Recent Post
Loading...

NaCl একটি আয়নিক যৌগ।

সাধারণত, দুটি বিপরীত আধান পরস্পরের মধ্যে স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণ বলের মাধ্যমে আয়নিক যৌগ গঠন করে। কঠিন অবস্থায় আয়নিক যৌগ কেলাস গঠন করে থাকে। কেলাস অবস্থায় প্রতিটি ক্যাটায়ন নির্দিষ্ট সংখ্যক অ্যানায়ন দ্বারা এবং প্রতিটি অ্যানায়ন নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্যাটায়ন দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সোডিয়াম ক্লোরাইড এর কেলাস গঠনে প্রতিটি সোডিয়াম আয়ন, ছয়টি ক্লোরাইড আয়ন দ্বারা এবং প্রতিটি ক্লোরাইড আয়ন, ছয়টি সোডিয়াম আয়ন দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে।

বিদ্যুৎ পরিবহনের জন্য প্রয়োজন বিচ্ছিন্ন ধনাত্নক বা ঋণাত্মক আয়ন। খাদ্য লবণ বা NaCl এর জলীয় দ্রবণে ধনাত্মক আয়ন হিসেবে Na+ ও ঋণাত্মক আয়ন হিসেবেClবিদ্যুৎ পরিবহন করে। কঠিন অবস্থায় এদের মধ্যে আন্তঃআণবিক আকর্ষণ বল অনেক বেশি হয় এবং কোনো বিচ্ছিন্ন ধনাত্নক বা ঋণাত্মক আয়ন ও থাকে না। ফলে, বিগলিত NaCl তড়িৎ পরিবহন করলেও কঠিন থাকা অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহন করে না।


বিগলিত সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl) বিদ্যুৎ পরিবাহী কিন্তু কঠিন সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl) বিদ্যুৎ অপরিবাহী কেন?

এই প্রশ্নের উত্তর বুঝতে হলে আমাদের কে দুইটা বিষয় বুঝতে হবে।

১। বিদ্যুৎ কিভাবে পরিবাহিত হয়

২। সোডিয়াম ক্লোরাইড এর গঠন

আমি প্রথমেই আসি বিদ্যুৎ কিভাবে পরিবাহিত হয় এই প্রসঙ্গে।

বিদ্যুৎ পরিবাহিত হতে একটা ক্যারিয়ার বা বাহক দরকার হয়। আর এই বাহকের কাজ করে থাকে ইলেকট্রন, আয়ন অথবা হোল। মুক্ত ইলেকট্রন কিমবা ভ্রাম্যমাণ আয়ন অথবা হোল বিদ্যুৎ পরিবহণ করতে পারে।

এবার আসি সোডিয়াম ক্লোরাইড এর গঠন বিষয়ে

যেকোনো মৌল বন্ধন গঠন করে স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য। সব মৌল চায় তার কাছাকাছি কোন নিষ্ক্রিয় মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করে স্থিতিশীল হতে। আমরা দেখতে পাই সোডিয়াম পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস হল ২,৮,১। এর কাছাকাছি নিষ্ক্রিয় গ্যাস হল নিয়ন যার ইলেকট্রন বিন্যাস ২,৮। তাই সোডিয়াম সহজেই একটি ইলেকট্রন দান করে নিয়নের ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করে। অন্যদিকে ক্লোরিনের ইলেকট্রন বিন্যাস হল ২,৮,৭। এর কাছাকাছি নিষ্ক্রিয় গ্যাস হল আর্গন যার ইলেকট্রন বিন্যাস হল ২,৮,৮। তাই ক্লোরিন সহজেই সোডিয়ামের ত্যাগ করা একটি ইলেকট্রন গ্রহন করে আর্গনের ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করে।

সোডিয়াম ইলেকট্রন ত্যাগ করে ধনাত্মক আধান হয় এবং ক্লোরিন ইলেকট্রন গ্রহন করে ঋণাত্মক আধানে পরিণত হয়। পরষ্পর বিপরীত আধান হওয়ার কারনে সোডিয়াম আয়ন ও ক্লোরিন আয়ন এঁকে অপরকে আকর্ষন করে এবং সোডিয়াম ক্লোরাইড অনু উৎপন্ন হয়। ইলেকট্রন বর্জন ও গ্রহনের ফলে তৈরী এ যৌগকে আয়নিক যৌগ বলা হয়। বিপরীত আধানগুলি এমন ভাবে যুক্ত থাকে যেন ধনাত্মক আধান গুলি চতুর্দিকে ঋণাত্মক আধান দ্বারা এবং ঋণাত্মক আধান গুলির চতুর্দিকে ধনাত্মক আধান দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়। এই কারনে আয়নিক যৌগের কেলাসের একটি নির্দিষ্ট আকার থাকে। প্রতিটি সোডিয়াম আধান ছয়টি ক্লোরিন আধান এবং প্রতিটি ক্লোরিন আধান ছয়টি সোডিয়াম আধান দ্বারা বেষ্টিত থাকে। যদি এই আয়নিক যৌগকে পোলার দ্রাবকে দ্রবিভুত করা হয় তবে এই পোলার দ্রাবকের দুই মেরুর আকর্ষনে আয়নিক যৌগ দ্রুবিভুত হয়।

এবার আসি কেন বিগলিত অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহণ করে এবং কেন কঠিন অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহণ করে না।
কঠিন অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহনের জন্য কোন ক্যারিয়ার থাকে না। কেননা চারপাশের ধনাত্মক আয়ন কে ঋণাত্মক আয়ন এবং ঋণাত্মক আয়ন কে ধনাত্মক আয়ন বেষ্টন করে রাখে। অন্যদিকে কোন মুক্ত ইলেকট্রন বা হোল ও থাকে না। তাই কঠিন অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহণ করে না।

বিগলিত অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহনের জন্য যথেষ্ট আয়ন বিদ্যমান থাকে তাই বিদ্যুৎ পরিবহণ করে।


কঠিন অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহনের জন্য কোন আধান বাহক থাকে না। কেননা চারপাশের ধনাত্মক আয়ন কে ঋণাত্মক আয়ন এবং ঋণাত্মক আয়ন কে ধনাত্মক আয়ন বেষ্টন করে রাখে। অন্যদিকে কোন মুক্ত ইলেকট্রন বা হোল ও থাকে না। তাই কঠিন অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহণ করে না।

বিগলিত অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহনের জন্য যথেষ্ট আধান বাহক[NaCl(aq)→Na+(aq)+Cl-(aq)]বিদ্যমান থাকে তাই বিদ্যুৎ পরিবহণ করে।


বিগলিত NaCl বিদ‍্যুৎ বা তড়িৎ পরিবাহী কারণ সোডিয়াম ক্লোরাইড তড়িৎযোজী যৌগ তাই এদের গলনাঙ্ক খুব বেশি হয়। উচ্চতাপ প্রয়োগ করে সোডিয়াম ক্লোরাইডকে গলিত করলে সোডিয়াম ক্লোরাইডের মধ্যে উপস্থিত আয়নিক বন্ধন অর্থাৎ Na+ এবং Cl- আয়নগুলির মধ‍্যে কুলম্বীয় আকর্ষণ বল হ্রাস পায়। এর ফলে আয়নগুলি মুক্তভাবে চলাচল করতে পারে। তড়িৎ বিশ্লেষ‍্য পরিবাহীতে মুক্ত আয়নগুলি তড়িৎ পরিবহন করতে পারে। সেজন‍্য বিগলিত NaCl তড়িৎ পরিবহন করতে পারে।

কঠিন NaCl বিদ‍্যুৎ বা তড়িৎ অপরিবাহী কারণ সোডিয়াম ক্লোরাইড একটি কঠিন তড়িৎযোজী বা আয়নীয় যৌগ। আয়নীয় যৌগগুলি ক‍্যাটায়ণ ও অ‍্যানায়ন গুলি তীব্র কুলম্বীয় আকর্ষণ বল দ্বারা যুক্ত থাকে। এর ফলে সোডিয়াম ক্লোরাইড আয়নগুলি অর্থাৎ Na+ ( ক‍্যাটায়ন) ও Cl-(অ‍্যানায়ন) মুক্ত অবস্থায় থাকে না। তড়িৎ বিশ্লেষ‍্য পরিবাহীতে মুক্ত আয়নগুলি তড়িৎ পরিবহন করে। তাই কঠিন NaCl তড়িৎ পরিবহন করতে পারে না অর্থাৎ অপরিবাহী।

পানি একটি পোলার দ্রাবক এবং পোলার সমযোজী যৌগ । যার দুটি বিপরীত প্রান্ত রয়েছে। একটি ধনাত্মক ও অন্যটি ঋণাত্মক প্রান্ত।

অন্যদিকে, সোডিয়াম ক্লোরাইড বা খাদ্যলবণ এাটি আয়নিক যৌগ। যা পোলার দ্রাবকে ছেড়ে দেয়ার সাথে সাথে আয়নিত হয়ে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আয়নে পরিণত হয়।

NaCl + H2O —— > NaCl(aq) —— > Na+ + Cl–

যখন লবণের অণু পানিতে আয়নিত হয়ে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আয়ন গঠন করে তখন এই আয়ন দ্বয়কে পানির বিপরীত প্রান্তগুলো ঘিরে ধরে নিচের ছবির মত!

এমন করে পানির অনুর বেষ্টনী মধ্যে মধ্যে লবণের আয়নগুলো অবস্থানকরে! তাই পানিতে লবণ মনে হয় মিশে গেছে। লবণের পরিমান বৃদ্ধি করতে থাকলে যখন আর পানির অনুর মধ্যে কোন স্থান থাকে না তখন লবণ আর পানিতে মেশে না!



অ্যালকোহল পানিতে দ্রবণীয়। এর কারণ হল-

অ্যালকোহলে হাইড্রোক্সিল(OH) গ্রুপের উপস্থিতির কারণে পানির অণু তে থাকা আয়নের সাথে হাইড্রোজেন বন্ড গঠন করতে সক্ষম হয়। ছোট হাইড্রোকার্বন চেইনযুক্ত অ্যালকোহলগুলি খুব দ্রবণীয়। হাইড্রোকার্বন চেইনের দৈর্ঘ্য বাড়ার সাথে সাথে পানিতে দ্রবণীয়তা হ্রাস পায়।


সবসময় মনে রাখবেন "যেমন দ্রাবক তেমন দ্রব্য "।

অ্যালকোহল পোলার যৌগ এবং পানিও পোলার যৌগ। এ দুটি পোলার যখন বিক্রিয়া করবে তখন পানির ধনাত্নক প্রান্ত অ্যাএলকোহলের ঋণাত্নক প্রান্তের কাছাকাছি অবস্থান করে। তেমনি পানির ঋনাত্নক প্রান্তের সামনে অ্যাএলকোহলের ধনাত্নক প্রান্ত অবস্থান করে। এভাবে দ্রবীভুত হয় ।




বৃষ্টির পানির pH 7 এর কম হওয়ার কারণ এতে স্বল্প মাত্রায় এসিডের উপস্থিতি। বাতাসে থাকা কার্বন ডাই অক্সাইড (CO↓2) জলীয়বাষ্পের সাথে বিক্রিয়া করে কার্বনিক এসিড(H↓2CO↓3) তৈরি করে যা জলীয়বাষ্পের সাথে মিশে গিয়ে মেঘে অবস্থান করে। ‌একইভাবে বাতাসের সালফার ডাই অক্সাইড গ্যাস জলীয়বাষ্পের সাথে বিক্রিয়ায় সালফিউরাস এসিড তৈরি হয়। আবার সালফার ডাই অক্সাইড বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে সালফার ট্রাই অক্সাইড তৈরি হয় যা আবার জলীয় বাষ্পের সাথে বিক্রিয়ায় সালফিউরিক এসিড তৈরি হয়। এসকল এসিড জলীয় বাষ্পের সাথে মিশে মেঘে অবস্থান করে যা পরে বৃষ্টির পানির সাথে ভূপৃষ্ঠে নেমে আসে। তাই এসকল এসিডের উপস্থিতিতে বৃষ্টির পানি মৃদু অম্ল বা এসিডিক হয়। যাকে আমরা বলি এসিড বৃষ্টি।


পানি বাতাসের মধ্য দিয়ে অনেক উপর থেকে পতিত হয় ফলে কার্বন ডাই অক্সাইড বা নাইট্রোজেনের ও সালফারের অক্সাইড পানিতে দ্রবীভুত হয় ৷ ফলে পানি সামান্য আম্লিক ধর্ম প্রাপ্ত হয় ৷ এই কারনে বৃৃৃৃৃৃষ্টির জলেরph মান ৭ এর নীচে থাকে ৷


Ph এর মান ৭ এর নিচে হলে তাদের অম্ল এবং যাদের Ph মান ৭ এর ওপরে তাদের ক্ষারক বলা হয়। যেহেতু বৃষ্টির পানির ph এর মান ৫-৬ সেহেতু এতে অবশ্যই এসিটিক পদার্থ থাকবে।



 CNG = Compressed Natural Gas

CNG সংকুচিত প্রাকৃতিক গ্যাস, যা প্রধানত মিথেন 200 থেকে 248 বার চাপে সংকুচিত হয়

LPG = Liquefied Petroleum Gas

LPG লিকুইফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস, প্রোপেন এবং বুটেনের মিশ্রণ 15 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এবং 1.7 - 7.5 বারের চাপে তরল। ...

CNG সস্তা এবং ক্লিনার, কিন্তু LPG একটি উচ্চতর ক্যালোরিক বেশি আছে ।


CNG হচ্ছে Compressed Natural Gas. অর্থাৎ প্রকৃতিতে প্রাপ্ত গ্যাসকে প্রচন্ড চাপে বোতলজাত বা কন্টেইনারজাত করে ব্যাবহার করা হয়। এর প্রধান উপাদান মিথেন (৮০-৯০℅)। অপরদিকে LPG হচ্ছে Liquid Petrolium Gas. খনিজ তেল প্রক্রিয়াজাত করার সময় কিছু কিছু গ্যাস উপজাত হিসেবে পাওয়া যায় ,যেমন প্রোপেন, বিউটেন। প্রোপেন বা বিউটেন বা এদের মিশ্রনকে প্রচন্ড চাপে তরল করে ব্যবহার করা হয়। তখন তাকে LPG বলে। উল্লেখ্য CNG তে যে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যাবহার করা হয় তাতেও কিছুটা প্রোপেন ও বিউটেন মিশ্রিত থাকে।


Compressed Natural Gas (CNG) ও Liquified Petroleum Gas (LPG) এর মধ্যে বিশাল পার্থক্য আছে, যদিও অনেকে ভুলক্রমে এদেরকে একই মনে করে।

প্রথমত CNG হচ্ছে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা মিথেন, যা আমাদের দেশে পাওয়া যায়, আর LPG হচ্ছে প্রোপেন, বুটেন, যা তেলের খনিতে পাওয়া যায় । LPG অনেক বেশি দাহ্য। LPG অনেকটা দামীও বটে, কেজি হিসেবে পেট্রলের মতো দাম।



BOD মানে হয় Biochemical Oxygen Demand. যার সহজ অর্থ হলো, যেকোনো জৈবিক পদার্থে প্রয়োজনীয় ঘনীভুত অক্সিজেনের পরিমাণ। পানির BOD এর মান ৫০ পিপিএম বলতে বুঝায়, ওই পানিতে ঘনীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ, ৫০ পিপিএম। PPM=parts per million. যা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুর পরিমান নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়। কোনো বস্তুতে যদি ১ মি.গ্রা. অক্সিজেন ঘনীভূত থাকে, প্রতি লিটার পানির জন্য, তাহলে, তা 1ppm. 1ppm=1mg/L

পানির BOD মান 50 ppm অর্থাৎ, পানির মধ্যে ঘনীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ প্রতি লিটারে 50 মিলিমিটার।


Biochemical oxygen demand অর্থ এই পরিমাণ অক্সিজেন পানিতে ডিজল্ভট থাকলে পানিতে থাকা ব্যাকটেরিয়া সমূহ পানিতে থাকা অরগানিক মেটেরিয়াল সমূহ কে ভেঙ্গে দিতে পারবে।

পিপিএম অর্থ পার্টস পার মিলিয়ন অর্থাৎ প্রতি মিলিয়নে কত টুকু আছে। তাই ৫০ পিপিএম বলতে ১ লিটারে ৫০ মিলি গ্রাম । বিওডি ৫০ পিপিএম বলতে বোঝাবেঃ পানিতে অন্তত ৫০ পিপিএম থাকতে হবে।

এই টার্ম টি ইটিপি বা শোধনাগারের ক্ষেত্রে বহুল পরিচিত।

 আমরা সকলেই জানি যে পানির অপর নাম জীবন। কিন্তু বিশুদ্ধ পানি পান না করলে মৃত্যুও হতে পারে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে ফিটকিরি ব্যাবহার করে কি, একশত ভাগ বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়?

অনেকেরই ধারণা, নিয়মানুযায়ী ফিটকিরি ব্যাবহার করলে

পানি বিশুদ্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় পত্রিকায় প্রকাশিত।একজন চিকিৎসকের অভিমত তুলে ধরছি।

চিকিৎসকের অভিমত।

ফিটকিরি ব্যাবহার করলেই পানি পুরোপুরি বিশুদ্ধ হয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে এই ধরনা ঠিক নয়।

নিয়মানুযায়ী পানিতে ফিটকিরি ব্যাবহার করলে পানির কিছু কিছু জীবাণু যেমন, ব্যাকটেরিয়া ও প্যারাসাইট ধ্বংস হয়। কিন্তু ভাইরাস ধ্বংস হয় না। এ ক্ষেত্রে টাইফয়েড, ডায়রিয়া, আমাশয় ও কৃমি সংক্রামন জাতীয় রোগ থেকে রেহাই পাওয়া গেলেও হেপাটাইটিস 'এ' এবং 'ই' ভাইরাস জনিত রোগ যা, আমাদের কাছে জন্ডিস বলে পরিচিত। এ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় না।

এ থেকে বোঝা গেল ফিটকিরি একশত ভাগ বিশুদ্ধ পানি দিতে অক্ষম।


ফিটকিরি বিজ্ঞানসম্মতভাবে তৈরি। সাধারণত যখন জল দূষিত হওয়ার কারণে ব্যাপক মহামারীর শুরু হওয়ার সময় থেকে ফিটকিরি দিয়ে জল পরিষ্কারের একটা রেওয়াজ চলে আসতেছে এবং ফিটকিরি দিয়ে পানীয় জল খুব স্বচ্ছ হয় এবং দোষ মুক্ত হয়।


 

প্রথমেই বলে রাখি, আমাদের প্রচলিত ধারণাটিকে আগে কোথাও বস্তাবন্দি করে রেখে পড়ুন। আমরা বাজারে বিক্রি সব জলকেই মিনারেল ওয়াটার বলে থাকি, তাই। হয়তো তফাৎ জেনেও অভ্যাস বশত বলে ফেলি! যাইহোক, এবার শুরু করি।

মিনারেল ওয়াটার আর ড্রিংকিং ওয়াটার দুটোই পান করা হয়। আর দুটোই বাজারে বোতলবন্দি করে বিক্রিও করা হয়। এবার তফাৎ গুলো বলছি।

মিনারেল ওয়াটার হলো সেই জল, যা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি না থাকার সময় মানুষ পান করতো। বুঝলেন? মানে ঝর্নার জল, নদীর জল, হ্রদের জল, সাথে ভূগর্ভস্থ জল। মানে এককথায়, প্রাকৃতিক জল যা যা পানযোগ্য, সবই মিনারেল ওয়াটার।

আর ড্রিংকিং ওয়াটার হলো, বর্তমানে উন্নতির নামে আমরা প্রাকৃতিক যা কিছু, সবই বিষিয়ে ফেলেছি, তাই তার প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে এখন পান করার জন্যে যেই জল রান্না করতে হচ্ছে, সেই জল।

একটু গুলিয়ে যাচ্ছে জানি। সব পরিষ্কার হবে আস্তে আস্তে।

  • জীবের জন্য জলের গুরুত্ব নিশ্চই সবার জানা? কিন্তু জানেন কি অনেক খনিজ আছে সেগুলোও কিন্তু বেশ গুরুত্বপূর্ণ?
  • সেই খনিযোগুলোর বেশিরভাগই আমরা পেয়ে থাকি জল থেকে। নিজেরাই মিশে থাকে আরকি। প্রকৃতি সব জেনেবুঝে মিশিয়ে রেখেছে আমাদের জন্য।

এই মাত্রাতিরিক্ত দূষণের আগে যেই জল পান করতাম, তার সাথেই ওগুলোর প্রয়োজন মিটে যেত বেশিভাগ।

  • খনিজ সমৃদ্ধ ওই প্রাকৃতিক পানযোগ্য জলকেই মিনারেল জল বলে। বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংস্থা মিলে কোন প্রাকৃতিক জলটাকে পানযোগ্য বলবো, তার একটা রূপরেখা দিয়েছেন। যেই প্রাকৃতিক জল ওদের নিয়মের মধ্যে তারা সবই মিনারেল জল।
  • আর দায়িত্ব নিয়ে টাকা খরচ করে দূষণ করার পর নদী বা হ্রদের হাল তো বেশ রঙিন করে দিয়েছি আমরা। তাই আরো টাকা খরচ করে এবার পানযোগ্য জল বানানো শুরু করেছি আমরা। কি মহৎ প্রাণী বলুন তো আমরা! সব পারি! ওই কৃত্রিম উপায়ে পানযোগ্য করা জল হল ড্রিংকিং ওয়াটার।

যাইহোক, এই জল বানানো টা ল্যাবে হাইড্রোজেন আর অক্সিজেন মিশিয়ে বানানো নয়। ওই রঙিন করে দেওয়া জল নিয়ে আমাদের মহান মস্তিষ্কপ্রসূত নানা কান্ডকারখানা করে শরীরের চাহিদা মেটাতে হয়।

  • যেমন ধরুন গঙ্গার ওই হলদে পোকাওয়ালা জল নিলাম। সেটাকে তারপর নানান ছা৺কনি দিয়ে ছেঁকে নিয়ে সাদা করে দিলাম। তারপর ওটাকে নানা রাসায়নিক দিয়ে পোকাগুলোকেও মেরে দিলাম! ব্যাস! তৈরি। প্রকৃতি আর শুদ্ধ জল না দিয়ে চাইলে হবে! আমরাই বানিয়ে নেবো। কি বলেন?
    • কিন্তু দুঃখের বিষয় মাঝ থেকে কিছু টাকা ফুটলো আর হলো কি জানেন? ওইযে বলছিলাম না, প্রকৃতি জলের মধ্যে অনেক মিনারেল মিশিয়ে রেখেছে? সেগুলো পেলাম না। যদিও পেলাম হয়তো তার পরিমাণ কমে গেলো যা দরকার তার থেকে। কিন্তু থোড়াই কেয়ার! সেটাও মিশিয়ে নিচ্ছি তো। বুদ্ধি কি কম নাকি?

ওই জন্যেই বোতলের জলে দেখবেন লেখা থাকে "অ্যাডেড মিনারেল"।

এইসব করেই চলে যাচ্ছিল বেশ!

  • কিন্তু ব্যবসায়িক বুদ্ধিও কম নেই আমাদের। তাই কিছু অতি দরদী মানুষ বললেন যে তোমাদের সেই হিমালয় থেকে প্রকৃতির জল এনে খাওয়াবো। কেউ বললো ঝর্না থেকে আনবে। ঠিক আছে , যেই ভাবা সেই কাজ। শুরু হলো মিনারেল জলের বোতল ব্যবসা! দাম? সে নহয় ড্রিংকিং ওয়াটার এর থেকে কয়েকগুন বেশিই দেবেন কিন্তু দেখুন কোনখানে একটু শুদ্ধ জল রেখে দিয়েছে প্রকৃতি সেটার খবর নিয়ে এনে দেওয়া টা কি কম কষ্টের?

এই হলো জলের খবর।

এইসব দেখে শুনে সরকার বাহাদুর অনেক নিয়ম বের করেছেন। কিযেন বলে, আই এস মার্কিং নাকি!

  • তাতে সোজা বলা আছে বাবু, ড্রিংকিং ওয়াটার নিয়ে যা খুশি করো বাবু কিন্তু মিনারেল ওয়াটার নিয়ে কিছু এদিক ওদিক নয়। মানে ড্রিংকিং জলকে আরো বেশি ড্রিংকিং জল করার জন্যে আমাদের বলে দেওয়া প্রক্রিয়াগুলো করতে পারো যেমন ছাঁকা, আর ও, ইউ ভি, ওজোন পাস, দরকার মতো কিছু খনিজ মিশিয়ে দেওয়া সব চলবে।

 



এই টার্ম গুলি আপনি নিশ্চয় রাসায়নিক সমীকরণের মধ্যে ব্যবহৃত হতে দেখেছেন। সাধারণভাবে কোনো পদার্থের (Matter) তিনটি অবস্থা, যথাক্রমে কঠিন (Solid), তরল (Liquid) ও গ্যাস (Gas)।

এখন কোনো পদার্থকে দ্রাব্য (Solute) হিসেবে নিয়ে উপযুক্ত তরল দ্রাবক পদার্থে (Solvent) নির্দিষ্ট ও কাঙ্ক্ষিত অনুপাতে সমসত্ত্বভাবে মেশালে যে বিশেষ মিশ্রণ (Mixture) তৈরি হয়, তা হল দ্রবণ (Solution)।

এখন যদি কোনো দ্রাব্য জলে দ্রবীভূত করে বা জল সমেত দ্রাব্য টি উপস্থিত থাকে তবে তখন সেটিকে জলীয় দ্রবণ(aq) বলে। যেমন ধরুন খাবার লবন (NaCl) সাধারণত কঠিন বস্তু, কিন্তু যখন সেটি জলের সাথে মিশ্রিত অবস্থায় থাকে তখন আমরা বলি সেটি লবণের জলীয় দ্রবণ বা NaCl(aq) ।

আর অন্যদিকে তরল হচ্ছে পদার্থের একটি বিশেষ অবস্থা যেখানে তরলে উনস্থিত অণুগুলির মধ্যে আন্ত আণবিক বন্ধন কঠিনের বন্ধনের চেয়ে দুর্বল কিন্তু গ্যাস এর চেয়ে দৃঢ় ।

তাই রাসায়নিক সমীকরণে কোনো দ্রব্য এর পাশে যদি তরল বা (l) লেখা থাকে তবে সেই বস্তুটি তার তরল অবস্থায় আছে, কোনো দ্রবণে দ্রবীভূত নয়।


সাধারণভাবে কোনো পদার্থের (Matter) তিনটি অবস্থা, যথাক্রমে কঠিন (Solid), তরল (Liquid) ও গ্যাস (Gas)।

এখন কোনো পদার্থকে দ্রাব্য (Solute) হিসেবে নিয়ে উপযুক্ত তরল দ্রাবক পদার্থে (Solvent) নির্দিষ্ট ও কাঙ্ক্ষিত অনুপাতে সমসত্ত্বভাবে মেশালে যে বিশেষ মিশ্রণ (Mixture) তৈরি হয়, তা হল দ্রবণ (Solution)। এতে দ্রাব্য বস্তুর কণাগুলি দ্রাবকে ভাসমান অবস্থায় থাকে। এখন, বিশেষক্ষেত্রে তরল দ্রাবক যদি জল হয়, তবে সেটি হবে জলীয় দ্রবণ।

সুতরাং, জল হল একটি তরল পদার্থ। আবার, এটি একটি দ্রাবক পদার্থ, যাতে কোনো দ্রাব্য পদার্থকে মিশিয়ে জলীয় দ্রবণ প্রস্তুত করা যায়।