প্লাস্টিকের প্রকারভেদ
গঠন ও তাপীয় বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে কৃত্রিম পলিমার (প্লাস্টিক) দুই ধরনের। এর মধ্যে এক ধরনের পলিমার লম্বা সরু জট পাকানো শিকল গঠন করে। এ ধরনের পলিমার শিকলের কার্বনসমূহের মধ্যে শক্তিশালী বন্ধন গঠিত হয়। কিন্তু পার্শ্ববর্তী শিকলসমূহের মধ্যে দুর্বল আকর্ষণ বল কাজ করে। এই শিকলগুলো একটি অপরটির ওপর দিয়ে অতিক্রম করতে পারে। ফলে এ জাতীয় পলিমারকে সহজে সম্প্রসারিত, বাঁকানো এবং তাপ প্রয়োগে গলানো যায়। এ ধরনের পলিমারকে থার্মোপ্লাস্টিক বলে। উদাহরণ: পলিথিন, পলিপ্রপিলিন, PVC ইত্যাদি। থার্মোপ্লাস্টিককে বার বার গলানো যায় এবং বিভিন্ন আকৃতির বস্তুতে পরিণত করা যায়। দ্বিতীয় ধরনের পলিমারে কার্বন পরমাণুসমূহ শিকলের মধ্যে সমযোজী এবং একই সাথে পার্শ্ববর্তী শিকলের কার্বনের সাথে দৃঢ়ভাবে হাইড্রোজেন বন্ধনের মাধ্যমে যুক্ত থাকে। এ ধরনের পলিমার থার্মোসেটিং। থার্মোসেটিং প্লাস্টিক, থার্মোপ্লাস্টিকের চেয়ে শক্ত এবং কম নমনীয়। তাপ প্রয়োগে এগুলো গলার পরিবর্তে কয়লায় পরিণত হয়। এ অবস্থায় কার্বন শিকলের ক্রস লিংক ভেঙে গেলে পলিমার বিযোজিত হয়। থার্মোসেটিং প্লাস্টিককে একবার মাত্র গলানো এবং আকার দেওয়া যায়। সচরাচর কম্প্রেশন মোল্ডিং এর মাধ্যমে এটা করা হয়। উদাহরণ: ব্যাকেলাইট, ফাইবার গ্যাস, কৃত্রিম রেজিন এবং ইপোক্সি গ্লু।
প্লাস্টিকের সুবিধা
প্লাস্টিক কম মূল্যে পাওয়া যায়, ক্ষয় হয় না, রাসায়নিক পদার্থের সাথে বিক্রিয়া করে না, সহজে রং করা যায়,
বিদ্যুৎ অপরিবাহী, ওজনে হাল্কা, সহজে পরিবহনযোগ্য, দীর্ঘস্থায়ী এবং আবহাওয়া দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।
প্লাস্টিকের অসুবিধা
প্লাস্টিক দ্রব্যের অনেক সুবিধা থাকলেও এর কিছু অসুবিধাও রয়েছে। কৃত্রিম পলিমার বা প্লাস্টিক ব্যবহারের প্রধান সমস্যা ইহা বিযোজিত হয় না এবং পরিবেশকে দূষিত করে। অধিকাংশ প্রাকৃতিক উপাদান মাটির ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিযোজিত হয় কিন্তু প্লাস্টিক দ্রব্য ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিযোজিত হয় না। এ জন্য প্লাস্টিককে নন বায়োডিগ্রেডেবল পদার্থ বলে। অনেক ক্ষেত্রে প্লাস্টিককে পুড়িয়ে শেষ করা হয় যাতে বিষাক্ত ধোঁয়া (হাইড্রোজেন ক্লোরাইড, অ্যালডিহাইড, হাইড্রোজেন সায়ানাইড) উৎপন্ন হয়। এ সকল গ্যাস মানুষের শরীরে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে। বর্তমানে বিজ্ঞানীগণ কৃত্রিম পলিমার তৈরি করেছেন যা প্রথমে সূর্যের আলোতে বিযোজিত হয় এবং পরবর্তীতে প্রাকৃতিকভাবে ব্যাকটেরিয়া জীবাণু দ্বারা বিযোজিত হয়। এদেরকে বায়োপলিমার বলে। বেশিরভাগ বায়োপলিমার ভুট্টা ও ইক্ষু থেকে প্রস্তুত করে। এই পলিমার জীবাণু দ্বারা বিযোজিত হতে ২০ থেকে ৩০ বছর প্রয়োজন। পলিইথানল এক প্রকার পলিমার যাহা হাসপাতালে ব্যবহৃত হয় এবং পানিতে দ্রবীভূত হয়। পলিইথানলের পানিতে দ্রবনীয়তা n এর মানের উপর নির্ভর করে।
0 comments:
Post a Comment