Recent Post
Loading...

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া কিন্তু হতাশা নয়!

 
 
আনজাম আনসার: আপনাকে যদি কেউ এমন একটি প্রশ্ন করে, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম কি এবং তাতে কতজন শিক্ষার্থী পড়েন? আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি আপনারা শতকরা ৯০ ভাগই এই প্রশ্নের ভুল উত্তর করবেন! কেউ বলবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আবার কেউ কেউ মনে মনে অন্য নাম জপতে থাকবেন। এই প্রশ্নের উত্তরটি হলো-“জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়”; যেখানে বাংলাদেশর সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একসঙ্গে যত শিক্ষার্থী পরে তার থেকে কয়েকগুণ বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখার কথা। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় মত পর্যাপ্ত সুবিধা না পাওয়ায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা দেখা যায়; যার একটা প্রভাব পরে তার পরবর্তী কর্মজীবন এবং ব্যক্তিগত জীবনে। এই হতাশা থেকেই তৈরি হয় মানসিক চাপ; আমরা সাধারণত সবসময়ই কোন না কোন মানসিক চাপে থাকি। মানসিক চাপ থেকে নিজেকে উত্তরণের জন্যে কিন্তু আমরা নিজেরাই উদ্যোগী হলে এই সব নিত্যদিনের সমস্যা থেকে নিজেদেরকে মুক্ত রাখতে পারি। আর তার জন্যে আত্ননিয়ন্ত্রণ, আন্তরিকতাই যথেষ্ট। আসুন কিভাবে এই হতাশা, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে অনেক মানুষ সফল হয়েছেন তা জানাতে চাই আপনাকে।
সঠিক পরিকল্পনা করতে শেখা: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার পরপরই নিজের পরিকল্পনা করে ফেলুন যে ৫-৬ বছর পর আপনি কি করতে যাচ্ছেন; হতাশা দূরে রেখে এগিয়ে যান, সাফল্য আপনার দোরগোড়ায়।
তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার করতে শেখা: তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি ঘরে বসেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ পৃথিবীর নামীদামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কি পরাচ্ছে জানতে পারছেন; চোখকান খোলা রেখে এগিয়ে যান, অবশ্যই ভাল করবেন। অনলাইন থেকে নানান বিষয়ে ফ্রি ও পড়তে পারেন।
অবাস্তব প্রত্যাশা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে শেখা: আমাদের প্রত্যাশা অনেক সময়ই আমাদের সামর্থের চেয়ে বেশিই হয়ে যায়। যদিও মানুষ তার আশার সমান বড়। ধরুণ আপনি ভাবছেন একাধারে চাকরি করবেন, পড়াশোনা করবেন, ছোটখাট ব্যবসা ও করবেন, আবার রাজনীতিতে ও নিজেকে জড়িয়ে রাখবেন। একটা করুন, সফল হবেন।
অহেতুক সময় সীমা বেঁধে না নেয়া: অনেকেই রুটিন অনুসরণ করে কাজ করতে পছন্দ করেন। কিন্তু জীবনের প্রতিটা কাজ পুরোপুরি রুটিন মেনে চলা সম্ভব নয়। তাই সময়গুলোকে নিজের মতো করে ব্যবহার করুন। তবে তা যেন যথেচ্ছা না হয়। সারারাত কাজ করে দিনের অনেকটা সময় ঘুমানো বা সারাদিন ঝিমানো কোন কাজের কথা না। অনেককেই দেখা যায় রাত জেগে কাজ করে দিনের অনেকটা সময় ঘুমায়…যদিও এই কাজটা অনেকেই নির্জনতায় কাজ করার জন্যেই করে থাকেন। তবে আমাদেরকে সচেতন থাকতে হবে যেন শরীর তার প্রয়োজনীয় বিশ্রাম পায়। এবং এই বিশ্রাম নেয়াটা যেন এমন সময়ে না হয় যখন আপনার অন্য কোন প্রয়োজনীয় কাজ করার সময়।
সমস্যাকে মোকাবেলা করতে শেখা:অনেক সময়ই কাজের চাপ বেড়ে গেলে আমরা তা দুরে সরিয়ে রাখি পরে করবো ভেবে। এতে প্রকৃতপক্ষে নিজেরই ক্ষতি করা হয়। কেননা সেই কাজটা কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করে শেষ করতে না পারলে তা আমাদের মাঝে বোঝা হয়ে হতাশার সৃষ্টি করে। কাজেই প্রয়োজনীয় কাজটি যতোই তিক্ত হোক তা কষ্ট করে হলেও করে ফেলতে হবে সময় মতোই।
স্বনির্ভরতা অর্জন করতে শেখা: এটা খুবই জরূরী। আমরা স্বনির্ভরতা বলতে সাধারণ অর্থনৈতিক নির্ভরতাকেই বুঝে থাকি। কিন্তু নিজের চারপাশের কাজগুলোকে অন্যের উপর নির্ভর করে না করে নিজে নিজে করাটাও স্বনির্ভরতা। অনেককেই দেখা যায় নিজের এসাইন্মেন্ট এর কাজটা অন্য কাউকে জোর করেই দিয়ে যাচ্ছে, হয়তো যে যাকে দিচ্ছে সে অনুরোধে ঢেকি গিলেই যাচ্ছে।
কাজের গতি দিকে নজর দেয়া: যে কাজটি যে সময়ে শেষ করতে হবে তা ঠিক সময়ে শেষ করতে আমরা সাধারণতই গরিমসি করে থাকি এতে আমরা সাধারণতই পিছিয়ে পরি। কেউ কেউ বলতে পারেন, এভাবেই তো জীবনটা কেটে গেল…ঠিক সময়ে কাজ করলে তো আজ আমি অমুক থাকতাম, তমুক থাকতাম। কিন্তু যদি বুঝতেই পাচ্ছেন তবে এখন থেকেই চেষ্টা করুন না কেন…আর হতাশা নয় অমুক তমুক হওয়ার…যা আছেন সেই অবস্থাটাকেই নিজের মন মতো করে নিন।
আসলে আপনি যেখানেই পড়েন না কেন, আপনার সঠিক পরিকল্পনা পারে আপনাকে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য এনে দিতে।
আনজাম আনসার; সিইও, সাইফুর্স

0 comments:

Post a Comment