CH2 + H2----------→ CH3-CH3
ইথিন Ni, 1800C-2000C ইথেন
39. সমসংখ্যক কার্বন বিশিষ্ট মুক্ত শিকল অ্যালকেনের তুলনায় বদ্ধ শিকল অ্যালেকেনে হাইড্রোজেন কম কেন
অ্যালকেন এর প্রান্তীয় কার্বন পরমানু থাকে যা অধিক(3) হাইড্রোজেন ধারনে সক্ষম হয়। তবে বদ্ধ শিকল অ্যালকেনে প্রান্তীয় কার্বন পরমানু থাকে না। এতে কার্বন অন্যান্য কার্বনের সাথে বন্ধনে আবদ্ধ থাকে। ফলে এরা বেশি সংখ্যক হাইড্রোজেন ধারন করতে পারে না। তাই সমসংখ্যক কার্বন বিশিষ্ট মুক্ত শিকল অ্যালকেনের তুলনায় বদ্ধ শিকল অ্যালেকেনে হাইড্রোজেন কম হয়।
40. অ্যালকেনের ব্যবহার উল্লেখ কর
• বিভিন্ন ইঞ্জিনের জ্বালানি হিসেবে
• বিদ্যুৎ উৎপাদনে
• পিচ্ছিলকারক তেল হিসেবে
• অ্যালকেনকে মোম তৈরির জন্য
• রাস্তা পাকা করার জন্য
41. CH≡CH যৌগটি অসম্পৃক্ত কেন
অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন লাল বর্ণের ব্রোমিন দ্রবণের সাথে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। ফলে ব্রোমিন দ্রবণের লাল বর্ণ বিনষ্ট হয়। CH≡ CH যৌগটি ব্রোমিন এর সাথে বিক্রিয়া করে বিধায় এটি অসম্পৃক্ত যৌগ। যেমন:
CH≡CH + 2Br2 → CHBr2-CHBr2
ইথাইন ব্রোমিন টেট্রা ব্রোমো ইথেন
42. অ্যালকেন সহজে বিক্রিয়া করে না কেন
অ্যালকেন অণুতে কার্বন-কার্বন একক-বন্ধন থাকায় এর রাসায়নিকভাবে অত্যন্ত নিষ্ক্রিয়। কারণ একক-বন্ধনের বন্ধনটি শক্তিশালী। তাই এটি সহজে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহন করে না।
43. অজৈব যৌগ থেকেও জৈব যৌগ তৈরি করা যায় কীভাবে
ক্যালসিয়াম কার্বাইড ও পানির বিক্রিয়ায় ইথাইন উৎপন্ন হয়। বিক্রিয়াটি নিম্নরূপ
CaC2 + 2H2O → CH≡CH + Ca(OH)2
ক্যালসিয়াম কার্বাইড ইথাইন
44. অ্যালকেন পলিমারকরণ বিক্রিয়ায় অংশগ্রহন করে না কেন
অ্যালকেন অণুতে কার্বন-কার্বন একক-বন্ধন থাকায় এর রাসায়নিকভাবে অত্যন্ত নিষ্ক্রিয়। কারণ একক-বন্ধনের বন্ধনটি শক্তিশালী। তাই এটি পলিমারকরণ বিক্রিয়ায় অংশগ্রহন করে না।
45. অ্যালকিন পলিমারকরণ বিক্রিয়ায় অংশগ্রহন করে কেন
অ্যালকিন অণুতে কার্বন-কার্বন দ্বি-বন্ধন থাকায় এর রাসায়নিকভাবে অত্যন্ত সক্রিয়।কারণ দ্বি-বন্ধনের একটি বন্ধন শক্তিশালী হলেও অন্য বন্ধন তুলনামূলক দুর্বল । তাই এটি পলিমারকরণ বিক্রিয়ায় অংশগ্রহন করে।
46. জৈব যৌগে অসম্পৃক্ততা নির্ণয়ে ব্রোমিন পরীক্ষা বর্ণনা কর
সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের মধ্যে ব্রোমিন দ্রবণ যোগ করে ঝাঁকাতে হয়। সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন লাল বর্ণের ব্রোমিন দ্রবণের সাথে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না। অপরদিকে অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন লাল বর্ণের ব্রোমিন দ্রবণের সাথে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। ফলে ব্রোমিন দ্রবণের লাল বর্ণ বিনষ্ট হয়। যেমন:
CH2=CH2 + Br2 → CH2Br-CH2Br
ইথিন ব্রোমিন 1,2-ডাইব্রোমো ইথেন
CH≡CH + 2Br2 → CHBr2-CHBr2
ইথাইন ব্রোমিন টেট্রা ব্রোমো ইথেন
47. সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ কর
সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ
সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন
অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন
কার্বন-কার্বন একক বন্ধন বিদ্যমান থাকে
কার্বন-কার্বন দ্বি-বন্ধন বা ত্রি-বন্ধন বিদ্যমান থাকে
যেমন: প্রোপেন( CH3-CH2-CH3)
যেমন: প্রোপিন(CH3-CH=CH2), প্রোপাইন(CH3-C≡CH)
48. অ্যালকিন অত্যন্ত সক্রিয় কেন
অ্যালকিনসমূহ দাহ্য। অ্যালকিন অণুতে কার্বন-কার্বন দ্বি-বন্ধন থাকায় এরা রাসায়নিকভাবে অত্যন্ত সক্রিয়। কারণ দ্বি-বন্ধনের একটি বন্ধনশক্তিশালী হলেও অন্য বন্ধন তুলনামূলক দুর্বল। তাই এটি সহজে বিক্রিয়া করে। তাই এটি অত্যন্ত সক্রিয়।
49. অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন বলতে কী বুঝ
যে সমস্ত হাইড্রোকার্বনে কার্বন-কার্বন দ্বি-বন্ধন বা ত্রি বন্ধন বিদ্যমান থাকে সেগুলোকে অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন বলে। যেমন: প্রোপিন( CH3-CH=CH2), প্রোপাইন(CH3-C≡CH)
50. প্রোপিন থেকে প্রোপানল তৈরির বিক্রিয়া লিখ
প্রোপিন HClএর সাথে বিক্রিয়া করে প্রোপাইল ক্লোরাইড উৎপন্ন করে যা NaOH এর জলীয় দ্রবনের সাথে বিক্রিয়া করে প্রোপানলে পরিনত হয়।
CH3-CH=CH2 + HCl → CH3-CH2-CH2Cl + HCl
প্রোপিন প্রোপা্ইল ক্লোরাইড
CH3-CH2-CH2Cl + NaOH ---→ CH3CH2CH2OH + NaCl
প্রোপা্ইল ক্লোরাইড ▲ প্রোপানল
51. ইথেন থেকে কীভাবে ইথানল প্রস্তুত করা যায়
ইথেন আলোর উপস্থিতিতে Cl2 এর সাথে বিক্রিয়া করে ইথাইল ক্লোরাইড উৎপন্ন করে যা NaOH এর জলীয় দ্রবনের সাথে বিক্রিয়া করে ইথানলে পরিনত হয়।
CH3-CH3 + Cl2 ------→ CH3-CH2Cl + HCl
ইথেন UV ইথাইল ক্লোরাইড
CH3-CH2Cl + NaOH ----→ CH3CH2OH + NaCl
ইথাইল ক্লোরাইড ▲ ইথানল
52. উন্নত দেশে পেট্রোল এর সাথে ইথানল মিশিয়ে ব্যবহার করা হয় কেন
ইথানল জৈব জ্বালানী। এটি শ্বেতসার থেকে উৎপন্ন করা হয়। তাই এটি ফুরাবার ভয় নেই। অপরদিকে পেট্রোল একসময় ফুরিয়ে যাবে। তাই পেট্রোলের উপর চাপ কমাতে উন্নত দেশে পেট্রোল এর সাথে ইথানল মিশিয়ে ব্যবহার করা হয়।
53. ওষুধ ও খাদ্য শিল্প ব্যতীত অন্যান্য শিল্পে রেকটিফাইড এর সাথে মিথানল যোগ করা হয় কেন
মিথানল বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ। ইথানলের 96% জলীয় দ্রবণকে রেকটিফাইড স্পিরিট বলে। রেকটিফাইড স্পিরিট সামান্য মিথানল যোগে বিষাক্ত করে মেথিলেটেড স্পিরিট তৈরি করা হয়। ওষুধ ও খাদ্য শিল্পে বিষাক্ত পদার্থ ব্যবহার করা উচিত নয়। এছাড়া কাঠ এবং ধাতুর তৈরি আসবাবপত্র বার্নিশ করার জন্য মেথিলেটেড স্পিরিট ব্যবহার করা হয়।
54. ঘনীভবন পলিমার বলতে কী বুঝ
একাধিক বিক্রিয়কের অসংখ্য অণু যুক্ত হয়ে পলিমার গঠন করার প্রক্রিয়াকে ঘনীভবন পলিমারকরণ বলে। ঘনীভবন পলিমারকরণে অসংখ্য মনোমার অণু যুক্ত হওয়ার সময় পানি কার্বন ডাইঅক্সাইডের ন্যায় ক্ষুদ্র অণু অপসারিত হয়। যেমন:
nHOOC-(CH2)4-COOH + nNH2-(CH2)6-NH2------→
অ্যাডিপিক এসিড হেক্সামিথিন ডাই অ্যামিন TiO2(▲)
(-OC-(CH2)4-CONH-(CH2)6-NH-)n + nH2O
নাইলন 6:6
55. মনোমার গ্যাসীয় হলেও পলিমার কঠিন কেন
সাধারণ মনোমারসমূহ এক থেকে চার কার্বন সংখ্যা বিশিষ্ট, তাই এরা গ্যাসীয়। অপরদিকে পলিমারের কার্বন সংখ্যা 16 এর বেশি বিধায় এরা কঠিন।
56. প্লাস্টিক বলতে কী বুঝ
প্লাস্টিক শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ Plasticos থেকে। Plasticos অর্থ হলো গলানো সম্ভব। রাসায়নিক পদার্থ বিশেষত দ্বি-বন্ধন বিশিষ্ট অ্যালকিন, বিক্রিয়ার মাধ্যমে প্লাস্টিক প্রস্তুত করা হয়। বলপেন, চেয়ার ইত্যাদি তৈরিতে প্লাস্টিক ব্যবহৃত হয়।
57. থার্মোপ্লাস্টিক বলতে কী বুঝ
এক ধরনের পলিমারে কার্বন শিকলসমূহের মধ্যে দুর্বল আকর্ষণ বল কাজ করে। এই শিকলগুলো একটি অপরটির ওপর দিয়ে চলাচল করতে পারে। এ জাতীয় পলিমারকে সহজে বাঁকানো এবং তাপ প্রয়োগে গলানো যায়। এ ধরনের পলিমারকে থার্মোপ্লাস্টিক বলে। উদাহরণ: পলিথিন, PVC ইত্যাদি।
58. থার্মোসেটিং বলতে কী বুঝ
এ ধরনের পলিমারে কার্বন পরমাণুসমূহ শিকলের মধ্যে সমযোজী এবং একই সাথে পার্শ্ববর্তী শিকলের কার্বনের সাথে দৃঢ়ভাবে হাইড্রোজেন বন্ধনের মাধ্যমে যুক্ত থাকে। এ ধরনের পলিমার থার্মোসেটিং। থার্মোসেটিং প্লাস্টিক শক্ত এবং কম নমনীয়। তাপ প্রয়োগে কয়লায় পরিণত হয়। এগুলোকে একবার মাত্র গলানো এবং আকার দেওয়া যায়। যেমন: ব্যাকেলাইট, ফাইবার গ্লাস ইত্যাদি
59. নাইলন তৈরি একটি ঘনীভবন পলিমারকরণ বিক্রিয়া ব্যাখ্যা কর
একাধিক বিক্রিয়কের অসংখ্য অণু যুক্ত হয়ে পলিমার গঠন করার প্রক্রিয়াকে ঘনীভবন পলিমারকরণ বলে। ঘনীভবন পলিমারকরণে অসংখ্য মনোমার অণু যুক্ত হওয়ার সময় পানি কার্বন ডাইঅক্সাইডের ন্যায় ক্ষুদ্র অণু অপসারিত হয়। যেমন:
nHOOC-(CH2)4-COOH + nNH2-(CH2)6-NH2------→
অ্যাডিপিক এসিড হেক্সামিথিন ডাই অ্যামিন TiO2(▲)
(-OC-(CH2)4-CONH-(CH2)6-NH-)n + nH2O
নাইলন 6:6
60. সংযোজন ও ঘনীভবন পলিমারের পার্থক্য লিখ
সংযোজন ও ঘনীভবন পলিমারের পার্থক্য নিম্নরূপ
সংযোজন পলীমার
ঘনীভবন পলিমার
একই ধরনের মনোমারের অসংখ্য অণু যুক্ত হয়ে পলিমার গঠন করে
ভিন্ন ধরনের মনোমারের অণু যুক্ত হয়ে পলিমার গঠন করে
কোনো অণু অপসারিত হয় না
ক্ষুদ্র অণু অপসারিত হয়
0 comments:
Post a Comment