সংজ্ঞার শেষে এখানে সালফারের বহুরূপতার দিকগুলো প্রতিটি ধাপে ইলেকট্রন বিন্যাসসহ, প্রতি ধাপের বিক্রিয়াসমুহ উদাহরণ সহকারে ব্যাখ্যা নতুন করে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া কোন যৌগে কোন মৌলের Oxidation Number কত তা বের করার একটি formula দেয়া হল।)
আশা করি এবার বুঝতে সমস্যা হবে না।)
সাধারন ভাবে যোজনী বা যোজ্যতার সংজ্ঞা হলোঃ কোন মৌলের একটি পরমাণু হাইড্রোজেন বা তার সমতুল্য অন্য মৌলের যত সংখ্যক পরমাণুর সাথে সংযুক্ত হয় অথবা কোন যৌগ হতে হাইড্রোজেনের যত সংখ্যক পরমাণু প্রতিস্থাপিত করতে পারে সে সংখ্যাকে ঐ মৌলের যোজ্যতা বা যোজনী বলে।
যোজ্যতার ইলেকট্রনীয় মতবাদঃ রাসায়নিক বিক্রিয়ায় যৌগ গঠনের সময় কোনো মৌলের একটি পরমাণু অপর একটি মৌলের পরমাণু হতে যে কয়টি ইলেকট্রন গ্রহন অথবা এতে প্রদান করে অথবা শেয়ার করে ইলেকট্রনের সে সংখ্যাকে ঐ মৌলটির যোজনী বা যোজ্যতা বলে।
যৌগ গঠনকালে ইলেকট্রন শেয়ার বা আদান-প্রদানে সাধারনতঃ মৌলের পরমানুর ইলেকট্রন বিন্যাসের সর্বশেষ শক্তিস্তরের ইলেকট্রনগুলো অংশগ্রহণ করে থাকে। এদের ঐ মৌলের যোজনী ইলেকট্রন বলা হয়।
মূল-গ্রুপ-ভুক্ত মৌলের ক্ষেত্রে শুধু সর্ববহিঃস্থ স্তরে বিদ্যমান ইলেকট্রনসমূহকে ঐ মৌলের যোজনী ইলেকট্রন বলা হয়। ট্রানজিশন মৌলের ক্ষেত্রে যোজনী ইলেকট্রন সর্ববহিঃস্থ স্তরে বিদ্যমান ইলেকট্রন ছাড়াও অভ্যন্তরীণ স্তরে বিদ্যমান ইলেকট্রনও হতে পারে।
কোনো কোনো মৌলের যোজনী অবস্থাভেদে বিভিন্ন হয়। যে মৌলের একাধিক যোজনী আছে তার যোজনীকে পরিবর্তনশীল যোজনী বলে। যেমন সালফারের যোজনী -২, ২, ৪ ও ৬। নিম্নে সালফারের ইলেকট্রন বিন্যাসগুলো দেখানো হলো।
সালফার মৌলের যোজনী বা যোজ্যতা অবস্থা ভেদে বিভিন্ন হয় কেন?
সাধারণ অবস্থায় সালফারের ইলেকট্রন বিন্যাস থাকেঃ
3s2 3px2 3py1 3pz1
Hund's rule অনুসারে 3p অর্বিটালের x, y, z প্রত্যেকে প্রথমে একটি করে ইলেকট্রন পাবে পরে পেয়ার বা যুগ্ম হবার জন্য ইলেকট্রন লাভ করবে। Hund's rule শুধু সাধারণ অবস্থায় মুক্ত অনুর উপর প্রযোজ্য হয়ে থাকে।
Hund's rule অনুসারে, 3P স্পিনে ৬ টি ইলেক্ট্রনের স্থলে ৪ টি আছে - 3px2 3py1 3pz1, এখন 3py1 3pz1 শক্তিস্তরে ২ টি অযুগ্ম ইলেকট্রন রয়েছে যা পরিত্যাগ করে +2 অক্সিডেশন অবস্থা লাভ করতে পারে অথবা 3py1 3pz1শক্তিস্তরে ২ টি ইলেকট্রন গ্রহণ করে -2 অবস্থা লাভ করার মাধ্যমে 3p তার ৬ টি ইলেক্ট্রনের কোটা পূরণ করতে পারে।
উত্তেজিত অবস্থায় সালফারের শেষ শক্তিস্তরে ৪ টি অযুগ্ম বা বিজোড় ইলেকট্রন থাকতে পারে। Hund's rule অনুসারে সেখানে 3p তে শক্তির সাম্যতা ও স্থায়িত্ব আনার জন্য 3px2 শক্তিস্তর হতে একটি ইলেকট্রন 3d তে স্থানান্তরিত হয়ে 3d1হয়।
3s2 3p2 3p1 3p1→3s2 3p1 3p1 3p1 3d1
এখন 3p1 3p1 3p1 3d1 শক্তিস্তরে ৪ টি অযুগ্ম ইলেকট্রন রয়েছে যা পরিত্যাগ করে স্থায়িত্বের জন্য +4 অক্সিডেশন অবস্থা লাভ করতে পারে।
আবার, একইভাবে অধিক উত্তেজিত অবস্থায় সালফারের ইলেকট্রন বিন্যাস হয় নিম্নরুপঃ
3s2 3p2 3p1 3p1→3s1 3p1 3p1 3p1 3d1 3d1
3s2 ও 3p2 হতে একটি করে দুটি ইলেকট্রন d-অর্বিটালে বিন্যস্ত হয়। ফলে সালফারের শেষ শক্তিস্তরে ৬ টি অযুগ্ম ইলেকট্রন পাওয়া যায়। এভাবেই সকল যোজনী ইলেকট্রন অযুগ্ম অবস্থায় পরিণত হয় ও অযুগ্ম ৬ টি ইলেকট্রন পরিত্যাগ করে স্থায়িত্বের জন্য +6 অক্সিডেশন অবস্থা লাভ করে।
এবার উপরের পুরা অবস্থা বিক্রিয়ার মাধ্যমে নীচে দেখাবো কিভাবে সালফারের যোজনী -২,+২,+৪,+৬ হয়।
যেমন- Oxidation number -2 দেখা যায় sulphide ion এ, S--, উদাহরণ H2S যৌগ , hydrogen sulphide or hydrosulphuric acid, Sodium sulphide, Na2S.
আর Oxidation number +2 দেখা যায় SO যৌগে, যৌগটি খুবই অস্থায়ী। সালফার এ ধরনের বন্ধন পছন্দ করে না ফলে সহজেই dioxide SO2 গঠন করে। যার oxidation number হবে +4. (configuration sp3d1).
SO2 আবার oxidized হয়ে SO3 যৌগ গঠন করে। যার oxidation number is +6.
বিক্রিয়াঃ-
Hydrogen sulphide, H2S অক্সিজেনের সাথে ক্রিয়া করে sulphur dioxide: 2H2S + 3O2→ 2H2O + 3SO2, এ বিক্রিয়া, sulphur oxidized হয়ে -2 থেকে +4 হয়। আবার, এ বিক্রিয়ার মাধ্যমে H2S + 2O2 → H2SO4 + 790 kJ/mol, oxidation number -2 থেকে +6 হয়।
এ পরিবর্তনশীল যোজনীর কারনেই সালফার বহুরূপতা দেখায়।
কোন যৌগে কোন মৌলের Oxidation Number কত তা বের করার একটি equation/formula আছে।
যেমনঃ H2SO4 (সালফিউরিক এসিড)
ব্যাখ্যা :
Oxidation Number of Oxygen= -2
O.N of Hydrogen= +1
O.N of Sulphur= x(say)
এখন,
H2SO4 = 1.2 + x + (−2).4 = 0
or, 2 + x - 8 = 0
or, x−6 = 0
or, x = +6
অতএব, H2SO4 (সালফিউরিক এসিড) এ Suplhur এর Oxidation Number +6.