বাষ্পীভবনঃ
বাষ্পীভবন বা যৌগের বাষ্পীকরণ হল পদার্থকে তরল পর্যায় থেকে বাষ্পে পর্যায়ে রূপান্তর । বাষ্পীভবনের দুটি প্রকার রয়েছে:
(১) বাষ্পে পরিনত
(২) ফুটন ।
বাষ্পীভবন একটি পাত্রে ঘটে, যেখানে ফুটন একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। বাষ্পীভবন হ’ল তরল পর্যায় থেকে বাষ্প পর্যায়ে রূপান্তর । বাষ্পীভবন হবার সময় প্রদত্ত চাপে স্ফুটনাংকের নীচের তাপমাত্রায় ঘটে। বাষ্পীভবন পৃষ্ঠতলে ঘটে। বাষ্পীভবন তখনই ঘটে যখন কোনও পদার্থের বাষ্পের আংশিক চাপ ভারসাম্যের বাষ্পের চাপের চেয়ে কম থাকে । উদাহরণস্বরূপ, ক্রমাগত নিম্ন চাপের কারণে, দ্রবণ থেকে বের করে দেওয়া বাষ্পগুলি শেষ পর্যন্ত একটি ক্রায়োজেনিক তরলকে নীচে ফেলে রাখে।
ফুটন এছাড়াও তরল পর্যায় থেকে গ্যাস পর্যায়ে পর্যায়ক্রমে রূপান্তর হয়। তবে ফুট্ন তরল পৃষ্ঠের নীচে একপ্রকার বাষ্প বুদবুদ হিসাবে বাষ্পের গঠন করে। উদ্বেগ ঘটে যখন পদার্থের ভারসাম্যীয় বাষ্পের চাপ পরিবেশগত চাপের চেয়ে বেশি বা সমান হয়। যে তাপমাত্রায় ফুটন্ত ঘটে তা হল ফুটন তাপমাত্রা। ফুটন তাপমাত্রা পরিবেশের চাপের সাথে পরিবর্তিত হয়।
ঘনীভবনঃ
ঘনভবন হল গ্যাসীয় থেকে পদার্থের অবস্থাকে তরল পর্যায়ে পরিবর্তন করা এবং এটি বাষ্পীভবনের বিপরীত। শব্দটি প্রায়শই জলচক্রকে বোঝায়। বায়ুমণ্ডলের মধ্যে কোন তরল বা কঠিন পদার্থ বা মেঘের ঘন নিউক্লিয়ির সংস্পর্শে এলে জলীয় বাষ্পের তরল জল বা জলীয় অবস্থার পরিবর্তন করে। আর এই থেকে এটি সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে। যখন বায়বীয় পর্যায় থেকে সরাসরি কঠিন পর্যায়ে রূপান্তর ঘটে তখন পরিবর্তনের উর্ধ্বপাতন বলা হয় ।
ঘনীভবন ও বাষ্পীভবনের মধ্যে পার্থক্যঃ
ঘনীভবন ও বাষ্পীভবন সাধারণত পানিচক্রের ক্ষেত্রে দেখা যায় । ঘনীভবন ও বাষ্পীভবন পরস্পর বিপরীত দুইটি প্রক্রিয়া । নিচে পার্থক্য দেখানো হলো-
১। জলিও বাষ্প যখন ঠান্ডা হয়ে পুনরায় জল এ পরিণত হয় তখন সেই প্রক্রিয়াকে ঘনিভবন বলে। অন্যিদিকে জল যখন লীনতাপ গ্রহণ করে বাষ্পে পরিণত হয় তখন সেই প্রক্রিয়াকে বাস্পীভবন বলে।
২। গ্যাসীয় পদার্থ থেকে তাপ বের করে নিতে থাকলে এর তাপমাত্রা হ্রাস পেতে থাকে এবং একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় গ্যাসটি ঘনীভূত বা তরলীভূত হতে শুরু করে। এটিকে তরলীভবন বা ঘনীভবন বলি। অন্যদিকে পদার্থেরও তাপ যোগ করার সাথে সাথে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় এটি গ্যাসীয় পদার্থে পরিণত হতে শুরু করে,যাকে আমরা বাষ্পীভবন বলি, এই সময় যুক্ত তাপকে বাষ্পীভবনের লীন তাপ বলি। অবস্থার পরিবর্তনের কারণে এই সময় পদার্থের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় না।
৩। ঘনীভবন বাষ্পকে শীতল করে তরলে পরিণত করে থাকে। অন্যদিকে বাষ্পীভবনঃ তরলকে তাপ দিয়ে বাষ্পে পরিণত করে থাকে।
৪। ঘনীভবন অর্থ কোনো গ্যাসীয় দার্থকে শীতল করে বিন্দু বিন্দু তরলে পরিণত করা। অপরদিকে কোনো তরল পদার্থে তাপ প্রয়োগ করে তাকে বাষ্পে পরিণত করা।
৫। ঘনীভবন প্রক্রিয়াতে তাপের বর্জন ঘটে। অন্যদিকে বাষ্পীভবন প্রক্রিয়াতে তাপের গ্রহণ হয়।
0 comments:
Post a Comment