Recent Post
Loading...

পানিতে দ্রবীভূত হয় না। কারণ CCl4 বা কার্বন টেট্রা ক্লোরাইড হচ্ছে সমযোজী যৌগ। কিছু ব্যাতিক্রম যৌগ যেমন: চিনি, গ্লুকোজ, অ্যালকোহল ছাড়া সমযোজী যৌগ গুলো সাধারণত পানিতে দ্রবীভূত হয় না।

এখন কেন সমযোজী যৌগ পানিতে দ্রবীভূত হয় না তা ব্যাখ্যা করা যাক-

পানি একটি সমযােজী যৌগ অর্থাৎ পানির অণুতে একটি অক্সিজেন পরমাণুর সাথে দুটি হাইড্রোজেন পরমাণু ইলেকট্রন শেয়ারের মাধ্যমে সমযােজী বন্ধনে আবদ্ধ থাকে । কিন্তু অক্সিজেন পরমাণু হাইড্রোজেন পরমাণু থেকে অধিক তড়িৎ ঋণাত্মক হওয়ায় পানির অণুর সমযােজী বন্ধনীতে ব্যবহৃত ইলেকট্রন দুটি অক্সিজেনের দিকে সামান্য পরিমাণ সরে যায় । যে কারণে অক্সিজেন পরমাণু আংশিক ঋণাত্মক আধান ও হাইড্রোজেন পরমাণু আংশিক ধনাত্মক আধান প্রাপ্ত হয় । অর্থাৎ পানির অণুতে আংশিক ধনাত্মক এবং আংশিক ঋণাত্মক প্রান্তের সৃষ্টি হয় । এরকম ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আধানপ্রাপ্ত সমযােজী যৌগকে পােলার সমযােজী যৌগ বলে । সুতরাং পানি একটি পােলার সমযােজী যৌগ এবং দ্রাবক হিসেবে পানি একটি পােলার দ্রাবক ।

চিত্রে+δ(প্লাস ডেলটা ) ও – δ ( মাইনাস ডেলটা ) দিয়ে যথাক্রমে আংশিক ধনাত্মক আধান এবং আংশিক ঋণাত্মক আধানকে বােঝানাে হচ্ছে ।

কিন্তু অপরদিকে সহযোগী যৌগ CCl4 এর সাধারণত ধনাত্মক ও ঋণাত্মক প্রান্তের সৃষ্টি হয় না। কারণ, C এবং Cl উভয়েই অষ্টক পূর্ণ হতে চারটি ইলেক্ট্রনের প্রয়োজন ছিল এজন্য তারা ইলেক্ট্রন ভাগাভাগি করে নেয়। তাই তাদের কেউ আলাদা ভাবে ভেঙে অ্যানায়ন বা ক্যাটায়ন হতে পারে না। আবার এই CCl4 এর গাঠনিক সংকেত লক্ষ করলে দেখা যাবে যে C কে কেন্দ্র করে থাকা চারটি Cl পরমাণু পরস্পরের একদম বিপরীতে অবস্থান করে, ফলে তারা কেন্দ্রের মুক্ত ইলেকট্রনের প্রতি প্রতিটি Cl পরমাণুর আকর্ষণ নস্যাৎ করে দেয়। এতে ঐ মুক্ত ইলেকট্রনগুলো কোনো একটি নির্দিষ্ট Cl পরমাণুর দিকে আকর্ষিত হতে পারেনা। তাই আংশিক ধনাত্মক ও আংশিক ঋণাত্মক আধানও সৃষ্টি হতে পারেনা। এতে CCl4 এর পোলার সমযোজী হওয়ার সম্ভাবনাও নাকচ হয়ে যায়। তাই পানি অনুর ধনাত্মক ও ঋণাত্মক প্রান্তের সাথে সমযোজী যৌগ CCl4 এর আকর্ষন বিকর্ষন ঘটে না। এজন্য সমযোজী যৌগ CCl4পানিতে আয়ন আকারে ভেঙে না গিয়ে অক্ষত থাকে অর্থাৎ পানিতে দ্রবীভূত হয় না।



যেমন দ্রব্য তেমনই দ্রাবক।

পোলার দ্রাবক পোলার দ্রবনে দ্রবীভুত হয়। পানি একটি পোলার দ্রাবক৷ HCl সমযোজী বন্ধনে গঠিত কিন্তু একটি পোলার যৌগ৷ H হতে Cl এর তড়িত ঋণাত্নকতার মান বেশি৷ তাই ইলেকট্রনগুলো Cl এর দিকেই থাকে। তাই সেখানে আংশিক ঋণাত্নকতা সৃষ্টি হয় এবং H এ আংশিক ধনাত্নকতা সৃষ্টি হয়৷ ফলে তা একটি পোলার যৌগ।

এ পোলার যৌগকে যখন পানিতে দ্রবীভুত করা হয় তখন পানির ধনাত্নক প্রান্ত HCl এর ঋণাত্নক প্রান্তের দিকে এবং পানির ঋণাত্মক প্রান্ত HCl এর ধনাত্নক প্রান্তের দিকে থাকে। এভাবে HCl পানিতে দ্রবীভুত হয়।


HCl একটি পোলার যৌগ।কেননা H হতে Cl এর তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান বেশি৷ তাই ইলেকট্রন মেঘ Cl এর দিকেই আকৃষ্ট থাকে । তাই Cl এ আংশিক খণাত্মক প্রান্তেের সৃষ্টি হয় এবং H এ আংশিক ধনাত্মক প্রান্তের সৃষ্টি হয়৷ ফলে তা একটি পোলার যৌগ। ঠিক তেমনি H2O একটি পোলার দ্রাবক ।তাই HCl সমযোজী যৌগ হলেও, পানিতে দ্রবীভূত হয় হয়।


পানি একটি সমযােজী যৌগ। পানির অণুতে একটি অক্সিজেন পরমাণুর সাথে দুটি হাইড্রোজেন পরমাণু ইলেকট্রন শেয়ারের মাধ্যমে সমযােজী বন্ধনে আবদ্ধ। কিন্তু অক্সিজেন পরমাণু হাইড্রোজেন পরমাণু থেকে অধিক তড়িৎঋণাত্মক (অক্সিজেন=3.5, হাইড্রোজেন=2.1) হওয়ায় পানির অণুর সমযােজী বন্ধনীতে ব্যবহৃত ইলেকট্রন দুটি অক্সিজেনের দিকে সামান্য পরিমাণ সরে যায় । যে কারণে অক্সিজেন পরমাণু আংশিক ঋণাত্মক আধান ও হাইড্রোজেন পরমাণু আংশিক ধনাত্মক আধান প্রাপ্ত হয় । অর্থাৎ পানির অণুতে আংশিক ধনাত্মক এবং আংশিক ঋণাত্মক প্রান্তের সৃষ্টি হয় । এরকম ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আধানপ্রাপ্ত সমযােজী যৌগকে পােলার যৌগ বলে । আবার HCl-এর ক্ষেত্রেও অনুরূপ ঘটনা ঘটে। এটি একটি সমযোজী যৌগ। কিন্তু হাইড্রোজেন এবং ক্লোরিনের তড়িৎ ঋণাত্মকতার পার্থক্য থাকার জন্য ক্লোরিন পরমাণু নিজের দিকে হাইড্রোজেন এর পরমাণুকে আকৃষ্ট করে। যার ফলে আংশিক পোলারিটির সৃষ্টি হয় (ক্লোরিন=3, হাইড্রোজেন=2.1)। যেহেতু পানি এবং HCl উভয়ে বিশুদ্ধ সমযোজী যৌগ নয় সেহেতু HCl পানিতে দ্রবীভূত হয়।



অ্যালকোহল পানিতে দ্রবণীয়। এর কারণ হল-

অ্যালকোহলে হাইড্রোক্সিল(OH) গ্রুপের উপস্থিতির কারণে পানির অণু তে থাকা আয়নের সাথে হাইড্রোজেন বন্ড গঠন করতে সক্ষম হয়। ছোট হাইড্রোকার্বন চেইনযুক্ত অ্যালকোহলগুলি খুব দ্রবণীয়। হাইড্রোকার্বন চেইনের দৈর্ঘ্য বাড়ার সাথে সাথে পানিতে দ্রবণীয়তা হ্রাস পায়।


সবসময় মনে রাখবেন "যেমন দ্রাবক তেমন দ্রব্য "।

অ্যালকোহল পোলার যৌগ এবং পানিও পোলার যৌগ। এ দুটি পোলার যখন বিক্রিয়া করবে তখন পানির ধনাত্নক প্রান্ত অ্যাএলকোহলের ঋণাত্নক প্রান্তের কাছাকাছি অবস্থান করে। তেমনি পানির ঋনাত্নক প্রান্তের সামনে অ্যাএলকোহলের ধনাত্নক প্রান্ত অবস্থান করে। এভাবে দ্রবীভুত হয় ।

Al2O3 শুধুমাত্র অম্লধর্মী অক্সাইড নয়, এটি একটি উভধর্মী অক্সাইড!

ধাতুর যে সকল অক্সাইড এসিড ও ক্ষারকের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে তাদেরকে উভধর্মী অক্সাইড বলে।

অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড(Al2O3) কস্টিক সোডার (NaOH) সাথে বিক্রিয়া করে সোডিয়াম অ্যালুমিনেট এবং পানি উৎপন্ন করে।

Al2O3+2NaOH2NaAl2+H2O

আবার, Al2O3 বা অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড হাইড্রোক্লোরিক এসিড বা HCl এর সাথে বিক্রিয়া করে অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড ও পানি উৎপন্ন করে।




দেখুন যেকোন অক্সাইড অম্লধর্মী না ক্ষারধর্মী তা বুঝার জন্য আমরা দুইটা উপায়ে কাজ করি

  1. উক্ত অক্সাইডের সাথে এসিড বা ক্ষার বিক্রিয়া করে দেখতে হবে অক্সাইড কার সাথে বিক্রিয়া করে। অক্সাইড টি যদি অম্লীয় হয় তবে সে ক্ষারের সাথে বিক্রিয়ায় লবন পানি উৎপন্ন করবে। আর যদি অক্সাইড টি ক্ষারীয় হয় তবে তা অম্লের সাথে বিক্রিয়ায় লবন পানি উৎপন্ন করবে।
  2. উক্ত অক্সাইডকে পানির সাথে বিক্রিয়া করতে হবে। পানির সাথে বিক্রিয়ায় যদি উৎপাদে শুধু অম্ল উৎপন্ন হলে অক্সাইড টি অম্লীয় অথবা শুধু ক্ষার উৎপন্ন হয় তাহলে অক্সাইড টি ক্ষারীয়। আবার যদি উৎপাদে অম্ল এবং ক্ষার দুইটাই উৎপন্ন হয় তাহলে দেখতে হবে অম্ল এবং ক্ষারের মধ্যে কোনটি শক্তিশালী। যদি অম্ল শক্তিশালী হয় তাহলে অক্সাইড টি অম্লীয় আর যদি ক্ষার শক্তিশালী হয় তাহলে অক্সাইড টি ক্ষারীয়।

এই দুই পদ্ধতির যেকোন একটা ব্যবহার করেই বলা যায় এলোমিনিয়াম অক্সাইড টি অম্লীয় না ক্ষারীয়।