Recent Post
Loading...

প্রথমে চলুন জেনে নেওয়া যাক ভর সংখ্যা ও পারমাণবিক সংখ্যা কি।

পারমাণবিক সংখ্যাঃ- পরমাণুর নিউক্লিয়াসে যতগুলো প্রোটন থাকে তাই তার পারমাণবিক সংখ্যা। একটি মৌলের সাথে আরেকটি মৌলের পার্থক্য এই পারমাণবিক সংখ্যায়। একে সাধারণত ইংরেজী Z বর্ণ দ্বারা প্রকাশ করা হয়ে থাকে।

ভর সংখ্যাঃ- পরমাণুর নিউক্লিয়াসে প্রোটন ও নিউট্রনের মোট সংখ্যাকে ভর সংখ্যা বলে। অর্থাৎ ভর সংখ্যা (A) = প্রোটন সংখ্যা (Z) + নিউট্রন সংখ্যা (N)। প্রোটন ও নিউট্রনের সংখ্যার এই যোগফলকে ভর সংখ্যা বলার কারণ পরমাণুর মোট ভরের প্রায় পুরোটার জন্যই তারাই দায়ী। ইলেকট্রনের ভর অতি নগণ্য। একটি ইলেকট্রনের ভর, একটি প্রোটনের ভরের প্রায় ১৮৩৭ ভাগের এক ভাগ। ঐদিকে প্রোটন ও নিউট্রনের ভর প্রায় সমান। তাই পরমাণুর ভর গণনায় ইলেকট্রনের ভরকে বাদ দেওয়া হয়।

এবার পর্যায় সারণির প্রথম কয়েকটি মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা ও ভর সংখ্যা দেখা যাকঃ-


দেখতে পাচ্ছেন প্রথম বিশটি মৌলগুলোর মধ্যে কয়েকটি মৌলের ভর সংখ্যা পারমাণবিক সংখ্যার দ্বিগুণ। এর কারণ হচ্ছে, ঐসব মৌলগুলোর নিউক্লিয়াসে সমান সংখ্যক প্রোটন ও নিউট্রন রয়েছে। যেমন ম্যাগনেসিয়ামের কথাই ধরুন। এর পারমাণবিক সংখ্যা, Z = 12 এবং ভর সংখ্যা, A = 24. মৌলটির নিউক্লিয়াসে প্রোটন রয়েছে ১২টি এবং নিউট্রনও রয়েছে (২৪ - ১২ = )১২টি।

বাকি মৌলগুলোতে ব্যাপারটি এরকম না হলেও এদের ভর সংখ্যা পারমাণবিক সংখ্যার দ্বিগুণের কাছাকাছি। এই বাক্যটিকে এভাবেও বলা যায় - এইসব মৌলগুলোর নিউট্রন সংখ্যা প্রোটন সংখ্যার প্রায় সমান।

কিন্তু যতই পারমাণবিক সংখ্যা বাড়তে থাকে অর্থাৎ যতই আমরা পর্যায় সারণির শেষের দিকে অগ্রসর হতে থাকব ততই কিন্তু প্রোটন ও নিউট্রন সংখ্যার তারতম্য ঘটতে থাকে। ব্যাপারটিকে আমরা একটি চিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করতে পারি।

চিত্র -১: নিউট্রন সংখ্যা বনাম পারমাণবিক সংখ্যা লেখ।[1]

লাল রংয়ের যে সরল রেখাটি দেখা যাচ্ছে সেটি, নিউট্রন সংখ্যা : প্রোটন সংখ্যা = ১ : ১ অনুপাত নির্দেশ করছে। লাল রংয়ের ফোটাগুলো একেকটি মৌলকে বোঝাচ্ছে। আর হালকা লাল রংয়ের অঞ্চলটি স্থিতিশীল মৌলগুলোর অবস্থান দেখাচ্ছে। খেয়াল করুন, প্রথম দিকে (পারমাণবিক সংখ্যা < 20) মোটামুটি সবগুলো ফোটাই সরলরেখার উপরে অবস্থিত অর্থাৎ এসব মৌলের নিউট্রন ও প্রোটনের অনুপাত ১:১।

কিন্তু যতই প্রোটন সংখ্যা বাড়ছে (অর্থাৎ উচ্চ পারমাণবিক সংখ্যা বিশিষ্ট মৌল) ততই এই অনুপাত লঙ্ঘিত হচ্ছে (বিন্দু গুলো আর সরলরেখার উপর থাকছে না)। এক্ষেত্রে নিউট্রনের সংখ্যা প্রোটন সংখ্যার চেয়ে বেশী হয়ে যাচ্ছে। যেমন- জিরকোনিয়াম (Zr) এর বেলায় পারমাণবিক সংখ্যা ৪০ এবং ভর সংখ্যা ৯০। ফলে এর নিউক্লিয়াসে নিউট্রন রয়েছে = ৯০ - ৪০ = ৫০ টি। এর নিউট্রন ও প্রোটনের সংখ্যার অনুপাত হয়ে যাচ্ছে ১.২৫ : ১। টিন (Sn) এর বেলায় এই অনুপাত ১.৪ : ১। পারদের বেলায় এটি আরও বেশী ১.৫ : ১।

কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? কি জন্যে প্রোটন ও নিউট্রনের সংখ্যা সমান রইলো না? কেনই-বা শুধু নিউট্রন সংখ্যা বেশী হয়ে যাচ্ছে, কম হলো না কেন?

উত্তরটি দেবার আগে একটি উদাহরণ কল্পনা করা যাক। আপনি দুটি চুম্বক নিলেন। এবার চুম্বকগুলোর একই মেরু কাছাকাছি আনার চেষ্টা করছেন। কি হবে? আপনি এগুলোকে একজায়গায় রাখতে পারবেন না। ছেড়ে দেবার সাথে সাথে চুম্বকগুলো দূরে সরে যাবে। কারণ চুম্বকের সমমেরু একে অপরকে বিকর্ষণ করে। তবে এগুলোকে যদি একই জায়গায় এবং গায়ে গায়ে লাগিয়ে রাখতে চান, আপনাকে এবার বল প্রয়োগ করে জোড় করে চুম্বকগুলোকে ধরে রাখতে হবে যা এই বিকর্ষণ বলকে পরাভূত করবে।

এবার পরমাণুতে ফিরে আসা যাক। নিউক্লিয়াসে যে দুইটি কণা থাকে তার মধ্যে শুধু প্রোটনের আধান রয়েছে। অপরদিকে নিউট্রন হচ্ছে আধানহীন। আমরা জানি সমধর্মী আধান পরস্পরকে বিকর্ষণ করে থাকে ঠিক চুম্বকের সমমেরুর মতই। নিউক্লিয়াসের ছোট্ট জায়গায় প্রোটনগুলো যখন অবস্থান করে তখন এই কুলম্বের তড়িৎচৌম্বক বিকর্ষণ বল এদেরকে একত্রে থাকতে দিতে চায় না। উদাহরণে যেমন আপনার প্রয়োগকৃত বল দিয়ে চুম্বকগুলোর বিকর্ষণ বলকে দমিয়ে রেখেছিলেন এরকম কোনো বল যদি পরমাণুতে না থাকে তবে নিউক্লিয়াস তৈরী হতে পারবে না।

আশার কথা, এরকম একটি বল রয়েছে। সেটি হচ্ছে চারটি মৌলিক বলের আরেকটি - সবল নিউক্লিয় বল। যখন দুটি কণিকা একে অপরের খুব নিকটে আসে এই বল কাজ করে। আর এই বলটি আকর্ষণ ধর্মী এবং তা তড়িৎ চৌম্বক বলের চেয়েও শক্তিশালী। নিউট্রন গুলো নিজেদের সাথে এবং প্রোটনদের সাথে সবল নিউক্লিয় বলের মাধ্যমে নিউক্লিয়াসকে স্থিতিশীলতা দান করে। অনেকটা যেন আঠা দিয়ে নিউট্রনগুলো প্রোটনগুলোকে নিজেদের সাথে আটকিয়ে রাখে।

চিত্র-২: নিউক্লিয়াসের স্থিতিশীলতা।[2]

যখন নিউক্লিয়াসে প্রোটন কম থাকে তখন এদের মধ্যকার বিকর্ষণ বল কম থাকে। ফলে নিউক্লিয়াসের স্থিতিশীলতার জন্য নিউট্রনের সংখ্যাও কম থাকে। প্রতিটি প্রোটনের বিপরীতে একটি নিউট্রন হলে চলে যায়। তবে নিউট্রন সংখ্যা প্রোটনের চেয়ে কম হলে সেটি সম্ভব নয়। তাই নিউট্রন সংখ্যা সর্বদাই প্রোটনের সমান বা তার বেশী থাকতে হবে। (ব্যতিক্রমঃ হাইড্রোজেন পরমাণু। এখানে একটিমাত্র প্রোটন। তাই বিকর্ষণের প্রশ্ন আসে না। ফলে নিউট্রনেরও প্রয়োজন নেই)

এখন পরমাণুতে প্রোটন যত বাড়তে থাকে বিকর্ষণ বলের মানও তত বাড়তে থাকে। কিন্তু এবার প্রোটনের সমান সংখ্যক নিউট্রন দিয়ে নিউক্লিয়াসটিকে বেঁধে রাখা সম্ভব নয়। এর কারণ হলো তড়িৎ চুম্বক বল এর পাল্লা অনেক বড় (অসীম)। নিউক্লিয়াসের একটি প্রোটন তার দূরবর্তী প্রোটনের উপরও বিকর্ষণ বল প্রয়োগ করতে পারে অন্যদিকে সবল নিউক্লিয় বলের পাল্লা অনেক কম (১ ফেমটোমিটার)।[3] তাই একটি নিউট্রন শুধুমাত্র তার নিকটবর্তী প্রোটন ও নিউট্রনের উপর এই আকর্ষণ বল প্রয়োগ করতে পারে। তাই এই তড়িৎ চৌম্বক বিকর্ষণ বলটিকে মোকাবেলা করার জন্য প্রোটনের চেয়ে বেশী সংখ্যক নিউট্রনের প্রয়োজন পরে। একারণে পর্যায় সারণির শুরুতে পরমাণুর নিউক্লিয়াসে প্রোটন ও নিউট্রনের সংখ্যা সমান হলেও উচ্চ পারমাণবিক সংখ্যা বিশিষ্ট পরমাণুতে স্থায়িত্বের জন্য নিউট্রন সংখ্যা অনেক বেশী হয়।



এখানে Cl এর p তে ৫ টি e- আছে।। p অরবিটালের জন্য ঘর আছে ৩ টি,প্রত্যেক ঘরে ২ টি e- এর বেশি প্রবেশ করতে পারবে নাহ।। ৩ টি ঘরে ৫ টি e- আপনি যেভাবেই প্রবেশ করান না কেন, ২ টা তে ২ টা করে e- দিতে হবে, বাকি ১ টা অন্য ঘরে।। প্রত্যেক ঘরে যদি ১ টা করে e- দেন,, তাহলে ৩ টা তে ৩ টা e- দিয়ে বাকি ২ টা যে কোন ২ টা তে দিতে হবে।। একটা ঘরে ১ টা e- থাকবে।। এর জন্য Cl এর ক্ষেত্রে হুন্ডের নিয়ম লাগে না।


কোন মৌলের সাধারণ ইলেক্ট্রন বিন্যাস হল কোন শক্তি শোসন করার আগে হুন্ডের নীতি মেনে যে ইলেক্ট্রন বিন্যাস হয় সেটা।

আর উত্তেজিত অবস্থায় ইলেক্ট্রন শক্তি শোসন করে যুগ্ম থেকে অযুগ্ম হয়ে যায় এবং অন্য অরবিটালে প্রবেশ করে। এর ফলে নতুন যে বিন্যাস হয় সেটি হুন্ডের নীতি মেনে চলে না এবং এটিই হল উত্তেজিত অবস্থায় ইলেক্ট্রন বিন্যাস। p block মৌলে এই প্রবণতা বেশি।



আইসোপ্রোপাইল আ্যলকোহল বা IPA (isopropyl alcohol) এর নাম ইদানিং বেশি বেশি শোনা যাচ্ছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রস্তুত করতে এর প্রয়োজনের কারণে।

এটি একটি জৈব যৌগ। IUPAC নিয়মমতে এর নাম প্রপান-২-অল। এর গাঠনিক সঙ্কেত এরকমঃ

ঘরে বসে এই আইসোপ্রোপাইল আ্যলকোহল প্রস্তুত করা যায়না। প্রপিলিনের বিক্রিয়ায় সাধারণত এটি তৈরি করা হয়। এছাড়া এসিটোন থেকেও এটি পাওয়া সম্ভব।

মোট কথা আইসোপ্রোপাইল আ্যলকোহল আপনি বানাতে পারবেন নিচের উপায়ে-

১) প্রপিলিনের সাথে পানি যুক্ত করে- hydration of propylene

ক) indirect

আইসোপ্রোপাইল আ্যলকোহল তৈরির জন্য এটাই প্রথম ব্যবহৃত বিক্রিয়া। প্রপিলিনের সাথে পানি যুক্ত করে এই বিক্রিয়া ঘটানো হয়।

এটি দুই ধাপে ঘটে তাই একে ইনডিরেক্ট মেথড বলা হয়। এর আরেক নাম সালফিউরিক এসিড পদ্ধতি কারণ এতে সালফিউরিক এসিডের ব্যবহার আছে। বিক্রিয়াটি এমন-

খ) direct

প্রভাবকের উপস্থিতিতে উচ্চ তাপমাত্রা ও চাপে প্রপিলিনের সাথে জলীয় বাষ্পের বিক্রিয়া ঘটানো হয়[1] -

৩) প্রভাবকের উপস্থিতিতে এসিটোনের সাথে হাইড্রোজেন যুক্ত করে- catalytic hydrogenation of acetone

এসিটোনের সাথে হাইড্রোজেন যুক্ত করতে পারলে আইসোপ্রোপাইল আ্যলকোহল তৈরি হয়। এর জন্য ধাতব প্রভাবকের উপর উচ্চ তাপমাত্রা ও চাপে হাইড্রোজেন ও এসিটোনের বিক্রিয়া ঘটানো হয়।[2]

এই বিক্রিয়াগুলোই অনুসরন করে শিল্প-কারখানায় অতি প্রচলিত এই দ্রাবক আইপিএ তৈরি করা হয়।



প্রথমেই আপনার স্থিতিশীলতার ব্যাখ্যা দেই। তারপর বিস্তারিত বলি।

Cu²+ আয়নের সর্ববহিঃস্থ কক্ষের 3s ও 3p উপকক্ষ দুটি ইলেকট্রন দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে কিন্তু 3d উপকক্ষে ইলেকট্রন থাকে মাত্র 9টি। অর্থাৎ, 3d উপকক্ষটি ইলেকট্রন দ্বারা পরিপূর্ণ বা অর্ধপূর্ণ এর মধ্যেই এর কোনোটিই নয়। সুতরাং, Cu+ আয়নের স্থায়িত্ব Cu²+ আয়নের স্থায়িত্ব অপেক্ষা বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। এক্ষেত্রে কিন্তু নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটে। Cu+ আয়নের নিউক্লিয়াসের 29টি প্রোটন 28টি ইলেকট্রন কে অপেক্ষাকৃত কম বল দ্বারা নিউক্লিয়াসের দিকে আকর্ষণ করে। পক্ষান্তরে, Cu²+ আয়নের ক্ষেত্রে 29টি প্রোটন 27টি ইলেকট্রন কে অপেক্ষাকৃত আরো বেশি বল দ্বারা নিউক্লিয়াসের দিকে আকর্ষণ করে। সুতরাং, উপকক্ষ ইলেকট্রন দ্বারা পূর্ণ বা অর্ধপূর্ণ নিয়মটির ব্যাতিক্রম ঘটিয়ে Cu²+ আয়ন, Cu+ আয়ন অপেক্ষা বেশি সুস্থিত হয়। তাই Cu এর যোজনী 1 অপেক্ষা 2 বেশি স্থায়ী হয়।

বিস্তারিত:

সাধারণ অবস্থায় একটি মৌল তখনই স্থিতিশীলতা অর্জন করে যখন তার শক্তিস্তরে কাঙ্ক্ষিত সংখ্যক ইলেকট্রন অর্জিত হয়। যার মান ১ম শক্তিস্তরে ২টি, ২য় শক্তিস্তরে ৮টি, ৩য় শক্তিস্তরে ৮ বা ১৮ টি ইলেকট্রন ইত্যাদি। এছাড়াও মৌলের স্থিতিশীল ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জনের কিছু নিয়ম আছে। যেমন:

ইলেকট্রন সর্বদা এর নিম্নতম শক্তিস্তরগুলোতে প্রবেশ করে এবং ক্রমান্বয়ে উচ্চতর শক্তিস্তরে প্রবেশ করে। ক্রমটি হলো: 1s<2s<2p<3s<3p<4s<3d<4p<5s<4d<5p<6s<4f<5d<6p<7s। ( আউফবাউ নীতি অনুসারে )

আবার অসম্পূর্ন বা আংশিক পূর্ণ অরবিটাল অপেক্ষা অর্ধপূর্ণ বা পরিপূর্ণ শক্তি স্তর বিশিষ্ট ইলেকট্রন বিন্যাস অধিক সুস্থিত।

এছাড়াও একই শক্তিসম্পন্ন শক্তিস্তরে ইলেকট্রনগুলো এমন ভাবে প্রবেশ করে যেন তারা সর্বাধিক বিজোড় অবস্থায় থাকতে পারে এবং এই বিজোড় ইলেকট্রনগুলোর স্পিন একমুখী হয়। ( হুন্ডের নীতি অনুসারে )

Cu(29) এর সাধারণ অবস্থায় ইলেকট্রন বিন্যাস:

Cu(29) → 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s¹ 3d¹⁰

→ 2, 8, 18, 1

এখানে, 4s ও 3d শক্তিস্তর দুটি একই শক্তিসম্পন্ন শক্তিস্তর নয় ( 3d=3+2=5, 4s=4+0=4 )। তাই আউফবাউ নীতি অনুসারে 4s² 3d⁹ অর্থাৎ নিম্ন শক্তিস্তর আগে পূর্ণ হওয়ার কথা। কিন্তু 3d⁹ একটি আংশিক পূর্ণ অরবিটাল হওয়ায় ইলেকট্রন বিন্যাস 4s¹ 3d¹⁰ হয়েছে। ফলে 4s অরবিটালটি অর্ধপূর্ণ ও 3d অরবিটালটি পরিপূর্ণ হয়েছে এবং Cu একটি সুস্থিত ইলেকট্রন কাঠামো অর্জন করেছে।

কোন মৌল যৌগ গঠনের সময় তার সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তর থেকে যে কয়টি ইলেকট্রন ত্যাগ, গ্রহণ বা শেয়ার করে তাকে ওই মৌলের যোজনী বলা হয়।

তাহলে সাধারন অবস্থায় Cu এর সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তর অর্থাৎ ৪র্থ শক্তিস্তর থেকে ১টি ইলেকট্রন ত্যাগ করে যোজনী ১ প্রদর্শন করে। এটি হলো Cu এর সাধারণ অবস্থায় প্রদর্শিত যোজনী।

এখন আমরা যদি Cu কে কিছুটা শক্তি প্রদান করি তাহলে Cu এর সমশক্তিস্তর গুলোর ইলেকট্রন উত্তেজিত হবে এবং শক্তি শোষণ এর মাধ্যমে উচ্চতর শক্তিস্তরে স্থানান্তরিত হবে। ( বোর পরমাণু মডেল অনুসারে )। Cu এর সাধারণ অবস্থা ও উত্তেজিত অবস্থায় বিস্তারিত ইলেকট্রন বিন্যাস:

সাধারণ অবস্থায় 3dz² অরবিটালের ইলেকট্রন সংখ্যা থাকে 2টি। শক্তি প্রদানের ফলে এর ইলেকট্রন 2টি উত্তেজিত হয়ে উচ্চতম শক্তিস্তর 4s অরবিটালে প্রবেশ করে। এর ফলে Cu এর একমুখী স্পিন বিশিষ্ট বিজোড় ইলেকট্রন কাঠামো অর্জিত হয় ( হুন্ডের নিয়ম অনুসরণ করল কিন্তু )।

আবার এই উত্তেজিত *Cu(29) পরমাণু যৌগ গঠনের সময় এর সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তর অর্থাৎ ৪র্থ শক্তিস্তর থেকে ২টি ইলেকট্রন ত্যাগ করতে পারে ফলে কপার ২ যোজনীও প্রদর্শন করে।



একটা যৌগে যদি অ্যামিনো গ্রুপ (-NH2) এবং এসিড গ্রুপ উভয়ই থাকে তখন আমরা সেটাকে অ্যামিনো এসিড বলি।

দুইটা অ্যামিনো এসিড পরস্পরের সাথে কনডেনসেশন প্রক্রিয়ায় পলিমার গঠন করে পেপটাইড বন্ধন গঠনের মাধ্যমে।

দুইটি অ্যামিনো এসিড মনোমার পরস্পরের সাথে যুক্ত হবে এক অনু পানি অপসারনের মাধ্যমে। এই পানি তৈরীর একটা H আসবে একটা অ্যামিনো আসিডের অ্যামিন গ্রুপ থেকে এবং -OH গ্রুপ আসবে অপর অ্যামিনো আসিড থেকে।

পানি অপসারনের জন্য যেকোনো নিরুদক ব্যবহার করা যেতে পারে।



ন্যাপথলিন এর সাথে নাইট্রিক অ্যাসিড(HNO3) এবং সালফিউরিক অ্যাসিডের(H2SO4) বিক্রিয়া হল ইলেকট্রোফিলিক অ্যারোমেটিক প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া।

ন্যাপথলিন সালফিউরিক অ্যাসিডের উপস্থিতিতে নাইট্রিক অ্যাসিডের সাথেই বিক্রিয়া করে 1-নাইট্রোন্যাপথলিন এবং 2-নাইট্রোন্যাপথলিন উৎপন্ন করে।

এবং ন্যাপথলিন সালফিউরিক অ্যাসিডের সাথে বিক্রিয়ায় 1-ন্যাপথলিনসালফোনিক অ্যাসিড ও 2-ন্যাপথলিনসালফোনিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে।

এছাড়া পিকরিক অ্যাসিডের সাথে বিক্রিয়ায় ন্যাপথলিন ন্যাপথলিন পিকরেট তৈরি করে।



Zn(30):1s2 2s2 2p6 3s2 3p6 3d10 4s2

এর d orbital এবং চতুর্থ কক্ষপথের s orbital সম্পূর্ণ হওয়ায় এই মৌলটি অধিক স্থিতিশীল। তাই এই মৌলটি একাধিক জারন মান প্রদর্শন করে না।

অবস্থান্তর মৌলের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এটি পরিবর্তনশীল জারন মান প্রকাশ করবে। Zn এর চতুর্থ কক্ষপথের p অরবিটাল ফাঁকা থাকে। তাই এর সংকরীত অবস্থায় ফাঁকা অরবিটালের সাথে বিভিন্ন অণু সন্নিবেশ সমযোজী যৌগ গঠান করে। Zn এর একটিই জারন মান 2+,এই আয়নের চতুর্থ কক্ষপথের 4s ও 4p সম্পূর্ণই ফাঁকা। সুতরাং, এটি সন্নিবেশ সমযোজী বন্ধন গঠন করে। সন্নিবেশ সমযোজী বন্ধন গঠনের এই ক্ষমতার জন্যই জটিল যৌগ গঠন সম্ভব হয়।



জৈব যৌগ কাকে বলে এর নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা নেই। সাধারণত জৈব যৌগ হলো সেইসব রাসায়নিক যৌগ যাতে কার্বন ও হাইড্রোজেনের মধ্যে বন্ধন থাকে। এখানে ‘সাধারণত’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে কারণ এই সংজ্ঞার ব্যতিক্রম আছে। যেমন, ইউরিয়া(

CO(NH2)2) যৌগে কার্বন-হাইড্রোজেন বন্ধন না থাকা সত্ত্বেও এটি একটি জৈব যৌগ। এছাড়াও CCl4C2Cl6 ইত্যাদি যৌগগুলিতে কার্বন হাইড্রোজেন বন্ধন না থাকা সত্ত্বেও এদেরকে জৈব যৌগ হিসাবে ধরা হয়।

আবার যদি ধরা হয় যে কার্বন নিয়ে গঠিত সমস্ত যৌগই জৈব যৌগ। তবে সে ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম দেখা যায়। যেমন, CN,CaC2,CO,CO2, কার্বোনেট ইত্যাদি যৌগগুলিতে কার্বন থাকলেও এদেরকে জৈব যৌগ হিসাবে ধরা হয়না।

আসলে এগুলো ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত হয়ে আসছে। বিজ্ঞানীরা ভেবেছিল জৈব যৌগ কেবল জীবদেহে উৎপন্ন হয়। বস্তুত বেশিরভাগ জৈব যৌগই জীবদেহে উৎপন্ন হয়না। আবার কার্বন ডাই অক্সাইড জীবদেহে উৎপন্ন হলেও জৈব যৌগ হিসাবে ধরা হয়নি। কারণ তখনকার বিজ্ঞানীরা সব জানতে পারেনি। এছাড়াও অন্যন্য কিছু কারণ আছে।

এক কথায়, CO, CaC2 কে আপনি জৈব যৌগ বলতেও পারেন আবার অজৈব যৌগও বলতে পারেন। এটা নির্ভর করছে আপনার সংজ্ঞার উপরে।



সংজ্ঞার শেষে এখানে সালফারের বহুরূপতার দিকগুলো প্রতিটি ধাপে ইলেকট্রন বিন্যাসসহ, প্রতি ধাপের বিক্রিয়াসমুহ উদাহরণ সহকারে ব্যাখ্যা নতুন করে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া কোন যৌগে কোন মৌলের Oxidation Number কত তা বের করার একটি formula দেয়া হল।)

আশা করি এবার বুঝতে সমস্যা হবে না।)

সাধারন ভাবে যোজনী বা যোজ্যতার সংজ্ঞা হলোঃ কোন মৌলের একটি পরমাণু হাইড্রোজেন বা তার সমতুল্য অন্য মৌলের যত সংখ্যক পরমাণুর সাথে সংযুক্ত হয় অথবা কোন যৌগ হতে হাইড্রোজেনের যত সংখ্যক পরমাণু প্রতিস্থাপিত করতে পারে সে সংখ্যাকে ঐ মৌলের যোজ্যতা বা যোজনী বলে।

যোজ্যতার ইলেকট্রনীয় মতবাদঃ রাসায়নিক বিক্রিয়ায় যৌগ গঠনের সময় কোনো মৌলের একটি পরমাণু অপর একটি মৌলের পরমাণু হতে যে কয়টি ইলেকট্রন গ্রহন অথবা এতে প্রদান করে অথবা শেয়ার করে ইলেকট্রনের সে সংখ্যাকে ঐ মৌলটির যোজনী বা যোজ্যতা বলে।

যৌগ গঠনকালে ইলেকট্রন শেয়ার বা আদান-প্রদানে সাধারনতঃ মৌলের পরমানুর ইলেকট্রন বিন্যাসের সর্বশেষ শক্তিস্তরের ইলেকট্রনগুলো অংশগ্রহণ করে থাকে। এদের ঐ মৌলের যোজনী ইলেকট্রন বলা হয়।

মূল-গ্রুপ-ভুক্ত মৌলের ক্ষেত্রে শুধু সর্ববহিঃস্থ স্তরে বিদ্যমান ইলেকট্রনসমূহকে ঐ মৌলের যোজনী ইলেকট্রন বলা হয়। ট্রানজিশন মৌলের ক্ষেত্রে যোজনী ইলেকট্রন সর্ববহিঃস্থ স্তরে বিদ্যমান ইলেকট্রন ছাড়াও অভ্যন্তরীণ স্তরে বিদ্যমান ইলেকট্রনও হতে পারে।

কোনো কোনো মৌলের যোজনী অবস্থাভেদে বিভিন্ন হয়। যে মৌলের একাধিক যোজনী আছে তার যোজনীকে পরিবর্তনশীল যোজনী বলে। যেমন সালফারের যোজনী -২, ২, ৪ ও ৬। নিম্নে সালফারের ইলেকট্রন বিন্যাসগুলো দেখানো হলো।

সালফার মৌলের যোজনী বা যোজ্যতা অবস্থা ভেদে বিভিন্ন হয় কেন?

সাধারণ অবস্থায় সালফারের ইলেকট্রন বিন্যাস থাকেঃ

3s2 3px2 3py1 3pz1

Hund's rule অনুসারে 3p অর্বিটালের x, y, z প্রত্যেকে প্রথমে একটি করে ইলেকট্রন পাবে পরে পেয়ার বা যুগ্ম হবার জন্য ইলেকট্রন লাভ করবে। Hund's rule শুধু সাধারণ অবস্থায় মুক্ত অনুর উপর প্রযোজ্য হয়ে থাকে।

Hund's rule অনুসারে, 3P স্পিনে ৬ টি ইলেক্ট্রনের স্থলে ৪ টি আছে - 3px2 3py1 3pz1, এখন 3py1 3pz1 শক্তিস্তরে ২ টি অযুগ্ম ইলেকট্রন রয়েছে যা পরিত্যাগ করে +2 অক্সিডেশন অবস্থা লাভ করতে পারে অথবা 3py1 3pz1শক্তিস্তরে ২ টি ইলেকট্রন গ্রহণ করে -2 অবস্থা লাভ করার মাধ্যমে 3p তার ৬ টি ইলেক্ট্রনের কোটা পূরণ করতে পারে।

উত্তেজিত অবস্থায় সালফারের শেষ শক্তিস্তরে ৪ টি অযুগ্ম বা বিজোড় ইলেকট্রন থাকতে পারে। Hund's rule অনুসারে সেখানে 3p তে শক্তির সাম্যতা ও স্থায়িত্ব আনার জন্য 3px2 শক্তিস্তর হতে একটি ইলেকট্রন 3d তে স্থানান্তরিত হয়ে 3d1হয়।

3s2 3p2 3p1 3p1→3s2 3p1 3p1 3p1 3d1

এখন 3p1 3p1 3p1 3d1 শক্তিস্তরে ৪ টি অযুগ্ম ইলেকট্রন রয়েছে যা পরিত্যাগ করে স্থায়িত্বের জন্য +4 অক্সিডেশন অবস্থা লাভ করতে পারে।

আবার, একইভাবে অধিক উত্তেজিত অবস্থায় সালফারের ইলেকট্রন বিন্যাস হয় নিম্নরুপঃ

3s2 3p2 3p1 3p1→3s1 3p1 3p1 3p1 3d1 3d1

3s2 ও 3p2 হতে একটি করে দুটি ইলেকট্রন d-অর্বিটালে বিন্যস্ত হয়। ফলে সালফারের শেষ শক্তিস্তরে ৬ টি অযুগ্ম ইলেকট্রন পাওয়া যায়। এভাবেই সকল যোজনী ইলেকট্রন অযুগ্ম অবস্থায় পরিণত হয় ও অযুগ্ম ৬ টি ইলেকট্রন পরিত্যাগ করে স্থায়িত্বের জন্য +6 অক্সিডেশন অবস্থা লাভ করে।

এবার উপরের পুরা অবস্থা বিক্রিয়ার মাধ্যমে নীচে দেখাবো কিভাবে সালফারের যোজনী -২,+২,+৪,+৬ হয়।

যেমন- Oxidation number -2 দেখা যায় sulphide ion এ, S--, উদাহরণ H2S যৌগ , hydrogen sulphide or hydrosulphuric acid, Sodium sulphide, Na2S.

আর Oxidation number +2 দেখা যায় SO যৌগে, যৌগটি খুবই অস্থায়ী। সালফার এ ধরনের বন্ধন পছন্দ করে না ফলে সহজেই dioxide SO2 গঠন করে। যার oxidation number হবে +4. (configuration sp3d1).

SO2 আবার oxidized হয়ে SO3 যৌগ গঠন করে। যার oxidation number is +6.

বিক্রিয়াঃ-

Hydrogen sulphide, H2S অক্সিজেনের সাথে ক্রিয়া করে sulphur dioxide: 2H2S + 3O2→ 2H2O + 3SO2, এ বিক্রিয়া, sulphur oxidized হয়ে -2 থেকে +4 হয়। আবার, এ বিক্রিয়ার মাধ্যমে H2S + 2O2 → H2SO4 + 790 kJ/mol, oxidation number -2 থেকে +6 হয়।

এ পরিবর্তনশীল যোজনীর কারনেই সালফার বহুরূপতা দেখায়।

কোন যৌগে কোন মৌলের Oxidation Number কত তা বের করার একটি equation/formula আছে।

যেমনঃ H2SO4 (সালফিউরিক এসিড)

ব্যাখ্যা :

Oxidation Number of Oxygen= -2
O.N of Hydrogen= +1
O.N of Sulphur= x(say)

এখন,

H2SO4 = 1.2 + x + (−2).4 = 0

or, 2 + x - 8 = 0

or, x−6 = 0

or, x = +6

অতএব, H2SO4 (সালফিউরিক এসিড) এ Suplhur এর Oxidation Number +6.