এসিড
তুমি বাসায় নানা রকম এসিডের সংস্পর্শ পাও । যেমন, সফট ড্রিংকসগুলো (কার্বনিক এসিড), লেবু বা কমলা (সাইট্রিক এসিড), তেঁতুলে (টারটারিক এসিড), ভিনেগার(ইথানয়িক এসিড)। এই এসিডগুলো আমরা খাই,রান্নায় ব্যবহার করি । এগুলোর স্বাদ টক । খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে। মুখে রুচি আনে । ভিটামিন সি এর চাহিদা মেটায় এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে ।
ল্যাবটরিতে তুমি তিনটি ভিন্ন ধরনের এসিড পাবে । এগুলো হল : ১) হাইড্রোক্লোরিক এসিড , ২) সালফিউরিক এসিড ৩) নাইট্রিক এসিড ।
হাইড্রোজেন ক্লোরাইডের জলীয় দ্রবণ হলো হাইড্রোক্লোরিক এসিড । বিশুদ্ধ হাইড্রোক্লোরিক এসিড ,সালফিউরিক এসিড এবং নাইট্রিক এসিড বর্ণহীন তরল পদার্থ ।
লঘু এসিডের ধর্ম
স্বাদ : প্রায় সকল লঘু এসিড টক স্বাদযুক্ত ।
লিটমাস পেপার : লঘু এসিড নীল লিটমাসকে লাল করে ।
লঘু এসিডের সক্রিয় ধাতুর সাথে বিক্রিয়া
রাসায়নিক সক্রিয়তা সিরিজে হাইড্রোজেনের উপরের ধাতুগুলোর সাথে লঘু এসিডের সাথে বিক্রিয়ায় লবণ ও হাইড্রোজেন গ্যাস তৈরী হয় ।
ধাতু + লঘু এসিড লবণ + হাইড্রোজেন
যেমন, ম্যাগনেসিয়াম ধাতু লঘু হাইড্রোক্লোরিক এসিড,লঘু সালফিউরিক এসিড এবং অতি লঘু নাইট্রিক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করে ।
কপার লঘু হাইড্রোক্লোরিক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে না কিন্তু লঘু ও গাঢ় নাইট্রিক এসিড এবং গাঢ় সালফিউরিক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে । এর কারণ নাইট্রিক এসিড এবং সালফিউরিক এসিডের জারণ ধর্ম ।
লঘু এসিডের সাথে ধাতব কার্বনেটের বিক্রিয়া
লঘু এসিড ধাতব কার্বনেটের সাথে বিক্রিয়ায় কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন করে ।
ধাতব কার্বনেট + লঘু এসিড লবণ + পানি + কার্বন-ডাই-অক্সাইড
সোডিয়াম কার্বনেট লঘু এসিডের সাথে বিক্রিয়ায় কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসের বুদবুদ উৎপন্ন করে ।
ধাতব হাইড্রোজেন কার্বনেটের সাথে বিক্রিয়া
লঘু এসিড ধাতব হাইড্রোজেন কার্বনেটের সাথে বিক্রিয়ায় কার্বন-ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন করে ।
ধাতব হাইড্রোজেন কার্বনেট + লঘু এসিড লবণ + পানি + কার্বন-ডাই-অক্সাইড
সোডিয়াম হাইড্রোজেন কার্বনেট লঘু এসিডের সাথে বিক্রিয়ায় কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসের বুদবুদ উৎপন্ন করে ।
ধাতুর অক্সাইড ও হাইড্রক্সাইডের সাথে বিক্রিয়া
ধাতুর অক্সাইড ও হাইড্রক্সাইড হলো ক্ষারক । এসিড ও ক্ষারকের বিক্রিয়ায় লবণ ও পানি উৎপন্ন হয় ।
এসিড + ধাতুর অক্সাইড লবণ + পানি
এসিড + ধাতুর হাইড্রক্সাইড লবণ + পানি
লঘু হাইড্রোক্লোরিক এসিডের সাথে ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রক্সাইডের বিক্রিয়ায় ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড ও পানি উৎপন্ন হয় ।
লঘূ এসিডের বিদ্যুৎ পরিবাহিতা
সকল লঘু এসিড বিদ্যুৎ পরিবাহী । নিম্নের চিত্রের ন্যায় যন্ত্রসজ্জা করে লঘু এসিডের তড়িৎ পরিবাহিতা পরীক্ষা করা যায় ।
জলীয় দ্রবণে এসিড
জলীয় দ্রবণে উপস্থিত হাইড্রোজেন আয়ন এসিডের বৈশিষ্ট্যসূচক ধর্ম প্রদর্শন করে ।
জলীয় দ্রবণে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাস সম্পূর্ণরূপে আয়নিত হয় ও হাইড্রোজেন আয়ন উৎপন্ন হয়
যে সকল এসিড জলীয় দ্রবণে আংশিক আয়নিত হয় তারা দুর্বল এসিড । একইভাবে যে সকল ক্ষার জলীয় দ্রবণে আংশিক আয়নিত হয় তারা দুর্বল ক্ষার । সবল এসিড ও সবল ক্ষার পানিতে সম্পূর্ণরূপে আয়নিত হয় ।
ক্ষারক এবং ক্ষার
ক্ষারক হলো সেই সকল পদার্থ যা এসিডকে প্রশমিত করে এর বৈশিষ্ট্যসূচক ধর্ম বিলুপ্ত করে । সাধারণত ধাতুর অক্সাইড এবং হাইড্রক্সাইডসমূহ ক্ষারক ।
এসিড + ক্ষারক লবণ + পানি
ক্ষার একটি বিশেষ ধরনের ক্ষারক । এটি পানিতে সম্পূর্ণরূপে দ্রবীভূত হয় ।
ইত্যাদি ক্ষার ।
আ্যমোনিয়া গ্যাসের জলীয় দ্রবণ ক্ষার ।
এগুলো পানিতে সম্পূর্ণরূপে দ্রবীভূত হয় না, তাই এরা ক্ষারক ।
লঘু ক্ষারের সাথে ধাতব আয়নের বিক্রিয়া
অধিকাংশ ধাতব হাইড্রক্সাইড অদ্রবণীয় । ধাতুর লবণ বা আয়নের দ্রবণে লঘু সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড দ্রবণ যোগ করা হলে দ্রবণে উপস্থিত ধাতুর হাইড্রক্সাইড অধ:ক্ষিপ্ত হয় । অতিরিক্ত সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড দ্রবণ যোগ করা হলে কোনো কোনো অধঃক্ষেপ দ্রবীভূত হয় এবং দ্রবণের বর্ণ পরিবর্তন হয় ।
আ্যমোনিয়াম যৌগের সাথে ক্ষারের বিক্রিয়া
কঠিন আ্যমোনিয়াম যৌগ বা এর দ্রবণকে মৃদু আঁচে তাপ দিলে আ্যমোনিয়া গ্যাস বিমুক্ত হয় ।
ক্ষারের বিদ্যুৎ পরিবাহিতা
ক্ষারে ভ্রাম্যমান আয়ন উপস্থিত থাকে । এই আয়নের জন্য ক্ষার বিদ্যুৎ পরিবহন করে ।
গাঢ় হাইড্রোক্লোরিক এসিড
হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাস পানিতে দ্রবীভূত হয়ে হাইড্রোক্লোরিক এসিডে পরিণত হয় । সাধারণত গাঢ় হাইড্রোক্লোরিক এসিডে ভর অনুপাতে 35% হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাস থাকে । গাঢ হাইড্রোজেন ক্লোরাইড বোতলের মুখ খুললে হালকা কুয়াশা সৃষ্টি হয় এবং তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধ পাওয়া যায় ।
গাঢ় নাইট্রিক এসিড
নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস পানিতে দ্রবীভূত হয়ে নাইট্রাস এসিড এবং নাইট্রিক এসিড উৎপন্ন হয় । সাধারণত হালকা ধোঁয়াসহ গাঢ় নাইট্রিক এসিডে ভর অনুপাতে 70% নাইট্রিক এসিড থাকে । গাঢ নাইট্রিক এসিডের বোতলের মুখ খুললে হালকা কুয়াশা সৃষ্টি হয় এবং তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধ পাওয়া যায় ।
গাঢ় সালফিউরিক এসিড
সালফার-ট্রাই-অক্সাইড; গ্যাস পানিতে দ্রবীভূত হয়ে সালফিউরিক এসিডে পরিণত হয় । সাধারণত গাঢ় সালফিউরিক এসিডে ভর অনুপাতে 98% সালফিউরিক এসিড থাকে ।
এসিড ও ক্ষারের ক্ষয়কারী ধর্ম
গাঢ় এসিড অত্যন্ত বিপদজনক কারণ এগুলো অত্যন্ত ক্ষয়কারক পদার্থ । এগুলো ধাতু, ত্বক, কাপড় ক্ষয় করতে পারে । গাঢ় এসিডের মত গাঢ় ক্ষার-ও ক্ষয়কারী এবং বিপদজনক । কে প্রায়-ই কস্টিক সোডা বলা হয় (কস্টিক মানে পোড়ানো) । এসিডের তুলনায় ক্ষার ত্বক ও চোখের বেশি ক্ষতি করে ।
pH
আভিধানিক অর্থে pH মানে হলো হা্ইড্রোজেনের ক্ষমতা । কোন দ্রবণে pH এর মান 0 থেকে 14 এর মাঝে হবে । দ্রবণের pH এর মান 7 এর কম হলে দ্রবণটি অম্লীয় আবার 7 এর বেশি হলে দ্রবণটি ক্ষারীয় । কোনো দ্রবণের pH এর মান 7 হলে দ্রবণটি প্রশম ।
ইউনিভার্সাল ইন্ডিকেটর
বিভিন্ন এসিড ক্ষার ইন্ডিকেটর বা নির্দেশকের মিশ্রন হলো ইউনিভার্সাল ইন্ডিকেটর । ভিন্ন ভিন্ন pH মানের জন্য ইউনিভার্সাল ইন্ডিকেটর ভিন্ন ভিন্ন বর্ণ ধারণ করে ।
pH পেপার
অজানা কোন দ্রবণে pH মাপার জন্য pH ব্যবহার করা হয় । দ্রবণে কয়েক ফৌঁটা ইউনিভার্সাল ইন্ডিকেটর যোগ করে উৎপন্ন বর্ণকে স্ট্যান্ডার্ড কালার চার্টের সাথে মিলিয়ে pH এর মান নির্ধারন করা হয় ।
pH বর্ণনা বর্ণ
0-3 তীব্র এসিড লাল
3-7 দুর্বল এসিড হলুদ
7 নিরেপেক্ষ সবুজ
7-11 দুর্বল ক্ষার নীল
11-14 তীব্র ক্ষার বেগুনি
স্বাস্থরক্ষায় pH
প্রোটিনকে হজম করার জন্য পাকস্থলিতে pH মান 2 অর্থাৎ এসিডিক অবস্থা প্রয়োজন । আবার খাদ্যকে অধিকতর হজম করার জন্য ক্ষুদ্রান্তে pH এর মান 8 অর্থাৎ ক্ষারকীয় অবস্থা প্রয়োজন । রক্তের pH এর মান 7.35 থেকে 7.45 এবং প্রসাবের pH মান 6 থাকা প্রয়োজন । কতকগুলো রোগ নির্ণয়ের জন্য pH এর মান জানা আবশ্যক ।
দেহত্বক
দেহত্বক এর জন্য আদর্শ pH এর মান 5.5 । ত্বকের pH এর মান 5.5 থেকে 6.5 এর মাঝে থাকলে ত্বক বিভিন্ন এলার্জেন, ব্যাকটেরিয়া এবং পরিবেশ দূষকের আক্রমন প্রতিরোথ করতে পারে । pH এর মান 4 থেকে 6 এর মাঝে হলে চুলের কিউটিকলগুলো মসৃণ থাকে । ফলে চুলগুলো সমভাবে আলো বিকিরণ করে এবং উজ্জল দেখায় ।
এসিড বৃষ্টি
সাধারণত বৃষ্টির পানি কিছুটা এসিডিক। এর pH মান 5.6, কারণ বৃষ্টির পানিতে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস ও নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস দ্রবীভূত থাকে। জীবজগতের সকল সদস্য শ্বাসক্রিয়ার সময় বায়ুমণ্ডলে কার্বন-ডাইঅক্সাইড নিঃসরণ করে। যে কোনো অগ্নিকাণ্ড, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে প্রাকৃতিক ভাবে বায়ুমণ্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড জমা হয়। ইটভাটা, কলকারখানা ও গাড়ির ধোঁয়া পরিবেশে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস নিঃসরণ করে। বজ্রপাতের সময় বায়ুমণ্ডলে নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয়। অন্তঃদহন ইঞ্জিনে পেট্রোলিয়াম পোড়ানোর সময়েও নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয় এবং তা বায়ুমণ্ডলে মুক্ত হয়।
কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড বাতাসে উপস্থিত পানির সাথে বিক্রিয়ায় এসিড উৎপন্ন করে।
এসিডবৃষ্টির ফলে জলাশয় ও মাটির pH মান 4 বা 4 -এর চেয়ে কমে যায়। অর্থাৎ মাটি ও পানি এসিডিক হয়ে যায়। এতে জীববৈচিত্রের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বহু জীব বিলুপ্ত হয়।
পানির খরতা
পানিতে ধাতুসমূহের বাই-কার্বনেট লবণ দ্রবীভূত থাকলে পানির খরতা অস্থায়ী ধরনের। পানিকে উত্তাপে ফুটালে পানির অস্থায়ী খরতা দূর হয়। অপরপক্ষে পানিতে ধাতুসমূহের ক্লোরাইড বা সালফেট লবণ পানিতে দ্রবীভূত থাকলে পানির খরতা সহজে দূরীভূত করা যায় না। পানির স্থায়ী খরতা দূর করার কয়েকটি পদ্ধতি হলো:
১. সোডা পদ্ধতি ২. পারমুটিট পদ্ধতি ৩. আয়ন বিনিময় রেজিন পদ্ধতি ইত্যাদি
পানির pH
পানির pH মান 4.5 থেকে কম এবং 9.5 অপেক্ষা বেশি হলে তা জীবের জন্য প্রাণনাশক। pH
পেপার বা pH মিটার ব্যবহার করে pH মান নির্ণয় করা যায়।
BOD
BOD মানে জৈব রাসায়নিক অক্সিজেনের চাহিদা। কোনো পানিতে (BOD) মান বেশি হলে ঐ পানি দূষিত। বায়ুর উপস্থিতিতে পানিতে উপস্থিত সকল জৈব বস্তুকে ভাঙতে যে পরিমাণ অক্সিজেন প্রয়োজন তা বিওডি। একটি জলাশয়ের পানিতে কী পরিমাণ অক্সিজেন আছে তা মেপে নিতে হবে। অতঃপর 100 মি.লি. আয়তনের একটি বোতল ঐ জলাশয়ের পানি দিয়ে এমনভাবে পূর্ণ করে বোতলের মুখ বন্ধ করা হয় যাতে বোতলে কোনো বায়ু না থাকে। বোতলটিকে 200 তাপমাত্রায় 24 ঘণ্টা রেখে দিয়ে এর অক্সিজেন পরিমাপ করা
হয়। এই দুই মানের পার্থক্য থেকে (BOD) মান জানা যায়।
COD
COD মানে রাসায়নিক অক্সিজেন চাহিদা। পানিতে মোট কতটুকু রাসানিক দ্রব্য আছে তাহা বুঝানোর জন্য (COD) মান ব্যবহার করা হয়। বিশেষভাবে নদী-নালা-ঝিলের পানিতে জৈব দূষক এর মাত্রা মেপে পানির গুণাগুণ বিশ্লেষণ করা হয়। পানির COD মান বেশি হলে পানিদূষণের মাত্রা বেশি হয়।
BOD এবং COD
BOD ও COD কে মিলিগ্রাম/লিটার বা পিপিএম (ppm : parts per million) এককে প্রকাশ করা হয়।
১ ppm = প্রতি লিটার দ্রবণে 1 মিলিগ্রাম দ্রব
থিতানো
এক বালতি পানিতে ১ চামচ ফিটকিরি () গুঁড়া যোগ করে আধাঘণ্টা রেখে দিলে পানির সকল অপদ্রব্য থিতিয়ে বালতির তলায় জমা হয়। এভাবে পানি থেকে অদ্রবণীয় দূষক দূর করা যায়।
লঘু ক্ষারের ধর্ম
স্বাদ : সকল ক্ষার দ্রবণ কটু স্বাদ ও গন্ধ যুক্ত ।
অনুভব : স্পর্শে সকল ক্ষার পিচ্ছিল অনুভূত হয় ।
লিটমাস : ক্ষার লাল লিটমাসকে নীল করে ।
ক্লোরিনেশন
পানিকে জীবাণুমুক্ত করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ক্লোরিনেশন। পানিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ ব্লিচিং পাউডার
যোগ করলে উৎপন্ন ক্লোরিন জীবাণুকে জারিত করে মেরে ফেলে।
পানিতে ব্লিচিং পাউডার যোগ করার পর ছেঁকে নিলে পানি পানযোগ্য হয়।
0 comments:
Post a Comment