চৈত্রের তীব্র তাপদাহ, তার ওপর লক্ষ্মীপুরে রেকর্ড পরিমাণ লোডশেডিংয়ে নাভিশ্বাস ওঠেছে জনজীবনে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বাড়লেও লক্ষ্মীপুরে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না পাওয়ায় জেলার কর্তাব্যক্তিদের ব্যর্থতার প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। লক্ষ্মীপুরে এখন শহর আর গ্রামে সমান্তরালে চলছে লোডশেডিং। জেলা শহরেও একই অবস্থা। তাহলে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সংসদ সদস্য এবং জেলা প্রশাসন কী দায়িত্ব পালন করছেন, এনিয়ে বিস্তর অভিযোগ সাধারণ মানুষের।
গ্রামে রাতের টানা লোডশেডিংয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা এখন অনেকটা লাটে ওঠেছে। অপরদিকে দিনের অব্যাহত লোডশেডিংয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বিদ্যুৎ গ্রাহকরা এখন রশিকতা করে বলছেন, বিদ্যুৎ মাঝে মাঝে যায়না, বিদ্যুৎ এখন মাঝে মাঝে আসে।
শীতকালে যখন বিদ্যুতের ব্যবহার কম থাকে তখন লোডশেডিংয়ের পরিমাণ কম থাকে; গরমকালে যখন চব্বিশ ঘণ্টা বৈদ্যুতিক পাখা চালানোর প্রয়োজন হয়, তখন লোডশেডিংয়ের মাত্রা চরমভাবে বেড়ে যায়।
অপরদিকে দিনে অফিস-আদালত, কলকারখানা, দোকানপাট, সব একসঙ্গে খোলা থাকায় চাহিদামতো বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি থাকলেও রাতে যখন এসব কিছুই খোলা থাকে না, তখন বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি হওয়ার কথা নয়। অথচ সন্ধ্যায় যখন ছাত্রছাত্রীরা পড়তে বসে আর শ্রমজীবী মানুষ দিনের পরিশ্রম শেষে রাতে একটু ঘুমাতে যায়, তখন বিদ্যুৎ অপ্রত্যাশিতভাবে দিনের মতোই আসা-যাওয়ার খেলায় মেতে ওঠে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় নোয়াখালীর চৌমুহনী গ্রীড থেকে। তারা তাদের জেলার চাহিদা বলবৎ রেখেই লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছেন। লক্ষ্মীপুরের পার্শ্ববর্তী জেলা চাঁদপুরে বিদ্যুতের অতটা লোডশেডিং নেই। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, তাহলে লক্ষ্মীপুরের সাথে কেন এমন বিমাতাসুলভ আচরণ করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুতের লোড ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এজিএম (কম) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, লক্ষ্মীপুরে ৪৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে ২৪ মেগাওয়াট। যার ফলে বাধ্য হয়ে লোড ম্যানেজমেন্ট করা হচ্ছে। তবে তিনি বলেন, চলতি বছরের ১৮ ডিসেম্বর নাগাদ রামগঞ্জে স্থানীয় পাওয়ার গ্রীডের কাজ সম্পন্ন হলে লক্ষ্মীপুরে লোডশেডিং একেবারে কমে যাবে।
Credit : Amar Sangbad
0 comments:
Post a Comment