Recent Post
Loading...

জারণ-বিজারণ, জারক-বিজারক সহজভাবে কৌশলে কিভাবে শিখতে পারি?



কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় কোনো মৌল বা কোনো যৌগের আয়ন কর্তৃক ইলেকট্রন ত্যাগের ঘটনাকে জারণ এবং ইলেকট্রন গ্রহণের ঘটনাকে বিজারণ বলে। জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ায় যে পদার্থ অন্য পদার্থকে জারিত করে বা অন্য পদার্থের জারণ ঘটায়, তাকে জারক এবং যে পদার্থ অন্য পদার্থকে বিজারিত করে বা অন্য পদার্থের বিজারণ ঘটায়, তাকে বিজারক বলে। এখানে, জারক পদার্থটির ইলেকট্রন গ্রহণ করার প্রবণতার কারণেই তা বিক্রিয়ায় উপস্থিত অন্য রাসায়নিক পদার্থকে ইলেকট্রন ত্যাগ করে জারিত হতে সাহায্য করে এবং বিজারক পদার্থ নিজে ইলেকট্রন ত্যাগ করে,অন্য পদার্থকে ঐ ত্যাগকৃত ইলেকট্রন গ্রহণ করে বিজারিত হতে সাহায্য করা। আর খুব সহজে জারক-বিজারক শনাক্ত করার একটি চমৎকার কৌশল 'জাগ্রত বিদ্বান'-এই কথাটি মনে রাখা! এ থেকে চট করে মনে করতে পারবেন-জারক ইলেকট্রন গ্রহণ করে (জা+গ্রত) ও বিজারক ইলেকট্রন দান করে (বি+দ্বান)।


জারণ :
১. e- এর অপসারণ

২. ধনাত্মক চার্জ এর মান বাড়ে
৩. ঋণাত্মক চার্জ এর মান কমে
বিজারণ :
১. e- এর সংযোজন

২. ধনাত্মক চার্জ এর মান কমে
৩. ঋণাত্মক চার্জ এর মান বাড়ে

জারণ = ইলেক্ট্রন ত্যাগ

বিজারণ = ইলেক্ট্রন গ্রহণ
জারক = ইলেক্ট্রন গ্রহণ
বিজারক = ইলেক্ট্রন ত্যাগ

জারণ [Oxidation]:-

• সংজ্ঞা:- যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় কোনো অণু, পরমাণু বা আয়ন এক বা একাধিক ইলেকট্রন ত্যাগ করে তাকে জারণ বলে । জারণেরঅর্থ ইলেকট্রন ত্যাগ ।

বিজারণ [Reduction]:-

• সংজ্ঞা:- যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় কোনো অণু, পরমাণু বা আয়ন এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ করে তাকে বিজারণ বলে । বিজারণের অর্থ ইলেকট্রন গ্রহণ ।

জারক পদার্থ [Oxidising agents]:- যে পদার্থ রাসায়নিক বিক্রিয়া কালে অন্য পদার্থকে জারিত করে নিজে বিজারিত হয় তাকে জারক পদার্থ বলে।

বিজারক পদার্থ [Reducing agents]:- রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় যে পদার্থ অন্য পদার্থকে বিজারিত করে নিজে জারিত হয় তাকে বিজারক পদার্থ বলে ।

উদাহরণ :

2Na + Cl₂ →2NaCl

এখানে সোডিয়াম ক্লোরিনের সাথে বিক্রিয়া করে সোডিয়াম ক্লোরাইড উৎপন্ন করে।

বিক্রিয়ার শুরুতে সোডিয়ামের জারণ মান ছিল 0 এবং ক্লোরিনের জারণ মান ছিল 0। বিক্রিয়ার

শেষে সোডিয়ামের জারণ মান হয় +1 এবং ক্লোরিনের জারণ মান হয় -1

এখন প্রশ্ন সোডিয়ামের জারণ মান হয় +1 এবং ক্লোরিনের জারণ মান হয় -1 কেন?

উত্তর

Na(11)→1s² 2s² 2p⁶ 3s¹ (2,8,1)

Cl(17)→1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁵ (2,8,7)

সোডিয়ামের ইলেকট্রন বিনাস থেকে দেখা জাই নিষ্ক্রিয় গ্যাস নিয়নের ইলেকট্রন বিন্যাস (2,8) অর্জনের জন্য সোডিয়ামের 1টি ইলেকট্রন ত্যাগ করতে হবে এবং ক্লোরিনের ইলেকট্রন বিন্যাস থেকে দেখা যায় নিষ্ক্রিয় গ্যাস আর্গনের ইলেকট্রন বিন্যাস(অর্জনের জন্য ক্লোরিনের 1টি ইলেকট্রনের প্রয়োজন।

সোডিয়াম তাই 1টি ইলেকট্রন ত্যাগ করে এবং ক্লোরিন সেই ইলেকট্রন গ্রহণ করে NaCl উৎপন্ন করে। (আয়নিক বন্ধন)

আমরা জানি, ইলেকট্রন ত্যাগ করলে ধনাত্মক চার্জ বৃদ্ধি পায় আর ইলেকট্রন গ্রহণ করলে ঋণাত্নক চাজ বৃদ্ধি পায়। অথাৎ NaCl এ Na আছে Na⁺ অবস্থায় এবং Clআছে Cl⁻ অবস্থায় বা (Na⁺Cl⁻)।

যেহেতু Na এর জারণ মান O থেকে বেড়ে + 1 হয়েছে বা ধনাত্মক চার্জের মান বেড়েছে তাই এই বিক্রিয়ায় Na এর জারণ ঘটেছে এব যেহেতু Na ইলেকট্রন ত্যাগ করেছে তাই Na হলো বিজারক।

Cl এর ক্ষেত্রে জারণ মান 0 থেকে -1 হয়েছে বা ঋণাত্নক চার্জের মান বৃদ্ধি পেয়েছে তাই এই বিক্রিয়ায় ক্লোরিনের বিজারণ ঘটেছে এবং যেহেতু ক্লোরিন ইলেকট্রন গ্রহণ করেছে তাই ক্লোরিন হলো এই বিক্রিয়ায় জারক।

0 comments:

Post a Comment