চুন এর সাথে আমরা কম বেশি সবাই পরিচিত ।আসলে এটি একটি রাসায়নিক পদার্থ, যার রাসায়নিক নাম ক্যালসিয়াম অক্সাইড (CaO) ,যার মধ্যে জল যোগ করলে তা কিছুক্ষনের মধ্যেই ফুটতে থাকে এবং রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে ক্যালসিয়াম হইড্রোক্সাইড এ পরিণত হয় যা সাধারণত কলিচুন নামে পরিচিত।
এটা হল ঘটনা এবার আসি আপনার প্রশ্নের উত্তরে “কেন ফোটে?”
এই সম্পর্কে গভীরে জানতে হলে বেশ কয়েকটি জিনিস পরিষ্কার করে নেওয়া প্রয়োজন।
●একটি অনুর মধ্যে দুটি পরমাণুর মধ্যে অবস্থিত বন্ধন ভাঙতে বাইরে থেকে শক্তি প্রদান করতে হয়। এবং দুটি অস্থির পরমাণু তাদের অষ্টক পূরণের স্বার্থে বন্ধনে জড়ালে শক্তি নির্গমন হয়।
●আমাদের জানতে হবে দুই প্রকার রাসায়নিক বিক্রিয়া এর সম্পর্কে-
১. তাপশোষি(endothermic) বিক্রিয়া অর্থাৎ যে বিক্রিয়া ঘটাতে গেলে বাইরে থেকে তাপ প্রদান করতে হয় বা বিক্রিয়ক পদার্থ গুলি তাপ শোষণ করে বিক্রিয়াজাত পদার্থ উৎপন্ন করে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে বরফ থেকে জলে রূপান্তরিত হওয়া বা আরো একটি জায়গায় আপনারা সবাই দেখেছেন সেটি হল শরবত এ লবন দ্রবীভূত করার সময় পাত্রটি আগের চেয়ে ঠান্ডা হয়ে যায় অর্থাৎ পাত্রের তাপ শোষিত হয়ে যায়।
২.তাপমোচি(exothermic) বিক্রিয়া অর্থাৎ যে বিক্রিয়া ঘটলে বিক্রিয়া থেকে তাপের উদ্ভব হয় বা মোচন হয়। উদাহরণ স্বরূপ প্রশ্নটিকে তুলে দেয়া যেতে পারে CaO এর সাথে জলের বিক্রিয়া।
◆• যখন বিক্রিয়ক(reactant) এর বন্ধন শক্তি (Bond energy) বিক্রিয়াজাত পদার্থের(product) বন্ধনশক্তি অপেক্ষা কম হয়। তখন বিক্রিয়ক এর বন্ধন ভাঙতে যে পরিমান শক্তি শোষণ করে তার চেয়ে অনেক বেশি শক্তি নির্গমন হয় যখন বিক্রিয়াজাত পদার্থের গঠন হয়।
এই বিক্রিয়াজাত পদার্থের দ্বারা মোচিত শক্তি ও বিক্রিয়ক দ্বারা শোষিত শক্তি এর পার্থক্য সাধারণত তাপ রূপে নির্গত হয়।
এই কারণের জন্যই চুন ও জলের বিক্রিয়া তে তাপ উৎপন্ন হয় এবং সেই তাপ বেশি হওয়াতেই পাত্র গরম হয়ে যায় ও জল ফুটতে শুরু করে।