Recent Post
Loading...

ইতিহাস

সার্বিকভাবে বিবেচনা করলে দেখা যায় যে,ইতিহাসের নায়ক-খলনায়ক নির্ধারণের ব্যাপারটা মূলত নির্ভর করে সময় এবং ক্ষমতায়নের উপর। হিটলার যদি ২য় বিশ্বযুদ্ধে জয়ী হতো তাহলে জার্মানরা গরিমা নিয়ে পুরো বিশ্ব চষে বেড়াতো আর হিটলারের গুণকীর্তন করে তাকে ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ নায়কে পরিণত করতো।হেরে যাওয়াতেই ইতিহাস তার প্রতিকূলে চলে গেছে। ইতিহাসের কাজই হল- বিজয়ীদের দৃষ্টিভঙ্গিকে আইন এবং আদর্শে পরিণত করে তাকে নায়ক বানানো। আর বিজিতকে দৃষ্টান্ত বা শিক্ষা হিসেবে উপস্থাপন করা।ইতিহাসই বলে দেয় তাকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যম- জয় ,ক্ষমতা, সবমিলিয়ে সফলতা। এবং একমাত্র সফলতা-ব্যর্থতাই এ যাবতকাল পর্যন্ত ইতিহাসে নায়ক-খলনায়ক তৈরীর মাপকাঠি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এক্ষেত্রে সফল হওয়ার পদ্ধতিটা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই নেতিবাচক দৃষ্টিকোন থেকে বিবেচনা করা হয় না। কিন্তু আমাদের বাঙ্গালীদের ভীষণ স্পর্শকাতর আক্ষেপ এবং বিতর্কের বিষয় হল-ক্ষমতার পরিবর্তের সাথে সাথে ইতিহাসের ওলট-পালট ;অনেকেই এটাকে বিকৃত বলে থাকেন। ব্যাপারটা পুরোপুরি ঠিক না।
বাল্মিকি "রামায়নে" রামকে বীরের স্থান দিয়েছেন তার বীরগাথা গুণকীর্তন করে। অথচ একই ইতিহাস অক্ষত রেখে মধুসূদন দত্ত "মেঘনাদবধ" মহাকাব্যে রাবণকে বীর বানিয়েছেন রাবণের বীরগাথা ফুটিয়ে তুলে। তাই ইতিহাসের নায়ক কে সেটা সবচেয়ে বেশী নির্ভর করে কে কোন দৃষ্টিকোণ থেকে ইতিহাসকে দেখছেন এবং কোন সময়টাকে ইতিহাসের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে ভাবছেন। কারো দৃষ্টিভঙ্গিই মিথ্যা নয়! যদি না একইসময়ে এক কালজয়ীকে আরেক কালজয়ীর উপরে ওভারল্যাপিং না করে কিংবা অবদানের স্বীকৃতি নিয়ে টানা হেঁচডা না করে।
ইতিহাস সবসময়ই বিজয়ীর গুণকীর্তন করে, বিজয়ীরা ভাগ্যবান। আর ভাগ্য সবসময় যোগ্যদের সাথেই থাকে।


 Credit

Fazlur Rahman

Noakhali Science and Technology University

0 comments:

Post a Comment